Ajker Patrika

ভূমিকম্পের সময় মা-বাবা নাকি ছেলে বাঁচবে—সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তায়েবকে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯: ২২
Thumbnail image

মরক্কোর অ্যাটলাস পার্বত্য অঞ্চলের ছোট্ট একটি গ্রামে স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে বসবাস করেন মেষ পালক তায়েব আইত ইগেনবাজ। গত শুক্রবার রাতে দেশটিতে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের সময় তাঁকে মর্মান্তিক এক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

এ বিষয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদিকে মা-বাবা অন্যদিকে ১১ বছর বয়সী সন্তান। ভূমিকম্পের সময়টিতে এদের মধ্যে কাকে বাঁচাতে ছুটে যাবেন—সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তায়েবকে।

মরক্কোর ইতিহাসে ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ওই ভূমিকম্পে পাথর দিয়ে নির্মিত তায়েবের বাড়িটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। 

বিবিসির প্রতিবেদককে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তায়েব বলেন, ‘সবকিছুই খুব দ্রুত ঘটে গেছে। যখন ভূমিকম্প শুরু হয়, আমরা দরজার দিকে ছুটে যাই। আমার বাবা ঘুমাচ্ছিলেন এবং মাকে চিৎকার করে বাইরে বেরিয়ে আসতে বলি। কিন্তু আমার বাবাকে ফেলে তিনি বাইরে আসেননি।’

তায়েব জানান, ঘটনার মুহূর্তটিতে তিনি দেখতে পান—স্ত্রী আর কন্যা বেরিয়ে আসতে পারলেও তাঁর ১১ বছর বয়সী ছেলে তখনো বাড়ির ভেতরে। এ অবস্থায় তিনি আবারও বাড়ির ভেতরের দিকে ছুটে যান এবং দেখতে পান তাঁর একদিকে তাঁর মা-বাবা অন্যদিকে তাঁর ছেলে আদম ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আটকা পড়েছে। ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল আদম। ঠিক এই মুহূর্তটিতে জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্তটি নিতে হয়েছে তায়েবকে। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে যান তিনি। পাগলের মতো পাথর আর কংক্রিট সরিয়ে আদমকে বের করে আনেন। 

ছেলেকে উদ্ধারের পরই মা-বাবার দিকে ছুটে যান তায়েব। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বড় একটি স্লাবের নিচে চাপা পড়েছিলেন তায়েবের মা-বাবা। 

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তায়েব। অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি বলেন, ‘মা, বাবা ও ছেলের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হয়েছে আমাকে। আমি আমার মা-বাবাকে কোনো সাহায্য করতে পরিনি। কারণ, তাঁদের শরীরের অর্ধেক অংশ একটি দেয়ালের নিচে চাপা পড়েছিল। এটা খুব দুঃখজনক। আমি দেখছিলাম, আমার মা-বাবা মরে যাচ্ছে।’ 

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মরক্কোর ভূমিকম্পে আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত