Ajker Patrika

পিটিআইয়ের ভাগ্য নির্ধারণ ৯০ দিন পর, ‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচি ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৭: ০৭
ইমরান খানের দল ৯০ দিনের ‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান খানের দল ৯০ দিনের ‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশজুড়ে ৯০ দিনের ‘ডু অর ডাই’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। কারাবন্দী ইমরান খানের মুক্তি ও সরকারের একপেশে নীতির বিরোধিতা করে এই আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন দলের নেতা ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর। তিনি জানিয়েছেন, পিটিআই পাকিস্তানে রাজনীতি করবে কি না, তা-ও নির্ধারিত হবে এই ৯০ দিন পর।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবরে বলা হয়েছে, আলী আমিন গান্দাপুর যেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের ঘোষিত দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির পথেই বাধা হয়ে দাঁড়ালেন। ইমরান খানের কারাবন্দিত্বের দুই বছরপূর্তিতে ৫ আগস্ট যে চূড়ান্ত আন্দোলনের কথা ছিল, তার পরিকল্পনাতেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে গান্দাপুরের বক্তব্যে।

গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পিটিআই নেতারা যখন আন্দোলনের রূপরেখা তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছিল, ঠিক তখনই গান্দাপুর জানান, তিনি সরকারের ওপর ‘চূড়ান্ত চাপ’ সৃষ্টির জন্য ৯০ দিনের এক নতুন সময়সীমা ঠিক করেছেন। তাঁর এই ঘোষণা উপস্থিত নেতাদের মাঝেও বিস্ময় ছড়ায়।

লাহোরে ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বিবি বুশরার মুক্তির দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের সূচনা উপলক্ষে পিটিআই নেতারা যখন একত্র হয়েছিলেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী গান্দাপুর বলেন, এই ৯০ দিনের কাউন্টডাউন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। তাঁর বক্তব্যে এতটাই বিভ্রান্তি তৈরি হয় যে, অনেক কর্মীই বুঝতে পারেননি ৫ আগস্টের প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত হয়ে গেল নাকি এটা নতুন পরিকল্পনারই অংশ?

সংবাদ সম্মেলনে গান্দাপুর বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন গতকাল রাত থেকেই শুরু হয়ে গেছে এবং এটি আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে।’ তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ বলেননি। তবে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক উপায়ে ৫ আগস্টের মধ্যেই আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ নেওয়া হবে।

তাঁর ভাষায়, ‘এই ৯০ দিনের মধ্যেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আমরা এই দেশে আদৌ রাজনীতি করব কি না...যদি রাজনৈতিক পথে কোনো ফল না আসে, তাহলে পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা জানিয়ে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন ‘‘ডু অর ডাই’’ অবস্থায় এসেছি। এই দেশে আর কোনো রাজনীতি নেই, কাজেই রাজনীতি করেও লাভ নেই।’

পিটিআইয়ের পাঞ্জাব প্রদেশের প্রধান সংগঠক আলিয়া হামজা মালিক এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না। যদিও পিটিআই মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা বলেন, তিনি ‘ব্যস্ত’ ছিলেন। তবে এর জবাবে এক টুইটে আলিয়া বলেন, ‘আমি নিজেই জানি না, গত দুই দিন কোথায় ব্যস্ত ছিলাম।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘ইমরান খানের মুক্তির জন্য কী কৌশল ঘোষণা করা হলো? কোথা থেকে, কীভাবে এই আন্দোলন শুরু হবে? ৫ আগস্টের পরিকল্পনাকে কে পাল্টে ৯০ দিনের কথা বলল?’

অনেক কর্মী মনে করছেন, এভাবে তাঁরা যেন ৫ আগস্টের কর্মসূচি থেকে অব্যাহতি পেয়ে গেছেন। আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব এখনো স্পষ্ট কিছু বলছে না কেন, যখন ৫ আগস্ট মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাকি। যদিও সম্প্রতি ইমরান খানের অফিশিয়াল এক্সে অ্যাকাউন্ট থেকে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছিল, তারপরও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী ফের সেনা কর্তৃপক্ষকে সংলাপের প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন স্পষ্ট টাইমলাইন আর লক্ষ্যের ভিত্তিতে নিজের পথেই হাঁটব—তার আগে সেনাবাহিনী চাইলে আমাদের সঙ্গে খোলামেলা সংলাপে বসতে পারে।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘ক্ষমতাধর মহল নিজেরাই রাজনীতি করছে। এস্টাবলিশমেন্টের নামে যাঁরা বসে আছেন, তাঁরা পুরো ব্যবস্থাটাই দখল করে নিয়েছেন। তাঁরা চাইলে নিজেদের পছন্দের (পুতুল) রাজনীতিকদের পাশে বসিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু আমাদের আর সময় নষ্ট করে তাঁদের সঙ্গে বসার ইচ্ছা নেই, কারণ, ক্ষমতা তো তাঁদের হাতে নেই।’

তিনি আরও বলেন, পিটিআই এত দিন ধরে যেসব সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আসছে, তার কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত