Ajker Patrika

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাজ্য: ক্যামেরন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২: ২১
Thumbnail image

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষায় আছে যুক্তরাজ্য। সেই সময়কে এগিয়ে আনতে দেশটি কাজ করতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন। 

আজ সোমবার লন্ডনে ব্রিটেনের মন্ত্রিসভার এক অনুষ্ঠানে ক্যামেরন এই ঘোষণা দেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতমুখর পরিস্থিতি, ফিলিস্তিনিদের নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবির ন্যায্যতা, নিজেদের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ইসরায়েলের ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। 

মন্ত্রী জানিয়েছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায়ে জাতিসংঘেও ভূমিকা রাখবে ব্রিটেন ও তার মিত্ররা। 

অনুষ্ঠানে লর্ড ক্যামেরন বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেব এবং এ ইস্যুকে আরও গতিশীল করতে জাতিসংঘেও কাজ করব। আমাদের মিত্ররা এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে বলে আশা করছি। কারণ, যদি জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাহলে গত কয়েক দশকের অপেক্ষা শেষ হওয়ার পথ সুগম হবে।’ 

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে আরব লীগের সম্মেলনে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং সেই রাষ্ট্রের একমাত্র বৈধ সরকার হিসেবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে স্বীকৃতি দেয় আরব লীগ। ১৯৬৬ সাল থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে আন্দোলন করে আসা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) শুরুর দিকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল; তবে ১৯৮২ সালে ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান’ বা ইসরায়েলের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও মেনে নেয় পিএ। 

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন।  এই প্রক্রিয়া অবশ্য শুরু হয়েছিল গত শতকের ষাটের দশক থেকেই। ১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল—দুই রাষ্ট্রের সীমানাও নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েল কখনো দ্বিরাষ্ট্র সমাধানকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দেয়নি। সেই সঙ্গে প্রায় নিয়মিত প্রস্তাবিত সীমানা লঙ্ঘন করে নিজেদের রাষ্ট্রের সীমানা বৃদ্ধি করে চলেছে। 

সোমবারের বক্তব্যে লর্ড ক্যামেরন বলেন, ‘নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ফিলিস্তিনের জনগণ যে আন্দোলন শুরু করেছিল, তা ইতিমধ্যে পরিণত হয়েছে। এখন একে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া তাদের এই আন্দোলন ন্যায্য এবং ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে সমর্থন দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর দীর্ঘ ঐতিহ্য ব্রিটেনের রয়েছে।’ 

লর্ড ক্যামেরন বলেন, ‘তা ছাড়া আরও কারণ রয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা কেবল একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা নয়; বরং এটি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সন্ত্রাসবাদেরও বিদায় ঘণ্টা। আমাদের স্বীকৃতি দেওয়ার একটি কারণ হলো, আমরা ওই অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসবাদ স্থায়ীভাবে নির্মূল করতে চাই। এই অঞ্চলটিকে আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা প্রয়োজন এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ব্যাপারটি সহজ করবে। বর্তমানে সেখানে যে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে, অস্থায়ী বিরতি তার কোনো সমাধান নয়। সেখানে প্রয়োজন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি।’ 

নিজ বক্তব্যে ইসরায়েলেরও কঠোর সমালোচনা করেন লর্ড ক্যামেরন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল হয়তো তার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পেরেছে, নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পেরেছে, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনীও গড়ে তুলেছে; কিন্তু নাগরিকদের নিরাপত্তা তারা নিশ্চিত করতে পারেনি। এটা তাদের ব্যর্থতা এবং ইসরায়েলের গত কয়েক দশকের ইতিহাস মূলত এই ব্যর্থতার ইতিহাস। 

ক্যামেরন বলেন, ‘বর্তমানে গাজায় মানবিক বিরতির আলোচনা চলছে। আমরা মনে করি এই আলোচনা সফল হওয়ার ওপর আসলে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের বাস্তবায়ন অনেকাংশ নির্ভর করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত