Ajker Patrika

যুদ্ধবিরতি ভেঙেই চলেছে ইসরায়েল, গাজায় ১০ দিনে ৯৭ জনকে হত্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর বিধ্বস্ত গাজায় ফিরছে বাসিন্দারা। ছবিটি কয়েকদিন আগের তোলা। ছবি: এএফপি
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর বিধ্বস্ত গাজায় ফিরছে বাসিন্দারা। ছবিটি কয়েকদিন আগের তোলা। ছবি: এএফপি

গাজায় গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিনিয়ত তা ভঙ্গ করে চলেছে। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন, তবে তারপরও যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে ইসরায়েল অন্তত ৮০ বার যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করেছে এবং অন্তত আরও ৯৭ জনকে হত্যা করেছে।

লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়েছে, গাজা প্রশাসন জানিয়েছে—গত ১০ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েল অন্তত ৮০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এই সময়ে ৯৭ জনকে হত্যা এবং অন্তত ২৩০ জনকে আহত করেছে তারা।

বার্তা আদানপ্রদান মাধ্যম টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক বার্তা গাজার জনসংযোগ কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নিয়মের ‘স্পষ্ট ও ঘোর লঙ্ঘন’ হিসেবে ঘটনাটিকে নিন্দা জানিয়েছে তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার সব গভর্নরেটে—কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই—এই হামলার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-ক্বাসাম ব্রিগেড রোববার এক বিবৃতিতে গাজা উপত্যকার সব এলাকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে তাদের ‘পূর্ণ অঙ্গীকার’ পুনর্ব্যক্ত করেছে। তারা রাফায় সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা বা তথ্য থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

আল-ক্বাসাম ব্রিগেড বলেছে, ‘আমরা জোর দিয়ে জানাতে চাই—যা কিছু চুক্তি হয়েছে, বিশেষ করে গাজা উপত্যকার সব এলাকায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে, আমরা তার পূর্ণ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।’ সংগঠনটি জানায়, রাফাহ এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে তাদের কোনো তথ্য নেই, কারণ সেই অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাফাহ ও আশপাশের এলাকাগুলো দখলদার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত।’

আল-ক্বাসাম আরও জানায়, ২০২৫ সালের মার্চে যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে রাফাহ অঞ্চলে থাকা তাদের অবশিষ্ট ইউনিটগুলোর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই বছরের মার্চে যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে থাকা আমাদের ইউনিটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। তারা শহীদ হয়েছেন, নাকি এখনো জীবিত আছেন—সে বিষয়ে আমাদের কোনো তথ্য নেই।’

সংগঠনটি আরও জানায়, ওই অঞ্চলগুলোতে ঘটছে এমন কোনো ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং সেখানে কেউ জীবিত থাকলেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ নেই। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাই আমরা ওই এলাকাগুলোর কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই এবং যদি সেখানে আমাদের কেউ জীবিত থাকেনও, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব নয়।’

অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর (আইওএফ) সাম্প্রতিক মৃত্যুর ঘটনায় হামাসের নেতৃত্ব দায়ী নয় বলে তিনি মনে করেন। হামাস যুদ্ধবিরতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, এই হামলার পেছনে হামাসের কিছু ‘বিদ্রোহী সদস্য’ জড়িত থাকতে পারে।

গতকাল ১৯ অক্টোবর এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘যেভাবেই হোক না কেন, বিষয়টি যথাযথভাবে সামলানো হবে। কঠোরভাবে, তবে সঠিকভাবে।’ ট্রাম্প আরও আশা প্রকাশ করেন, গাজায় বর্তমান যুদ্ধবিরতি টিকে থাকবে। তিনি জানান, ওয়াশিংটন স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর এবং বলেন, ‘হামাসের সঙ্গে পরিস্থিতি খুব শান্তিপূর্ণ থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত