Ajker Patrika

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা: নিহত ৬১ হাজার ছাড়াল, অনাহারে মৃত্যু ১৮৮ জনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজায় খাবারের আশায় শূন্য পাত্র হাতে তাকিয়ে ফিলিস্তিনি শিশুরা। ছবি: আনাদুলু
গাজায় খাবারের আশায় শূন্য পাত্র হাতে তাকিয়ে ফিলিস্তিনি শিশুরা। ছবি: আনাদুলু

ইসরায়েলের লাগাতার গণহত্যামূলক হামলায় গাজা উপত্যকায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬১ হাজার ২০ জন, যার মধ্যে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ১৮৮ জনের। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতলে ৮৭টি মরদেহ পৌঁছেছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৬৪৪ জন। ফলে পুরো যুদ্ধকালীন সময়জুড়ে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৭১ জনে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত এক দিনে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও আটজন মারা গেছেন। এ নিয়ে অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৮ জনে। এসবের মধ্যে ৯৪ জনই শিশু।

মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এই ধরনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৫২ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ৩৫২ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫৬৮ জন, আর আহত হয়েছেন ১১ হাজার ২৩০ জনেরও বেশি।

শুক্রবার জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে বলেছে, গাজায় শিশুদের মৃত্যু হার “অভূতপূর্ব” পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউনিসেফ বলছে, ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ ও আরোপিত অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি, চিকিৎসাসহ সব ধরনের জরুরি সেবা ভেঙে পড়েছে। ফলে অপুষ্টি ও অনাহারে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে শিশু ও নবজাতকরা।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) বলছে, গাজা উপত্যকার প্রতি চারজনের মধ্যে একজন চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ নারী ও শিশু গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি কার্যকর হয়েছিল, তা ১৮ মার্চে ভেঙে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকে নতুন করে নিহত হয়েছেন আরও ৯ হাজার ৫১৯ জন, আহত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৬৩০ জন।

আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ

ইসরায়েলের এ গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলেছে বিচার কার্যক্রমও। গত বছরের নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে বিচার চলছে।

গাজার মানবিক পরিস্থিতি এখন ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ সংকট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিনই যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করলেও থামছে না ইসরায়েলের আগ্রাসন। ফিলিস্তিনের জনগণের সামনে এখন একমাত্র চিত্র—রক্ত, ধ্বংস আর অনিশ্চয়তা।

তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে এনসিপির শীর্ষ ৫ নেতা হঠাৎ কক্সবাজারে কেন

কক্সবাজারে পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠকের খবর, ‘গুজব’ বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জুলাই ঘোষণাপত্র: গণ-অভ্যুত্থানের দলিলে যা যা রয়েছে

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের শুল্ক অনেক বাড়িয়ে দেব: ট্রাম্পের হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটন ভিসা পেতে লাগতে পারে ১১ লাখ টাকার জামানত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত