Ajker Patrika

জিম্মি উদ্ধারের পর ‘হামাসকে ধ্বংস করতেই হবে’, শঙ্কায় যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফিলিস্তিন থেকে পশ্চিম তীরকে ইসরায়েল-অধিকৃত করা নিয়ে ‘গোপন পরিকল্পনা’ রয়েছে বলে জানান স্মোত্রিচ। ছবি: এএফপি
ফিলিস্তিন থেকে পশ্চিম তীরকে ইসরায়েল-অধিকৃত করা নিয়ে ‘গোপন পরিকল্পনা’ রয়েছে বলে জানান স্মোত্রিচ। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য এবং উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পরিচিত ইসরায়েলি কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ এক নতুন বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের কারণে, সদ্য চুক্তিতে পরিণত হওয়া প্রথম ধাপের হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ শঙ্কার মুখে পড়েছে। এই চুক্তির প্রধান উদ্যোক্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ধাপে ধাপে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন, তখন ইসরায়েলি এই মন্ত্রী বলেছেন—জিম্মিদের উদ্ধারের পর হামাসকে অবশ্যই ধ্বংস করতে হবে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে স্মতরিচ বলেছেন, ‘জিম্মিরা ঘরে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ইসরায়েল রাষ্ট্র সর্বশক্তি দিয়ে হামাসকে সত্যিকার অর্থে ধ্বংস করতে এবং গাজাকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্র করতে চেষ্টা চালাবে, যাতে তারা আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়।’

ইসরায়েলের এই অর্থমন্ত্রী আরও জানান, গাজার যুদ্ধ শেষ করতে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তির পক্ষে তিনি ভোট দেবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জোট সরকার ভাঙার হুমকি দেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা যেন আবার ৬ অক্টোবরের বিভ্রান্তিতে না ফিরি, সেটা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। কৃত্রিম শান্তি, কূটনৈতিক আলিঙ্গন আর হাসিমুখের আনুষ্ঠানিকতায় আসক্ত হয়ে পড়ে ভবিষ্যৎকে বন্ধক রেখে ভয়াবহ মূল্য চুকাতে যেন না হয়।’

এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে যেতে এবং গাজায় থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিতে ‘প্রথম ধাপের’ শান্তি পরিকল্পনায় একমত হয়েছে। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ট্রাম্প কাতার, মিশর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেন, ‘এর মানে খুব শিগগিরই সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনাদের একটি নির্দিষ্ট সীমারেখায় সরিয়ে নেবে। এটিই হবে এক শক্তিশালী, স্থায়ী ও চিরন্তন শান্তির প্রথম পদক্ষেপ।’

হামাস এক বিবৃতিতে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, এতে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার এবং জিম্মি ও বন্দিবিনিময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তারা জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে ‘দায়িত্বশীল ও গম্ভীর আলোচনার’ পর এই চুক্তি হয়েছে। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিস্তারিত সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু বিষয় জানা গেছে।

এক ফিলিস্তিনি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক ২৫০ ফিলিস্তিনি বন্দী এবং গাজার ১ হাজার ৭০০ বাসিন্দাকে মুক্তি দেওয়া হবে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, হামাস এখনো সেই ফিলিস্তিনি বন্দীদের তালিকা পায়নি, যাদের মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ইসরায়েলের আছে। তবে আশা করা হচ্ছে, বিষয়টি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমাধান হবে।

এক জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল প্রতিদিন গাজায় ৪০০টি ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে দেবে এবং পরে ধাপে ধাপে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে হামাস ২০ জন জীবিত বন্দীকে মুক্তি দেবে।

এপিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাস এই সপ্তাহান্তে জীবিত থাকা ২০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। নিহত জিম্মিদের দেহাবশেষ পরবর্তী ধাপে ফেরত দেওয়া হবে। ইসরায়েলি সেনারা প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা থেকে সরে আসবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত