Ajker Patrika

গাজায় রয়ে গেলেন ‘ফিলিপিনো আধ্যাত্মিকতার প্রতীক’ ক্যাথলিক নান

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ৪৪
গাজায় রয়ে গেলেন ‘ফিলিপিনো আধ্যাত্মিকতার প্রতীক’ ক্যাথলিক নান

ইসরায়েলের হামলার পর আটকে পড়া নাগরিকদের বেশির ভাগই গাজা ছেড়ে গেছেন, আরও চলে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু একজন ফিলিপাইন বংশোদ্ভূত গাজা ছাড়তে রাজি নন, যিনি ক্যাথলিক নান (সন্ন্যাসিনী)। ‘ফিলিপিনো আধ্যাত্মিকতার প্রতীক হিসেবে’ তিনি বিধ্বস্ত গাজার গির্জায় রয়ে গেছেন।

আরব নিউজের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের বোমা হামলার পর থেকে ঘনবসতিপূর্ণ গাজা উপত্যকায় ১৩৭ ফিলিপাইনের নাগরিক আটকা পড়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এই নান ছাড়া সবাই নিরাপদে ম্যানিলায় ফিরে গেছেন।

গতকাল সোমবার গাজার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ক্যাথলিক এই নান ‘আধ্যাত্মিকতা ও সংহতির প্রতীক’ হিসেবে গাজায় তিনিই ফিলিপাইনের শেষ নাগরিক।   

সর্বশেষ রোববার রাতে দ্বিতীয় দফায় ৪১ ফিলিপিনো ও ৭ ফিলিস্তিনি নাগরিকের দ্বিতীয় দলকে গাজা থেকে নিরাপদে সরিয়ে ম্যানিলায় নেওয়া হয়। এর কিছুদিন আগেই প্রথম দলটি ফিলিপাইনের রাজধানীতে পৌঁছায়। তাঁদের অনেকে পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

গাজায় অবস্থিত বেশির ভাগ ফিলিপিনোই স্থায়ী বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ফিলিপাইনের বংশোদ্ভূত ফিলিস্তিনি, যাঁদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা গাজাতেই।

গাজায় এখনো ২৬ ফিলিপিনো আটকে আছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মিশনারিজ অব চ্যারিটির ৬৩ বছর বয়সী এক ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী। ইসরায়েলের হামলার শুরু থেকেই তিনি গাজা ছেড়ে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন। শত শত শরণার্থীর আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে অবরুদ্ধ গাজার এ গির্জা।

ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি এদুয়ার্দো দে ভেগা আরব নিউজকে বলেন, ‘তিনি মিশনারিজ অব চ্যারিটির সঙ্গে আছেন...তাঁরা যাবেন না। তাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁরা যা করছেন তা আধ্যাত্মিক।’

এদুয়ার্দো দে ভেগা বলেন, ‘গাজায় তিনি হবেন শেষ ফিলিপিনো এবং ফিলিপাইনের আধ্যাত্মিকতার প্রতীক, কীভাবে আমরা নিপীড়িতের জন্য সংহতি ও বিশ্ব শান্তির প্রার্থনা করি, তার প্রতীক তিনি।’ 

দে ভেগা বলেন, ‘সন্ন্যাসিনী এখন পর্যন্ত নিরাপদ।’ জর্ডানে অবস্থিত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত ওই সন্ন্যাসিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তবে তিনি শুধু তাঁর জন্য প্রার্থনা করতেই বলছেন। 

ফিলিপাইন সরকার গাজা উপত্যকা থেকে তাদের অন্য নাগরিকদের সরিয়ে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ইসরায়েলি বোমা হামলার কারণে রাফা ক্রসিং সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় দেরি হচ্ছে। রাফা ক্রসিংই গাজায় তেল আবিবের সরাসরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে একমাত্র প্রবেশপথ।   

দে ভেগা বলেন, মায়া তৈরি হওয়ায় গাজায় রয়ে যাওয়া অনেক ফিলিপিনোই গাজা ছেড়ে আসতে অসম্মতি জানাচ্ছেন। ফিলিস্তিনি সঙ্গী আসতে পারবেন না বলেও অনেকে গাজায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।   

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো তাঁদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি, আমরা তাঁদের সবাইকে সরিয়ে আনতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত