Ajker Patrika

কানাডা ‘বাজে আচরণ’ করায় বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দিলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রতিবেশী কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি কানাডার ‘বাজে আচরণ’কে তুলে ধরেছেন। নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক আলোচনাকে অবিলম্বে বন্ধ করে দিচ্ছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেন, কানাডা এমন একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে যেখানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে শুল্কনীতির সমালোচনা করতে শোনা গেছে।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘তাদের চরম বাজে আচরণের কারণে কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা এখানেই সমাপ্ত।’ বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র সরকার কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো–কানাডা চুক্তি (ইউএসএসসিএ)—এর আওতায় পড়া পণ্যের ক্ষেত্রে ছাড় রাখা হয়েছে। এই চুক্তিটি ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে করেছিলেন।

ট্রাম্প বলেছেন, কানাডার অন্টারিও রাজ্যের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি ওই ভিডিওর উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে প্রভাবিত করা। আগামী নভেম্বরে আদালত বৈশ্বিক শুল্ক আরোপের বৈধতা নিয়ে রায় দেবে। এই রায়কে ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও তাঁর অর্থনৈতিক নীতির সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদালত যদি তাঁর বিপক্ষে রায় দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক বাবদ সংগৃহীত কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে হতে পারে।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক মিনিটের ওই বিজ্ঞাপনে রিগ্যানের কণ্ঠ শোনা যায়। যেখানে তিনি ১৯৮৭ সালের এক রেডিও ভাষণে বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছেন। দৃশ্যে দেখা যায় নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পতাকাবাহী ক্রেনসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল। রিগ্যানের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘যখন কেউ বলে ‘বিদেশি পণ্যে শুল্ক আরোপ করছি’—তখন সেটা দেশপ্রেমিক কাজ বলে মনে হয়। আর কিছু সময়ের জন্য হয়তো তা কার্যকরও হয়, কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য। ”

ভিডিও রিগ্যানকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘দীর্ঘমেয়াদে এসব বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা প্রতিটি আমেরিকানকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে—কর্মী ও ভোক্তা উভয়কেই। উচ্চ শুল্কের ফলে বিদেশি দেশগুলো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, যার পরিণতিতে ভয়াবহ বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়...বাজার সংকুচিত হয়, ব্যবসা ও শিল্প বন্ধ হয়ে যায়, আর কোটি মানুষ চাকরি হারায়।’

রোনাল্ড রিগ্যান ফাউন্ডেশন এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, অন্টারিও সরকার রিগ্যানের বক্তব্যের ‘নির্বাচিত অংশ’ ব্যবহার করেছে এবং ভিডিও-অডিও সম্পাদনা করে বিজ্ঞাপন বানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্টারিও সরকার রিগ্যানের বক্তব্য ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়নি এবং সম্পাদনার অনুমতিও পায়নি।’ ফাউন্ডেশন আরও জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনটিতে ‘সাবেক প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।’ ফাউন্ডেশন আইনি পদক্ষেপের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।

অন্টারিও প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী সমতুল্য) ডগ ফোর্ড বিজ্ঞাপনটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমেরিকান শুল্কের বিরুদ্ধে আমরা কখনোই লড়াই থামাব না।’ কানাডার সবচেয়ে জনবহুল ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অন্টারিও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। বিশেষ করে গাড়ি ও ইস্পাত শিল্পে ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ।

ট্রাম্পের আগের শুল্ক হুমকির পর ফোর্ড পাল্টা বলেন, প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটনের বাণিজ্যনীতি ‘আমাদের পিঠে ছুরি মেরে আবার সেটি ঘুরিয়ে দিয়েছে।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর এখনো ফোর্ড বা কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি কোনো মন্তব্য করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রে মূলধারার টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত ওই বিজ্ঞাপন প্রচারণার মোট ব্যয় ৭ কোটি ৫০ লাখ কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড বা ৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...