Ajker Patrika

হামাস নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের জামাতার বৈঠকেই চূড়ান্ত হয় চুক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৫৪
জ্যারেড কুশনার ও স্টিভ উইটকফ। ছবি: এএফপি
জ্যারেড কুশনার ও স্টিভ উইটকফ। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও তাঁর দূত স্টিভ উইটকফ সশরীর হামাস নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। মূলত ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে হামাসের সঙ্গে তাঁরা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত সপ্তাহের বুধবার তাঁরা হামাস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। হামাস নেতাদের এই অস্বাভাবিক ও নাটকীয় বৈঠক গাজা শান্তিচুক্তিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে সরাসরি এ বিষয়ে অবগত তিনটি সূত্র অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছে।

চুক্তির পথে প্রধান বাধা ছিল হামাস নেতাদের এই আশঙ্কা যে ইসরায়েল জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার পর আবার যুদ্ধ শুরু করবে। একটি সূত্রের দাবি, চুক্তি নিশ্চিত করতে স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার হামাস নেতাদের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করেন এবং তাঁদের সরাসরি আশ্বস্ত করতে হয় যে হামাস চুক্তির শর্ত মেনে চললে ট্রাম্প ইসরায়েলকে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে দেবেন না।

এর আগের দিন হোয়াইট হাউসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে উইটকফ ও কুশনারকে অনুমতি দেন, প্রয়োজনে তাঁরা হামাস নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন চুক্তি সম্পন্ন করার স্বার্থে। তাঁরা মিসরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে ওভাল অফিসে এই সিদ্ধান্ত হয়। এরপর শারম আল শেখে পৌঁছে উইটকফ কাতারের, মিসরীয় ও তুর্কি মধ্যস্থতাকারীদের ট্রাম্পের সবুজ সংকেতের কথা জানান।

বুধবার রাতে স্থানীয় সময় প্রায় ১১টার দিকে কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা ফোর সিজন হোটেলের উইটকফের ভিলায় এসে জানান, আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এক সূত্রের ভাষ্য, তাঁরা তখন জানতে চান, মার্কিন দূতেরা কি হামাস নেতাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে প্রস্তুত।

এক জ্যেষ্ঠ কাতারের কর্মকর্তা উইটকফকে বলেন, ‘আমাদের মনে হয়, আপনি যদি তাদের সঙ্গে দেখা করেন ও হাত মেলান, তাহলে চুক্তি হয়ে যাবে।’ কয়েক মিনিট পর উইটকফ ও কুশনার লোহিত সাগরের তীরের ওই রিসোর্টের আরেকটি ভিলায় প্রবেশ করেন।

ভেতরে উপস্থিত ছিলেন মিসর ও তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান, কাতারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং আলোচনায় যুক্ত হামাসের চার শীর্ষ নেতা। হামাস প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন খলিল আল-হাইয়া, যিনি তিন সপ্তাহ আগে দোহায় ইসরায়েলের এক হত্যাপ্রচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন।

প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠকে উইটকফ হামাস কর্মকর্তাদের বলেন, এখন জিম্মিরা তাদের জন্য ‘সম্পদের চেয়ে দায়ে পরিণত হয়েছে’। তাই সময় এসেছে চুক্তির প্রথম ধাপ এগিয়ে নেওয়ার এবং ‘দুই দিকের মানুষদের ঘরে ফিরিয়ে আনার’। খলিল আল-হাইয়া জানতে চান, উইটকফ ও কুশনার কি ট্রাম্পের কোনো বার্তা নিয়ে এসেছেন। তখন উইটকফ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বার্তা হলো, আপনাদের সঙ্গে ন্যায়সংগত আচরণ করা হবে। তিনি তাঁর শান্তি পরিকল্পনার সব ২০টি দফা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।’

বৈঠক শেষে হামাস নেতারা মিসরীয়, কাতারের ও তুর্কি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে অন্য এক কক্ষে চলে যান। কয়েক মিনিট পর মিসরের গোয়েন্দা প্রধান হাসান রাশাদ তাঁর তুর্কি ও কাতারের সমকক্ষদের নিয়ে ফিরে এসে বলেন, ‘আমরা যে বৈঠকটা এখন করলাম, তার ভিত্তিতে বলতে পারি—চুক্তি হয়ে গেছে।’

শারম আল শেখের এই বৈঠক ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে হামাসের দ্বিতীয় সরাসরি যোগাযোগ। এর আগে, গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের জিম্মি-বিষয়ক দূত অ্যাডাম বোহলার দোহায় হামাস নেতাদের সঙ্গে নজিরবিহীন বৈঠক করেন। উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকান জিম্মি ইদান আলেকজান্ডারকে মুক্ত করা এবং হামাসের হাতে নিহত আরও চারজন মার্কিন নাগরিকের মরদেহ ফেরত আনা।

তবে ইসরায়েল সরকারের তীব্র বিরোধিতার কারণে সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। কারণ, ইসরায়েল তখনো সরাসরি এই আলোচনার বিষয়ে কিছু জানত না। সূত্রমতে, রাজনৈতিক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও উইটকফ ও কুশনারের হামাস নেতাদের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত হামাসকে বুঝিয়ে দেয়—যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই একটি কার্যকর চুক্তি করতে এবং তা বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

এক সূত্র বলে, এ কারণেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দূতেরা যখন তাদের কথা দিলেন যে এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে, তারা তা বিশ্বাস করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে দলিত পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যায় তোলপাড়, সুইসাইড নোটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ

বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল ম্যাচ টিভিতে দেখাবে না, তাহলে দেখার উপায়

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত