Ajker Patrika

হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান কে এই শেখ নাঈম কাসেম

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
নাঈম কাসেম। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রয়াত প্রধান সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন গোষ্ঠীটির কোনো শীর্ষ নেতা ছিলেন না। অবশেষে লেবাননের সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি নাঈম কাসেমকে তাদের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীটির উপপ্রধান নাঈম কাসেমকে প্রধান হিসেবে ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর শীর্ষ নেতা পেল হিজবুল্লাহ। এখন থেকে নাঈম কাসেমই হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেলের পদ সামলাবেন। এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, তাদের শুরা কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচনের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই নাঈম কাসেমকে নির্বাচিত করেছে।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ব্যাপক আগ্রাসন চালানো শুরু করে। ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে এক ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর তৎকালীন প্রধান সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন। তাঁর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও কমান্ডার ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

নাঈম কাসেমকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়ে হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, হিজবুল্লাহর নীতি ও লক্ষ্যগুলোর প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্যের জন্যই নাঈম কাসেমকে এই পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যেন তিনি তাঁকে হিজবুল্লাহ ও তাঁর ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনের এই মহৎ মিশনে পরিচালনা করতে পারেন।

শেখ নাঈম কাসেম ১৯৫৩ সালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পারিবারিক ইতিহাস খুব একটা জানা যায় না। নাঈম কাসেম তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেন লেবানিজ শিয়া আন্দোলন শিয়া আমল মুভমেন্টের সঙ্গে। পরে ১৯৭৯ সালে তিনি শিয়া আমল মুভমেন্ট ছেড়ে দেন। এর পর ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর তিনি নতুন করে ভাবতে শুরু করেন।

ইরানের ইসলামপন্থী সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) লেবাননে হিজবুল্লাহ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। লেবাননে ১৯৮২ সালে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে গঠিত হয় হিজবুল্লাহ। শেখ নাঈম কাসেম শুরু থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

হাসান নাসরুল্লাহ জীবিত থাকাকালেই ৭১ বছর বয়সী নাঈম কাসেমকে হিজবুল্লাহর ‘দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হতো। তিনি ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে গোষ্ঠীটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ধর্মীয় পণ্ডিত। নাঈম কাসেম ১৯৯১ সালে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আব্বাস আল-মুসাভির আমলে হিজবুল্লাহর উপপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।

মুসাভি পরের বছর ইসরায়েলি হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন। মুসাভি নিহত হওয়ার পর সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর প্রধান হন। বয়সে নাসরুল্লাহর চেয়ে বড় হলেও গোষ্ঠীটির ডেপুটি হিসেবেই থেকে যান নাঈম কাসেম।

লেবাননে ১৯৯২ সালে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেই নির্বাচনে হিজবুল্লাহর হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করেন শেখ নাঈম কাসেম। তিনি দলের মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ইসরায়েলের হিজবুল্লাহর চলমান সংঘর্ষের মধ্যেই তিনি প্রায়ই বিদেশি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।

শেখ নাঈম কাসেম ২০০৫ সালে হিজবুল্লাহর ইতিহাস নিয়ে একটি বই লিখেন। বইটির নামের ইংরেজি অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘ইনসাইডারস লুক’। হিজবুল্লাহর এই নতুন প্রধান সাদা পাগড়ি পরিধান করেন। তাঁর দুই পূর্বসূরি নাসরুল্লাহ ও সাইফুদ্দিন কালো পাগড়ি পরলেও তিনি সে পথে হাঁটেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত