Ajker Patrika

স্টারলিংকের ইন্টারনেট চালু হবে এমিরেটসের বিমানগুলোতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উড়োজাহাজে স্টারলিংক ইন্টারনেটের যন্ত্র স্থাপন করছেন এমিরেটসের একজন ইঞ্জিনিয়ার। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
উড়োজাহাজে স্টারলিংক ইন্টারনেটের যন্ত্র স্থাপন করছেন এমিরেটসের একজন ইঞ্জিনিয়ার। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এমিরেটস তাদের বহরে থাকা সব বিমানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা যুক্ত করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের ফলে যাত্রীরা আকাশপথে উড়ন্ত বিমানের মধ্যেই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন ভূমির মতো দ্রুতগতির ইন্টারনেট। সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুবাই এয়ার শোর প্রথম দিনেই এমিরেটস এই ঘোষণা দিয়েছে।

আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ন্যাশনাল’ জানিয়েছে, এই মাস থেকেই এমিরেটস তাদের ওয়াইড-বডি বিমানগুলোতে স্টারলিংকের প্রযুক্তি স্থাপন শুরু করবে। ২৩ নভেম্বর একটি বোয়িং ৭৭৭ ফ্লাইটে প্রথমবার এই সেবা চালু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালের মধ্যভাগে মোট ২৩২টি বোয়িং ও এয়ারবাস বিমানে স্টারলিংক স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে। মাসে প্রায় ১৪টি বিমান এই সেবার আওতায় আসবে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। এ ছাড়া ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বের প্রথম স্টারলিংক-সজ্জিত এয়ারবাস এ৩৮০ বিমানও যাত্রী পরিবহনে নামবে।

এমিরেটসের প্রেসিডেন্ট টিম ক্লার্ক এই কার্যক্রমকে ‘গ্রাহকসেবায় আরেকটি মাইলফলক’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা বিশ্বের দ্রুততম ইন-ফ্লাইট ওয়াই-ফাই নিয়ে আসছি। এতে যাত্রীরা আকাশে থেকেও নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারবেন, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন, কিংবা ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন।’

নিরবচ্ছিন্ন মান বজায় রাখতে এমিরেটস তাদের পুনর্গঠন কর্মসূচিতে মোট ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বোয়িং ও এয়ারবাসের পুরোনো বিমানগুলোতে আধুনিক কানেকটিভিটি এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন করা হবে। ক্লার্ক বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি যাত্রী, প্রতিটি রুটে, একই মানের অভিজ্ঞতা পান। এ জন্যই আমরা বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করছি।’

সংযুক্ত আরব আমিরাত এখনো স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইট সেবার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন ঘোষণা না করলেও এমিরেটস জানিয়েছে, উড়োজাহাজ উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই যাত্রীরা বিনামূল্যের এই সেবাটি ব্যবহার করতে পারবেন। স্টারলিংক ইতিমধ্যেই কাতার, ওমান, বাহরাইন, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চালু হয়েছে এবং লেবাননেও অনুমোদন পেয়েছে।

কাতার এয়ারওয়েজ ২০২৪ সালের অক্টোবরেই তাদের বোয়িং ৭৭৭ বহরে স্টারলিংক সেবা চালু করে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম হিসেবে নজর কাড়ে। এবার এমিরেটস যুক্ত হওয়ায় আকাশপথে উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার আরও জনপ্রিয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্টারলিংক যুক্ত হওয়ার ফলে এমিরেটস যাত্রীরা ফ্লাইট চলাকালে ভিডিও কনটেন্ট স্ট্রিমিং, অনলাইন গেমিং, ভয়েস কল, অফিসের কাজ এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার—সবই এক ক্লিকেই করতে পারবেন। এই সেবার জন্য কোনো স্কাইওয়ার্ডস সদস্যপদ লাগবে না।

বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক বিমান সংস্থা এমিরেটস সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তাদের কর-পরবর্তী মুনাফা ১৩ শতাংশ বেড়ে ৯.৯ বিলিয়ন দিরহামে পৌঁছেছে। সংস্থাটি আশা করছে, পুরো অর্থবছর জুড়েই ভ্রমণ চাহিদা চাঙা থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ‘গরুর মাংস’ সন্দেহে বিয়ে বাড়িতে সংঘর্ষ—ফরেনসিক পরীক্ষায় গেল নমুনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের আলিগড়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে খাবারের কাউন্টারে রাখা ‘বিফ কারি’ লেখা একটি লেবেলকে কেন্দ্র করে রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। লেবেল দেখে আকাশ ও গৌরব কুমার নামে দুই অতিথি আপত্তি জানিয়ে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিয়ের আয়োজকদের সঙ্গে তাঁদের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের পুলিশ ও ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেন এবং এটিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠান।

সার্কেল অফিসার সর্বম সিং ভারতের টেলিগ্রাফ পত্রিকাকে জানান, ঘটনায় ক্যাটারারসহ সংশ্লিষ্ট তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। পরে রাতেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘ফরেনসিক রিপোর্টে মাংসের ধরন নিশ্চিত হলে তবেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।’

এদিকে ক্যাটারারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন আপত্তি জানানো গৌরব কুমার। তিনি দাবি করেছেন—ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশেই ইচ্ছাকৃতভাবে ওই লেবেল ব্যবহার করা হয়েছিল। অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ‘বিফ’ শব্দটি অনেক সময় মহিষের মাংস (ভারতে খাবার হিসেবে আইনত বৈধ) এবং গরুর মাংস (যা নিষিদ্ধ) উভয় অর্থে ব্যবহৃত হয়। এই বিভ্রান্তি থেকে প্রায়ই ওই অঞ্চলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে বিজেপি কর্মীরা স্থানীয় সিভিল লাইন্স থানায় গিয়ে জড়ো হয় এবং কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানায়। এ সময় বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) নেতা সালমান শহিদও থানায় উপস্থিত হন। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি কর্মীরা কোনো ব্যাখ্যা না শুনে ‘অতিরিক্ত প্রভাব বিস্তারের’ চেষ্টা করেছে এবং শুরু থেকেই বিষয়টিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে ব্যাখ্যা করা সত্ত্বেও তারা উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে এবং ফরেনসিক রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জর্জিয়ায় বিক্ষোভকারীদের দমনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত বছরের ২৮ নভেম্বর জর্জিয়া সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের প্রক্রিয়া স্থগিত করলে রাজধানী তিবিলিসিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ছবি: এএফপি
গত বছরের ২৮ নভেম্বর জর্জিয়া সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের প্রক্রিয়া স্থগিত করলে রাজধানী তিবিলিসিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ছবি: এএফপি

গত বছর সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে জর্জিয়ার কর্তৃপক্ষ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে বিবিসির অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাসায়নিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ও দাঙ্গা পুলিশের অভ্যন্তরীণ সূত্রের মতে, পদার্থটি ছিল ‘ক্যামাইট’। এর রাসায়নিক নাম ব্রোমোবেনজিল সায়ানাইড।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর জর্জিয়া সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের প্রক্রিয়া স্থগিতের ঘোষণা দিলে রাজধানী তিবিলিসির রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করা হলে পরবর্তী সময়ে তারা তীব্র শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হয় বলে জানা গেছে। বিক্ষোভকারীরা জানান, জলকামান থেকে ছিটানো পানি গায়ে পড়ার পর তীব্র জ্বালা শুরু হয়। সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করলে সেটা আরও বেশি খারাপ হতে থাকে।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকে কয়েক সপ্তাহ বা ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে শ্বাসকষ্ট, কাশি, বমি, মাথাব্যথা, ক্লান্তিসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভুগেছে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. কনস্তানতিন চাকুনাশভিলি নিজেও এই পানির সংস্পর্শে এসেছিলেন। তিনি জানান, তাঁর ত্বক কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড জ্বলেছে। ধোয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে।

এটি নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি জরিপ চালান। প্রায় ৩৫০ জন সেখানে সাড়া দেয়। তাদের প্রায় অর্ধেকই জানায়, ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে তাদের এই সমস্যা ছিল।

বিবিসি তাদের অনুসন্ধানের জন্য দাঙ্গা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং রাসায়নিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞের মতামত নেয়। জর্জিয়ার দাঙ্গা পুলিশের অস্ত্র বিভাগের সাবেক প্রধান লাশা শেরগেলাশভিলি জানান, ২০০৯ সালে তিনি যে রাসায়নিকটি জলকামানে ব্যবহারের জন্য পরীক্ষা করেছিলেন, সেটির প্রভাব ছিল সাধারণ কাঁদানে গ্যাসের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ শক্তিশালী। তিনি এটি ব্যবহার করতে নিষেধ করতে করেছিলেন। কিন্তু কেউ তাঁর কথা শোনেনি।

লাশা শেরগেলাশভিলি বলেন, যদি মেঝেতে এই রাসায়নিক পড়ে, তাহলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেললেও পরবর্তী দুই থেকে তিন দিন সেই এলাকায় থাকা যাবে না।

বিখ্যাত টক্সিকোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ক্রিস্টোফার হলস্টেগে এসব প্রমাণ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করেন, আক্রান্তদের উপসর্গ গুলি ব্রোমোবেনজিল সায়ানাইড (ক্যামাইট) ব্যবহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ক্যামাইট প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল। এর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে এটি ১৯৩০-এর দশকে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয় এবং এর পরিবর্তে সিএস গ্যাস (কাঁদানে গ্যাস) ব্যবহার শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পুলিশের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিকের প্রভাব অস্থায়ী এবং আনুপাতিক হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, আরও নিরাপদ ও প্রচলিত দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণকারী পদার্থ থাকা সত্ত্বেও একটি অপ্রচলিত এবং আরও শক্তিশালী রাসায়নিকের ব্যবহারকে রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক (নির্যাতন-সংক্রান্ত) অ্যালিস এডওয়ার্ডস বলেন, রাসায়নিক ব্যবহার-সংক্রান্ত নিয়মের অভাবেই কেউ কেউ এগুলো ব্যবহার করে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। অপরাধ বিবেচনায় এসব ঘটনার তদন্ত করা উচিত।

তবে জর্জিয়ার ক্ষমতাসীন দল ‘জর্জিয়ান ড্রিম’ বিবিসির এই অনুসন্ধানকে অবাস্তব বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে তারা বিবিসির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মাদুরোকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এক্সিওসের সৌজন্যে
মাদুরোকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এক্সিওসের সৌজন্যে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার কর্তৃত্ববাদী নেতা নিকোলাস মাদুরোকে অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে মাদুরো তা প্রত্যাখ্যান করে নিজের ও ঘনিষ্ঠ মিত্রদের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক এক ফোনালাপে ট্রাম্প এই আলটিমেটাম দেন।

রোববার সাংবাদিকদের কাছে ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের ফোনালাপ হয়েছে। আমি বলব না এটি ভালো হয়েছে নাকি খারাপ হয়েছে, এটি শুধুই একটি ফোনকল ছিল।’

তবে গত ২১ নভেম্বর হওয়া এই ফোনালাপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ভেনেজুয়েলার কেউই এখনো বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

মায়ামি হেরাল্ড নামে আমেরিকান একটি সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার মাদুরোকে একটি ‘স্পষ্ট বার্তা’ দিয়েছিলেন। মায়ামি হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প মাদুরোকে বলেছিলেন, ‘আপনি নিজেকে ও আপনার মিত্রদের রক্ষা করতে পারেন, কিন্তু একটাই শর্ত—আপনাকে এখনই দেশ ছাড়তে হবে।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাকি মাদুরোকে প্রস্তাব দেন, অবিলম্বে পদত্যাগ করলে মাদুরো, তাঁর স্ত্রী ও পুত্রের পালানোর জন্য নিরাপদ পথের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

তবে মাদুরো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। মাদুরো তাঁর পরিবারসহ ঘনিষ্ঠ মিত্রদের জন্য বৈশ্বিক আইনি সুরক্ষার দাবি করেন। তিনি নির্বাচনের কথা বললেও সামরিক বাহিনীর ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার দাবি করেন। অন্যদিকে, ওয়াশিংটন মাদুরোর সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তাঁকে ‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়তে’ বলে।

মায়ামি হেরাল্ড জানিয়েছে, ব্রাজিল, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় প্রথম ফোনালাপটি হয়েছিল। পরে ট্রাম্প যখন ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ‘সম্পূর্ণরূপে বন্ধ’ বলে ঘোষণা করেন, তখন মাদুরো দ্বিতীয়বার ফোনালাপের অনুরোধ জানালেও তাতে কোনো সাড়া পাননি।

এদিকে ট্রাম্পের এই আলটিমেটামের হুমকি বড় আকারের সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে বাস্তবে কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, মাদুরো ও তাঁর মিত্ররা এখনো মার্কিন সামরিক হুমকিকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে মনে করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান—পোপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পোপ লিও চতুর্দশ। ছবি: সংগৃহীত
পোপ লিও চতুর্দশ। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য সফরে গিয়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের পক্ষে ভ্যাটিকানের জোরালো আহ্বান তুলে ধরেছেন পোপ লিও চতুর্দশ। তিনি বলেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক স্বীকৃতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই একমাত্র কার্যকর পথ।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) ‘রাশিয়া টুডে’ জানিয়েছে, তুরস্ক থেকে লেবাননে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পোপ তাঁর অবস্থান তুলে ধরেন। এর আগে ২০১৫ সালে ভ্যাটিকান আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং তখন থেকেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকেই সমর্থন করে আসছে। তবে গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পোপের এবারের মন্তব্যকে ভ্যাটিকানের সবচেয়ে দৃঢ় আহ্বান হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা উল্লেখ করে পোপ লিও বলেন, ‘আমরা জানি ইসরায়েল এই সমাধানটি এখনো গ্রহণ করেনি। আমরা ইসরায়েলেরও বন্ধু। তারপরও আমরা মনে করি, এটাই একমাত্র পথ।’

তিনি জানান, ভ্যাটিকান মধ্যস্থতার জন্য কাজ চালিয়ে যাবে যাতে ন্যায়সম্মত সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়।

এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত আলোচনায়ও গাজা ও ইউক্রেন ইস্যু উঠে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পোপ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর প্রচেষ্টায় এরদোয়ান ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ শান্তির জন্য কিছু বাস্তব প্রস্তাব রয়েছে এবং আশা করছি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেন—তিন পক্ষের সঙ্গেই সম্পর্ক ব্যবহার করে সংলাপ ও যুদ্ধবিরতি এগিয়ে নিতে পারবেন।’

গাজা প্রসঙ্গে তিনি পুনরাবৃত্তি করেন—বহু দশক জুড়ে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ছাড়া বিকল্প নেই। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি বলেছেন, তাঁর দেশের রাষ্ট্রীয় নীতিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতা একচুলও পরিবর্তন হয়নি এবং কোনো আন্তর্জাতিক চাপেই তা বদলাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত