Ajker Patrika

শিখ নেতা হত্যার ষড়যন্ত্রে এবার অমিত শাহের নাম বলল কানাডা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ২৬
Thumbnail image
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: সংগৃহীত

শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে এবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত ছিল বলে অভিযোগ করেছে কানাডা সরকার। অমিত শাহ ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ মিত্র। তিনিই কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিলেন বলে গতকাল মঙ্গলবার অভিযোগ করেছে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার।

এর আগে কানাডা সরকার শিখ নেতাদের হত্যা ও হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে ভারতীয় কূটনীতিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাত থাকার অভিযোগ করেছে। যদিও ভারত সরকার কানাডার এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দিয়েছে।

কানাডা সরকারের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, অমিত শাহ কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্য করে সহিংসতা ও ভয় দেখানোর ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছেন। এসংক্রান্ত প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

গতকাল মঙ্গলবার কানাডার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন একটি সংসদীয় প্যানেলকে বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পত্রিকাটিকে জানিয়েছিলেন যে, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে অমিত শাহ ছিলেন।

মরিসন কমিটিকে বলেন, ‘ওই পত্রিকার সাংবাদিক আমাকে ফোন কল করে জিজ্ঞাসা করেন, এটি কি সেই ব্যক্তি (শাহ) ? আমি নিশ্চিত করেছি যে এটি সেই ব্যক্তি।’ তবে মরিসন এর বেশি কোনো তথ্য বা প্রমাণ দেননি।

কানাডায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ‘সন্ত্রাসী’ এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে আখ্যা দিয়েছে ভারত সরকার। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের বাইরে ‘খালিস্তান’ নামে একটি স্বাধীন মাতৃভূমি দাবি করে আসছে। ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে ভারতে শিখদের বিদ্রোহে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়। ১৯৮৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পর শিখবিরোধী দাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। ইন্দিরা গান্ধী শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করতে ভারতে শিখদের পবিত্র উপাসনালয়ে (পাঞ্জাবের স্বর্ণমন্দির) অভিযান চালানোর আদেশ দিয়েছিলেন।

২০২৩ সালে কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে কানাডা চলতি অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে। এর জবাবে ভারতও কানাডীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।

কানাডার এই অভিযোগ শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদেশের মাটিতে টার্গেট করার মতো ভারতের গোয়েন্দা অভিযানের একমাত্র উদাহরণ নয়।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভারতের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক শহরে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং মার্কিন–কানাডীয় দ্বৈত নাগরিক গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে।

এফবিআই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী একজনের বিরুদ্ধে এমন প্রতিশোধমূলক পরিকল্পনার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। অবশ্য ভারত এ বিষয়ে প্রকাশ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে জানিয়েছিল, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগগুলো তদন্ত করবে।

এই অভিযোগগুলো ওয়াশিংটন এবং অটোয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলেছে। অবশ্য পশ্চিমারা নীতিনির্ধারকেরা এই ধরনের টানাপোড়েনকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের বিরুদ্ধে একটি ভারসাম্য হিসেবে দেখে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত