Ajker Patrika

ভারতকে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ চুক্তির প্রস্তাব দিল রাশিয়া

ভারতকে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ চুক্তির প্রস্তাব দিল রাশিয়া

ভিসা ছাড়াই ভারতীয় নাগরিকেরা রাশিয়া ভ্রমণ করবেন, আবার রুশ নাগরিকেরাও ভিসা ছাড়া ভারত ভ্রমণ করবেন—দিল্লিকে এমন একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে মস্কো। তবে ভ্রমণকারীদের অবশ্যই দলবদ্ধ হতে। অর্থাৎ একসঙ্গে একই উদ্দেশ্য নিয়ে ভ্রমণ করবেন তাঁরা। বর্তমানে চীন ও ইরানের সঙ্গে এ ধরনের একটি ভ্রমণ চুক্তি রয়েছে রাশিয়ার। 

শুক্রবার দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ম্যাক্সিম রেশেতনিকভ বৃহস্পতিবার ভ্রমণ চুক্তিটিতে সাড়া দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। মূলত পর্যটন শিল্পকে মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে তুলতেই এ ধরনের চুক্তির বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে রাশিয়া। 

এর আগে গত ১ আগস্ট ভারতীয় পাসপোর্টধারীদের জন্য ইলেকট্রনিক ভিসা (ই-ভিসা) সিস্টেম চালু করে রাশিয়া। এর ফলে ভারতীয় পাসপোর্টধারীদের ব্যবসায়িক ভ্রমণ, অতিথি হিসেবে ভ্রমণ এবং পর্যটকেরা খুব দ্রুত রাশিয়ার ভিসা পেয়ে যাবেন। একই দিনে আরও ৫৫টি দেশের নাগরিকদের জন্য ৫২ ডলারের বিনিময়ে ইলেকট্রনিক ভিসা পাওয়ার স্কিমও চালু করেছে দেশটি। ওই ভিসার মেয়াদ হবে ৬০ দিন। এটি দিয়ে ভ্রমণকারীরা ১৬ দিনের বেশি রাশিয়ায় অবস্থান করতে পারবেন। 

রাশিয়া-টুয়েন্টি ফোর টিভি চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলার সময় রেশেতনিকভ বলেন, ‘মস্কো ইতিমধ্যে চীনের সঙ্গে একই ধরনের প্রক্রিয়া চালু করেছে। ভারত এর পরেই আছে। আমরা তাঁদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আপাতত কূটনৈতিক মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে।’ 

চুক্তিটি খুব দ্রুত হয়ে যাবে বলেও আশাবাদী রেশেতনিকভ। চুক্তি হলে সর্বনিম্ন পাঁচজন ভারতীয় পর্যটক হলেই তাঁরা রাশিয়ায় ভিসা ছাড়া একসঙ্গে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বকেয়া মজুরি চাওয়ায় পিটিয়ে মারা হলো দলিত কৃষককে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বলা হয়েছে, হৌসিলা প্রসাদের মৃত্যু ঘটল এমন এক সময়, যখন এর আগে পাশের রায়বেরেলিতে গত ১ অক্টোবর রাতে এক দলিতকে ‘ড্রোন চোর’ সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। আমেথি ও রায়বেরেলি—দুটোই নেহরু-গান্ধী পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

এই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত উচ্চবর্ণের জমিদার শুভম সিংকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ, হামলায় ৪ জন জড়িত থাকলেও পুলিশের এজাহারে কেবল একজনের নাম আছে। তাদের আরও অভিযোগ, শুভমের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃত খুনের’ মামলা না দিয়ে শুধু ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের’ ধারা ব্যবহার করেছে পুলিশ।

নিহতের স্ত্রী কীর্তি জানান, ৪০ বছর বয়সী হৌসিলা প্রসাদকে ‘শুভম সিং এবং তাঁর তিন আত্মীয় ও বন্ধুরা জোর করে তাদের জমিতে কাজ করতে নিয়ে গিয়েছিল।’ কীর্তি বলেন, তাঁর স্বামী এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩৫০ রুপি মজুরিতে কাজ করেছিলেন। কিন্তু কাজ শেষে টাকা দেওয়া হয়নি।

কীর্তি আরও বলেন, ‘২৬ অক্টোবর তিনি বকেয়া টাকা চাইতে গেলে ওরা লোহার রড দিয়ে তাঁকে মারধর করে। অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা জিপে করে বাড়ির সামনে এনে ফেলে চলে যায়।’ মাথায় গুরুতর আঘাতসহ নানা জখম নিয়ে হৌসিলা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরতে থাকেন। পরে তাঁকে লক্ষ্ণৌয়ের কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে নেওয়া হয়। সেখানে রোববার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

উত্তর প্রদেশ পুলিশের সার্কেল অফিসার দিনেশ কুমার মিশ্র জানান, শুভম সিংকে ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

নিহতের এক আত্মীয় মনীশ প্রসাদ বলেন, ‘আমরা মরদেহ নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান ধর্মঘট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের হুমকি দেয় এবং দ্রুত দাহ সম্পন্ন করতে বাধ্য করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে পুলিশ ঘটনাটিকে ছোটখাটো মারামারি বলে চালিয়ে দেয়। পরে কেবল একজনের নামে অবহেলাজনিত হত্যার মামলা করে। অথচ গোটা গ্রাম জানে, অন্তত চারজন মিলে হৌসিলা প্রসাদকে মেরেছিল।’

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিন দিন পর পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তখন অভিযোগ ‘অবহেলাজনিত হত্যা’ থেকে বাড়িয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খুন’-এ রূপ দেওয়া হয়, বিশেষ করে খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর।

উত্তর প্রদেশের অন্য জায়গা থেকেও দলিতদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। লক্ষ্ণৌয়ের কাকরি এলাকার শীতলা মাতা মন্দিরে ৬৫ বছর বয়সী রামপালকে নিজের মূত্র চাটতে বাধ্য করা হয়। তিনি তখন প্রস্রাবনালির সংক্রমণে ভুগছিলেন। ঘটনাটি ঘটে ২০ অক্টোবর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে দুনিয়াকে ১৫০ বার উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণদানকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণদানকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বড়াই করে বলেছেন, তাঁর দেশের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে দুনিয়াকে ১৫০ উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এল এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে যে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশ করেছে। এ ছাড়া, মার্কিন মেধাস্বত্ব ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার অভিযোগও রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে।

সিবিএস নিউজের উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরাও তাদের জন্য হুমকি। তুমি যে বিষয়গুলো বলছ, আমরা সেগুলোর অনেকটাই তাদের সঙ্গে করি। এটা খুব প্রতিযোগিতামূলক এক বিশ্ব—বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেমন তাদের দিকে নজর রাখি, তারাও আমাদের দিকে রাখে। তবে আমি মনে করি, আমরা এখন বেশ ভালোভাবে চলছি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করলে আরও বড়, ভালো ও শক্তিশালী হতে পারব; শুধু তাদের পরাস্ত করার চেষ্টা করলেই হবে না।’

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, চীন দ্রুতগতিতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে। চীন অনেক পিছিয়ে, তবে পাঁচ বছরের মধ্যে তারা সমান অবস্থায় পৌঁছে যাবে। তারা দ্রুতগতিতে তৈরি করছে, আর আমি মনে করি, আমাদের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিছু করা উচিত।’

ট্রাম্প জানান, তিনি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়টি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কাছে এমন অস্ত্র আছে, যা দিয়ে পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব। রাশিয়ারও অনেক পারমাণবিক অস্ত্র আছে, আর চীনেরও কিছু আছে—বরং অনেকটাই আছে।’

নিজের দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন ও রাশিয়াও তাদের অস্ত্র পরীক্ষা করছে, শুধু তোমরা সেটা জানো না।’ রিপাবলিকান এই নেতা দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিপরীতে ‘খুব ভালো করছে’, তবে স্বীকার করেন যে বেইজিংয়ের হাতে বিরল খনিজ সম্পদের এক ধরনের ‘ক্ষমতা’ আছে, যা ওয়াশিংটনের ওপর প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছিলাম। হঠাৎ তারা বুঝলো, আমাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। তখন তারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করল। তাদের যে ক্ষমতা, সেটা হলো রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ। তারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এগুলো জমাচ্ছে এবং যত্ন করে সংরক্ষণ করছে।’ এই খনিজ পদার্থগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি—কম্পিউটার থেকে শুরু করে অস্ত্র তৈরির জন্য পর্যন্ত।

ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এটা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, আর আমরা তাদের বিরুদ্ধে অন্য জিনিস ব্যবহার করেছি। যেমন বিমান যন্ত্রাংশ। এটা খুব বড় ব্যাপার। তাদের শত শত বোয়িং বিমান আছে। আমরা তাদের যন্ত্রাংশ দেওয়া বন্ধ করেছিলাম। আমরা দুই পক্ষই হয়তো একটু অযৌক্তিক আচরণ করেছিলাম, তবে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল শুল্ক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৭, ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আফগানিস্তানের মাজার–ই–শরিফ অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
আফগানিস্তানের মাজার–ই–শরিফ অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, গতকাল রোববার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে, ভূমি থেকে ২৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

সামানগান প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র সামিম জোয়ান্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সোমবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৫০ জন আহত হয়েছেন এবং সাতজন মারা গেছেন। আহত সবাইকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, এই হিসাব সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে পাওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি।

ইউএসজিএস তাদের স্বয়ংক্রিয় সতর্কতা ব্যবস্থা পেজারে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বড় ধরনের প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’ পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, এই মাত্রার সতর্কতা সাধারণত আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ের প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন করে বলে জানানো হয়।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে। বলখ প্রদেশের মুখপাত্র হাজি যায়েদ বলেন, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের পবিত্র মাজারের একটি অংশ ধসে পড়েছে। তিনি বিখ্যাত নীল মসজিদটির কথা উল্লেখ করেন।

প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার মানুষের এই শহরে রাতে ভূমিকম্পের পর অনেকেই আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এএফপির এক প্রতিবেদক জানান, মানুষ ভয়ে আশপাশের ভবন থেকে বেরিয়ে আসে, কেউ কেউ খোলা মাঠে আশ্রয় নেয়।

তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি তাদের জন্য আরেকটি বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ২০২১ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশটি তিনটি বড় ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়েছে। অথচ বিদেশি সাহায্য, যা একসময় আফগান অর্থনীতির প্রধান ভরসা ছিল, এখন অনেক কমে গেছে।

চলতি বছরের ৩১ আগস্ট দেশটির পূর্বাঞ্চলে ৬ ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এটি সাম্প্রতিক আফগান ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। এর আগে, ২০২৩ সালে পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাতে, ইরান সীমান্তের কাছে, এবং ২০২২ সালে পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে বড় দুটি ভূমিকম্পে শত শত মানুষ মারা যায় ও হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।

দেশটিতে ভূমিকম্প একটি সাধারণ ঘটনা। বিশেষত হিন্দুকুশ পর্বতমালা অঞ্চলে, যেখানে ইউরেশীয় ও ভারতীয় টেকটোনিক ফলকের মিলনস্থল। দীর্ঘ যুদ্ধের পর আফগানিস্তান এখন নানা সংকটে জর্জরিত। চরম দারিদ্র্য, তীব্র খরা এবং পাকিস্তান ও ইরান থেকে ফেরত পাঠানো লাখ লাখ আফগান নাগরিকের চাপে দেশটির অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।

বেশির ভাগ আফগান বাড়িঘর দুর্বলভাবে নির্মিত। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজও ব্যাহত হয়। ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের ভূকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপ্টির তথ্য অনুযায়ী, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে ৭ মাত্রার বেশি শক্তির অন্তত ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২২ বছর ধরে নির্মাণ শেষে অমূল্য সম্পদ দেখাতে খুলল ‘গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। শনিবার (১ নভেম্বর) এই জাদুঘরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সরকারি ছুটি পালিত হয়েছে।

গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম সম্পর্কে রোববার (২ নভেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, এটির জন্য ২০০২ সালে মিসর সরকার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। ওই প্রতিযোগিতায় ১ হাজার ৫৫৬টি প্রস্তাব জমা পড়ে। পরে সবাইকে অবাক করে বিজয়ী হয় ডাবলিনভিত্তিক একটি ছোট আর্কিটেকচার ফার্ম—হেনেগান পেং আর্কিটেক্টস। ওই ফার্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়েশিন হেনেগান তখন ভাবতেও পারেননি যে, তাঁর চার সদস্যের ছোট প্রতিষ্ঠান এমন ঐতিহাসিক দায়িত্ব পেতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শেষ পর্যন্ত সময় লেগেছে ২২ বছর।

মিউজিয়ামটির নির্মাণ পরিকল্পনা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর পেরিয়েছে আরব বসন্তের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো নানা ধাক্কা। তবু টিকে থেকেছে প্রকল্পটি। ২০২৫ সালে এসে অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিসরের এই গর্ব।

এই জাদুঘরকে বলা হচ্ছে ‘প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার দীর্ঘায়ু ও মহিমার প্রতীক’। ২ লাখ ৫৮ হাজার বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত স্থাপনাটিতে রয়েছে প্রায় এক লাখ নিদর্শন। এর মধ্যে প্রাচীন প্যাপিরাস, টেক্সটাইল, পাত্র, সারকোফাগাস, এমনকি সংরক্ষিত মানব মমিও রয়েছে। সময়ক্রম অনুযায়ী গ্যালারিগুলো সাজানো হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে কপটিক যুগ পর্যন্ত—অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত। সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো তুতেনখামেন গ্যালারি, যেখানে তরুণ রাজা তুতেনখামেনের সমাধি থেকে পাওয়া ৫ হাজার নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।

প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬ ফুট উঁচু দ্বিতীয় রামেসিসের মূর্তি, আর বাইরে রয়েছে ৮৭ টন ওজনের এক বিশাল স্তম্ভ। ছাদের ঢাল এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে প্রাকৃতিক আলো পর্যাপ্তভাবে প্রবেশ করতে পারে। নির্মাতা হেনেগান বলেন, ‘প্রাকৃতিক আলোতে এই জাদুঘর যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।’

মিউজিয়ামের মূল অংশটিতে ছয়তলা একটি প্রশস্ত সিঁড়ি দর্শনার্থীদের নিয়ে যায় সময়ের বিপরীতে সাজানো পাথরের ভাস্কর্যের প্রদর্শনীতে। এর চূড়ায় পৌঁছে দর্শনার্থীরা পাবেন এক অনবদ্য দৃশ্য—গিজার মহাপিরামিড কমপ্লেক্সের সরাসরি দৃশ্যপট।

ভবনটির ছাদের ঢাল পিরামিডের সর্বোচ্চ বিন্দুর সমান্তরাল, যেন এটি কখনোই পিরামিডকে ছাপিয়ে না যায়। জাদুঘরের নকশায় ব্যবহৃত জ্যামিতিক রেখা ও স্থান বিন্যাস এমনভাবে সাজানো যে ভবনটি মরুভূমির প্রান্তে একটি নতুন সীমারেখা তৈরি করেছে, অথচ পিরামিডের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে।

দুই দশকের পরিশ্রমে দাঁড়ানো এই স্থাপনা সম্পর্কে হেনেগান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ যাত্রার সার্থক পরিণতি। এত সূক্ষ্ম ও ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থানান্তরিত করতে সময় লাগবেই। একটু বেশি সময় লাগলেও যদি তা নিখুঁতভাবে করা যায়—তবে সেটাই সবচেয়ে মূল্যবান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত