সিরিয়া ও তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর টানা ৩০ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন আহমেদ আল-মাসরি নামের একজন চিকিৎসক। তিনি সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আফরিনের একটি হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি তাঁর মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসির কাছে আহমেদ আল-মাসরি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তার হওয়াটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার। ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে উদ্ধার করা সাত বছর বয়সী এক শিশুকে আমার কাছে আনা হয়। কেন জানি না, তার মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। আমার কান্না আসছিল।’
সাত বছর বয়সী শিশুটির নাম মোহাম্মদ। তাকে একটি ধসে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে বের করে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছে, তারা শিশুটিতে তার বাবার মৃতদেহের পাশে পড়ে থাকতে দেখেছিল। ওই ধ্বংসস্তূপের নিচে শিশুটির মা ও ভাইবোনসহ সবাই চাপা পড়ে মারা গেছেন। শুধু অলৌকিকভাবে শিশুটি বেঁচে গেছে।
ডা. মাসরি আফরিন শহরের আল শিফা হাসপাতালের একজন আবাসিক সার্জন। হাসপাতালটি দাতব্য সংস্থা সিরিয়ান আমেরিকান মেডিকেল সোসাইটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ডা. মাসরি বলেছেন, ভূমিকম্পের পরপরই প্রায় ২০০ আহত ব্যক্তিকে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর একটানা ৩০ ঘণ্টা তিনি আহত রোগীদের সেবা দিয়েছেন।
ডা. মারসি তাঁর মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বলেন, উদ্ধারকারীরা ১৮ মাস বয়সী একটি শিশুকে নিয়ে এসেছিল। সে মোটামুটি সুস্থই ছিল। কিন্তু শিশুটির সঙ্গে তার মা-বাবা কেউ ছিল না। হঠাৎ খেয়াল করলাম, তার বাবা দৌড়ে এসে শিশুটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে শুরু করলেন। পরে বাবাটি জানান, তার পরিবারের সবাই ভূমিকম্পে মারা গেছে, হাসপাতালের করিডরে তাদের শুইয়ে রাখা হয়েছে। শুধু এই শিশুটিই বেঁচে আছে।
ভূমিকম্পের পরে এত বেশি আহত ব্যক্তি আসতে শুরু করে যে, হাসপাতালে কর্মীরা হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। একসঙ্গে এত রোগী তাঁরা কখনো দেখেননি। ডা. মারিস বলেন, ‘আমি কখনোই কল্পনা করিনি যে একটি ভূমিকম্প এত বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে। এত বেশি রোগী নিয়ে আসতে পারে।’
এর আগে ২০১৩ সালে তিনি একটি ফিল্ড হাসপাতালে কাজ করতেন। সেই সময় সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল এবং হাজার হাজার আহত হয়েছিল। তখন ডা. মারসিকে অনেক রোগী সামলাতে হয়েছে। তবে এই ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা সেই অভিজ্ঞতাকেও ম্লান করে দিয়েছে।
ডা. মারসি বলেন, সেই সময়ে আমরা মোটামুটি প্রস্তুত ছিলাম যে অনেক রোগী আসবে। সে কারণে দ্রুত নিজেদের সংগঠিত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু এখন আমরা মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। বিপর্যয়টা আকস্মিক ও পরিস্থিতিতে অত্যন্ত ভয়াবহ।
হাসপাতালের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করে ডা. মারসি বলেন, ‘অনেকের আঘাত এমন গুরুতর যে কোনো একটি অঙ্গ কেটে ফেলা দরকার। কিন্তু আমাদের হাসপাতালে সেই ধরনের ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তার হওয়াটাই সবচেয়ে বাজে ব্যাপার। আপনার চোখের সামনে একজন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, কিন্তু আপনি তাকে বাঁচাতে পারছেন না। এর চেয়ে বাজে অনুভূতি আর হয় না।’
গত সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন হয়, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিল। শক্তিশালী এই ভূমিকম্প পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়ায়ও আঘাত হানে। এখন পর্যন্ত উভয় দেশে নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। এর মধ্যে তুরস্কে ১২ হাজার ৩৯১ জন এবং সিরিয়ায় ২ হাজার ৯৯২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা এখনো চলছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে উদ্ধারকারীদের ধারণা।
সিরিয়া ও তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর টানা ৩০ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন আহমেদ আল-মাসরি নামের একজন চিকিৎসক। তিনি সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আফরিনের একটি হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি তাঁর মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসির কাছে আহমেদ আল-মাসরি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তার হওয়াটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার। ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে উদ্ধার করা সাত বছর বয়সী এক শিশুকে আমার কাছে আনা হয়। কেন জানি না, তার মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। আমার কান্না আসছিল।’
সাত বছর বয়সী শিশুটির নাম মোহাম্মদ। তাকে একটি ধসে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে বের করে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছে, তারা শিশুটিতে তার বাবার মৃতদেহের পাশে পড়ে থাকতে দেখেছিল। ওই ধ্বংসস্তূপের নিচে শিশুটির মা ও ভাইবোনসহ সবাই চাপা পড়ে মারা গেছেন। শুধু অলৌকিকভাবে শিশুটি বেঁচে গেছে।
ডা. মাসরি আফরিন শহরের আল শিফা হাসপাতালের একজন আবাসিক সার্জন। হাসপাতালটি দাতব্য সংস্থা সিরিয়ান আমেরিকান মেডিকেল সোসাইটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ডা. মাসরি বলেছেন, ভূমিকম্পের পরপরই প্রায় ২০০ আহত ব্যক্তিকে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর একটানা ৩০ ঘণ্টা তিনি আহত রোগীদের সেবা দিয়েছেন।
ডা. মারসি তাঁর মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বলেন, উদ্ধারকারীরা ১৮ মাস বয়সী একটি শিশুকে নিয়ে এসেছিল। সে মোটামুটি সুস্থই ছিল। কিন্তু শিশুটির সঙ্গে তার মা-বাবা কেউ ছিল না। হঠাৎ খেয়াল করলাম, তার বাবা দৌড়ে এসে শিশুটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে শুরু করলেন। পরে বাবাটি জানান, তার পরিবারের সবাই ভূমিকম্পে মারা গেছে, হাসপাতালের করিডরে তাদের শুইয়ে রাখা হয়েছে। শুধু এই শিশুটিই বেঁচে আছে।
ভূমিকম্পের পরে এত বেশি আহত ব্যক্তি আসতে শুরু করে যে, হাসপাতালে কর্মীরা হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। একসঙ্গে এত রোগী তাঁরা কখনো দেখেননি। ডা. মারিস বলেন, ‘আমি কখনোই কল্পনা করিনি যে একটি ভূমিকম্প এত বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে। এত বেশি রোগী নিয়ে আসতে পারে।’
এর আগে ২০১৩ সালে তিনি একটি ফিল্ড হাসপাতালে কাজ করতেন। সেই সময় সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল এবং হাজার হাজার আহত হয়েছিল। তখন ডা. মারসিকে অনেক রোগী সামলাতে হয়েছে। তবে এই ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা সেই অভিজ্ঞতাকেও ম্লান করে দিয়েছে।
ডা. মারসি বলেন, সেই সময়ে আমরা মোটামুটি প্রস্তুত ছিলাম যে অনেক রোগী আসবে। সে কারণে দ্রুত নিজেদের সংগঠিত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু এখন আমরা মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। বিপর্যয়টা আকস্মিক ও পরিস্থিতিতে অত্যন্ত ভয়াবহ।
হাসপাতালের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করে ডা. মারসি বলেন, ‘অনেকের আঘাত এমন গুরুতর যে কোনো একটি অঙ্গ কেটে ফেলা দরকার। কিন্তু আমাদের হাসপাতালে সেই ধরনের ব্যবস্থা নেই। এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তার হওয়াটাই সবচেয়ে বাজে ব্যাপার। আপনার চোখের সামনে একজন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, কিন্তু আপনি তাকে বাঁচাতে পারছেন না। এর চেয়ে বাজে অনুভূতি আর হয় না।’
গত সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন হয়, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিল। শক্তিশালী এই ভূমিকম্প পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়ায়ও আঘাত হানে। এখন পর্যন্ত উভয় দেশে নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। এর মধ্যে তুরস্কে ১২ হাজার ৩৯১ জন এবং সিরিয়ায় ২ হাজার ৯৯২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা এখনো চলছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে উদ্ধারকারীদের ধারণা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রাণ হারিয়েছে আরও ১২০ জন। এ নিয়ে গাজায় প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়াল ৫৫ হাজারে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। নিহতদের মধ্যে ৫৭ জনই বিতর্কিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশন—জিএইচএফের ত্রাণ সহায়তা...
১ ঘণ্টা আগেবিশ্বজুড়ে ধর্মীয় প্রবণতার এক বিস্ময়কর চিত্র তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার। ধর্মীয় জনসংখ্যা নিয়ে করা সংস্থাটির গত এক দশকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মুসলিমদের পাশাপাশি শুধু ধর্মহীন মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেআসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করতে ‘গরুর মাংসকে অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য যেখানে-সেখানে গরুর মাংস ছিটিয়ে হিন্দুদের এলাকাছাড়া করা। ত্রিপুরা টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব ঈদের পরেই রাজ্যের কিছু
১৩ ঘণ্টা আগেবিশ্বজুড়ে বাবা-মায়েরা ক্রমশ কন্যাসন্তানকে ছেলের তুলনায় বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন—একটি দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক প্রবণতা এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঐতিহ্যগতভাবে ছেলে সন্তানের প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকা পরিবারগুলোর মনোভাব এখন দ্রুত বদলাচ্ছে।
১৪ ঘণ্টা আগে