Ajker Patrika

দাগি আসামিকে ভালোবেসে চাকরি হারানো সাংবাদিক

জাহাঙ্গীর আলম
দাগি আসামিকে ভালোবেসে চাকরি হারানো সাংবাদিক

ক্রিস্টি স্মিথ, ব্লুমবার্গের তুখোড় সাংবাদিক। বড় ধরনের একটি আর্থিক কেলেঙ্কারির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে গিয়ে নিজেই বাঁধিয়ে ফেলেন আরেক কেলেঙ্কারি! 

অথচ সাধাসিধে স্মার্ট, সাধারণত মুখে মেকআপ এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন এবং একজন বিশ্বস্ত প্রেমিকা, স্ত্রী, পুরোদস্তুর সংসারী ক্রিস্টি স্মিথ এমন একটা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারেন—সেটি এমনকি খোদ তাঁর স্বামীও কখনো কল্পনা করেননি। অথচ পাঁচটি বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর তাঁরা বিয়ে করেছিলেন। স্বামী একটি বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা। বেশ সুখের সংসারই ছিল তাঁদের। স্মিথ নিজেই তাঁর দাম্পত্য জীবনকে বর্ণনা করেছেন এভাবে—ব্রুকলিনে আমাদের একটা নিখুঁত ছোট্ট জীবন ছিল।

একদিন হঠাৎ করেই যেন সবকিছু চুকেবুকে ফেললেন স্মিথ। 

২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঘটনার শুরু। এর পর নয় মাসের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দেন স্মিথ। শান্তির নীড় থেকে চিরদিনের মতো বেরিয়ে পড়েন। দ্রুতই পাঁচ বছরের প্রেমিককে ডিভোর্স দিয়ে ফেলেন। 

স্মিথের গোছানো জীবনটাকে ওলটপালট করে দিয়েছিলেন এক দাগি আসামি। তিনি পত্রিকার হয়ে ঘটনাটি কভার করছিলেন। 

স্মিথের জীবনজুড়ে এখন মার্টিন শ্রেলি। সংবাদমাধ্যমে তিনি ‘ফার্মা ব্রো’ নামেই কুখ্যাত। এইচআইভি/এইডসের একটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম রাতারাতি ৫ হাজার গুণ বাড়িয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া উ তাং ক্ল্যানের একক অ্যালবাম ২০ লাখ ডলারে কিনে আলোচনায় এসেছিলেন শ্রেলি। ২০১৭ সালে প্রতারণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। এখন সাত বছরের জেল খাটছেন। 

এক দাগি আসামির জন্য স্বামী, সংসার, পেশা—সব জলাঞ্জলি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্মিথ। তিনি বলেছেন, তাঁর সঙ্গে আলাপে–আলাপে আমি আসলে খরগোশের গর্তে পড়ে গেলাম। 

তবে কোনো অনুশোচনা নেই স্মিথের। ‘আমি এখানে খুশি। আমার মনে হয়, একটা উদ্দেশ্যে জীবন আমাকে এখানে এনেছে’, বলেন স্মিথ। 

২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শ্রেলির সঙ্গে প্রথম দেখা হয় স্মিথের। এই সাক্ষাৎকার নিয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন ছিলেন যে সারা সকালে কিছু মুখে দেননি। এর এক মাস আগে হেজ ফান্ড নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে শ্রেলির বিরুদ্ধে। তবে তিনি তাঁর অভ্যাসমতো সাংবাদিকদের নিয়মিত ঠাট্টা বিদ্রূপ করে যাচ্ছিলেন। 

মিসৌরিতে কানসাস সিটির শহরতলিতে বেড়ে উঠেছেন স্মিথ। সাংবাদিকতা বিশেষ করে রিপোর্টিংয়ের প্রতি তাঁর আগ্রহ কৈশোর থেকেই। এই দুর্দমনীয় আগ্রহ থেকে অন্তর্মুখী, লাজুক স্মিথ একদিন মুখরা হয়ে ওঠেন। 

তিনি চরম একগুঁয়ে ছিলেন। অনুপযুক্তভাবে ইউনিফর্ম পরার জন্য জরিমানার বিষয় নিয়ে স্কুলে ঝামেলা পাকিয়েছিলেন। বাবা–মা তাঁকে ভাইদের গির্জায় নিয়ে যেতে বললে নিশ্চিতভাবে তিনি নিয়ে যেতেন ম্যাকডোনাল্ডসে। স্মিথের ভাই মাইকেল স্মিথ এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন। 

মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় পড়েছেন স্মিথ। ২০০৮ সালে নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে দুটি ছোট সংবাদপত্রে কাজ করেছিলেন। একটি আইন বিষয়ক সংবাদ সংস্থায় কাজ করার পর, তিনি ২০১২ সালে ব্রুকলিন ফেডারেল আদালতে ব্লুমবার্গ নিউজের জন্য কভার করা শুরু করেন। এ পত্রিকায় দ্রুতই কর্তৃপক্ষের নজরে চলে আসেন তিনি। বহু বছর বহু তথ্যবহুল সাড়া জাগানো প্রতিবেদন করেছেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনও খুব ভালো চলছিল। ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের প্রেমিককে বিয়ে করেন। 

২০১৫ সালের গোড়ার দিকে, স্মিথ একটি সোর্স থেকে জানতে পেরেছিলেন শ্রেলি পুঁজিবাজার আইন লঙ্ঘনের জন্য কেন্দ্র সরকারের তদন্তাধীন। এই ব্যক্তি সম্পর্কে স্মিথের তখনো কোনো ধারণা ছিল না। তবে তথ্যটি জানার পরই তাঁকে নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। জানতে পারেন, একজন চৌকস, স্বশিক্ষিত তরুণ নির্বাহী তিনি। বয়স যখন কুড়ির কোটাতে, তখনই তিনি হেজ ফান্ডের ব্যবসা শুরু করেন। এর পর ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি রেট্রোফিন এবং ট্যুরিং কিনে নেন। 

স্মিথ যখন শ্রেলিকে প্রথম ফোন করেছিলেন, তখন তাঁর প্রত্যাশা ছিল ‘কোনো মন্তব্য নেই’ ধরনের চিরাচরিত জবাবই পাবেন। কিন্তু তাঁকে অবাক করে দিয়েছিলেন শ্রেলি। 

ব্লুমবার্গের তুখোড় সাংবাদিক ক্রিস্টি স্মিথ মার্টিন শ্রেলির খবর কভার করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান

এই খবর প্রকাশের পর শ্রেলি রাতারাতি খলনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নানা অপমানজনক বিশেষণ দিতে শুরু করে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাদ যাননি। কিন্তু শ্রেলি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সবাইকে মুখোমুখি বিতর্কের জন্য চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। 

এর পর থেকে এ ঘটনার সঙ্গে লেগে ছিলেন স্মিথ। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তিনি শ্রেলির গ্রেপ্তারের খবর ব্রেক করেন। 

পরে শ্রেলি ছাড়া পেয়েছিলেন। হেজ ফান্ডের পাওনা পরিশোধও করেন। এর মধ্যে শ্রেলির সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা হতো স্মিথের। তাঁর প্রতি স্মিথের মুগ্ধতা বাড়ছিল। এক সময় মুখোমুখি বসে আলাপেরও সুযোগ হয় তাঁদের। স্মিথের পরিকল্পনা ছিল শ্রেলিকে নিয়ে একটি প্রোফাইল রিপোর্ট করবেন তিনি। 

এই উদ্দেশ্য সফল করতেই নিয়মিত যোগাযোগ শুরু হয়। শ্রেলিও একজন আলবেনীয় অভিবাসীর সন্তান হিসেবে তাঁর শৈশব–কৈশোর নিয়ে খোলামেলা আলাপ শুরু করেন। এভাবে একে অপরের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলাপে ঢুকে যান তাঁরা। এমনকি শ্রেলি তাঁর কাছে থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরামর্শও চাইতেন। এভাবেই যেন আত্মহত্যার আয়োজন করে যাচ্ছিলেন স্মিথ। 

তবে তথ্য দেওয়া নিয়ে শ্রেলির ইঁদুর–বিড়াল খেলা চলতে থাকে। ২০১৬ সালের শরতে স্মিথ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মর্যাদাপূর্ণ নাইট-ব্যাগহট জার্নালিজম ফেলোশিপ শুরু করেন। বসন্তে, তিনি একটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্য শ্রেলি সম্পর্কে লিখেছিলেন। কীভাবে তিনি সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা রাখেন, সেটিই বর্ণনা করেছিলেন সেখানে। 

স্মিথের অধ্যাপক মাইকেল শাপিরো বলেছিলেন, কীভাবে তিনি (শ্রেলি) সফলভাবে তাঁকে নিজের পক্ষে টেনে নিয়েছেন, সেটিই স্মিথ চমৎকারভাবে বর্ণনা করেছিলেন। শাপিরোর উদ্বেগের বিষয়টি ছিল, শ্রেলি স্মিথকে টোপ দিচ্ছেন। এই যে এভাবে তাঁর অন্দরে ঢুকতে দেওয়ার জন্য চিরকাল কৃতজ্ঞতা পাশে বাধিত করার পথে টানছেন তিনি। আর এটা যখন ঘটে যাবে, তখন একজন রিপোর্টার হিসেবে এটি আপনার জন্য একটা জটিল অসুবিধার ব্যাপার হবে। শাপিরো বলেন, স্মিথ তাঁর লেখাটি শ্রেলিকে দেখিয়েছিলেন। সেটি পড়ে শ্রেলি বলেন, তোমার তো বই লিখে ফেলা উচিত। সেটা শ্রেলির জীবনী বা আত্মজীবনী হতে পারে। শাপিরোর ধারণা, সাংবাদিক–সোর্স সম্পর্ক তত দিনে মাখামাখি হয়ে গেছে। স্মিথকে তিনি জীবনী লেখার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, যিনি এভাবে বিভ্রান্ত করতে পারেন, তাঁর জীবনী না লিখতে। স্মিথকে বলেন, তুমি তোমার জীবনটা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছ। 

স্মিথও অবশ্য আত্মসমর্পণই করেছেন। তাঁর কথায়, আমি মনে হয়, একজন মাস্টার ম্যানিপুলেটরের (জাত জাদুকর) খপ্পরে মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলাম। 

তবে স্মিথের আত্মবিশ্বাস, তিনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পাকা। তিনি ছোটবেলা থেকেই বই লিখতে চেয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তখনো। এটাই ছিল সেই শখ পূরণের মোক্ষম সুযোগ! তত দিনে তিনি একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি শুরু করে দিয়েছিলেন। 

২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির একটি স্টুডেন্ট ক্লাবে বইয়ের জন্য কথা বলার আমন্ত্রণ পান শ্রেলি। সেখানে তিনি স্মিথকেও আমন্ত্রণ জানান। তাঁদের দামি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। একজন ডিন এগিয়ে এসে করমর্দন করেন। স্মিথের দিকে ইঙ্গিত করে ভূয়সী প্রশংসা করেন শ্রেলি। সব ছাত্র–ছাত্রী শ্রেলির সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। তাঁকে খুব উচ্ছ্বসিত দেখাচ্ছিল। এর মধ্যে শ্রেলি একটু বিরতি নিয়ে বাথরুমে যান। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে আসেন স্মিথ। স্মিথ বলেন, তখন নিজেকে তাঁর একজন জনপ্রিয় রাজনীতিকের স্ত্রী বলে মনে হচ্ছিল। 

শ্রেলির মামলা তখনো চলছিল। কিন্তু তখনো সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক, কংগ্রেস কাউকেই তাচ্ছিল্য করতে ছাড়ছিলেন না। একসময় বিচারক আদালত চত্বরে তাঁর কথা বলা বারণ করে দেন। শ্রেলি নাকি আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়িতে গিয়ে দরজায় খিল দিয়ে কাঁদতেন। এ খবর শুনে স্মিথের খুব মায়া হতো। তিনি বলেন, শ্রেলি সবাইকে নিয়ে ট্রল করতেন। কারণ, ভেতরে-ভেতরে মানুষটা খুব উদ্বিগ্ন এবং একা বোধ করতেন। 

২০১৭ সালের আগস্টে শ্রেলি তিন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। তত দিনে স্মিথও তাঁর সঙ্গে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। তাঁদের মাখামাখি আর গোপন থাকেনি। শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। স্বামী তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, খারাপ লোকটি তাঁকে ব্যবহার করছে। তিনি তাঁর সাংবাদিকতার সুনামকে ঝুঁকিতে ফেলছেন। 

 

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রেলি হিলারি ক্লিনটনের একটি চুলের দাম ৫ হাজার ডলার ঘোষণা করে অনলাইনে একটি অফার দেন। হিলারি তাঁর ওষুধের দাম বৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। বিষয়টি বিচারক ভালোভাবে নেননি। তাঁর জেল হয়। এর মধ্যে বই লেখার জন্য অফিস থেকে নেওয়া ছুটি শেষ হয়ে যায় স্মিথের। কারাগারে শ্রেলির অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। পাগলের মতো অস্থির হয়ে পড়েন। বন্ধুদের পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। স্মিথ নিজেই বলেছেন, রাতে ঘুমাতে পারছিলেন না। সাংবাদিক এবং সোর্সের মধ্যে সম্পর্ক কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকছে—এ নিয়েও ভেতরে খুব তোলপাড় চলছিল। ফলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছিল তাঁর। 

ব্লুমবার্গের একজন মুখপাত্র জানান, তাঁরা শ্রেলির সঙ্গে স্মিথের সম্পর্কের কথা জানতেন না। জানলে ওই বিট থেকে তাঁকে সরানো হতো। 

এইচআইভি/এইডসের একটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম রাতারাতি ৫ হাজার গুণ বাড়িয়ে মার্টিন শ্রেলি

স্মিথ বারবার শ্রেলিকে বলতে থাকেন, তাঁকে যেন কারাগারে দেখা করতে দেওয়া হয়। নভেম্বরে একটা তারিখ দেন শ্রেলি। ৩০ ডলার খরচ করে শ্রেলির জন্য স্ন্যাকস কিনে কারাগারে দেখা করতে যান স্মিথ। দেখামাত্র তাঁরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন তাঁরা। ঘণ্টাব্যাপী আলাপ করেন। অথচ ওই সময় স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সমস্যা নিয়ে প্রথম কাউন্সেলিংয়ের দিন ছিল স্মিথের। নির্ধারিত সময়ের ৫২ মিনিট পর সেখানে হাজির হয়েছিলেন তিনি। 

তত দিনে স্মিথও বুঝে ফেলেন ব্লুমবার্গের জন্য শ্রেলিকে কভার করার মতো অবস্থায় তিনি আর নেই। কারণ, তিনি নিজেই ততক্ষণে এই গল্পের অংশ হয়ে উঠেছেন। বিট পরিবর্তন করতে থাকেন স্মিথ। ওদিকে প্রকাশক শ্রেলিকে খলনায়ক হিসেবে উপস্থাপনের প্রস্তাব দেয়। স্মিথ তেমন বই লিখতে অস্বীকার করেন। 

এর আগে আদালতে শ্রেলি এবং স্মিথের ই–মেইল ও মেসেজ আদান প্রদানের তথ্য উপস্থাপন করা হয়ে গেছে। এ নিয়ে স্মিথকে ভয়ানক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। প্রসিকিউটররা এর জন্য শ্রেলিকে ৫ বছরের সাজা দেওয়ার প্রস্তাব করেন। পরে আদালত এই কর্মকাণ্ডের দায়ে সাজার সঙ্গে আরও দুই বছর যোগ করে সাত বছর কারাদণ্ড দেয়। 

সিনেমার স্বত্ব বা বই লেখার চিন্তা বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের মার্চে শ্রেলির সাজা প্রদানের ঘটনার ওপর নজর দেন স্মিথ। এটি তাঁর গবেষণার অংশ ছিল। 

স্মিথের ভাষায়, তিনি শ্রেলির একটা বিশ্বাসযোগ্য গল্প তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। সেখানে অর্ধসত্য কিছু ছিল না। তিনি সেসব কোম্পানি সম্পর্কে বলতে চেয়েছিলেন, যেগুলো শ্রেলি নিজ হাতে তৈরি করেছেন। বাইরের যে খলনায়ক ব্যক্তিত্ব, সেটি তাঁর মুখোশ। আমি বাকি গল্পটা বলার চেষ্টা করেছিলাম; কিন্তু পারিনি। 

২০১৮ সালের গ্রীষ্মে স্মিথের সম্পাদক তাঁকে ব্লুমবার্গের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ডেকে পাঠান। তাঁর জন্য সেখানে অপেক্ষা করছিলেন সম্পাদক ও মানবসম্পদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি। অবশ্য আগেই শ্রেলি সম্পর্কে তাঁর বিভিন্ন টুইটের ব্যাপারে অফিস থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি শোনেননি। 

এখন তাঁকে বলা হয়, শ্রেলি সম্পর্কে তাঁর আচরণ পক্ষপাতদুষ্ট এবং অপেশাদার। স্মিথ পরিস্থিতি সহজেই আঁচ করে ফেলেন এবং সম্পাদককে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে নিঃশব্দে ভবন থেকে বেরিয়ে যান। 

সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি স্মিথের দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও জটিল করে তোলে। শেষ পর্যন্ত তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেও স্মিথ নিয়মিত কারাগারে শ্রেলিকে দেখতে যেতেন। তাঁরা পিকাসো, দর্শন, প্রিয় পোষা কুকুর, বিড়াল থেকে শুরু করে দুনিয়ার হাজারো বিষয়ে কলকল করে আলাপ করে যেতেন। 

ব্লুমবার্গ ছাড়ার পরপরই স্মিথ আবার শ্রেলিকে ঘনঘন দেখতে যেতেন। তিনি প্রকাশক ও ব্লুমবার্গ কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। কারণ, তাঁরা তাঁকে গল্পটি বলার সুযোগ দেয়নি। আলাপে আলাপে একদিন স্মিথ নিজেই শ্রেলিকে তাঁর ভালো লাগার কথা বলে ফেলেন। শ্রেলিও না করেননি। 

পুরো ঘটনায় স্মিথের বাবা–মা হতবাক হলেও মেয়ে যখন শ্রেলির বিষয়ে বলে, তখন স্মিথের সুখী মুখ দেখে তাঁরাও শান্তি পেয়েছেন। 

স্মিথ আবার সাংবাদিকতা শুরু করেছেন। তাঁর বস শ্রেলির সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানেন। কোভিড নিরাপত্তা প্রটোকলের কারণে বেশির ভাগ কারাগারে দর্শনার্থী নেওয়া হচ্ছে না। স্মিথ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রেলিকে দেখেননি। স্মিথের কাছে এখন স্মৃতি বলতে তাঁদের দুজনের একটি মাত্র ছবি। সেটি তিনি বিছানার পাশেই রেখেছেন। শ্রেলির মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছেন। হয়তো জ্যোৎস্নাস্নাত রাতগুলোতে চোখ ভিজে ওঠে তাঁর। 

স্মিথ–শ্রেলির গল্প হয়তো এখানেই শেষ। কিন্তু সাংবাদিক এবং সোর্সের মধ্যকার সম্পর্কের সীমা, আর সাংবাদিকতার নৈতিকতা নিয়ে বিতর্কটা হয়তো আরও বহুদিন আলোড়িত করবে। স্মিথের অপরাধ হয়তো আইনের আওতায় ব্যাখ্যা করা মুশকিল। কিন্তু সামাজিক মূল্যবোধ আর পেশাগত নৈতিকতার দণ্ড তো তাঁদের ছেড়ে কথা বলছে না!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডিপসিক দিয়ে যেভাবে সামরিক সক্ষমতায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলার ছক কষছে চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডিপসিক দিয়ে যেভাবে সামরিক সক্ষমতায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলার ছক কষছে চীন

চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি নরিনকো এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে নতুন এক সামরিক যান উন্মোচন করে। এটি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে নিজে থেকেই যুদ্ধে নিয়মিত বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন কাজ করতে পারে। এই যানটি চালিত হয় চীনের প্রযুক্তি খাতের গর্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল ‘ডিপসিক’ দিয়ে।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারা বলছেন, নরিনকোর এই পি–৬০ যান প্রমাণ করে চীন কীভাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের নেতারাই এখন সেনাবাহিনীকে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। রয়টার্স শতাধিক গবেষণাপত্র, পেটেন্ট ও সরকারি ক্রয় নথি বিশ্লেষণ করে দেখেছে, চীন নিয়মিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।

চীনের এসব নতুন অস্ত্র কীভাবে কাজ করে, তা গোপন। তবে পেটেন্ট ও ক্রয়ের নথিপত্র থেকে দেখা যায়, দেশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো প্রযুক্তি তৈরি করছে। আর এসবই মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে জবাব দেওয়ার লক্ষ্যে। তবে, রয়টার্স নিশ্চিত হতে পারেনি এসব পণ্য তৈরি করা হয়েছে কি না। কারণ, পেটেন্ট মানেই যে সেগুলো তৈরি হয়ে গেছে এমন নয়।

নথিতে দেখা গেছে, চীনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এখনো এনভিডিয়ার চিপ ব্যবহার করছে বা খুঁজছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র এই চিপের যে মডেলগুলোর রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে, সেগুলোও তালাশ করছে চীন। এই চিপগুলো নিষেধাজ্ঞার আগেই মজুত করা হয়েছিল কি না, তা জানা যায়নি।

এনভিডিয়ার মুখপাত্র বলেছেন, পুরোনো বা পুনর্ব্যবহৃত চিপ দিয়ে নতুন কিছু সম্ভব নয়, আর সামরিক কাজে এগুলো ব্যবহার করাও কঠিন,। কারণ সফটওয়্যার ও রক্ষণাবেক্ষণের সহায়তা পাওয়া যাবে না। আর তাই চীনের সেনাবাহিনী এখন দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের গবেষক সানি চিয়ুং বলেন, পিএলএ এখন বেশি ঠিকাদার ব্যবহার করছে যারা কেবল দেশীয় পণ্য, যেমন হুয়াওয়ের চিপ, ব্যবহার করার পক্ষে।

দরপত্র ও পেটেন্ট নথিতে দেখা গেছে, পিএলএ–এর বিভিন্ন ইউনিট হুয়াওয়ে চিপ ব্যবহার করছে। হুয়াওয়ে এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, নরিনকো, ও ডিপসিকও সামরিক কাজে এআই ব্যবহারের বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি।

ডিপসিক নির্ভরতা

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে পিএলএ–এর এক ডজনেরও বেশি দরপত্রে ডিপসিক মডেলের উল্লেখ আছে। অন্যদিকে আলিবাবার প্রতিদ্বন্দ্বী মডেল ‘কিউওয়েন’–এর উল্লেখ মাত্র একটিতে। ডিপসিক–সম্পর্কিত দরপত্রের সংখ্যা এ বছর অনেক বেড়েছে। প্রায়ই নতুন সামরিক প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে পিএলএর ওয়েবসাইটে।

ডিপসিকের জনপ্রিয়তা চীনের ঘোষিত ‘অ্যালগরিদমিক সার্বভৌমত্ব’-এর অংশ। অর্থাৎ, পশ্চিমা প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। তবে তারা বলেছে, ডিপসিক চীনের সেনা ও গোয়েন্দা কার্যক্রমে সহায়তা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দিতে পারে। তারা আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে নিরাপদভাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের হাত থেকে তা রক্ষা করবে।

এআই–নির্ভর পরিকল্পনা ও যুদ্ধ প্রযুক্তি

চীন এখন যুদ্ধক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বাড়াচ্ছে। তারা এমন রোবট কুকুর বানাতে চায়, যেগুলো দলবদ্ধভাবে টহল দেবে, হুমকি খুঁজে বের করবে এবং বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করবে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে চীনের সেনাবাহিনী (পিএলএ) এই রোবট কুকুরের জন্য দরপত্র দেয়। তবে তা কার্যকর হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেখা গেছে, পিএলএ আগেও ইউনিট্রি নামের কোম্পানির তৈরি সশস্ত্র রোবট কুকুর মহড়ায় ব্যবহার করেছে। কোম্পানিটি কোনো মন্তব্য করেনি। গত দুই বছরে প্রকাশিত পেটেন্ট, দরপত্র ও গবেষণাপত্রে দেখা যায়—পিএলএ এখন যুদ্ধ ও সামরিকবাহিনী সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিকল্পনায় এআই ব্যবহার করছে। এআই স্যাটেলাইট ও ড্রোনের তোলা ছবি দ্রুত বিশ্লেষণের প্রযুক্তি তৈরি করছে।

ল্যান্ডশিপ ইনফরমেশন টেকনোলজি নামে একটি কোম্পানি জানিয়েছে, হুয়াওয়ের চিপে তৈরি তাদের প্রযুক্তি দ্রুত লক্ষ্য শনাক্ত করতে পারে। এটি রাডার ও বিমানের সঙ্গে কাজ করে অভিযান পরিচালনা করতে পারে। শি’আন টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এআইয়ের কারণে অভিযান পরিকল্পনা অনেক দ্রুত করা যায়। তাদের তৈরি ডিপসিক সিস্টেম ৪৮ সেকেন্ডে ১০ হাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছে। এই কাজ সাধারণ মানুষের দল করলে ৪৮ ঘণ্টা লাগত।

স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবস্থা

চীনের সেনাবাহিনী এখন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র তৈরিতে বিনিয়োগ করছে। বিভিন্ন পেটেন্ট ও দরপত্রে দেখা গেছে, তারা ড্রোনে এআই সংযোজন করছে, যাতে ড্রোনগুলো নিজে থেকে লক্ষ্য চিনে ফেলতে ও অনুসরণ করতে পারে। বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয় এক পেটেন্টে জানিয়েছে, তারা ডিপসিক প্রযুক্তি দিয়ে ড্রোন স্কোয়াডের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সক্ষমতা উন্নত করছে। বিশেষ করে ছোট, ধীর ও নিম্নউচ্চতার হুমকি শনাক্তে।

চীনের প্রতিরক্ষা নেতৃত্ব বলেছে, অস্ত্র ব্যবস্থায় মানুষের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তারা এআইচালিত অস্ত্রের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এড়াতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রও এআইভিত্তিক যুদ্ধ প্রযুক্তি বাড়াচ্ছে। তারা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ হাজারো স্বয়ংক্রিয় ড্রোন মোতায়েন করতে চায়। এর লক্ষ্য—চীনের ড্রোন সংখ্যার আধিক্য মোকাবিলা করা।

আমেরিকান চিপ, চীনা মডেল

চীনের প্রতিরক্ষা কোম্পানি শানসি ১০০ ট্রাস্ট ইনফরমেশন টেকনোলজি বলেছে, তারা এখন দেশীয় প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করছে। হুয়াওয়ের অ্যাসেন্ড চিপ দিয়ে তারা এআই মডেল চালাচ্ছে। তবে গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, এখনো এনভিডিয়া কোম্পানির চিপ ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়।

পিএলএ–এর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি (এনইউডিটি) এবং ‘সেভেন সন্স’ নামে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় এনভিডিয়ার A100 চিপের ওপর ভিত্তি করে ৩৫টি আবেদন করেছে। তারা হুয়াওয়ের অ্যাসেন্ড চিপ দিয়েও ১৫টি এআই-সম্পর্কিত পেটেন্ট জমা দিয়েছে।

২০২৫ সালের জুনে পিএলএ–এর রকেট ফোর্স ইউনিভার্সিটি জানায়, তারা দূর-সংবেদনশীল লক্ষ্য শনাক্তকরণ ব্যবস্থায় এ–১০০ চিপ ব্যবহার করেছে। এনইউডিটির কর্নেল ঝু কিচাও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তাদের গবেষণায় কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু তারা প্রযুক্তিগত ব্যবধান কমাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

এনভিডিয়ার কর্মকর্তা রিজ্জো বলেন, চীনের সেনাবাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত দেশীয় চিপ রয়েছে, তাই তাদের এনভিডিয়া চিপের ওপর তেমন নির্ভর করতে হয় না।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি পৌঁছাল বিমানবাহী রণতরীসহ এক মার্কিন যুদ্ধজাহাজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত
ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত

লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস গ্রেভলি। এই যুদ্ধজাহাজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ডেস্ট্রয়ার। এটি এমন সময়ে ওই অঞ্চলে এমন এক সময়ে যখন ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

এদিকে, কেবল এই জাহাজই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলের আশপাশে মোতায়েন করেছেন মার্কিন সশস্ত্রবাহিনীর ষষ্ঠ নৌবহরের প্রাণ ভোমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড। অবশ্য পুরো ষষ্ঠ নৌবহর ওই অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সময় গতকাল রোববার গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস গ্রেভলি ত্রিনিদাদের রাজধানী পোর্ট অব স্পেনে পৌঁছায়। এতে মার্কিন মেরিন সদস্যরাও ছিলেন। তারা পরিকল্পিত যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। যুদ্ধজাহাজটিতে উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে এবং এটি হেলিকপ্টারও পরিচালনা করতে পারে। সম্প্রতি এটি মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নিয়েছিল।

ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি এই জাহাজের আগমন ঘটল এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে। গত কয়েক সপ্তাহে ওয়াশিংটন ওই অঞ্চলে একাধিক বিতর্কিত ও প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে, যেগুলোকে তারা ‘মাদকবাহী নৌকা’ লক্ষ্য করে চালানো অভিযান বলে দাবি করেছে।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর নিশ্চিত করেছে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ওই অঞ্চলে মোতায়েন করছে। এতে দুই দেশের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান আরও তীব্র হয়েছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ তৈরি করার’ অভিযোগ তুলেছেন।

কোনো প্রমাণ না দেখিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে সংগঠিত অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাগুয়ার নেতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। পোর্ট অব স্পেন থেকে আল–জাজিরার প্রতিবেদক জুলিয়া গালিয়ানো জানান, ত্রিনিদাদ সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাইছে যে যুদ্ধজাহাজটির আগমনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আল–জাজিরাকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ ধরনের যৌথ সামরিক কার্যক্রম নিয়মিতই অনুষ্ঠিত হয় এবং এবারও এটি কোনো যুদ্ধের পূর্বাভাস নয়। তবে গালিয়ানো বলেন, স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনাকে ঘিরে ‘অনেকটা সংশয় ও উদ্বেগ’ দেখা গেছে। তিনি বলেন, ‘বাজারে আমরা যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলেছেন—এটি দেশের জন্য কী অর্থ বহন করতে পারে, তা ভেবে তারা আতঙ্কিত।’

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক জাভেদ আলী আল–জাজিরাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখানে উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে, যার লক্ষ্য মাদুরো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।’ তিনি যোগ করেন, ‘হোয়াইট হাউস কী ভাবছে তা বোঝা কঠিন। তবে এই সামরিক উপস্থিতি ভেনেজুয়েলায় সরাসরি আক্রমণের জন্য যথেষ্ট বড় নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী যুদ্ধের ধরন দেখলে বোঝা যায়, এত ক্ষুদ্র উপস্থিতি নিয়ে তারা কখনো যুদ্ধ শুরু করে না।’

মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র আগস্টে ওই অঞ্চলে আটটি যুদ্ধজাহাজ, ১০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং একটি পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন পাঠিয়েছিল—১৯৮৯ সালে পানামা আক্রমণের পর ক্যারিবীয় অঞ্চলে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক সমাবেশ। শনিবার ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো জানান, তাদের দেশ ‘বৃহৎ পরিসরের সামরিক হুমকি’ মোকাবিলায় উপকূল প্রতিরক্ষা মহড়া শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি, যে শর্ত দিল গোষ্ঠীটি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, তারা নিরস্ত্র হতে রাজি আছে। তবে শর্ত হলো, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারত্বের অবসান হতে হবে। হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া স্পষ্ট জানিয়েছেন, সংগঠনটির অস্ত্রভান্ডারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি ‘দখলদারত্ব ও আগ্রাসনের উপস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত।’

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল দুই বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি হিসেবে হামাসের নিরস্ত্র হওয়ার দাবি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও তাদের ২০ দফা পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের শর্ত দিয়েছে। তবে খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, ‘দখলদারত্বের অবসান হলে এসব অস্ত্র রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

তবে আল-হাইয়া কোন কোন রাষ্ট্রের কথা বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়। তিনি কি কোনো নতুন বা এখনো গঠিত না হওয়া ফিলিস্তিনি প্রশাসনিক কাঠামোর কথা বোঝাতে চেয়েছেন, সেটিও জানা যায়নি।

এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত টেকনোক্র্যাট কমিটির কাছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার শাসনভার হস্তান্তরে সম্মত হয় হামাস। গাজায় সক্রিয় অন্য সংগঠনগুলোও কায়রো বৈঠকের এই সমঝোতার বিষয়ে একমত হয়েছে। হামাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীন টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে গঠিত অস্থায়ী এই কমিটি আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় কাজ করবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকায় যেন প্রশাসনিক কোনো শূন্যতা না থাকে, সে জন্য অবিলম্বে কাজ শুরু করবে তারা।

গত শুক্রবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সামনে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সব গোষ্ঠীকে নিয়ে একটি জাতীয় সম্মেলন আহ্বানের প্রস্তাব এসেছে। ওই সম্মেলনে জাতীয় কৌশল নির্ধারণ এবং ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কায়রোতে হামাস ও ফাতাহর প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ আগামী দিনগুলোতেও বৈঠক চালিয়ে যাবে এবং ইসরায়েলি চাপ মোকাবিলা করে অভ্যন্তরীণ ঐক্য জোরদারে কাজ করবে।

এই আলোচনার সমান্তরালে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধান হাসান রাশাদ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এর মধ্যে হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদ, পিএলওর অন্তর্ভুক্ত ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে হামাস ও ফাতাহ যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা যৌথভাবে পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠনে রাজি হয়েছিল। তবে ফাতাহর অনেক নেতা তখন সেই চুক্তির সমালোচনা করেন। এখন ট্রাম্প-সমর্থিত প্রস্তাব ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার মুখে দীর্ঘদিন থেকে হামাস বলে আসছে, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তারা আর সরাসরি উপত্যকার শাসনকাজ পরিচালনায় আগ্রহী নয়। তবে পশ্চিমাদের দাবি অনুযায়ী নিজেদের যোদ্ধাদের নিরস্ত্র করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। তারা বলছে, একমাত্র স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হলেই তাদের যোদ্ধারা অস্ত্র সমর্পণ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অস্ত্র সমর্পণের পর তাঁদের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত করা হবে।

এদিকে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে পাঁচ হাজার সদস্যের একটি বাহিনী গঠনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পরিকল্পনায় নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে তুরস্কের আগ্রহ থাকলেও তাতে আপত্তি জানিয়েছে ইসরায়েল। তাদের আপত্তির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এই বহুজাতিক বাহিনীর জাতীয়তা নিয়ে ইসরায়েলের স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা একটি আবশ্যকীয় শর্ত।

ইসরায়েলের অভিযোগ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ। ফলে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরানোর বাহিনী থেকে তুরস্ককে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। অন্যদিকে এই বাহিনীতে তুরস্কের উপস্থিতি চায় হামাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইস্তাম্বুলে আলোচনায় বসেছে আফগানিস্তান-পাকিস্তান, এর মধ্যেই নতুন সংঘর্ষে নিহত ৩০

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সীমান্তের ওপার থেকে আক্রমণ দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছবি: এএফপি
সীমান্তের ওপার থেকে আক্রমণ দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছবি: এএফপি

ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার (আইএসপিআর) বিবৃতির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা খুররম ও উত্তর ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। পাহাড়ি ও দুর্গম এই দুই জেলায় সংঘর্ষটি ঘটে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সীমান্ত অতিক্রমের এই চেষ্টা প্রমাণ করে যে আফগান সরকারের সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রকৃত অবস্থান নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এ সংঘর্ষের পর আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে জানতে তালেবান সরকারের মুখপাত্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

এদিকে, এ সংঘর্ষের সময়ই দুই দেশের প্রতিনিধিদল ইস্তাম্বুলে আলোচনায় বসেছে, যাতে সীমান্তে উত্তেজনা কমানো যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়, তা ছিল ২০২১ সালে কাবুলে তালেবানের ক্ষমতা নেওয়ার পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ঘটনা। পাকিস্তানের দাবি, তালেবান সরকার সীমান্তে সন্ত্রাসীদের দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও পাকিস্তান আফগানিস্তানে বিমান হামলা করে। পরে দোহায় এক চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।

তবে তালেবান সরকার বরাবরই পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। বরং তারা অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি সামরিক অভিযানে তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হয়েছে।

গতকাল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি টিকে আছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন, আফগানিস্তানও শান্তি চায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইস্তাম্বুলে কোনো সমঝোতা না হলে যুদ্ধ অনিবার্য।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত শুক্রবার ও গতকাল যাঁরা সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করেছিলেন, তাঁরা ‘ফিতনা আল খারিজ’ নামের এক সংগঠনের সদস্য। সেনাবাহিনী বলেছে, এই সশস্ত্র গোষ্ঠী বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এবং উগ্রবাদী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত