Ajker Patrika

নতুন করে ‘কার্যকর’ যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ফের ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৬
ফাইল ছবি। ছবি: এএফপি
ফাইল ছবি। ছবি: এএফপি

এক দিন আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা চালিয়ে প্রায় ১০০ জনকে হত্যা করে ইসরায়েল। তারপর তারাই আবার যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর’ করার ঘোষণা দেয়। এবার সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় আবারও হামলা চালিয়েছে। এতে দুজন নিহত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, উত্তর গাজায় নতুন করে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, যদিও তারা দাবি করেছে—সংবেদনশীল যুদ্ধবিরতি ‘আবারও কার্যকর’ হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বোমাবর্ষণের পর থেকেই এই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। সেই হামলায় অন্তত ১০৪ জন নিহত হয়।

এদিকে মঙ্গলবারের হামলার পর ইসরায়েলের দাবি করা ‘কার্যকর হওয়া’ যুদ্ধবিরতি ভেঙে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গাজার বাইত লাহিয়ায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত দুজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-শিফা হাসপাতাল। ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল একটি অস্ত্রভান্ডার, যা সেনাদের জন্য ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ হয়ে উঠেছিল।

এই হামলায় গাজার নাজুক যুদ্ধবিরতি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার রাতের ভয়াবহ বোমাবর্ষণ ছিল ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে তীব্র হামলা। দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় মঙ্গলবার এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় ‘প্রচণ্ড প্রতিশোধমূলক হামলা’ চালানোর নির্দেশ দেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ওই হামলায় ১০৪ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলায় বহু সিনিয়র হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। পরে তারা ঘোষণা দেয়, বুধবার মধ্যাহ্ন থেকে আবারও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক হামলার পরও যুদ্ধবিরতি ‘বিপদের মুখে নেই’। আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী কাতার এই সহিংসতায় হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ, বিশেষ করে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজা শহর থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, নতুন করে হামলা শুরু হওয়ায় দুই বছরের যুদ্ধের ক্লান্ত জনগণের মনে আবারও ভয় ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্য শান্তির যে আশা দেখা দিয়েছিল, তা এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে। অনেকের জন্য এটা গণহত্যার শুরুর দিকের সেই ভয়ংকর দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, যখন বিশাল বোমার আঘাতে গাজা শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।’

শাতি শরণার্থীশিবিরের একটি স্কুলে সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত মা খাদিজা আল-হুসনি বলেন, ‘মানুষ একটু করে শ্বাস নিচ্ছিল, আবার জীবন গুছিয়ে নিতে চাইছিল, ঠিক তখনই এই হামলা শুরু হলো।’ তিনি বলেন, ‘এটা অপরাধ। হয় যুদ্ধবিরতি থাকবে, নয় যুদ্ধ—দুটি একসঙ্গে হতে পারে না। শিশুরা রাতভর ঘুমাতে পারেনি; তারা ভেবেছিল যুদ্ধ শেষ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...