Ajker Patrika

বেলুচিস্তানে হামলার পেছনে ‘ভারতের হাত’ রয়েছে, দাবি পাকিস্তানের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আইএসপিআর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্রসচিব খুররাম মুহাম্মদ আগা।
আইএসপিআর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্রসচিব খুররাম মুহাম্মদ আগা।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, বেলুচিস্তানের খুজদারে স্কুলবাসে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, এর পেছনে ‘ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ’ দায়ী। আজ শুক্রবার (২৩ মে) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্রসচিব খুররাম মুহাম্মদ আগা এই অভিযোগ করেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার বেলুচিস্তানের খুজদারে একটি স্কুলবাসে বোমা হামলায় তিন শিক্ষার্থীসহ অন্তত ছয়জন নিহত এবং ৪০ জনেরও বেশি আহত হয়। স্বরাষ্ট্রসচিব আগা এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ ও ‘মূল্যবোধ, শিক্ষা ও সমাজের মূল কাঠামোর ওপর আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি দাবি করেন, প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এই হামলা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাজ।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই ভারত দেশটির অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদে জড়িত। তিনি ২০০৯ ও ২০১৯ সালে ভারতের কাছে ও জাতিসংঘের কাছে প্রমাণসংবলিত ডসিয়ার (নথি) হস্তান্তরের কথা উল্লেখ করেন। এ ছাড়া ২০১৬ সালে ভারতীয় গুপ্তচর কুলভূষণ যাদবের গ্রেপ্তারকেও তিনি ভারতের জড়িত থাকার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন। আইএসপিআরের প্রধান দাবি করেন, ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ নামের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হচ্ছে এবং ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ ব্যর্থ হওয়ায় তারা এই ধরনের হামলা বাড়াতে চাইছে।

তিনি ভারতীয়দের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূলধারার গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘র’-এর সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলো কিছু হামলার আগেই সে সম্পর্কে পোস্ট করে। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যম খুজদার হামলাকে ‘উৎসব’ হিসেবে পালন করছে, যা তাদের ‘নৈতিক অবক্ষয়ের’ প্রমাণ।

আইএসপিআরের প্রধান বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) একটি কথিত প্রেস রিলিজ তুলে ধরেন, যেখানে বিএলএ ভারতের কাছ থেকে সহায়তা পেলে তাদের ‘সামরিক সহযোগী’ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। পাকিস্তান এই সম্পর্ককে ‘সন্ত্রাসের প্রক্সি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং দাবি করে, ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’-এর সঙ্গে বেলুচ বা পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই, তারা আসলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কিত।

পাকিস্তান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা ‘ভারতের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ’ সফল হতে দেবে না এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনবে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী ‘বেলুচ ইয়াকজেহতি কমিটি’ ও এর নেতা ড. মাহারং বেলুচকেও ‘সন্ত্রাসবাদের প্রক্সি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের মুখোশ উন্মোচন করার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্মার্টফোন নেই পুতিনের, ব্যবহার করেন না ইন্টারনেটও, কিন্তু কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আজ বৃহস্পতিবার দুদিনের সরকারি সফরে ভারত আসছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও তিনি রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং ভারত-রাশিয়া ‘বিশেষ ও বিশেষাধিকারপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারত্ব’ পর্যালোচনা করবেন।

বেশির ভাগ বিশ্ব নেতাই সাধারণত বড় দলবল নিয়ে আসেন এবং তাঁদের জন্য স্বাগতিক দেশে বিপুল আয়োজন থাকে। তবে পুতিনকে ঘিরে থাকা ‘নিরাপত্তার জাল’ তাঁকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে তুলেছে। তাঁর নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি এতটাই কঠোর যে, তিনি মুঠোফোন ব্যবহার করেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ আছে! বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী, পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হওয়া রুশ প্রেসিডেন্টের কোনো স্মার্টফোন নেই।

২০১৮ সালে বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে এক বৈঠকে কুরচাতভ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান মিখাইল কোভালচুক বলেছিলেন, ‘প্রত্যেকের পকেটেই একটা করে স্মার্টফোন আছে।’ এর উত্তরে পুতিন বলেছিলেন, ‘আপনি বললেন সবার স্মার্টফোন আছে। কিন্তু আমার কোনো স্মার্টফোন নেই।’

এক রুশ সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘যত দূর জানি, প্রেসিডেন্ট পুতিনের কোনো ফোন নেই।’ তিনি বলেন, ‘স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ব্যক্তির গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়ে। আর এটি বিশেষ করে যেকোনো শীর্ষ নেতার জন্য বড় বিপদ ডেকে আনে।’

তবে সাধারণ মানুষ মনে করেন, প্রকাশ্যে যে কারণ বলা হয়, আসল কারণ হয়তো তার থেকে আলাদা। পুতিন একবার রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছিলেন, ক্রেমলিনের ভেতরে মুঠোফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ক্রেমলিন একই সঙ্গে সরকারের কেন্দ্র ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাসভবন। তিনি বলেছিলেন, তিনি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না। যদি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রয়োজন হয়, তবে তার বদলে তিনি দাপ্তরিক ফোন লাইন ব্যবহার করেন।

পুতিন বহুবার স্বীকার করেছেন যে, আধুনিক প্রযুক্তিতে তিনি খুব একটা পটু নন। অনলাইনে সহজলভ্য কিছু বিষয় নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০১৭ সালে স্কুলশিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুতিন বলেন, তিনি ‘খুব কমই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।’ তিনি ইন্টারনেটের সমালোচনাও করেছেন, একে তিনি ‘সিআইএ-এর বিশেষ প্রকল্প’ বলেছেন এবং এটিকে ‘অর্ধেকটা পর্নোগ্রাফি’ বলেও মন্তব্য করেছেন।

এর আগে পুতিন বলেছিলেন যে—তিনি মুঠোফোন ব্যবহার করেন না। কারণ, তিনি এই ধরনের যন্ত্র বা ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত কিছুকেই বিশ্বাস করেন না। মূলত নিরাপত্তার কারণেই তিনি মুঠোফোন এড়িয়ে চলেন। এও বলা হয় যে, তাঁর আশপাশে ফোন বা ইন্টারনেট-সংযুক্ত অন্যান্য গেজেট থাকলেও তা তাঁর কাছ থেকে দূরে রাখা হয়।

পুতিন যখন অন্য কোনো দেশে সফর করেন, তখন তাঁর নিরাপত্তা দল ব্যাপক সতর্কতা নেয়। তিনি যে হোটেলে থাকবেন, থেকে শুরু করে যে খাবার খাবেন, তাঁর আসার আগেই সবকিছু সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করা হয়। তিনি যে এলাকায়তে থাকেন, সেগুলোও নিরাপদ কি না, তা নিশ্চিত করতে তাঁর নিরাপত্তা কর্মীরা জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার করে নেন। শুধু তা-ই নয়, পুতিনকে যে খাবার পরিবেশন করা হয়, তা বিষক্রিয়া বা দূষণের কোনো সম্ভাবনা দূর করার জন্য বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় যুদ্ধবিরতি খুব ভালোভাবে চলছে, দ্বিতীয় ধাপ শুরু শিগগির: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়টি ‘খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে।’ স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা জানান। হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘খুব ভালোভাবে’ চলছে।

তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় কবে শুরু হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, সবকিছু ‘ভালোভাবেই চলছে।’

হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, ‘আজ ওদের একটি বোমার কারণে সমস্যা হয়েছে, বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছেন, সম্ভবত কিছু লোক মারাও গিয়েছেন।’

ট্রাম্প সে সময় ইসরায়েলের গাজা উপত্যকার দক্ষিণে চালানো বিমান হামলার কথা বলছিলেন। বুধবার সন্ধ্যার ওই হামলায় অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনি মারা যান। ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ওরা আমাকে বলছে এটা এইমাত্র ঘটেছে। কিন্তু পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে চলছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বিরাজ করছে। লোকজন তা বুঝতে পারছে না।’

রাফাহে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েলি সেনা জখম হওয়ার কিছু পরেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘সেই মতো জবাব দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিলেন। তার পর পরই এই হামলাগুলো হয়। এর মধ্যে দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি নতুন করে ভাঙল ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্বে ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এই পরিকল্পনায় গাজা পুনর্গঠন এবং হামাসকে বাদ দিয়ে একটি নতুন শাসন ব্যবস্থা তৈরির কথাও ভাবা হয়েছে। এরই মধ্যে, হামাস সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। এমনকি তাদের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের যেসব মরদেহ ছিল সেগুলোও ফেরত দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। সেই সঙ্গে জখম হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার মানুষ।

এদিকে, জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি হামলায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে সময় লাগবে অন্তত কয়েক দশক। আগামী কয়েক দশকে এই পুনর্গঠনের জন্য প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার লাগবে। পাশাপাশি সতর্ক করেছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আসন্ন অর্থনৈতিক ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন (আঙ্কটাড) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজায় সৃষ্টি হয়েছে এক ‘মানবসৃষ্ট অতল গহ্বর।’ ২০২৩–২৪ সময়কালে এখানকার অর্থনীতি ৮৭ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ইসরায়েলের পদ্ধতিগত ধ্বংসযজ্ঞ ও অর্থনৈতিক অবরোধ গাজার মাথাপিছু জিডিপিকে ঠেলে দিয়েছে মাত্র ১৬১ ডলারে, যা বিশ্বের সর্বনিম্নগুলোর মধ্যে একটি।

অপরদিকে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের লাগাতার হামলাও ফিলিস্তিনি অর্থনীতিকে গভীর সংকটে ঠেলে দিচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের কয়েক দশকের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এক আঘাতে মুছে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ফলে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তা ১৯৬০ সালের পর বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে ভয়াবহ দশটির একটি। গাজার পরিস্থিতি আরও আলাদা; এটি নথিভুক্ত ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুতর অর্থনৈতিক বিপর্যয়।’

জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি-প্রক্রিয়ার উপ বিশেষ সমন্বয়কারী রামিজ আলাকবারভ বলেন, গাজায় পরিস্থিতি এখনও ‘ভয়ংকরভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ তিনি দ্রুত আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান, কারণ মানুষ এখনো ‘অসহনীয় জীবনযাপন’ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাইয়ের মাত্রা আরও বাড়াল। একই সঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক অভ্যন্তরীণ স্মারকে বলা হয়েছে, যাঁরা স্বাধীন মতপ্রকাশে ‘সেন্সরশিপ’-এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, তাঁদের আবেদন বাতিল করা যেতে পারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এইচ-১বি ভিসা হলো সেই পথ, যার মাধ্যমে মার্কিন নিয়োগকর্তারা বিশেষায়িত ক্ষেত্রে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করেন। ভারত এবং চীনসহ বহু দেশ থেকে কর্মী টানার ক্ষেত্রে এই ভিসা মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশ্চর্য বিষয় হলো, গতবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেই সংস্থাগুলোর অনেক কর্ণধারই ট্রাম্পের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়েছিলেন।

২ ডিসেম্বরের বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সব মিশনে পাঠানো ওই গোপন তারবার্তায় (cable) বলা হয়েছে, মার্কিন কনস্যুলার অফিসারদের এইচ-১বি আবেদনকারী এবং তাঁদের সঙ্গে ভ্রমণকারী পরিবারের সদস্যদের বায়োডাটা বা লিংকডইন প্রোফাইল খতিয়ে দেখতে হবে। দেখতে হবে, তাঁরা ভুয়া তথ্য, ভুল তথ্য, কনটেন্ট মডারেশন, ফ্যাক্ট-চেকিং, কমপ্লায়েন্স এবং অনলাইন নিরাপত্তার মতো কাজে যুক্ত ছিলেন কি না।

তারবার্তায় আরও বলা হয়েছে, ‘যদি আপনি এমন প্রমাণ পান যে, কোনো আবেদনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের সেন্সরশিপ বা সেন্সরশিপের চেষ্টায় দায়ী বা জড়িত ছিলেন, তবে ইমিগ্রেশন ও ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের একটি নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী ওই আবেদনকারীকে অযোগ্য বলে গণ্য করার প্রক্রিয়া শুরু করবেন।’

এইচ-১বি ভিসার এই বর্ধিত যাচাই-বাছাইয়ের, বিশেষত সেন্সরশিপ এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর জোর দেওয়ার বিষয়টির বিস্তারিত খবর আগে প্রকাশিত হয়নি। স্টেট ডিপার্টমেন্ট তারবার্তার বিষয়বস্তু নিয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

তারবার্তায় বলা হয়েছে, সব ধরনের ভিসার আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই এই নীতি প্রযোজ্য, তবে এইচ-১বি আবেদনকারীদের জন্য কঠোর পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, তাঁরা প্রায়ই প্রযুক্তি খাতে কাজ করেন, ‘যার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা আর্থিক পরিষেবা সংস্থাগুলোও আছে, যারা সুরক্ষিত মতপ্রকাশকে দমন করার কাজে লিপ্ত।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আপনাকে তাঁদের কর্মজীবনের ইতিহাস গভীরভাবে অনুসন্ধান করতে হবে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তাঁরা এমন কোনো কার্যকলাপে অংশ নেননি।’ নতুন এই যাচাইয়ের শর্তাবলি নতুন এবং পুরোনো—উভয় ধরনের আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

ট্রাম্প প্রশাসন স্বাধীন মতপ্রকাশকে, বিশেষত অনলাইনে রক্ষণশীল কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে, তাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে এনেছে। কর্মকর্তারা বারবার ইউরোপের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছিলেন এবং সেখানে ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের দমন করার নিন্দা করে গেছেন। তাঁদের মধ্যে রোমানিয়া, জার্মানি এবং ফ্রান্সের রাজনীতিবিদরাও আছেন। তাঁরা ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য মোকাবিলার নামে অভিবাসনবিরোধী সমালোচনার মতো মতবাদকে সেন্সর করার অভিযোগ আনেন।

মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুমকি দিয়েছিলেন যে, যেসব লোক আমেরিকানদের মতপ্রকাশে বাধা দেবে, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন যে এই নীতি মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে নিয়ন্ত্রণকারী বিদেশি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই যথেষ্ট কড়া করেছে। মার্কিন কনস্যুলার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন এমন কোনো সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট খুঁজে বের করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রতিকূল হতে পারে।

ব্যাপক অভিবাসনবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ট্রাম্প গত সেপ্টেম্বরে এইচ-১বি ভিসার ওপর নতুন করে ফি আরোপ করেন। ট্রাম্প এবং তাঁর রিপাবলিকান মিত্ররা বারবার সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে অনলাইনে স্বাধীন মতপ্রকাশ দমনে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগগুলোর কেন্দ্রে ছিল ভ্যাকসিন এবং নির্বাচন-সংক্রান্ত মিথ্যা দাবি দমন করার চেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মার্কিন মধ্যস্থতায় ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় লেবানন-ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৯
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম। ছবি: এএফপি
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম। ছবি: এএফপি

লেবানন ও ইসরায়েলের বেসামরিক প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতিত্বে নাকোউরায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এটি চার দশকের বেশি সময়ের মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার প্রথম সরাসরি আলোচনার সূচনা। খবর আল জাজিরার

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম গতকাল বুধবার বলেছেন, বৈরুত নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়ের বাইরে আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি কোনো শান্তি আলোচনা নয় এবং সম্পর্ক ‘স্বাভাবিকীকরণ শান্তির প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।’ তিনি বলেন, এই আলোচনা শুধু ‘শত্রুতা বন্ধ করা’, ‘লেবাননের জিম্মিদের মুক্তি’ এবং লেবাননের ভূখণ্ড থেকে ‘ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার’-এর লক্ষ্যে করা হয়েছে।

সালাম জানান, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা ইসরায়েলের ১৯৬৭ সালে দখল করা অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণের প্রস্তাব দেয় এবং ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো পৃথক শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই।

তিনি বলেন, বেসামরিক দূতদের অংশগ্রহণ ‘উত্তেজনা কমাতে’ সাহায্য করতে পারে। এ সময় তিনি সম্প্রতি ইসরায়েলের মারাত্মক বিমান হামলা ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার স্পষ্ট লক্ষণ বলেও উল্লেখ করেন।

কমিটি ব্লু লাইন (Blue Line) বরাবর (লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যবর্তী সীমান্ত) প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছে। পরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বেসামরিক দূতদের সংযোজনকে ‘স্থায়ী বেসামরিক ও সামরিক সংলাপের’ মাধ্যমে প্রক্রিয়াটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে কমিটি দীর্ঘদিন ধরে অস্থির এই সীমান্ত বরাবর "শান্তি বজায় রাখতে" আশা করছে।

যুক্তরাষ্ট্র এক মাস ধরে উভয় পক্ষকে শুধু ২০০৪ সালের ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি তদারকি করার বাইরে কমিটির পরিধি প্রসারিত করার জন্য অনুরোধ করে আসছে। গত মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী আক্রান্ত হওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যে এই সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।

ইসরায়েল লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব হামলার বৈধতা দেওয়ার জন্য সাধারণত তারা বলে যে তারা হিজবুল্লাহর সদস্য ও স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে সরে আসার কথা থাকলেও তারা দক্ষিণের পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন রেখেছে।

ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেড্রোসিয়ান সাংবাদিকদের একটি অনলাইন ব্রিফিংয়ে বুধবারের বৈঠকটিকে ‘একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন।

বেড্রোসিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এই সরাসরি বৈঠকটি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দেওয়ার প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেমন বলেছেন, আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অনন্য সুযোগ রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত