Ajker Patrika

এবার এমপি হচ্ছেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, বিজেপির প্রতিদান পেলেন আরও তিনজন

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দেশের চারজন বিশিষ্ট নাগরিককে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত করেছেন। আজ রোববার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। মনোনীত চারজন হলেন—বিশিষ্ট আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, কেরালার সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদ শ্রী সদানন্দন মাস্টার, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার।

সংসদ সদস্য মনোনয়ন পাওয়া চারজন সম্পর্কে যা জানা যায়:

উজ্জ্বল নিকম

২০০৮ সালের ২৬ / ১১ মুম্বাই হামলায় আটক একমাত্র অভিযুক্ত আজমল আমির কাসাবের বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিশিষ্ট সরকারি আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনের অধীনে তদন্ত প্রতিবেদন এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করে আদালতে কাসাবের অপরাধ প্রমাণের পথ সুগম করেছিলেন। উজ্জ্বল নিকম বারবার বলেছিলেন, কাসাব কোনো ‘পথভ্রষ্ট যুবক’ নন, বরং একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের মুখ্য অংশ। ২০১০ সালে আদালত কাসাবকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে এবং ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর কাসাবের ফাঁসি কার্যকর হয়।

এ ছাড়া ১৯৯৩ মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, গুলশান কুমার হত্যা, প্রমোদ মহাজন হত্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার আইনজীবী ছিলেন উজ্জ্বল। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে মুম্বাই উত্তর-মধ্য কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দীর্ঘদিন কূটনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কাজ করার পর এবার সংসদে প্রবেশ করতে চলেছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা ছিল তাঁর। প্রায় দুই বছর তিনি ওই এলাকায় সক্রিয়ভাবে জনসংযোগ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত দার্জিলিং জেলা বিজেপি ও রাজ্য বিজেপির একটি বড় অংশের চাপের ফলে রাজু বিস্তাকেই ফের প্রার্থী করে বিজেপি।

এর মাত্র এক বছরের ব্যবধানে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করা হলো।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে আমলা মহলে যাঁরা উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে শ্রিংলাকে। জাতীয় রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, দার্জিলিং লোকসভায় তাঁকে প্রার্থী করতে না পারায় এবার ঘুরপথে সংসদে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।

সি. সদানন্দন মাস্টার

রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যদের নামের তালিকায় রয়েছেন কেরালার প্রবীণ সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদ সি. সদানন্দন মাস্টার। তিনি কেরালা বিজেপির অন্যতম মুখ। ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮০ (১) (ক)–এর অধীনে সংসদের উচ্চকক্ষে ১২ জন সদস্য মনোনীত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে। ১৯৯৪ সালে পেরিঞ্চেরি এলাকায় রাজনৈতিক হামলার শিকার হয়ে সদানন্দন দু’টি পা হারান। তা সত্ত্বেও শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন তিনি।

সদানন্দনের উপর হামলার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে ক্ষমতাসীন বামদের দিকে। ২০২১ সালে কেরালা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন তিনি। তাঁর জীবনসংগ্রাম এবং সমাজের সর্বস্তরে শিক্ষার প্রসারে অবদান—এই দুয়েরই স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করা হলো বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে কেউ কেউ এটিও মনে করছেন যে, আগামী বছর কেরালা বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই সমাজকর্মীকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম শাসিত এই দক্ষিণী রাজ্যে একটি আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি।

মীনাক্ষী জৈন

তালিকার শেষ নামটি ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈনের। তিনি মধ্যযুগ ও ঔপনিবেশিক ভারতের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ইতিহাস নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করার সুবাদেই এই স্বীকৃতি পেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি ছিলেন দিল্লির গার্গী কলেজে ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরির ফেলো হিসেবেও কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চের সিনিয়র ফেলো হিসেবে যুক্ত। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, রাম ও অযোধ্যা নিয়ে বিস্তর গবেষণা রয়েছে তাঁর। ২০২০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামি দুই ভাই নেত্রকোনায় গ্রেপ্তার

‘নৌকা আউট, শাপলা ইন’, সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির চাওয়া

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

যশোরে কেন্দ্রের ভুলে বিজ্ঞানের ৪৮ জন ফেল, সংশোধনে জিপিএ-৫ পেল সবাই

পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের পর বললেন, ‘আমি যুবদলের সভাপতি, জানস?’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত