অনলাইন ডেস্ক
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে রাজনৈতিক চুক্তির খুব কাছাকাছি ওয়াশিংটন ও তেহরান। ইরানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থাটিকে তাঁরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি জব্দকৃত অর্থ ছাড় করে এবং বেসামরিক ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত করতে পারে তেহরান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের এই প্রস্তাবে যদি যুক্তরাষ্ট্র রাজি হয় তাহলে শিগগিরই একটি সমঝোতা হতে পারে। তবে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যদি এই চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়, তাহলে এক বছরের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ রাখবে তেহরান। এরই মধ্যে তাদের কাছে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম আছে, তার কিছু অংশ বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে কিংবা জ্বালানিতে রূপান্তরিত করা হবে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে এই সাময়িক বিরতি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পরস্পরবিরোধী ‘রেড লাইন’ নিয়ে অচলাবস্থার সমাধানে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন চলে আসা বিরোধ নিরসনে গত মাস থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনার টেবিলে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনার শুরু থেকেই ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের ওপর জোর দিয়ে আসছেন। তাঁদের ভাষ্য—২০১৫ সালের ব্যর্থ পরমাণু চুক্তির পরিবর্তে ইরানের সঙ্গে যদি নতুন কোনো চুক্তি হয়, তবে সেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।
ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য পথ হিসেবে দেখে। অন্যদিকে, ইরান বহুবার দাবি করেছে, তাদের এমন কোনো অভিপ্রায় নেই। তারা পরমাণু শক্তিকে ব্যবহার করতে চায় শুধু বেসামরিক উদ্দেশ্যে। ওয়াশিংটনের সমৃদ্ধকরণ পরিত্যাগের দাবিকে তারা প্রকাশ্যেই প্রত্যাখ্যান করেছে, একে তারা নিজেদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করে।
ওয়াশিংটনে এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ইরানি সূত্রগুলো যে প্রস্তাবের কথা বলছে, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার টেবিলে তোলা হয়নি। এ প্রতিবেদন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফারস জানিয়েছে, ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি রয়টার্সের প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন, ‘ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ একটি অপ্রতিরোধ্য নীতিগত বিষয়।’
অবশ্য ইরানি সূত্রগুলোও বলছে, তেহরান কোনোভাবেই ট্রাম্প প্রশাসনের শর্ত মেনে তাদের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করবে না বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে না। এসব দাবি ইরানের জন্য অগ্রহণযোগ্য, বরং তাদের শর্ত হলো—যুক্তরাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করতে হবে যে ইরান একটি পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সার্বভৌম অধিকার রাখে।
একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে যে তেল বিক্রির অর্থ আটকে আছে, বিশেষ করে কাতারে জমাকৃত ছয় বিলিয়ন ডলার—তা অবমুক্ত করার অনুমোদন দিতে হবে। এই দুটি বিষয়ই তেহরানের জন্য যেকোনো রাজনৈতিক সমঝোতার শর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি বন্দিবিনিময় চুক্তির পর কাতারের একটি ব্যাংকে জমাকৃত ইরানের ছয় বিলিয়ন ডলার তহবিল মুক্ত করা হলেও, তেহরান এখনো এই অর্থ হাতে পায়নি। ইরানি সূত্র জানায়, ‘তেহরান চায় এই অর্থ কোনো শর্ত বা সীমাবদ্ধতা ছাড়া সরাসরি ইরানে স্থানান্তর করা হোক। এর জন্য যদি কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হয়, সেটাও করা উচিত।’
সূত্রগুলো আরও জানায়, প্রস্তাবিত রাজনৈতিক চুক্তিটি পরমাণু ইস্যুতে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে সফল হওয়ার জন্য আরও কিছু সময় দেবে, যাতে ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী চুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় জটিল বিষয়গুলোর সমাধান সম্ভব হয়। দ্বিতীয় এক সূত্র বলেছে, ‘এটি কোনো অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি নয়। বরং এটি একটি রাজনৈতিক সমঝোতা, যার মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হবে—দুই পক্ষই শান্তিতে আগ্রহী।’
অবশ্য ইরানের এমন প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হবে কি না, তা নিয়ে বেশ সন্দিহান পশ্চিমা কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বলছেন—ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র একটি সাময়িক রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছালেও ইউরোপীয় দেশগুলো তখনই এতে সমর্থন দেবে, যখন তারা নিশ্চিত হতে পারবে যে ইরান সত্যিই তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইরানের মুখের কথায় নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে এর সত্যতা নিশ্চিত হতে চাইবে তারা।
এ ক্ষেত্রে, জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা—আইএইএকে দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে ইরান কী পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে এবং তারা কার্যত তাদের প্রতিশ্রুতি মানছে কি না। তাই ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, যাচাইযোগ্য উদ্যোগ ছাড়া ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সাময়িক রাজনৈতিক চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বিষয়ে নমনীয় হলেও নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেওয়ার বিষয়টি এখনো একটি বড় বাধা। যুক্তরাষ্ট্র চায়, পরমাণু-সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞাগুলো ধাপে ধাপে প্রত্যাহার হোক, অন্যদিকে ইরান দাবি করছে—তাদের তেলনির্ভর অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এমন সব মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে তুলে নিতে হবে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর নতুন যেসব কড়াকড়ি ও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত করলে কি সেসব কিছুটা শিথিল হতে পারে কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে ইরানি একটি সূত্র রয়টার্সকে জানান, পাঁচ দফায় এসব নিয়েই আলোচনা হয়েছে যে নিষেধাজ্ঞা কীভাবে শিথিল করা যায়।
২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যেমন—কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং জাতীয় তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ওয়াশিংটনের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বা অস্ত্র সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এর ফলে ইরানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্ব বর্তমানে একাধিক সংকটে জর্জরিত। অঞ্চলটিতে বিদ্যুৎ ও পানি ঘাটতি, মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে আঞ্চলিক মিত্র গোষ্ঠীগুলোর ক্ষতি এবং ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। ট্রাম্পের কঠোর নীতির কারণে আরও তীব্র হয়েছে পরিস্থিতি।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর, তিনি আবার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কৌশলকে কার্যকর করেছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেছেন এবং সরাসরি হুমকি দিয়েছেন যে যদি চলমান আলোচনায় চুক্তি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপও নিতে পারে।
ইরানি কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এবং ধর্মীয় শাসনব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে নতুন কোনো চুক্তিতে পৌঁছানোই এখন তাদের কাছে সবচেয়ে ভালো বিকল্প। বিগত বছরগুলোতে ইরানে সামাজিক দমন-পীড়ন ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে, যার জবাবে সরকার কঠোর দমননীতি অনুসরণ করেছে। তবে এসব আন্দোলন মূল স্পষ্ট করেছে যে ইরান সরকার গণবিক্ষোভের মুখে নাজুক হয়ে পড়েছে। ফলস্বরূপ ইরানকে পশ্চিমা দেশগুলোর নতুন মানবাধিকারভিত্তিক নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে রাজনৈতিক চুক্তির খুব কাছাকাছি ওয়াশিংটন ও তেহরান। ইরানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থাটিকে তাঁরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি জব্দকৃত অর্থ ছাড় করে এবং বেসামরিক ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত করতে পারে তেহরান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের এই প্রস্তাবে যদি যুক্তরাষ্ট্র রাজি হয় তাহলে শিগগিরই একটি সমঝোতা হতে পারে। তবে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যদি এই চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়, তাহলে এক বছরের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ রাখবে তেহরান। এরই মধ্যে তাদের কাছে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম আছে, তার কিছু অংশ বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে কিংবা জ্বালানিতে রূপান্তরিত করা হবে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে এই সাময়িক বিরতি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পরস্পরবিরোধী ‘রেড লাইন’ নিয়ে অচলাবস্থার সমাধানে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন চলে আসা বিরোধ নিরসনে গত মাস থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনার টেবিলে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনার শুরু থেকেই ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের ওপর জোর দিয়ে আসছেন। তাঁদের ভাষ্য—২০১৫ সালের ব্যর্থ পরমাণু চুক্তির পরিবর্তে ইরানের সঙ্গে যদি নতুন কোনো চুক্তি হয়, তবে সেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।
ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য পথ হিসেবে দেখে। অন্যদিকে, ইরান বহুবার দাবি করেছে, তাদের এমন কোনো অভিপ্রায় নেই। তারা পরমাণু শক্তিকে ব্যবহার করতে চায় শুধু বেসামরিক উদ্দেশ্যে। ওয়াশিংটনের সমৃদ্ধকরণ পরিত্যাগের দাবিকে তারা প্রকাশ্যেই প্রত্যাখ্যান করেছে, একে তারা নিজেদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করে।
ওয়াশিংটনে এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ইরানি সূত্রগুলো যে প্রস্তাবের কথা বলছে, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার টেবিলে তোলা হয়নি। এ প্রতিবেদন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফারস জানিয়েছে, ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি রয়টার্সের প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন, ‘ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ একটি অপ্রতিরোধ্য নীতিগত বিষয়।’
অবশ্য ইরানি সূত্রগুলোও বলছে, তেহরান কোনোভাবেই ট্রাম্প প্রশাসনের শর্ত মেনে তাদের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করবে না বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে না। এসব দাবি ইরানের জন্য অগ্রহণযোগ্য, বরং তাদের শর্ত হলো—যুক্তরাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করতে হবে যে ইরান একটি পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সার্বভৌম অধিকার রাখে।
একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে যে তেল বিক্রির অর্থ আটকে আছে, বিশেষ করে কাতারে জমাকৃত ছয় বিলিয়ন ডলার—তা অবমুক্ত করার অনুমোদন দিতে হবে। এই দুটি বিষয়ই তেহরানের জন্য যেকোনো রাজনৈতিক সমঝোতার শর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি বন্দিবিনিময় চুক্তির পর কাতারের একটি ব্যাংকে জমাকৃত ইরানের ছয় বিলিয়ন ডলার তহবিল মুক্ত করা হলেও, তেহরান এখনো এই অর্থ হাতে পায়নি। ইরানি সূত্র জানায়, ‘তেহরান চায় এই অর্থ কোনো শর্ত বা সীমাবদ্ধতা ছাড়া সরাসরি ইরানে স্থানান্তর করা হোক। এর জন্য যদি কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হয়, সেটাও করা উচিত।’
সূত্রগুলো আরও জানায়, প্রস্তাবিত রাজনৈতিক চুক্তিটি পরমাণু ইস্যুতে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে সফল হওয়ার জন্য আরও কিছু সময় দেবে, যাতে ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী চুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় জটিল বিষয়গুলোর সমাধান সম্ভব হয়। দ্বিতীয় এক সূত্র বলেছে, ‘এটি কোনো অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি নয়। বরং এটি একটি রাজনৈতিক সমঝোতা, যার মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হবে—দুই পক্ষই শান্তিতে আগ্রহী।’
অবশ্য ইরানের এমন প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হবে কি না, তা নিয়ে বেশ সন্দিহান পশ্চিমা কূটনীতিকেরা। পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বলছেন—ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র একটি সাময়িক রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছালেও ইউরোপীয় দেশগুলো তখনই এতে সমর্থন দেবে, যখন তারা নিশ্চিত হতে পারবে যে ইরান সত্যিই তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইরানের মুখের কথায় নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে এর সত্যতা নিশ্চিত হতে চাইবে তারা।
এ ক্ষেত্রে, জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা—আইএইএকে দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে ইরান কী পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে এবং তারা কার্যত তাদের প্রতিশ্রুতি মানছে কি না। তাই ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, যাচাইযোগ্য উদ্যোগ ছাড়া ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সাময়িক রাজনৈতিক চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বিষয়ে নমনীয় হলেও নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেওয়ার বিষয়টি এখনো একটি বড় বাধা। যুক্তরাষ্ট্র চায়, পরমাণু-সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞাগুলো ধাপে ধাপে প্রত্যাহার হোক, অন্যদিকে ইরান দাবি করছে—তাদের তেলনির্ভর অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এমন সব মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে তুলে নিতে হবে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর নতুন যেসব কড়াকড়ি ও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত করলে কি সেসব কিছুটা শিথিল হতে পারে কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে ইরানি একটি সূত্র রয়টার্সকে জানান, পাঁচ দফায় এসব নিয়েই আলোচনা হয়েছে যে নিষেধাজ্ঞা কীভাবে শিথিল করা যায়।
২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যেমন—কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং জাতীয় তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ওয়াশিংটনের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বা অস্ত্র সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এর ফলে ইরানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্ব বর্তমানে একাধিক সংকটে জর্জরিত। অঞ্চলটিতে বিদ্যুৎ ও পানি ঘাটতি, মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে আঞ্চলিক মিত্র গোষ্ঠীগুলোর ক্ষতি এবং ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। ট্রাম্পের কঠোর নীতির কারণে আরও তীব্র হয়েছে পরিস্থিতি।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর, তিনি আবার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ কৌশলকে কার্যকর করেছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেছেন এবং সরাসরি হুমকি দিয়েছেন যে যদি চলমান আলোচনায় চুক্তি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপও নিতে পারে।
ইরানি কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এবং ধর্মীয় শাসনব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে নতুন কোনো চুক্তিতে পৌঁছানোই এখন তাদের কাছে সবচেয়ে ভালো বিকল্প। বিগত বছরগুলোতে ইরানে সামাজিক দমন-পীড়ন ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে, যার জবাবে সরকার কঠোর দমননীতি অনুসরণ করেছে। তবে এসব আন্দোলন মূল স্পষ্ট করেছে যে ইরান সরকার গণবিক্ষোভের মুখে নাজুক হয়ে পড়েছে। ফলস্বরূপ ইরানকে পশ্চিমা দেশগুলোর নতুন মানবাধিকারভিত্তিক নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে একটি ট্রাক উল্টে প্রায় ২৫ কোটি মৌমাছি পালিয়ে গেছে। শুক্রবার (৩০ মে) এই ঘটনার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জনগণকে মৌমাছির ঝাঁক এড়িয়ে চলার জন্য সতর্ক করেছে।
১২ ঘণ্টা আগেআগামীকালের এই নির্বাচন ঘিরে অনেক প্রশ্নের ঘুরপাক খাচ্ছে। যেমন ব্যালটে কতজনের নাম থাকবে? শত শত, এমনকি হাজার হাজার অপরিচিত ব্যক্তি এসব পদের জন্য লড়তে পারেন। ভোটাররা কি এত প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করবেন, নাকি রাজনৈতিক দলগুলো শুধু তাদের পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা সমর্থকদের হাতে তুলে দেবে?
১৩ ঘণ্টা আগেঅপারেশন সিঁদুরের প্রায় তিন সপ্তাহ পর ভারত এই প্রথম স্বীকার করেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের ‘নির্দিষ্টসংখ্যক’ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। তবে ঠিক কয়টি বা কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এ বিষয়ে কিছু জানায়নি ভারত। চার দিনের এই সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধের কাছাকাছি যায়নি বলেও দাবি করে তারা।
১৫ ঘণ্টা আগেইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধের দ্রুত সমাধান না হলে পশ্চিমা দেশগুলো গোটা বিশ্বের কাছে তাদের বিশ্বাস হারাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি এই সংঘাত নিরসনে ব্যর্থ হয়, তবে তারা দ্বিচারিতার অভিযোগেও অভিযুক্ত হতে পারে। ফলে বিশ্বের কাছে আস্থার সংকটে
১৬ ঘণ্টা আগে