Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: ভারত-পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে দেড় লাখ মানুষ 

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৩, ১৫: ১১
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: ভারত-পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে দেড় লাখ মানুষ 

ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে আঘাত হানতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। ক্ষয়ক্ষতি এড়েতে দেশ দুটির প্রসাশন এরই মধ্য দেড় লাখের অধিক মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, এই ঘূর্ণিঝড় বেশ শক্তিশালী। এটি আরব সাগর থেকে উৎপত্তি হয়ে ভারতের গুজরাটে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আঘাত হানতে পারে। এতে বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

এদিকে এরই মধ্য ভারতে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বর্ষণে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। এর মধ্য রয়েছে দুটি শিশু, যারা দেয়াল ভেঙে পড়ে মারা গেছে। অন্যদিকে মোটরসাইকেল আরোহী এক নারী গাছ উল্টে চাপা পড়ে মারা গেছেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।

এই ঘূর্ণিঝড় পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন ইতিমধ্য ৮১ হাজার নাগরিককে দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি ৭৫টি বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে।

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমান বলেছেন, করাচিতে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশঙ্কা না থাকলেও সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এটি শক্তিশালী সাইক্লোন ধরনের ঝড়, যা ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে, যা আঘাত হানার সময় ১৫০ কিলোমিটারও হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন। বড় ধরনের জোয়ারেরও সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে গতকাল বুধবার থেকেই ভারতের গুজরাটে ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টি ও প্রবল ঝড় বইছে। এই ঘূর্ণিঝড় ভারতের গুজরাট ও পাকিস্তানের করাচির মাঝামাঝি স্থানে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টার মধ্য আঘাত হানতে পারে বলে গুজরাটের প্রধান আবহাওয়াবিদ জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের হকসবে উপকূলে বিপদ সংকেতের লাল পতাকা স্থাপন করছেন স্বেচ্ছাস্বেবীরাআজ বৃহস্পতিবার গুজরাটের মান্দভিতে ঝোড়ো বাতাস ও উত্তাল সমুদ্র দেখা গেছে। মান্দভির ব্যস্ততম বন্দরও জাকাহু জনশূন্য। গুজরাটের রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্য ৬৭ হাজার মানুষকে উপকূল থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গুজরাটের রেলওয়েসহ ব্যস্ত দুই বন্দর কান্দলা ও মুন্দ্রার সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গুজরাটের উপকূল অঞ্চলে মাছ ধরাও নিষিদ্ধ রয়েছে। পাকিস্তানের উপকূল এলাকার জলসীমানা থেকে মাঝি ও জেলেদের দূরে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গুজারটের কুচ অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণের জন্য ছয়টি দল পাঠানো হয়েছে। এসব দল জানিয়েছে, সবাইকে ত্রাণ দেওয়া ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করাই হবে তাদের মূল লক্ষ্য। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ আঘাত হানার পর বাতাসের গতি হ্রাস পাবে।

ভারত সাগরের সাইক্লোন বা ঘূর্ণঝড় প্রায়শই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে আঘাত হেনে থাকে। আরব সাগরের উপরিভাগের তাপমাত্র বাড়ার কারণে গত কয়েক বছরে এসব ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রা বেড়েছে। ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় তাউকতায়ে ভারত-পাকিস্তানের একই এলাকায় আঘাত হেনেছিল। এতে প্রাণ হারিয়েছিল ১৭৪ হাজার মানুষ। ২৫ বছর আগে গুজরাটে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল। এতে প্রায় ৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এই সংখ্যা আরও বেশি বলে স্থানীয়রা জানান।

গুজরাটের মান্দভির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠা বৃদ্ধ আব্বাস ইয়াকুব (৪০) বলেন, ‘আমরা আগেও ঘূর্ণিঝড় দেখেছি। কিন্তু এইবারের এই ঝড় বেশ ভয়ানক মনে হচ্ছে। আমাদের বাড়ি উপকূলের একদম কাছে। গতকাল বুধবার সকালে ঢেউ এসে বাড়ির কিনারে লেগেছে। আমরা জানিনা ঘূর্ণিঝড় শেষে কোথায় আশ্রয় নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত