
ঢাকা: ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। আগামীকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। তবে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলছেন, ভারতের নির্বাচনে যা হচ্ছে, তা শুধু একটি অঞ্চলের অতীত পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এর অনেকটাই নির্ভর করে সাংগঠনিক সুবিধাদির ওপর। আজ শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সুনেত্রা চৌধুরীর নেওয়া এ সাক্ষাৎকারের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হলো।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কতটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?
অমর্ত্য সেন: আমি এখন যেখানে (হার্ভার্ড) থাকি, তার থেকে কলকাতার সময়ের বিস্তর ফারাক। তাই যতটা সম্ভব, এই নির্বাচনগুলোর দিকে নজর রাখছি।
এ নির্বাচনে বাংলার আত্মা নিয়ে লড়াই হচ্ছে। প্রতিটি দল নিজেদের বাংলার প্রকৃত প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। এই নির্বাচনী লড়াইকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অমর্ত্য সেন: হ্যাঁ, এক ভীষণ লড়াই চলছে। কেন্দ্র সরকার যখন কোনো একটি রাজ্যের নির্বাচনের ওপর এত অস্বাভাবিক মাত্রার গুরুত্বারোপ করে, তখন এ নিয়ে ব্যাপক মাত্রার আগ্রহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর জন্য বাড়তি উপলক্ষের আর প্রয়োজন পড়ে না। অন্যদিকে, এও অস্বাভাবিক নয় যে, স্থানীয় বাঙালিরা এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। এই দুটি বিষয় একসঙ্গে একে যুদ্ধের রূপ দিয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসেই বিরল।
বাংলার নির্বাচনে সহিংসতা ঘটে কেন? নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আট ধাপেই সহিংসতা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
অমর্ত্য সেন: বাংলা বেশি সহিংস—এমন কিছু এর পেছনে নেই বলেই মনে হয়। আমার মনে হয়, ইসি বিভাজন টানতে চাইছে। নির্বাচনের ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকান, তবে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব খুব অল্পই পালন করছেন এবং নির্বাচনের কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এর মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার সুস্পষ্টভাবে সব ধরনের কাজে অংশ নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে, যা এক বা দুদিনে নির্বাচন হলে সম্ভব হতো না। এখন ইসি এই কারণেই এভাবে (নির্বাচন) করছে কিনা, তা আমি জানি না। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যা, তাতে বাংলার বহু মানুষ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছেন। এমনকি (চতুর্থ ধাপে ভোট গ্রহণের সময়) গোলাগুলিতেও চার বাঙালি নিহত হলো, যাদের সবাই মুসলমান। আমি সে গল্পের ভেতরে যাচ্ছি না। কিন্তু একে শুধু বাংলার শান্তির ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না বা এর অনুপস্থিতি হিসেবেও নয়, যা আট ধাপের নির্বাচনে বাংলায় ঝুঁকি তৈরি করেছে। বরং প্রায় একই বিস্তৃতির অঞ্চলে এক বা দুদিনের মধ্যে এটি (গোলাগুলি) ঘটেছে। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, যা আমাদের আলোচনা করা দরকার।
আমি জানি না, বাংলায় নির্বাচনের সময় এর চেয়ে বেশি রক্ত ঝরার ঐতিহ্য রয়েছে কিনা। যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময়ের কথা ভাবেন, তবে বাংলায় বহু বছর ধরে বহু লড়াই হয়েছে। পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিল। সেখানে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ–উদ–দৌলার সঙ্গে ব্রিটিশের যুদ্ধ হয়েছিল। এর পর ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ব্রিটিশদের তাড়ানোর চেষ্টা থেকে বহু লড়াই হয়েছে, যার মূল ছিল বাংলায়। ফলে ঐতিহাসিক একটা প্রবণতা অবশ্যই আছে।
বাংলা ভাগ হয়েছিল হিন্দু ও মুসলিম বিবেচনায়, যা ঐতিহ্যগতভাবে খুব বড় বিভাজন ছিল না। বিপরীত দিক থেকে, যদি দশম শতকে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির গোড়ার দিকে তাকানো যায়, তবে হিন্দু–মুসলিমের ঐক্যের দেখাই মিলবে। মূল দুই মহাকাব্য রামায়ন ও মহাভারত অনুবাদের মূল উদ্যোগটি এসেছিল মুসলমান রাজার দিক থেকে, যিনি মহাকাব্যের খুব ভক্ত ছিলেন। সময়ে সময়ে হিন্দু–মুসলিম ঐক্যের ঐতিহ্যের দেখাই মিলবে। ব্রিটিশরা হিন্দু–মুসলিমদের বিভাজিত করতে উদ্গ্রিব ছিল। একে মোটাদাগে ভাগ করে শাসন করার নীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের দিকে তাকালে সেই নীতিরই নবরূপায়ণ চোখে পড়বে। এই আইন মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় নয়। কারণ, এতে হিন্দুদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা তাদের দেওয়া হয়নি। এটি শুধু মুসলিমদেরই নয়, অনেক হিন্দুর মধ্যেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে, যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির ওপর দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখে।
শেষব্দি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাংলা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এর যেকোনো ব্যাত্যয়ের বিরোধিতা আসে, যেখানে পুলিশ সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঘটনায় যখন শুধু মুসলিমই গুলিবিদ্ধ হয়, বা নির্বাচনে বিজয়ী হতে চাওয়া কোনো বড় দলের নেতা যখন বলেন, ‘আমরা চাই না মুসলিমরা আমাদের ভোট দিক।’
কেন নয়? এটি সব ধরনের প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। তাই উত্তেজনার পেছনে অনেক কারণ আছে, যা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। এই ভাবনা বাংলার সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর নয়। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতা অনেক বড় বিষয়। আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু তারপরই তো কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি (নজরুল) যে ম্যাগাজিনে লিখতেন, তার মাস্টহেডে (পত্রিকার প্রথম পাতায় নাম যেখানে লেখা থাকে) ১৫ শতকের যে কবিতার পঙ্ক্তি লেখা থাকত, তা হচ্ছে—সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই। ধর্মনিরপেক্ষতার ইস্যুটি বরাবরই এখানে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক যেমন এই নির্বাচনগুলোর লড়াইয়ের ময়দানে হাজির রয়েছে।
কোনো সন্দেহ নেই বিজেপি মেরুকরণকে ব্যবহার করছে। কিন্তু নির্বাচন কৌশলি প্রশান্ত কিশোর বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস মুসলিমদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আর এখন হিন্দুরা এমন এক দলকে ভোট দিতে চাইছে, যারা তাদের স্বার্থের দিকে তাকাবে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত?
অমর্ত্য সেন: একে অনুমাননির্ভর ইতিহাস বলা যায়। বাংলা দীর্ঘদিন ধরেই বিভাজিত ময়দান। ব্রিটিশরা ২০ শতকের শুরুর দিকে যখন একে ভাগ করল এবং চাইল যে, মুসলিমরা আলাদা হোক, তখন তাদের প্রত্যাশা ছিল—বাংলার মুসলিমরা একে সমর্থন করবে, যেহেতু তারা এমন একটি অংশ পাবে, যেখানে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। কিন্তু বাঙালিরা কী করল? বাঙালিরা, হিন্দু, মুসলিম—দুই–ই এর বিরোধিতা করল। বাংলার ঐক্য সম্পর্কিত একটি কবিতা—আমার সোনার বাংলা, পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসা তথ্যকে সত্য মেনে যদি ধরা হয়, বাংলায় দরিদ্র হিন্দুর তুলনায় দরিদ্র মুসলিমের সংখ্যা বেশি ছিল, তবে ন্যায্যতার প্রশ্নে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা জরুরি। ন্যায্যতার বিবেচনায় পিরামিডের প্রান্তে থাকা মানুষদের জন্য কিছু করাটা জরুরি। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বরাবরই এই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। একটি অঞ্চলে কারা দরিদ্র এবং তাদের জন্য কী করা প্রয়োজন, সেদিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন মতুয়া, নমশূদ্র, নিম্ন শ্রেণির হিন্দু বা বাংলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো করেই মুসলিমদের প্রতিও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। এ ক্ষেত্রে একই কারণ কাজ করেছে।
তাই আমার মনে হয়, এই মুসলিম বিষয়ক আলোচনা অনেক হয়েছে। এবার হিন্দুদের উচিত এটা উপলব্ধি করা যে, এটি হিন্দুত্ববাদী ধারণায় উজ্জীবিত একটি দলের প্রচারকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যে–ই এ কথা বলুক, তিনি ভুল করছেন। কারণ, আপনাকে মানুষের দিকে তাকাতে হবে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাহীন শ্রেণি হিসেবে। ভারত সরকার নিজেই মুসলিমদের সুবিধাবঞ্চিত করেছে, যাতে ভারতের বাইরে আপনি নির্যাতিত হলেও একজন হিন্দুর মতো করে ভারতে আপনি আশ্রয় চাইতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে হবে।
আপনি নিম্নবর্গ ও নিম্ন শ্রেণির হিন্দুদের কথা বললেন। তাদের বিজেপি নিজেদের ভোটার বলে মনে করে। ২০১৯ সালে উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে তারা তাদেরই ভোট দিয়েছে। এর ব্যাখ্যা কী?
অমর্ত্য সেন: এটা খুবই মজার প্রশ্ন। একটি অঞ্চলের ন্যায্যতার ইতিহাস একটি নির্বাচনে কী ঘটবে তা নির্ধারণ করে না। এটি সাংগঠনিক সুবিধার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। বাংলা বা উত্তর প্রদেশের বদলে কেরালার দিকে তাকালে মজার বিষয় পাওয়া যাবে। ভারতের যেকোনো জায়গার তুলনায় কেরালায় অস্পৃষ্যতার সংকট, জাত বিচার অনেক বেশি। তারপরও শক্ত সংগঠনের কারণে (এ ক্ষেত্রে বামদের) এই পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে রাতারাতি বদলে গেল। কমিউনিস্ট পার্টি বলেই এটি সম্ভব হয়েছিল, যারা সব জাতির কাছ থেকে ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে এই জাতি সমস্যাকে এড়িয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যে ভূমিকা নিতে পারে, তাকে আমাদের অবজ্ঞা করা উচিত নয়।
হিন্দুত্ববাদ খুবই গতিশীল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। আমি তাদের সঙ্গে একমত না হতেই পারি। কিন্তু তাদের সাংগঠনিক অনেক কিছুকে আমার সম্মান জানাতেই হবে। সব নির্বাচনে না হলেও তারা সফল। কিছু আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায়, বিশেষত ত্রিপুরার মতো এলাকায় বিজেপি আধিপত্য বিরাজ করতে পারত। আমাদের এই সাংগঠনিক দিকটির দিকে তাকাতে হবে। এই কারণে আপনার প্রশ্ন করা উচিত যে, বাংলা যদি এতটাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়, তবে একটি হিন্দু দল জিতুক বা না জিতুক কী করে এতটা সম্ভাবনা তৈরি করল? সংগঠনের কারণেই। আমার মনে হয় না এমন আর কোনো নির্বাচন আমরা দেখেছি, যেখানে কেন্দ্র থেকে এতটা মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘুরে ঘুরে আসছেন এখানে। শুধু তাই নয়, বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বিজেপির হাতে খরচা করার মতো বিস্তর অর্থ আছে, আর তারা এর ভালো ব্যবহারও করছে। ফলে আমার মনে হয় এর দিকে এভাবেই তাকানো উচিত। আমাদের কিছুই করার নেই—এমন আশাহত কথা বলবার কিছু নেই। আপনি যদি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম–ন্যায্যতার নীতিতে অটল থাকেন, তবে আপনার এর জন্য কাজ করা উচিত। এমনভাবে কাজ করা উচিত, যাতে এর দ্বারা হিন্দু, মুসলিম, দলিত বা যারা দলিত নয়, সবাই উদ্বেলিত হয়।
রাজ্য সরকার কোনো গুরুতর ভূল করেছে বলে মনে করেন কি?
অমর্ত্য সেন: হতে পারে অনেক আছে। আমি আলাদা করে গবেষণা করিনি। অনেক অর্জনও আছে। দরিদ্র হলেও গুজরাটের কৃষকদের চেয়ে বাংলার কৃষকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখনো অনেক ভালো। সরবরাহ সম্পর্কিত কিছু বিষয় থাকলেও বণ্টনের বিষয়টি বেশ ভালো। এমন অনেক কিছু আছে। অনেক ভুলও হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতে যেভাবে কৃষকদের সঙ্গে আচরণ করা হয়, তার কথা বলা যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কেন্দ্র সরকারের বিবেচনা থেকে কৃষকেরা একেবারে হারিয়ে গেছে। কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য এখনো তাদের দরকার। ফলে এটি এতটা সরল নয়। কারণ ভুল শনাক্ত করা খুব সহজ। কিন্তু যখন আমরা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে বসি, তখন আমাদের সত্যের অনুসন্ধান করার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বোধও থাকতে হবে। যাকে এই মুহূর্তে একটি উত্তর বলে মনে হচ্ছে, তা উত্তর নাও হতে পারে।

ঢাকা: ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। আগামীকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। তবে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলছেন, ভারতের নির্বাচনে যা হচ্ছে, তা শুধু একটি অঞ্চলের অতীত পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এর অনেকটাই নির্ভর করে সাংগঠনিক সুবিধাদির ওপর। আজ শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সুনেত্রা চৌধুরীর নেওয়া এ সাক্ষাৎকারের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হলো।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কতটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?
অমর্ত্য সেন: আমি এখন যেখানে (হার্ভার্ড) থাকি, তার থেকে কলকাতার সময়ের বিস্তর ফারাক। তাই যতটা সম্ভব, এই নির্বাচনগুলোর দিকে নজর রাখছি।
এ নির্বাচনে বাংলার আত্মা নিয়ে লড়াই হচ্ছে। প্রতিটি দল নিজেদের বাংলার প্রকৃত প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। এই নির্বাচনী লড়াইকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অমর্ত্য সেন: হ্যাঁ, এক ভীষণ লড়াই চলছে। কেন্দ্র সরকার যখন কোনো একটি রাজ্যের নির্বাচনের ওপর এত অস্বাভাবিক মাত্রার গুরুত্বারোপ করে, তখন এ নিয়ে ব্যাপক মাত্রার আগ্রহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর জন্য বাড়তি উপলক্ষের আর প্রয়োজন পড়ে না। অন্যদিকে, এও অস্বাভাবিক নয় যে, স্থানীয় বাঙালিরা এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। এই দুটি বিষয় একসঙ্গে একে যুদ্ধের রূপ দিয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসেই বিরল।
বাংলার নির্বাচনে সহিংসতা ঘটে কেন? নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আট ধাপেই সহিংসতা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
অমর্ত্য সেন: বাংলা বেশি সহিংস—এমন কিছু এর পেছনে নেই বলেই মনে হয়। আমার মনে হয়, ইসি বিভাজন টানতে চাইছে। নির্বাচনের ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকান, তবে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব খুব অল্পই পালন করছেন এবং নির্বাচনের কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এর মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার সুস্পষ্টভাবে সব ধরনের কাজে অংশ নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে, যা এক বা দুদিনে নির্বাচন হলে সম্ভব হতো না। এখন ইসি এই কারণেই এভাবে (নির্বাচন) করছে কিনা, তা আমি জানি না। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যা, তাতে বাংলার বহু মানুষ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছেন। এমনকি (চতুর্থ ধাপে ভোট গ্রহণের সময়) গোলাগুলিতেও চার বাঙালি নিহত হলো, যাদের সবাই মুসলমান। আমি সে গল্পের ভেতরে যাচ্ছি না। কিন্তু একে শুধু বাংলার শান্তির ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না বা এর অনুপস্থিতি হিসেবেও নয়, যা আট ধাপের নির্বাচনে বাংলায় ঝুঁকি তৈরি করেছে। বরং প্রায় একই বিস্তৃতির অঞ্চলে এক বা দুদিনের মধ্যে এটি (গোলাগুলি) ঘটেছে। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, যা আমাদের আলোচনা করা দরকার।
আমি জানি না, বাংলায় নির্বাচনের সময় এর চেয়ে বেশি রক্ত ঝরার ঐতিহ্য রয়েছে কিনা। যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময়ের কথা ভাবেন, তবে বাংলায় বহু বছর ধরে বহু লড়াই হয়েছে। পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিল। সেখানে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ–উদ–দৌলার সঙ্গে ব্রিটিশের যুদ্ধ হয়েছিল। এর পর ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ব্রিটিশদের তাড়ানোর চেষ্টা থেকে বহু লড়াই হয়েছে, যার মূল ছিল বাংলায়। ফলে ঐতিহাসিক একটা প্রবণতা অবশ্যই আছে।
বাংলা ভাগ হয়েছিল হিন্দু ও মুসলিম বিবেচনায়, যা ঐতিহ্যগতভাবে খুব বড় বিভাজন ছিল না। বিপরীত দিক থেকে, যদি দশম শতকে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির গোড়ার দিকে তাকানো যায়, তবে হিন্দু–মুসলিমের ঐক্যের দেখাই মিলবে। মূল দুই মহাকাব্য রামায়ন ও মহাভারত অনুবাদের মূল উদ্যোগটি এসেছিল মুসলমান রাজার দিক থেকে, যিনি মহাকাব্যের খুব ভক্ত ছিলেন। সময়ে সময়ে হিন্দু–মুসলিম ঐক্যের ঐতিহ্যের দেখাই মিলবে। ব্রিটিশরা হিন্দু–মুসলিমদের বিভাজিত করতে উদ্গ্রিব ছিল। একে মোটাদাগে ভাগ করে শাসন করার নীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের দিকে তাকালে সেই নীতিরই নবরূপায়ণ চোখে পড়বে। এই আইন মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় নয়। কারণ, এতে হিন্দুদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা তাদের দেওয়া হয়নি। এটি শুধু মুসলিমদেরই নয়, অনেক হিন্দুর মধ্যেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে, যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির ওপর দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখে।
শেষব্দি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাংলা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এর যেকোনো ব্যাত্যয়ের বিরোধিতা আসে, যেখানে পুলিশ সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঘটনায় যখন শুধু মুসলিমই গুলিবিদ্ধ হয়, বা নির্বাচনে বিজয়ী হতে চাওয়া কোনো বড় দলের নেতা যখন বলেন, ‘আমরা চাই না মুসলিমরা আমাদের ভোট দিক।’
কেন নয়? এটি সব ধরনের প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। তাই উত্তেজনার পেছনে অনেক কারণ আছে, যা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। এই ভাবনা বাংলার সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর নয়। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতা অনেক বড় বিষয়। আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু তারপরই তো কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি (নজরুল) যে ম্যাগাজিনে লিখতেন, তার মাস্টহেডে (পত্রিকার প্রথম পাতায় নাম যেখানে লেখা থাকে) ১৫ শতকের যে কবিতার পঙ্ক্তি লেখা থাকত, তা হচ্ছে—সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই। ধর্মনিরপেক্ষতার ইস্যুটি বরাবরই এখানে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক যেমন এই নির্বাচনগুলোর লড়াইয়ের ময়দানে হাজির রয়েছে।
কোনো সন্দেহ নেই বিজেপি মেরুকরণকে ব্যবহার করছে। কিন্তু নির্বাচন কৌশলি প্রশান্ত কিশোর বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস মুসলিমদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আর এখন হিন্দুরা এমন এক দলকে ভোট দিতে চাইছে, যারা তাদের স্বার্থের দিকে তাকাবে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত?
অমর্ত্য সেন: একে অনুমাননির্ভর ইতিহাস বলা যায়। বাংলা দীর্ঘদিন ধরেই বিভাজিত ময়দান। ব্রিটিশরা ২০ শতকের শুরুর দিকে যখন একে ভাগ করল এবং চাইল যে, মুসলিমরা আলাদা হোক, তখন তাদের প্রত্যাশা ছিল—বাংলার মুসলিমরা একে সমর্থন করবে, যেহেতু তারা এমন একটি অংশ পাবে, যেখানে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। কিন্তু বাঙালিরা কী করল? বাঙালিরা, হিন্দু, মুসলিম—দুই–ই এর বিরোধিতা করল। বাংলার ঐক্য সম্পর্কিত একটি কবিতা—আমার সোনার বাংলা, পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসা তথ্যকে সত্য মেনে যদি ধরা হয়, বাংলায় দরিদ্র হিন্দুর তুলনায় দরিদ্র মুসলিমের সংখ্যা বেশি ছিল, তবে ন্যায্যতার প্রশ্নে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা জরুরি। ন্যায্যতার বিবেচনায় পিরামিডের প্রান্তে থাকা মানুষদের জন্য কিছু করাটা জরুরি। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বরাবরই এই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। একটি অঞ্চলে কারা দরিদ্র এবং তাদের জন্য কী করা প্রয়োজন, সেদিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন মতুয়া, নমশূদ্র, নিম্ন শ্রেণির হিন্দু বা বাংলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো করেই মুসলিমদের প্রতিও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। এ ক্ষেত্রে একই কারণ কাজ করেছে।
তাই আমার মনে হয়, এই মুসলিম বিষয়ক আলোচনা অনেক হয়েছে। এবার হিন্দুদের উচিত এটা উপলব্ধি করা যে, এটি হিন্দুত্ববাদী ধারণায় উজ্জীবিত একটি দলের প্রচারকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যে–ই এ কথা বলুক, তিনি ভুল করছেন। কারণ, আপনাকে মানুষের দিকে তাকাতে হবে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাহীন শ্রেণি হিসেবে। ভারত সরকার নিজেই মুসলিমদের সুবিধাবঞ্চিত করেছে, যাতে ভারতের বাইরে আপনি নির্যাতিত হলেও একজন হিন্দুর মতো করে ভারতে আপনি আশ্রয় চাইতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে হবে।
আপনি নিম্নবর্গ ও নিম্ন শ্রেণির হিন্দুদের কথা বললেন। তাদের বিজেপি নিজেদের ভোটার বলে মনে করে। ২০১৯ সালে উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে তারা তাদেরই ভোট দিয়েছে। এর ব্যাখ্যা কী?
অমর্ত্য সেন: এটা খুবই মজার প্রশ্ন। একটি অঞ্চলের ন্যায্যতার ইতিহাস একটি নির্বাচনে কী ঘটবে তা নির্ধারণ করে না। এটি সাংগঠনিক সুবিধার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। বাংলা বা উত্তর প্রদেশের বদলে কেরালার দিকে তাকালে মজার বিষয় পাওয়া যাবে। ভারতের যেকোনো জায়গার তুলনায় কেরালায় অস্পৃষ্যতার সংকট, জাত বিচার অনেক বেশি। তারপরও শক্ত সংগঠনের কারণে (এ ক্ষেত্রে বামদের) এই পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে রাতারাতি বদলে গেল। কমিউনিস্ট পার্টি বলেই এটি সম্ভব হয়েছিল, যারা সব জাতির কাছ থেকে ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে এই জাতি সমস্যাকে এড়িয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যে ভূমিকা নিতে পারে, তাকে আমাদের অবজ্ঞা করা উচিত নয়।
হিন্দুত্ববাদ খুবই গতিশীল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। আমি তাদের সঙ্গে একমত না হতেই পারি। কিন্তু তাদের সাংগঠনিক অনেক কিছুকে আমার সম্মান জানাতেই হবে। সব নির্বাচনে না হলেও তারা সফল। কিছু আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায়, বিশেষত ত্রিপুরার মতো এলাকায় বিজেপি আধিপত্য বিরাজ করতে পারত। আমাদের এই সাংগঠনিক দিকটির দিকে তাকাতে হবে। এই কারণে আপনার প্রশ্ন করা উচিত যে, বাংলা যদি এতটাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়, তবে একটি হিন্দু দল জিতুক বা না জিতুক কী করে এতটা সম্ভাবনা তৈরি করল? সংগঠনের কারণেই। আমার মনে হয় না এমন আর কোনো নির্বাচন আমরা দেখেছি, যেখানে কেন্দ্র থেকে এতটা মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘুরে ঘুরে আসছেন এখানে। শুধু তাই নয়, বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বিজেপির হাতে খরচা করার মতো বিস্তর অর্থ আছে, আর তারা এর ভালো ব্যবহারও করছে। ফলে আমার মনে হয় এর দিকে এভাবেই তাকানো উচিত। আমাদের কিছুই করার নেই—এমন আশাহত কথা বলবার কিছু নেই। আপনি যদি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম–ন্যায্যতার নীতিতে অটল থাকেন, তবে আপনার এর জন্য কাজ করা উচিত। এমনভাবে কাজ করা উচিত, যাতে এর দ্বারা হিন্দু, মুসলিম, দলিত বা যারা দলিত নয়, সবাই উদ্বেলিত হয়।
রাজ্য সরকার কোনো গুরুতর ভূল করেছে বলে মনে করেন কি?
অমর্ত্য সেন: হতে পারে অনেক আছে। আমি আলাদা করে গবেষণা করিনি। অনেক অর্জনও আছে। দরিদ্র হলেও গুজরাটের কৃষকদের চেয়ে বাংলার কৃষকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখনো অনেক ভালো। সরবরাহ সম্পর্কিত কিছু বিষয় থাকলেও বণ্টনের বিষয়টি বেশ ভালো। এমন অনেক কিছু আছে। অনেক ভুলও হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতে যেভাবে কৃষকদের সঙ্গে আচরণ করা হয়, তার কথা বলা যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কেন্দ্র সরকারের বিবেচনা থেকে কৃষকেরা একেবারে হারিয়ে গেছে। কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য এখনো তাদের দরকার। ফলে এটি এতটা সরল নয়। কারণ ভুল শনাক্ত করা খুব সহজ। কিন্তু যখন আমরা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে বসি, তখন আমাদের সত্যের অনুসন্ধান করার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বোধও থাকতে হবে। যাকে এই মুহূর্তে একটি উত্তর বলে মনে হচ্ছে, তা উত্তর নাও হতে পারে।

ঢাকা: ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। আগামীকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। তবে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলছেন, ভারতের নির্বাচনে যা হচ্ছে, তা শুধু একটি অঞ্চলের অতীত পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এর অনেকটাই নির্ভর করে সাংগঠনিক সুবিধাদির ওপর। আজ শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সুনেত্রা চৌধুরীর নেওয়া এ সাক্ষাৎকারের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হলো।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কতটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?
অমর্ত্য সেন: আমি এখন যেখানে (হার্ভার্ড) থাকি, তার থেকে কলকাতার সময়ের বিস্তর ফারাক। তাই যতটা সম্ভব, এই নির্বাচনগুলোর দিকে নজর রাখছি।
এ নির্বাচনে বাংলার আত্মা নিয়ে লড়াই হচ্ছে। প্রতিটি দল নিজেদের বাংলার প্রকৃত প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। এই নির্বাচনী লড়াইকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অমর্ত্য সেন: হ্যাঁ, এক ভীষণ লড়াই চলছে। কেন্দ্র সরকার যখন কোনো একটি রাজ্যের নির্বাচনের ওপর এত অস্বাভাবিক মাত্রার গুরুত্বারোপ করে, তখন এ নিয়ে ব্যাপক মাত্রার আগ্রহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর জন্য বাড়তি উপলক্ষের আর প্রয়োজন পড়ে না। অন্যদিকে, এও অস্বাভাবিক নয় যে, স্থানীয় বাঙালিরা এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। এই দুটি বিষয় একসঙ্গে একে যুদ্ধের রূপ দিয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসেই বিরল।
বাংলার নির্বাচনে সহিংসতা ঘটে কেন? নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আট ধাপেই সহিংসতা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
অমর্ত্য সেন: বাংলা বেশি সহিংস—এমন কিছু এর পেছনে নেই বলেই মনে হয়। আমার মনে হয়, ইসি বিভাজন টানতে চাইছে। নির্বাচনের ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকান, তবে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব খুব অল্পই পালন করছেন এবং নির্বাচনের কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এর মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার সুস্পষ্টভাবে সব ধরনের কাজে অংশ নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে, যা এক বা দুদিনে নির্বাচন হলে সম্ভব হতো না। এখন ইসি এই কারণেই এভাবে (নির্বাচন) করছে কিনা, তা আমি জানি না। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যা, তাতে বাংলার বহু মানুষ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছেন। এমনকি (চতুর্থ ধাপে ভোট গ্রহণের সময়) গোলাগুলিতেও চার বাঙালি নিহত হলো, যাদের সবাই মুসলমান। আমি সে গল্পের ভেতরে যাচ্ছি না। কিন্তু একে শুধু বাংলার শান্তির ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না বা এর অনুপস্থিতি হিসেবেও নয়, যা আট ধাপের নির্বাচনে বাংলায় ঝুঁকি তৈরি করেছে। বরং প্রায় একই বিস্তৃতির অঞ্চলে এক বা দুদিনের মধ্যে এটি (গোলাগুলি) ঘটেছে। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, যা আমাদের আলোচনা করা দরকার।
আমি জানি না, বাংলায় নির্বাচনের সময় এর চেয়ে বেশি রক্ত ঝরার ঐতিহ্য রয়েছে কিনা। যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময়ের কথা ভাবেন, তবে বাংলায় বহু বছর ধরে বহু লড়াই হয়েছে। পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিল। সেখানে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ–উদ–দৌলার সঙ্গে ব্রিটিশের যুদ্ধ হয়েছিল। এর পর ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ব্রিটিশদের তাড়ানোর চেষ্টা থেকে বহু লড়াই হয়েছে, যার মূল ছিল বাংলায়। ফলে ঐতিহাসিক একটা প্রবণতা অবশ্যই আছে।
বাংলা ভাগ হয়েছিল হিন্দু ও মুসলিম বিবেচনায়, যা ঐতিহ্যগতভাবে খুব বড় বিভাজন ছিল না। বিপরীত দিক থেকে, যদি দশম শতকে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির গোড়ার দিকে তাকানো যায়, তবে হিন্দু–মুসলিমের ঐক্যের দেখাই মিলবে। মূল দুই মহাকাব্য রামায়ন ও মহাভারত অনুবাদের মূল উদ্যোগটি এসেছিল মুসলমান রাজার দিক থেকে, যিনি মহাকাব্যের খুব ভক্ত ছিলেন। সময়ে সময়ে হিন্দু–মুসলিম ঐক্যের ঐতিহ্যের দেখাই মিলবে। ব্রিটিশরা হিন্দু–মুসলিমদের বিভাজিত করতে উদ্গ্রিব ছিল। একে মোটাদাগে ভাগ করে শাসন করার নীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের দিকে তাকালে সেই নীতিরই নবরূপায়ণ চোখে পড়বে। এই আইন মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় নয়। কারণ, এতে হিন্দুদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা তাদের দেওয়া হয়নি। এটি শুধু মুসলিমদেরই নয়, অনেক হিন্দুর মধ্যেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে, যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির ওপর দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখে।
শেষব্দি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাংলা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এর যেকোনো ব্যাত্যয়ের বিরোধিতা আসে, যেখানে পুলিশ সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঘটনায় যখন শুধু মুসলিমই গুলিবিদ্ধ হয়, বা নির্বাচনে বিজয়ী হতে চাওয়া কোনো বড় দলের নেতা যখন বলেন, ‘আমরা চাই না মুসলিমরা আমাদের ভোট দিক।’
কেন নয়? এটি সব ধরনের প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। তাই উত্তেজনার পেছনে অনেক কারণ আছে, যা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। এই ভাবনা বাংলার সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর নয়। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতা অনেক বড় বিষয়। আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু তারপরই তো কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি (নজরুল) যে ম্যাগাজিনে লিখতেন, তার মাস্টহেডে (পত্রিকার প্রথম পাতায় নাম যেখানে লেখা থাকে) ১৫ শতকের যে কবিতার পঙ্ক্তি লেখা থাকত, তা হচ্ছে—সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই। ধর্মনিরপেক্ষতার ইস্যুটি বরাবরই এখানে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক যেমন এই নির্বাচনগুলোর লড়াইয়ের ময়দানে হাজির রয়েছে।
কোনো সন্দেহ নেই বিজেপি মেরুকরণকে ব্যবহার করছে। কিন্তু নির্বাচন কৌশলি প্রশান্ত কিশোর বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস মুসলিমদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আর এখন হিন্দুরা এমন এক দলকে ভোট দিতে চাইছে, যারা তাদের স্বার্থের দিকে তাকাবে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত?
অমর্ত্য সেন: একে অনুমাননির্ভর ইতিহাস বলা যায়। বাংলা দীর্ঘদিন ধরেই বিভাজিত ময়দান। ব্রিটিশরা ২০ শতকের শুরুর দিকে যখন একে ভাগ করল এবং চাইল যে, মুসলিমরা আলাদা হোক, তখন তাদের প্রত্যাশা ছিল—বাংলার মুসলিমরা একে সমর্থন করবে, যেহেতু তারা এমন একটি অংশ পাবে, যেখানে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। কিন্তু বাঙালিরা কী করল? বাঙালিরা, হিন্দু, মুসলিম—দুই–ই এর বিরোধিতা করল। বাংলার ঐক্য সম্পর্কিত একটি কবিতা—আমার সোনার বাংলা, পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসা তথ্যকে সত্য মেনে যদি ধরা হয়, বাংলায় দরিদ্র হিন্দুর তুলনায় দরিদ্র মুসলিমের সংখ্যা বেশি ছিল, তবে ন্যায্যতার প্রশ্নে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা জরুরি। ন্যায্যতার বিবেচনায় পিরামিডের প্রান্তে থাকা মানুষদের জন্য কিছু করাটা জরুরি। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বরাবরই এই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। একটি অঞ্চলে কারা দরিদ্র এবং তাদের জন্য কী করা প্রয়োজন, সেদিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন মতুয়া, নমশূদ্র, নিম্ন শ্রেণির হিন্দু বা বাংলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো করেই মুসলিমদের প্রতিও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। এ ক্ষেত্রে একই কারণ কাজ করেছে।
তাই আমার মনে হয়, এই মুসলিম বিষয়ক আলোচনা অনেক হয়েছে। এবার হিন্দুদের উচিত এটা উপলব্ধি করা যে, এটি হিন্দুত্ববাদী ধারণায় উজ্জীবিত একটি দলের প্রচারকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যে–ই এ কথা বলুক, তিনি ভুল করছেন। কারণ, আপনাকে মানুষের দিকে তাকাতে হবে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাহীন শ্রেণি হিসেবে। ভারত সরকার নিজেই মুসলিমদের সুবিধাবঞ্চিত করেছে, যাতে ভারতের বাইরে আপনি নির্যাতিত হলেও একজন হিন্দুর মতো করে ভারতে আপনি আশ্রয় চাইতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে হবে।
আপনি নিম্নবর্গ ও নিম্ন শ্রেণির হিন্দুদের কথা বললেন। তাদের বিজেপি নিজেদের ভোটার বলে মনে করে। ২০১৯ সালে উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে তারা তাদেরই ভোট দিয়েছে। এর ব্যাখ্যা কী?
অমর্ত্য সেন: এটা খুবই মজার প্রশ্ন। একটি অঞ্চলের ন্যায্যতার ইতিহাস একটি নির্বাচনে কী ঘটবে তা নির্ধারণ করে না। এটি সাংগঠনিক সুবিধার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। বাংলা বা উত্তর প্রদেশের বদলে কেরালার দিকে তাকালে মজার বিষয় পাওয়া যাবে। ভারতের যেকোনো জায়গার তুলনায় কেরালায় অস্পৃষ্যতার সংকট, জাত বিচার অনেক বেশি। তারপরও শক্ত সংগঠনের কারণে (এ ক্ষেত্রে বামদের) এই পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে রাতারাতি বদলে গেল। কমিউনিস্ট পার্টি বলেই এটি সম্ভব হয়েছিল, যারা সব জাতির কাছ থেকে ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে এই জাতি সমস্যাকে এড়িয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যে ভূমিকা নিতে পারে, তাকে আমাদের অবজ্ঞা করা উচিত নয়।
হিন্দুত্ববাদ খুবই গতিশীল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। আমি তাদের সঙ্গে একমত না হতেই পারি। কিন্তু তাদের সাংগঠনিক অনেক কিছুকে আমার সম্মান জানাতেই হবে। সব নির্বাচনে না হলেও তারা সফল। কিছু আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায়, বিশেষত ত্রিপুরার মতো এলাকায় বিজেপি আধিপত্য বিরাজ করতে পারত। আমাদের এই সাংগঠনিক দিকটির দিকে তাকাতে হবে। এই কারণে আপনার প্রশ্ন করা উচিত যে, বাংলা যদি এতটাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়, তবে একটি হিন্দু দল জিতুক বা না জিতুক কী করে এতটা সম্ভাবনা তৈরি করল? সংগঠনের কারণেই। আমার মনে হয় না এমন আর কোনো নির্বাচন আমরা দেখেছি, যেখানে কেন্দ্র থেকে এতটা মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘুরে ঘুরে আসছেন এখানে। শুধু তাই নয়, বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বিজেপির হাতে খরচা করার মতো বিস্তর অর্থ আছে, আর তারা এর ভালো ব্যবহারও করছে। ফলে আমার মনে হয় এর দিকে এভাবেই তাকানো উচিত। আমাদের কিছুই করার নেই—এমন আশাহত কথা বলবার কিছু নেই। আপনি যদি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম–ন্যায্যতার নীতিতে অটল থাকেন, তবে আপনার এর জন্য কাজ করা উচিত। এমনভাবে কাজ করা উচিত, যাতে এর দ্বারা হিন্দু, মুসলিম, দলিত বা যারা দলিত নয়, সবাই উদ্বেলিত হয়।
রাজ্য সরকার কোনো গুরুতর ভূল করেছে বলে মনে করেন কি?
অমর্ত্য সেন: হতে পারে অনেক আছে। আমি আলাদা করে গবেষণা করিনি। অনেক অর্জনও আছে। দরিদ্র হলেও গুজরাটের কৃষকদের চেয়ে বাংলার কৃষকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখনো অনেক ভালো। সরবরাহ সম্পর্কিত কিছু বিষয় থাকলেও বণ্টনের বিষয়টি বেশ ভালো। এমন অনেক কিছু আছে। অনেক ভুলও হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতে যেভাবে কৃষকদের সঙ্গে আচরণ করা হয়, তার কথা বলা যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কেন্দ্র সরকারের বিবেচনা থেকে কৃষকেরা একেবারে হারিয়ে গেছে। কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য এখনো তাদের দরকার। ফলে এটি এতটা সরল নয়। কারণ ভুল শনাক্ত করা খুব সহজ। কিন্তু যখন আমরা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে বসি, তখন আমাদের সত্যের অনুসন্ধান করার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বোধও থাকতে হবে। যাকে এই মুহূর্তে একটি উত্তর বলে মনে হচ্ছে, তা উত্তর নাও হতে পারে।

ঢাকা: ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। আগামীকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। তবে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলছেন, ভারতের নির্বাচনে যা হচ্ছে, তা শুধু একটি অঞ্চলের অতীত পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এর অনেকটাই নির্ভর করে সাংগঠনিক সুবিধাদির ওপর। আজ শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সুনেত্রা চৌধুরীর নেওয়া এ সাক্ষাৎকারের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হলো।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কতটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?
অমর্ত্য সেন: আমি এখন যেখানে (হার্ভার্ড) থাকি, তার থেকে কলকাতার সময়ের বিস্তর ফারাক। তাই যতটা সম্ভব, এই নির্বাচনগুলোর দিকে নজর রাখছি।
এ নির্বাচনে বাংলার আত্মা নিয়ে লড়াই হচ্ছে। প্রতিটি দল নিজেদের বাংলার প্রকৃত প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। এই নির্বাচনী লড়াইকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অমর্ত্য সেন: হ্যাঁ, এক ভীষণ লড়াই চলছে। কেন্দ্র সরকার যখন কোনো একটি রাজ্যের নির্বাচনের ওপর এত অস্বাভাবিক মাত্রার গুরুত্বারোপ করে, তখন এ নিয়ে ব্যাপক মাত্রার আগ্রহ তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর জন্য বাড়তি উপলক্ষের আর প্রয়োজন পড়ে না। অন্যদিকে, এও অস্বাভাবিক নয় যে, স্থানীয় বাঙালিরা এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। এই দুটি বিষয় একসঙ্গে একে যুদ্ধের রূপ দিয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসেই বিরল।
বাংলার নির্বাচনে সহিংসতা ঘটে কেন? নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আট ধাপেই সহিংসতা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
অমর্ত্য সেন: বাংলা বেশি সহিংস—এমন কিছু এর পেছনে নেই বলেই মনে হয়। আমার মনে হয়, ইসি বিভাজন টানতে চাইছে। নির্বাচনের ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকান, তবে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব খুব অল্পই পালন করছেন এবং নির্বাচনের কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এর মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার সুস্পষ্টভাবে সব ধরনের কাজে অংশ নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে, যা এক বা দুদিনে নির্বাচন হলে সম্ভব হতো না। এখন ইসি এই কারণেই এভাবে (নির্বাচন) করছে কিনা, তা আমি জানি না। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যা, তাতে বাংলার বহু মানুষ নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছেন। এমনকি (চতুর্থ ধাপে ভোট গ্রহণের সময়) গোলাগুলিতেও চার বাঙালি নিহত হলো, যাদের সবাই মুসলমান। আমি সে গল্পের ভেতরে যাচ্ছি না। কিন্তু একে শুধু বাংলার শান্তির ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না বা এর অনুপস্থিতি হিসেবেও নয়, যা আট ধাপের নির্বাচনে বাংলায় ঝুঁকি তৈরি করেছে। বরং প্রায় একই বিস্তৃতির অঞ্চলে এক বা দুদিনের মধ্যে এটি (গোলাগুলি) ঘটেছে। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক কারণ রয়েছে, যা আমাদের আলোচনা করা দরকার।
আমি জানি না, বাংলায় নির্বাচনের সময় এর চেয়ে বেশি রক্ত ঝরার ঐতিহ্য রয়েছে কিনা। যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময়ের কথা ভাবেন, তবে বাংলায় বহু বছর ধরে বহু লড়াই হয়েছে। পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিল। সেখানে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ–উদ–দৌলার সঙ্গে ব্রিটিশের যুদ্ধ হয়েছিল। এর পর ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ব্রিটিশদের তাড়ানোর চেষ্টা থেকে বহু লড়াই হয়েছে, যার মূল ছিল বাংলায়। ফলে ঐতিহাসিক একটা প্রবণতা অবশ্যই আছে।
বাংলা ভাগ হয়েছিল হিন্দু ও মুসলিম বিবেচনায়, যা ঐতিহ্যগতভাবে খুব বড় বিভাজন ছিল না। বিপরীত দিক থেকে, যদি দশম শতকে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির গোড়ার দিকে তাকানো যায়, তবে হিন্দু–মুসলিমের ঐক্যের দেখাই মিলবে। মূল দুই মহাকাব্য রামায়ন ও মহাভারত অনুবাদের মূল উদ্যোগটি এসেছিল মুসলমান রাজার দিক থেকে, যিনি মহাকাব্যের খুব ভক্ত ছিলেন। সময়ে সময়ে হিন্দু–মুসলিম ঐক্যের ঐতিহ্যের দেখাই মিলবে। ব্রিটিশরা হিন্দু–মুসলিমদের বিভাজিত করতে উদ্গ্রিব ছিল। একে মোটাদাগে ভাগ করে শাসন করার নীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নতুন নাগরিকত্ব আইনের দিকে তাকালে সেই নীতিরই নবরূপায়ণ চোখে পড়বে। এই আইন মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় নয়। কারণ, এতে হিন্দুদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা তাদের দেওয়া হয়নি। এটি শুধু মুসলিমদেরই নয়, অনেক হিন্দুর মধ্যেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে, যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির ওপর দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখে।
শেষব্দি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাংলা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এর যেকোনো ব্যাত্যয়ের বিরোধিতা আসে, যেখানে পুলিশ সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঘটনায় যখন শুধু মুসলিমই গুলিবিদ্ধ হয়, বা নির্বাচনে বিজয়ী হতে চাওয়া কোনো বড় দলের নেতা যখন বলেন, ‘আমরা চাই না মুসলিমরা আমাদের ভোট দিক।’
কেন নয়? এটি সব ধরনের প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। তাই উত্তেজনার পেছনে অনেক কারণ আছে, যা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। এই ভাবনা বাংলার সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর নয়। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতা অনেক বড় বিষয়। আমাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু তারপরই তো কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি (নজরুল) যে ম্যাগাজিনে লিখতেন, তার মাস্টহেডে (পত্রিকার প্রথম পাতায় নাম যেখানে লেখা থাকে) ১৫ শতকের যে কবিতার পঙ্ক্তি লেখা থাকত, তা হচ্ছে—সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই। ধর্মনিরপেক্ষতার ইস্যুটি বরাবরই এখানে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক যেমন এই নির্বাচনগুলোর লড়াইয়ের ময়দানে হাজির রয়েছে।
কোনো সন্দেহ নেই বিজেপি মেরুকরণকে ব্যবহার করছে। কিন্তু নির্বাচন কৌশলি প্রশান্ত কিশোর বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস মুসলিমদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আর এখন হিন্দুরা এমন এক দলকে ভোট দিতে চাইছে, যারা তাদের স্বার্থের দিকে তাকাবে। এর সঙ্গে কি আপনি একমত?
অমর্ত্য সেন: একে অনুমাননির্ভর ইতিহাস বলা যায়। বাংলা দীর্ঘদিন ধরেই বিভাজিত ময়দান। ব্রিটিশরা ২০ শতকের শুরুর দিকে যখন একে ভাগ করল এবং চাইল যে, মুসলিমরা আলাদা হোক, তখন তাদের প্রত্যাশা ছিল—বাংলার মুসলিমরা একে সমর্থন করবে, যেহেতু তারা এমন একটি অংশ পাবে, যেখানে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। কিন্তু বাঙালিরা কী করল? বাঙালিরা, হিন্দু, মুসলিম—দুই–ই এর বিরোধিতা করল। বাংলার ঐক্য সম্পর্কিত একটি কবিতা—আমার সোনার বাংলা, পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসা তথ্যকে সত্য মেনে যদি ধরা হয়, বাংলায় দরিদ্র হিন্দুর তুলনায় দরিদ্র মুসলিমের সংখ্যা বেশি ছিল, তবে ন্যায্যতার প্রশ্নে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা জরুরি। ন্যায্যতার বিবেচনায় পিরামিডের প্রান্তে থাকা মানুষদের জন্য কিছু করাটা জরুরি। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বরাবরই এই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। একটি অঞ্চলে কারা দরিদ্র এবং তাদের জন্য কী করা প্রয়োজন, সেদিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন মতুয়া, নমশূদ্র, নিম্ন শ্রেণির হিন্দু বা বাংলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো করেই মুসলিমদের প্রতিও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। এ ক্ষেত্রে একই কারণ কাজ করেছে।
তাই আমার মনে হয়, এই মুসলিম বিষয়ক আলোচনা অনেক হয়েছে। এবার হিন্দুদের উচিত এটা উপলব্ধি করা যে, এটি হিন্দুত্ববাদী ধারণায় উজ্জীবিত একটি দলের প্রচারকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যে–ই এ কথা বলুক, তিনি ভুল করছেন। কারণ, আপনাকে মানুষের দিকে তাকাতে হবে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাহীন শ্রেণি হিসেবে। ভারত সরকার নিজেই মুসলিমদের সুবিধাবঞ্চিত করেছে, যাতে ভারতের বাইরে আপনি নির্যাতিত হলেও একজন হিন্দুর মতো করে ভারতে আপনি আশ্রয় চাইতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে হবে।
আপনি নিম্নবর্গ ও নিম্ন শ্রেণির হিন্দুদের কথা বললেন। তাদের বিজেপি নিজেদের ভোটার বলে মনে করে। ২০১৯ সালে উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে তারা তাদেরই ভোট দিয়েছে। এর ব্যাখ্যা কী?
অমর্ত্য সেন: এটা খুবই মজার প্রশ্ন। একটি অঞ্চলের ন্যায্যতার ইতিহাস একটি নির্বাচনে কী ঘটবে তা নির্ধারণ করে না। এটি সাংগঠনিক সুবিধার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। বাংলা বা উত্তর প্রদেশের বদলে কেরালার দিকে তাকালে মজার বিষয় পাওয়া যাবে। ভারতের যেকোনো জায়গার তুলনায় কেরালায় অস্পৃষ্যতার সংকট, জাত বিচার অনেক বেশি। তারপরও শক্ত সংগঠনের কারণে (এ ক্ষেত্রে বামদের) এই পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে রাতারাতি বদলে গেল। কমিউনিস্ট পার্টি বলেই এটি সম্ভব হয়েছিল, যারা সব জাতির কাছ থেকে ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে এই জাতি সমস্যাকে এড়িয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যে ভূমিকা নিতে পারে, তাকে আমাদের অবজ্ঞা করা উচিত নয়।
হিন্দুত্ববাদ খুবই গতিশীল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। আমি তাদের সঙ্গে একমত না হতেই পারি। কিন্তু তাদের সাংগঠনিক অনেক কিছুকে আমার সম্মান জানাতেই হবে। সব নির্বাচনে না হলেও তারা সফল। কিছু আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকায়, বিশেষত ত্রিপুরার মতো এলাকায় বিজেপি আধিপত্য বিরাজ করতে পারত। আমাদের এই সাংগঠনিক দিকটির দিকে তাকাতে হবে। এই কারণে আপনার প্রশ্ন করা উচিত যে, বাংলা যদি এতটাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়, তবে একটি হিন্দু দল জিতুক বা না জিতুক কী করে এতটা সম্ভাবনা তৈরি করল? সংগঠনের কারণেই। আমার মনে হয় না এমন আর কোনো নির্বাচন আমরা দেখেছি, যেখানে কেন্দ্র থেকে এতটা মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘুরে ঘুরে আসছেন এখানে। শুধু তাই নয়, বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বিজেপির হাতে খরচা করার মতো বিস্তর অর্থ আছে, আর তারা এর ভালো ব্যবহারও করছে। ফলে আমার মনে হয় এর দিকে এভাবেই তাকানো উচিত। আমাদের কিছুই করার নেই—এমন আশাহত কথা বলবার কিছু নেই। আপনি যদি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম–ন্যায্যতার নীতিতে অটল থাকেন, তবে আপনার এর জন্য কাজ করা উচিত। এমনভাবে কাজ করা উচিত, যাতে এর দ্বারা হিন্দু, মুসলিম, দলিত বা যারা দলিত নয়, সবাই উদ্বেলিত হয়।
রাজ্য সরকার কোনো গুরুতর ভূল করেছে বলে মনে করেন কি?
অমর্ত্য সেন: হতে পারে অনেক আছে। আমি আলাদা করে গবেষণা করিনি। অনেক অর্জনও আছে। দরিদ্র হলেও গুজরাটের কৃষকদের চেয়ে বাংলার কৃষকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখনো অনেক ভালো। সরবরাহ সম্পর্কিত কিছু বিষয় থাকলেও বণ্টনের বিষয়টি বেশ ভালো। এমন অনেক কিছু আছে। অনেক ভুলও হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতে যেভাবে কৃষকদের সঙ্গে আচরণ করা হয়, তার কথা বলা যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কেন্দ্র সরকারের বিবেচনা থেকে কৃষকেরা একেবারে হারিয়ে গেছে। কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য এখনো তাদের দরকার। ফলে এটি এতটা সরল নয়। কারণ ভুল শনাক্ত করা খুব সহজ। কিন্তু যখন আমরা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করতে বসি, তখন আমাদের সত্যের অনুসন্ধান করার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বোধও থাকতে হবে। যাকে এই মুহূর্তে একটি উত্তর বলে মনে হচ্ছে, তা উত্তর নাও হতে পারে।

পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
২ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিল
৩ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এক মহড়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। এর মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। আর তা হলো, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়া কোনোভাবেই নতি স্বীকার করবে না। বিশেষত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, ঠিক সে সময় মস্কোর এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ পুতিনকে জানান, গত মঙ্গলবার পরীক্ষার সময় ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার (৮,৭০০ মাইল) উড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা আকাশে ছিল। তিনি বলেন, এটি পারমাণবিক শক্তি দ্বারা চালিত এবং এর উড্ডয়নের দূরত্ব কার্যত সীমাহীন।
রাশিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ৯ এম-৭৩০ বুরেভেস্তনিক (ন্যাটো নাম এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল) হলো এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাই আটকাতে পারবে না।
আজ রোববার সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনাকারী সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন পুতিন। এ সময় পুতিন বলেন, এটি এক অনন্য অস্ত্র, যা আর কোনো দেশের কাছে নেই।
পুতিন ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ঘোষণা দেন। তিনি একে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রতিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেন। কারণ, ওয়াশিংটন ২০০১ সালে একতরফাভাবে ১৯৭২ সালের অ্যান্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং পরে ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ শুরু করে।
পুতিন বলেন, রুশ বিশেষজ্ঞরা একসময় বলেছিলেন, এই অস্ত্র তৈরি সম্ভব নয়। কিন্তু এখন এটার পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তিনি গেরাসিমভকে দ্রুত অস্ত্রটির শ্রেণিবিন্যাস ও মোতায়েনের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।
পুতিনের এ ঘোষণার সময় ও প্রেক্ষাপটও তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনাকারী জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠকে সামরিক পোশাক পরে এ ঘোষণা দিয়ে তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি সরাসরি বার্তা দিয়েছেন—বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে। তবে হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সম্প্রতি ট্রাম্প রাশিয়াকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, মস্কো ইউক্রেনকে হারাতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু পুতিনের আজকের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রকে মনে করিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া এখনো বৈশ্বিক পারমাণবিক শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী। একই সঙ্গে আরও ইঙ্গিত দিয়েছে, মস্কোর সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন করে আলোচনায় বসা উচিত।
রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ গেরাসিমভ জানান, বুরেভেস্তনিকের এ পরীক্ষা বিশেষ ছিল। কারণ, এটি পারমাণবিক শক্তির মাধ্যমেই এত দীর্ঘ সময় আকাশে ছিল। তিনি দাবি করেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র যেকোনো অ্যান্টি মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে সক্ষম।

পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এক মহড়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। এর মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। আর তা হলো, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়া কোনোভাবেই নতি স্বীকার করবে না। বিশেষত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, ঠিক সে সময় মস্কোর এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ পুতিনকে জানান, গত মঙ্গলবার পরীক্ষার সময় ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার (৮,৭০০ মাইল) উড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা আকাশে ছিল। তিনি বলেন, এটি পারমাণবিক শক্তি দ্বারা চালিত এবং এর উড্ডয়নের দূরত্ব কার্যত সীমাহীন।
রাশিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ৯ এম-৭৩০ বুরেভেস্তনিক (ন্যাটো নাম এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল) হলো এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাই আটকাতে পারবে না।
আজ রোববার সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনাকারী সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন পুতিন। এ সময় পুতিন বলেন, এটি এক অনন্য অস্ত্র, যা আর কোনো দেশের কাছে নেই।
পুতিন ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ঘোষণা দেন। তিনি একে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রতিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেন। কারণ, ওয়াশিংটন ২০০১ সালে একতরফাভাবে ১৯৭২ সালের অ্যান্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং পরে ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ শুরু করে।
পুতিন বলেন, রুশ বিশেষজ্ঞরা একসময় বলেছিলেন, এই অস্ত্র তৈরি সম্ভব নয়। কিন্তু এখন এটার পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তিনি গেরাসিমভকে দ্রুত অস্ত্রটির শ্রেণিবিন্যাস ও মোতায়েনের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।
পুতিনের এ ঘোষণার সময় ও প্রেক্ষাপটও তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনাকারী জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠকে সামরিক পোশাক পরে এ ঘোষণা দিয়ে তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি সরাসরি বার্তা দিয়েছেন—বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে। তবে হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সম্প্রতি ট্রাম্প রাশিয়াকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, মস্কো ইউক্রেনকে হারাতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু পুতিনের আজকের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রকে মনে করিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া এখনো বৈশ্বিক পারমাণবিক শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী। একই সঙ্গে আরও ইঙ্গিত দিয়েছে, মস্কোর সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন করে আলোচনায় বসা উচিত।
রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ গেরাসিমভ জানান, বুরেভেস্তনিকের এ পরীক্ষা বিশেষ ছিল। কারণ, এটি পারমাণবিক শক্তির মাধ্যমেই এত দীর্ঘ সময় আকাশে ছিল। তিনি দাবি করেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র যেকোনো অ্যান্টি মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে সক্ষম।

ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।
১৬ এপ্রিল ২০২১
চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
২ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিল
৩ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোতে এই প্র্যাঙ্ক ভাইরাল হওয়ার পর তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ট্রেন্ডে অংশ নিতে ব্যবহারকারীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ছবি বা ভিডিও তৈরি করেন। এসব ছবি বা ভিডিওতে অপরিচ্ছন্ন বেশভূষার এক গৃহহীন ব্যক্তিকে ব্যবহারকারীর বাড়ি বা কর্মস্থলে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এরপর সেই ছবি বা ভিডিও ওই নারীরা তাঁদের স্বামী বা প্রেমিককে পাঠান। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা সঙ্গীদের অনুভূতি ও দায়বদ্ধতা পরখ করে দেখেন।
এ ধরনের ছবি তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে গুগলের জেমিনি বা মাইএডিটের ‘এআই রিপ্লেস’-এর মতো টুল।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক আইনজীবীর পরিবার এমন এক ভাইরাল প্র্যাঙ্কের ঘটনায় পুলিশ ডাকার মতো পরিস্থিতিতে পড়েছিল।
আরেক ঘটনায় চীনের পূর্বাঞ্চলীয় আনহুই প্রদেশে এক নারী তাঁর স্বামীকে ঘরে একজন ‘গৃহহীন ব্যক্তি ঢুকে পড়েছে’—এমন এআই দিয়ে বানানো ছবি পাঠান। সে সময় তাঁর স্বামী বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খাচ্ছিলেন।
ছবি দেখে তিনি সেটিকে সত্যি ভেবে পুলিশে ফোন দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে তারা বুঝতে পারে, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে ‘জনসাধারণের সম্পদের অপচয়’ বলে মন্তব্য করেন এবং ওই নারীকে ‘ভয় ছড়ানোর অপরাধে’ অভিযুক্ত করেন।
চীনের জননিরাপত্তা প্রশাসন শাস্তি আইন অনুযায়ী, এমন কাজের জন্য সর্বোচ্চ ১০ দিনের আটকাদেশ এবং প্রায় ৭০ ডলার জরিমানার বিধান আছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক চীনা পুরুষ এ ধরনের প্র্যাঙ্ক বা দুষ্টুমির তীব্র সমালোচনা করেছেন।
একজন লিখেছেন, ‘আপনারা কি সেই রাখাল ছেলের গল্প শোনেননি, যে নেকড়ে এসেছে বলে মিথ্যা চিৎকার দিত? যদি আপনারা বারবার মিথ্যা সতর্কতা দেন, তাহলে সত্যি সত্যি বিপদ হলেও কেউ আপনাদের বিশ্বাস করবে না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেকজন লিখেছেন, ‘এআই আমাদের জীবনে সুবিধা এনেছে, কিন্তু একই সঙ্গে এটি আস্থার সংকটও তৈরি করেছে। প্ল্যাটফর্মের উচিত, এআই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেওয়া।’

চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোতে এই প্র্যাঙ্ক ভাইরাল হওয়ার পর তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ট্রেন্ডে অংশ নিতে ব্যবহারকারীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ছবি বা ভিডিও তৈরি করেন। এসব ছবি বা ভিডিওতে অপরিচ্ছন্ন বেশভূষার এক গৃহহীন ব্যক্তিকে ব্যবহারকারীর বাড়ি বা কর্মস্থলে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এরপর সেই ছবি বা ভিডিও ওই নারীরা তাঁদের স্বামী বা প্রেমিককে পাঠান। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা সঙ্গীদের অনুভূতি ও দায়বদ্ধতা পরখ করে দেখেন।
এ ধরনের ছবি তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে গুগলের জেমিনি বা মাইএডিটের ‘এআই রিপ্লেস’-এর মতো টুল।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক আইনজীবীর পরিবার এমন এক ভাইরাল প্র্যাঙ্কের ঘটনায় পুলিশ ডাকার মতো পরিস্থিতিতে পড়েছিল।
আরেক ঘটনায় চীনের পূর্বাঞ্চলীয় আনহুই প্রদেশে এক নারী তাঁর স্বামীকে ঘরে একজন ‘গৃহহীন ব্যক্তি ঢুকে পড়েছে’—এমন এআই দিয়ে বানানো ছবি পাঠান। সে সময় তাঁর স্বামী বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খাচ্ছিলেন।
ছবি দেখে তিনি সেটিকে সত্যি ভেবে পুলিশে ফোন দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে তারা বুঝতে পারে, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে ‘জনসাধারণের সম্পদের অপচয়’ বলে মন্তব্য করেন এবং ওই নারীকে ‘ভয় ছড়ানোর অপরাধে’ অভিযুক্ত করেন।
চীনের জননিরাপত্তা প্রশাসন শাস্তি আইন অনুযায়ী, এমন কাজের জন্য সর্বোচ্চ ১০ দিনের আটকাদেশ এবং প্রায় ৭০ ডলার জরিমানার বিধান আছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক চীনা পুরুষ এ ধরনের প্র্যাঙ্ক বা দুষ্টুমির তীব্র সমালোচনা করেছেন।
একজন লিখেছেন, ‘আপনারা কি সেই রাখাল ছেলের গল্প শোনেননি, যে নেকড়ে এসেছে বলে মিথ্যা চিৎকার দিত? যদি আপনারা বারবার মিথ্যা সতর্কতা দেন, তাহলে সত্যি সত্যি বিপদ হলেও কেউ আপনাদের বিশ্বাস করবে না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেকজন লিখেছেন, ‘এআই আমাদের জীবনে সুবিধা এনেছে, কিন্তু একই সঙ্গে এটি আস্থার সংকটও তৈরি করেছে। প্ল্যাটফর্মের উচিত, এআই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেওয়া।’

ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।
১৬ এপ্রিল ২০২১
পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিল
৩ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার।
চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ট্রেনটিকে ট্র্যাকে নামানো হয়। এটি বর্তমানে চীনের সর্বোচ্চ গতির চলমান সিআর–৪০০ ফুজিং ট্রেনের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত। ফুজিং ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৫০ কিলোমিটার গতিতে চলে।

ট্রেনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিআরআরসি করপোরেশন লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং ফেং জানিয়েছেন, সিআর–৪৫০ উচ্চগতির ট্রেন প্রযুক্তিতে এক বিশাল অগ্রগতি এনেছে। তত্ত্ব, প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, মানদণ্ড ও পরিচালন ব্যবস্থাপনা—সব ক্ষেত্রেই নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে এই ট্রেন।
৪০০ কিলোমিটার গতির নজিরবিহীন গতি অর্জনের জন্য প্রকৌশলীরা ট্রেনটির ট্র্যাকশন পাওয়ার (ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা), ডাইনামিক পারফরম্যান্স বা গতিশীল অবস্থায় ট্রেনটিতে যাবতীয় পরিবর্তন পরিমাপ এবং প্যান্টোগ্রাফ সিস্টেম বা বৈদ্যুতিক লাইন থেকে যে ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি ট্রেনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তা উন্নত করেছেন।
ওয়াংয়ের ভাষায়, ট্রেনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ওয়াটার-কুলড পারমানেন্ট ম্যাগনেট ট্র্যাকশন সিস্টেম, নতুন প্রজন্মের উচ্চ-স্থিতিশীলতা বগি এবং একাধিক উদ্ভাবনী সিস্টেম। যার ফলে দীর্ঘ সময় উচ্চ গতিতে চলাচলেও এটি স্থিতিশীল থাকে। তিনি জানিয়েছেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সিআর–৪৫০ এক ধাপ এগিয়ে। এতে রয়েছে মাল্টিলেয়ার ইমারজেন্সি ব্রেক নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি এবং ৪ হাজারেরও বেশি অনবোর্ড মনিটরিং সেন্সর, যা চলমান অবস্থায় ট্রেনের গিয়ার, পুরো ট্রেন, হাই–ভোল্টেজ প্যান্টোগ্রাফ, ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা—সবকিছুই তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এ ছাড়া, ওভার-দ্য-হরাইজন শনাক্তকরণ ব্যবস্থাও যুক্ত হয়েছে এতে। এই ব্যবস্থা ট্রেনের সামনে ট্র্যাকের জরুরি পরিস্থিতি আগেভাগে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রেও এসেছে বিপ্লব। বগির ‘স্ট্রিমলাইনড কাওলিং’ ধাঁচের নকশা বাতাসের ঘর্ষণ ও প্রতিরোধ কমিয়েছে, আর নতুন হালকা উপকরণ ও প্রযুক্তি ট্রেনের মোট ওজন ১০ শতাংশ কমিয়েছে এবং চলাচলের ক্ষেত্রে ট্র্যাকের সঙ্গে চাকার এবং সামগ্রিক ঘর্ষণ প্রতিরোধ ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে।
ট্রেনের শব্দ নিয়ন্ত্রণেও এসেছে অগ্রগতি। সাতটি নতুন প্রযুক্তি—যেমন সাউন্ড-অ্যাবসর্বিং উপকরণ ও উন্নত অ্যারোডাইনামিক নকশা ট্রেনের অভ্যন্তরীণ শব্দ ২ ডেসিবল কমিয়েছে। ফলে যাত্রীরা পাচ্ছেন আরও নিঃশব্দ ও আরামদায়ক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।
তা ছাড়া, সিআর–৪৫০ এ যুক্ত হয়েছে একাধিক বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ফিচার, যা ট্রেনের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চালকের সঙ্গে যোগাযোগ, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ এবং যাত্রীসেবা—সব দিক থেকেই একে আগের সব মডেলের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে বলে জানান ওয়াং।

বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার।
চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ট্রেনটিকে ট্র্যাকে নামানো হয়। এটি বর্তমানে চীনের সর্বোচ্চ গতির চলমান সিআর–৪০০ ফুজিং ট্রেনের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত। ফুজিং ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৫০ কিলোমিটার গতিতে চলে।

ট্রেনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিআরআরসি করপোরেশন লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং ফেং জানিয়েছেন, সিআর–৪৫০ উচ্চগতির ট্রেন প্রযুক্তিতে এক বিশাল অগ্রগতি এনেছে। তত্ত্ব, প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, মানদণ্ড ও পরিচালন ব্যবস্থাপনা—সব ক্ষেত্রেই নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে এই ট্রেন।
৪০০ কিলোমিটার গতির নজিরবিহীন গতি অর্জনের জন্য প্রকৌশলীরা ট্রেনটির ট্র্যাকশন পাওয়ার (ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা), ডাইনামিক পারফরম্যান্স বা গতিশীল অবস্থায় ট্রেনটিতে যাবতীয় পরিবর্তন পরিমাপ এবং প্যান্টোগ্রাফ সিস্টেম বা বৈদ্যুতিক লাইন থেকে যে ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি ট্রেনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তা উন্নত করেছেন।
ওয়াংয়ের ভাষায়, ট্রেনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ওয়াটার-কুলড পারমানেন্ট ম্যাগনেট ট্র্যাকশন সিস্টেম, নতুন প্রজন্মের উচ্চ-স্থিতিশীলতা বগি এবং একাধিক উদ্ভাবনী সিস্টেম। যার ফলে দীর্ঘ সময় উচ্চ গতিতে চলাচলেও এটি স্থিতিশীল থাকে। তিনি জানিয়েছেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সিআর–৪৫০ এক ধাপ এগিয়ে। এতে রয়েছে মাল্টিলেয়ার ইমারজেন্সি ব্রেক নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি এবং ৪ হাজারেরও বেশি অনবোর্ড মনিটরিং সেন্সর, যা চলমান অবস্থায় ট্রেনের গিয়ার, পুরো ট্রেন, হাই–ভোল্টেজ প্যান্টোগ্রাফ, ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা—সবকিছুই তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এ ছাড়া, ওভার-দ্য-হরাইজন শনাক্তকরণ ব্যবস্থাও যুক্ত হয়েছে এতে। এই ব্যবস্থা ট্রেনের সামনে ট্র্যাকের জরুরি পরিস্থিতি আগেভাগে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রেও এসেছে বিপ্লব। বগির ‘স্ট্রিমলাইনড কাওলিং’ ধাঁচের নকশা বাতাসের ঘর্ষণ ও প্রতিরোধ কমিয়েছে, আর নতুন হালকা উপকরণ ও প্রযুক্তি ট্রেনের মোট ওজন ১০ শতাংশ কমিয়েছে এবং চলাচলের ক্ষেত্রে ট্র্যাকের সঙ্গে চাকার এবং সামগ্রিক ঘর্ষণ প্রতিরোধ ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে।
ট্রেনের শব্দ নিয়ন্ত্রণেও এসেছে অগ্রগতি। সাতটি নতুন প্রযুক্তি—যেমন সাউন্ড-অ্যাবসর্বিং উপকরণ ও উন্নত অ্যারোডাইনামিক নকশা ট্রেনের অভ্যন্তরীণ শব্দ ২ ডেসিবল কমিয়েছে। ফলে যাত্রীরা পাচ্ছেন আরও নিঃশব্দ ও আরামদায়ক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।
তা ছাড়া, সিআর–৪৫০ এ যুক্ত হয়েছে একাধিক বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ফিচার, যা ট্রেনের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চালকের সঙ্গে যোগাযোগ, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ এবং যাত্রীসেবা—সব দিক থেকেই একে আগের সব মডেলের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে বলে জানান ওয়াং।

ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।
১৬ এপ্রিল ২০২১
পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
২ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনএইচপিসি লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম সীমান্তে অবস্থিত সুবনসিরি লোয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ২৫০ মেগাওয়াট ইউনিটের ‘ওয়েট কমিশনিং’ গত শুক্রবার শুরু হয়েছে। সংস্থাটির এক মুখপাত্র দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘ওয়েট কমিশনিং মূলত টারবাইনের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিষয় পরীক্ষা করার একটি প্রক্রিয়া, এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় না। পানির প্রবাহের ভিত্তি করে এই পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া চার থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।’
২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সুবনসিরি লোয়ার প্রকল্পে রয়েছে আটটি ইউনিট, প্রতিটির ক্ষমতা ২৫০ মেগাওয়াট।
মুখপাত্র জানান, এই আটটির মধ্যে চারটি ইউনিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। পরবর্তী ধাপে অন্তত দুটি ইউনিট সমন্বয় করা হবে, যাতে প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা যায়।
অরুণাচল প্রদেশ ও আসামের সীমানার গেরুকামুখে অবস্থিত সুবনসিরি লোয়ার প্রকল্পটির নির্মাণকাজ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে আসামে বাঁধবিরোধী আন্দোলন ও ভাটিতে পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কায় প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়।
এরপর, ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে পুনরায় কাজ শুরু হয়। সেই সময় এনএইচপিসি প্রকল্পটিতে বাড়তি নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণমূলক পরিবেশ–সংরক্ষণ ব্যবস্থা যুক্ত করে। এনএইচপিসি চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূপেন্দর গুপ্তা পরীক্ষামূলক এই কাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই অর্জন এনএইচপিসির প্রকৌশল দক্ষতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি কেবল একটি প্রকল্প–মাইলফলক নয়, বরং ভারতের পরিবেশবান্ধব ও স্বনির্ভর জ্বালানি ভবিষ্যতের দিকে অগ্রযাত্রার প্রতীক।’

ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনএইচপিসি লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম সীমান্তে অবস্থিত সুবনসিরি লোয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ২৫০ মেগাওয়াট ইউনিটের ‘ওয়েট কমিশনিং’ গত শুক্রবার শুরু হয়েছে। সংস্থাটির এক মুখপাত্র দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘ওয়েট কমিশনিং মূলত টারবাইনের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিষয় পরীক্ষা করার একটি প্রক্রিয়া, এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় না। পানির প্রবাহের ভিত্তি করে এই পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া চার থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।’
২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সুবনসিরি লোয়ার প্রকল্পে রয়েছে আটটি ইউনিট, প্রতিটির ক্ষমতা ২৫০ মেগাওয়াট।
মুখপাত্র জানান, এই আটটির মধ্যে চারটি ইউনিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। পরবর্তী ধাপে অন্তত দুটি ইউনিট সমন্বয় করা হবে, যাতে প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা যায়।
অরুণাচল প্রদেশ ও আসামের সীমানার গেরুকামুখে অবস্থিত সুবনসিরি লোয়ার প্রকল্পটির নির্মাণকাজ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে আসামে বাঁধবিরোধী আন্দোলন ও ভাটিতে পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কায় প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়।
এরপর, ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে পুনরায় কাজ শুরু হয়। সেই সময় এনএইচপিসি প্রকল্পটিতে বাড়তি নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণমূলক পরিবেশ–সংরক্ষণ ব্যবস্থা যুক্ত করে। এনএইচপিসি চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূপেন্দর গুপ্তা পরীক্ষামূলক এই কাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই অর্জন এনএইচপিসির প্রকৌশল দক্ষতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি কেবল একটি প্রকল্প–মাইলফলক নয়, বরং ভারতের পরিবেশবান্ধব ও স্বনির্ভর জ্বালানি ভবিষ্যতের দিকে অগ্রযাত্রার প্রতীক।’

ভারতে চলমান নির্বাচন নিয়ে তোলপাড়ের শেষ নেই। মোট আট ধাপের এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।
১৬ এপ্রিল ২০২১
পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
২ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিল
৩ ঘণ্টা আগে