Ajker Patrika

মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভের ডাক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মাহসা আমিনির ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে এক বিক্ষোভকারী। ছবি: ইরান ইন্টারন্যাশনাল
মাহসা আমিনির ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে এক বিক্ষোভকারী। ছবি: ইরান ইন্টারন্যাশনাল

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ইরানিদের মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানি মানবাধিকার কর্মী ও কানাডাভিত্তিক সংগঠক হামেদ এসমাইলিয়ন। ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী আমিনি ২০২২ সালে ইরানের নীতি-পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেন। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরে ইরান জুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসমাইলিয়ন জানান, ১৩ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে একযোগে ২০ টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। তিনি নিজেও ১৪ সেপ্টেম্বর টরন্টোতে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নেবেন বলে ঘোষণা করেন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহর যেমন বার্লিন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, কোলোন, লন্ডন, জেনেভা, গথেনবার্গ, বার্সেলোনা, অটোয়া, মন্ট্রিয়েল, হিউস্টন, সান ফ্রান্সেসকো সিডনি, ওয়েলিংটন ও ক্রাইস্টচার্চে একই ধরনের আয়োজন করা হচ্ছে।

২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আমিনিকে তেহরানে আটক করা হয়েছিল কঠোর হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে। দুই দিন পর পুলিশ হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, এই ঘটনার পর ইরান জুড়ে তীব্র আন্দোলন শুরু হলে সরকারি বাহিনীর হাতে অন্তত ৫৫১ জন নিহত হন। নিহতদের বেশির ভাগই ছিলেন নারী।

এসমাইলিয়ন জানান, তিনি টরন্টোতে একটি ম্যারাথনেও অংশ নেবেন। এটি অনুষ্ঠিত হবে ইরানে রাজনৈতিকভাবে বন্দী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের স্মরণে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন শরিফে মোহাম্মাদি, ভারিশেহ মরাদি ও পাখশান আজিজির নাম। এ ছাড়া তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বহিষ্কৃত বা নির্বাসিত কুর্দি শিক্ষকদের প্রতি সংহতি জানান এবং অনশনে থাকা বন্দী ও সম্প্রতি ফাঁসিতে ঝোলানো মেহরান বাহরামিয়ানের কথাও স্মরণ করেন।

গত বছরও আমিনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে টোকিও থেকে মেলবোর্ন এবং বিভিন্ন ইউরোপীয় শহরে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিল ইরানি অধ্যুষিত এলাকার একটি মোড়ের নাম পরিবর্তন করে আমিনির নামে নামকরণ করেছিল।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বলেছে, ইরানের এই দমননীতি মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। জাতিসংঘের তদন্ত মিশন জানিয়েছে, ইরানে বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে।

এসমাইলিয়ন ২০২০ সালে ইরানি সেনাদের গুলিতে ভূপাতিত ইউক্রেনীয় যাত্রীবাহী বিমানে স্ত্রী ও কন্যাকে হারিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রবাসী ইরানিদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন। তিনি আহ্বান জানান, মাহসা আমিনির স্মৃতিচারণ যেন ন্যায়বিচারের দাবিকে আরও জোরালো করে তোলে এবং বিশ্ব যেন এই ঘটনাকে ভুলে না যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত