Ajker Patrika

কেন্দ্রকে চাপে ফেলতে বিশেষ অধিবেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মমতা

কলকাতা প্রতিনিধি  
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই

আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। কিন্তু এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে শুধু আইন প্রণয়নের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং রাজনীতি আরও তপ্ত হতে চলেছে। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট করে দিয়েছে, এবার মূল লক্ষ্য হবে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে সরাসরি আক্রমণ।

নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয় ইতিমধ্যে একাধিক প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলীয় সূত্রের দাবি, অধিবেশনে মমতা নিজে বক্তব্য দেবেন এবং সেখান থেকে দিল্লিকে কড়া বার্তা দেওয়া হবে।

শাসক দলের মূল অভিযোগ, বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া একাধিক বিল এখনো রাজভবন বা দিল্লিতে আটকে রয়েছে। ফলে সে বিলগুলো আইনে পরিণত হচ্ছে না, আর এর জেরে সাধারণ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসনিক সংস্কার—বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বিলগুলো আইন হিসেবে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো আটকে থাকায় রাজ্য কার্যত আইনি জটিলতায় ফেঁসে যাচ্ছে।

তৃণমূল নেতাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের সক্রিয় ভূমিকার কারণে রাজ্যের বিলগুলোকে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এটি কেন্দ্র ও রাজ্যের দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনেরই সম্প্রসারিত রূপ, যা অধিবেশনে নতুন মাত্রা পাবে।

নবান্নের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাছে সমস্ত ‘অপেক্ষমাণ বিল’-এর তালিকা চেয়ে নিয়েছে। সে তথ্য অধিবেশনে ব্যবহার করে বিজেপিকে চাপে ফেলার কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে ‘অপরাজিতা বিল’। গত ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বিলটি ফেরত পাঠানো হয় রাজভবনে, যেখানে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কিছু ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। রাজভবন সে বার্তা পাঠিয়েছে নবান্নে। যদিও ব্যাখ্যা এখনো পাঠানো হয়নি, তবে তা প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তৃণমূল নেতারা এটিকে স্পষ্ট ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

শুধু বিল আটকে থাকার ইস্যুই নয়, বিশেষ অধিবেশনে আরও দুটি সংবেদনশীল বিষয় আলোচনায় আসবে। প্রথমত, বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর হামলা ও ভয় দেখানোর অভিযোগ। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে, যা রাজ্য সরকারকে উদ্বিগ্ন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নে দিল্লিকে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন। এবার বিধানসভা থেকে বিষয়টি তোলা হবে বলে জানা গেছে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার বিরোধিতা। তৃণমূলের অভিযোগ, এটি বিরোধীদের দুর্বল করার ষড়যন্ত্র এবং বিজেপির স্বার্থে ভোটার তালিকায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ তিন ইস্যু—বিল আটকে রাখা, শ্রমিক নির্যাতন, ভোটার তালিকার সমীক্ষা—একই সূত্রে বাঁধা। এগুলো সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবন, নিরাপত্তা ও ভোটাধিকারকে স্পর্শ করছে। ফলে তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে জনমানসে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভকে আরও উসকে দিতে। অনেকে বলছেন, এই অধিবেশন আসলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন, বিজেপিকে কোণঠাসা করার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়া এবং সে লড়াইকে জন-আন্দোলনে রূপ দেওয়া।

তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা মন্তব্য করেছেন, দিল্লি শুধু প্রশাসনিকভাবে নয়, রাজনৈতিকভাবেও বাংলার সরকারকে অচল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিধানসভা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা যাবে। অন্যদিকে বিজেপি বলছে, রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে বিলগুলো আটকে রয়েছে। তাদের অভিযোগ, তৃণমূল আসলে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে এ ইস্যুতে সরব হচ্ছে।

তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, বিজেপি যতই অভিযোগ তুলুক, বিশেষ অধিবেশন কার্যত তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রচারের বড় মঞ্চ হয়ে উঠতে চলেছে। বাংলার ভোটারদের কাছে এ বার্তা পৌঁছাতে যে, কেন্দ্র ইচ্ছাকৃতভাবে উন্নয়নমূলক কাজ আটকে দিচ্ছে এবং দিল্লি বাংলাকে বঞ্চিত করছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও ভোটার তালিকার মতো ইস্যু আরও আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করবে। ফলে এই অধিবেশন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং কেন্দ্র–রাজ্যের সংঘাতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আগামীকাল সোমবার বিধানসভা থেকে কী বার্তা আসে, তা শুধু বর্তমান রাজনীতির নয়, ভবিষ্যৎ নির্বাচনের সমীকরণেও বড় ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ত্রি–রাষ্ট্র সমাধান: ফিলিস্তিন–ইসরায়েলের মাঝখানে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র চান স্টিভ ব্যানন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্টিভ ব্যানন। ছবি: সংগৃহীত
স্টিভ ব্যানন। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্রডকাস্টার স্টিভ ব্যাননের মতে, গাজায় যুদ্ধ শেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে হলে এখন আর দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে কাজ হবে না, বরং একটি ‘ত্রি-রাষ্ট্রীয় সমাধান’ প্রয়োজন। যেখানে মুসলিম ফিলিস্তিন ও ইহুদি ইসরায়েলের মধ্যে থাকবে একটি ‘খ্রিষ্টান রাষ্ট্র।’

গত শুক্রবার নিজের ‘ওয়ার রুম’ পডকাস্টে ব্যানন বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর তথাকথিত ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ বা ‘বৃহত্তর ইসরায়েলের’ স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। এই ধারণা বাইবেলে উল্লিখিত ভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যা নীল নদ থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। সমালোচকদের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা এবং পশ্চিম তীরে দখলদার বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাই বাস্তবে চালিয়ে যাচ্ছেন।

ব্যানন বলেন, ‘নেতানিয়াহুর এই গ্রেটার ইসরায়েল প্রকল্প তাঁর নিজের মুখেই বিস্ফোরিত হয়েছে…এটা ইসরায়েলকেই ধ্বংস করেছে। তাই এখন তিন-রাষ্ট্র সমাধানের পথে যেতে হবে। এর একটি রাষ্ট্র হতে হবে জেরুজালেমের খ্রিষ্টান রাষ্ট্র। আমাদের পবিত্র ভূমিতে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র দরকার। এতে অন্তত আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে সবকিছু কিছুটা গুছিয়ে যাবে।’

এর আগেও ব্যানন এমন মন্তব্য করেছিলেন। চলতি মাসের শুরুতে তিনি বলেন, গাজায় শান্তি সম্ভব নয় যদি ‘শুধু মুসলমান আর ইহুদিরাই’ এখানে থাকে। তবে কীভাবে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র গঠন করা হবে বা সেটি কীভাবে অঞ্চলে স্থিতি আনবে, সে বিষয়ে তিনি কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।

ব্যাননের মতে, ইসরায়েল এখন ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভেসেল স্টেট বা রক্ষিত রাষ্ট্র’, আর হামাস ‘একটি ক্ষুদ্র খেলোয়াড়।’ তিনি বলেন, গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না এদের কেউই। বরং, কাতার গাজার পুনর্গঠনের অর্থায়ন করবে, আর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে তুরস্ক।

তিনি আরও দাবি করেন, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় ওয়াশিংটন প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা না বললেও, সেটির কাঠামোতে এক ধরনের ‘প্রোটো-ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের’ বা ‘আদি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের’ ইঙ্গিত রয়েছে। তাঁর মতে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র এটিকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে।

উল্লেখ্য, চলতি অক্টোবরের শুরুর দিকে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার আওতায় ইসরায়েল ও হামাস একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। পরিকল্পনাটিতে ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, এবং আন্তর্জাতিক ‘বোর্ড অব পিসের’ তত্ত্বাবধানে অন্তর্বর্তী ফিলিস্তিনি প্রশাসনের অধীনে একটি নিরস্ত্রীকৃত গাজার কথা বলা হয়েছে।

যদিও উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে, তবু এই সপ্তাহে তারা আবারও অস্ত্রবিরতির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে চার্চিলকে ‘এজেন্ট’ করতে চেয়েছিল সিআইএ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডুইট ডি আইজেনহাওয়ারের সঙ্গে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডুইট ডি আইজেনহাওয়ারের সঙ্গে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) এক সময় সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে ‘এজেন্ট’ হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। তবে এসপিওনাজে এজেন্ট বলতে যেমনটা বোঝানো হয়, সিআইএ তাঁকে সেভাবে কাজে লাগাতে চায়নি। বরং, সিআইএ উইনস্টন চার্চিলকে দিয়ে স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে চেয়েছিল। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নতুন করে প্রকাশিত নথিতে দেখা গেছে, পূর্ব ইউরোপে সিআইএ-সমর্থিত সম্প্রচারমাধ্যম রেডিও লিবার্টি তৎকালীন সোভিয়েত নাগরিকদের নিজেদের কমিউনিস্ট নেতাদের বিরুদ্ধে উসকে দিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিলকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৫৮ সালে রেডিও স্টেশনটির নিয়ন্ত্রকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ল্যাংলিতে অবস্থিত সিআইএ সদর দপ্তরে জানায়, তারা কার্ল মার্কসের মৃত্যুর ৭৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে সময় রাশিয়ায় ‘সংস্কারপন্থীদের’ উত্থান ঘটছিল। এদের আলোচনা সোভিয়েত মার্কসবাদ-লেনিনবাদের কট্টর কাঠামো থেকে বিপরীতে ছিল অনেকটা।

আমেরিকান গোয়েন্দারা এই সংস্কারপন্থী চিন্তকদের কাজে লাগাতে চেয়েছিল। এরা মস্কোকেন্দ্রিক একক সোভিয়েত ব্লকের ধারণার বিরোধিতা করে স্বাধীন কমিউনিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। রেডিও লিবার্টির অনুষ্ঠানগুলো তৈরি করা হয় ‘নতুন ও অপ্রচলিত রাজনৈতিক চিন্তার পরিবেশকে কাজে লাগাতে’ এবং পশ্চিমা চিন্তাবিদদের তুলে ধরতে, যাতে সোভিয়েত রাষ্ট্রের ভাবাদর্শকে দুর্বল করা যায়।

সিআইএ—এর তথ্য অধিকার আইনে প্রকাশিত এক ব্রিফ্রিং নোটে দেখা যায়, ১৯৫৮ সালের ১৪ মার্চ থেকে ৫ মে পর্যন্ত সময়জুড়ে একটি বিশেষ প্রচারণা অভিযান পরিচালিত হয়। এই প্রচারণার লক্ষ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘বিপরীতধর্মী চিন্তাভাবনা উসকে দেওয়া’ এবং ‘মার্কসবাদের মূল ভিত্তি, ইতিহাস পদ্ধতি ও ভবিষ্যদ্বাণীগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করে যে কোনো ধরনের মার্কসবাদের ওপর আস্থা নষ্ট করা।’

তৎকালীন সোভিয়েত নাগরিকদের কাছে এটা বোঝা সম্ভব ছিল না যে রেডিও লিবার্টি আসলে সিআইএ অর্থায়িত ও ওয়াশিংটন নিয়ন্ত্রিত একটি মাধ্যম। চার্চিল ছিলেন সেই কয়েকজন ব্রিটিশ ব্যক্তিত্বের একজন, যাদের রেডিও লিবার্টি তাদের সম্প্রচারে অংশগ্রহণের আশা করেছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

চার্চিল সম্পর্কিত ওই ব্রিফিং নোটে তাঁর সম্ভাব্য সম্প্রচারের বিস্তারিত না থাকলেও উল্লেখ করা আছে, মিউনিখের বিশেষ ইভেন্ট টিম নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের কাছে লিখবে এবং কয়েকজনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবে।’ সেই তালিকায় ছিলেন আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ ব্যক্তি—সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট অ্যাটলি, আনিউরিন বেভান ও হিউ গেইটস্কেল—যাঁরা ছিলেন যুদ্ধ-পরবর্তী প্রভাবশালী লেবার পার্টির নেতা। পাশাপাশি ছিলেন বামপন্থী বুদ্ধিজীবী আর্থার কোয়েস্টলার ও আর্নল্ড টয়েনবি।

অন্য দেশ থেকেও কিছু সম্ভাব্য অতিথির নাম ছিল—মার্কিন দার্শনিক সিডনি হুক, রুশ বংশোদ্ভূত সাংবাদিক ইউজিন লায়ন্স, ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট অরিওল এবং অস্ট্রিয়ার ভাইস-চ্যান্সেলর ব্রুনো পিটারম্যান।

রেডিও লিবার্টি নিজেকে উপস্থাপন করত এক ধরনের প্রবাসী রেডিও স্টেশন হিসেবে, যা সোভিয়েত নাগরিকদের বিশ্ব ঘটনা সম্পর্কে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিত। ১৯৫১ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত স্টেশনটি গোপনে সিআইএ অর্থায়নে চলেছে এবং পরবর্তীতে ‘রেডিও ফ্রি ইউরোপ’ এর সঙ্গে একীভূত হয়, যা সোভিয়েত ইউনিয়নের স্যাটেলাইট স্টেট বা রাষ্ট্রগুলোকে লক্ষ্য করে কাজ করত। বর্তমানে স্টেশনটি এখনো সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থেই পরিচালিত।

চার্চিল ব্যক্তিগতভাবে সিআইএ–এর পরিচালক অ্যালেন ডালেস এবং তাঁর ভাই, তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন ফস্টার ডালেসের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে তিনি ওয়াশিংটন ও লন্ডনে একাধিকবার ছবি তুলেছেন। ১৯৫৮ সালের বসন্তে, যখন তাঁকে রেডিও লিবার্টির ক্যাম্পেইনের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছিল, তিনি অসুস্থতার কারণে ওয়াশিংটনের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।

তখন তাঁর বয়স ছিল ৮৩ বছর। পরের বছর তিনি শেষবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ারের সঙ্গে দেখা করতে। এরপর ১৯৬৫ সালে মৃত্যুর আগে আর কখনো আমেরিকায় যাননি। ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও গোয়েন্দা ইতিহাসের অধ্যাপক ররি কোরম্যাক বলেন, ১৯৫০-এর দশকে সোভিয়েতবিরোধী কর্মকৌশলের দিক থেকে চার্চিলকে সিআইএ কর্তৃক টানার চেষ্টা ছিল স্বাভাবিক পদক্ষেপ।

তিনি বলেন,১ শীতল যুদ্ধের সময় প্রচারণার মূল লক্ষ্য ছিল কর্তৃত্ব দুর্বল করা, প্রতিষ্ঠিত ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, আর চিন্তার ভেতর সন্দেহের জন্ম দেওয়া।’ প্রফেসর কোরম্যাকের মতে, যুক্তরাষ্ট্র সে সময় ‘বিশ্বাসযোগ্য বক্তা’ খুঁজছিল, যারা সোভিয়েত নাগরিকদের কাছে বার্তা পৌঁছাতে পারবে। সিআইএ অনেক সময় সরাসরি নয়, বরং রেডিও লিবার্টির মতো মাধ্যম বা সংবাদপত্রের মাধ্যমে সেই কাজ করত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘প্রতারণার শাস্তি’: কানাডার ওপর বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৬
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি কানাডার রপ্তানি পণ্যের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়াচ্ছেন। এই শুল্ক এর আগে আরোপিত শুল্কের সঙ্গে যুক্ত হবে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘ওরা এখন যা দিচ্ছে, তার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ট্রাম্পের শুল্কের সমালোচনা করে কানাডার অন্টারিও প্রদেশ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের কণ্ঠ ব্যবহার করে একটি বিজ্ঞাপন বানায়। যেখানে রিগ্যান যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। মূলত, এই বিজ্ঞাপনের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প এই বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ওই বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে কানাডার সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনাও স্থগিত করেন। তার দাবি, বিজ্ঞাপনটি ‘ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর।’ ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে নতুন শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। সেই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন বিজ্ঞাপনটির কথা। ভিডিওটিতে রিগ্যানকে বলতে শোনা যায়, শুল্ক আরোপ বাণিজ্য যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ।

অন্টারিও প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রীর সমতুল্য) ডগ ফোর্ড শুক্রবার জানান, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়েছে সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটি স্থগিত করা হবে, যাতে বাণিজ্য আলোচনাগুলো আবার শুরু করা যায়।

ট্রাম্প লেখেন, ‘তাদের বিজ্ঞাপনটি সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওরা তা প্রচার করেছে গতরাতে ওয়ার্ল্ড সিরিজ চলাকালীন—জেনেও যে এটা সম্পূর্ণ প্রতারণা।’ তিনি আরও লেখেন, ‘তাদের তথ্য বিকৃতি ও বৈরী আচরণের কারণে, কানাডার ওপর আরোপিত শুল্ক আরও ১০ শতাংশ বাড়াচ্ছি।’

এদিকে, ট্রাম্প ঘোষিত নতুন শুল্ক কোন কোন পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কানাডার অধিকাংশ রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তির আওতায় থাকায় সেগুলো শুল্কমুক্ত। তবে ট্রাম্প প্রশাসন গত আগস্টে এই চুক্তির বাইরে থাকা কানাডীয় পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তার ওপর চলতি বছর ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন, যা কানাডার অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

শুক্রবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি জানান, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুনরায় বাণিজ্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। ট্রাম্প ও কার্নি দুজনই মালয়েশিয়ায় আয়োজিত আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেবেন। তবে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা রাখেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজার নতুন আতঙ্ক ইসরায়েলের অবিস্ফোরিত বোমা, নেই নিরাপদে মাথা গোঁজার ঠাঁই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজাবাসীর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বের করা। ছবি: আনাদোলু
গাজাবাসীর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বের করা। ছবি: আনাদোলু

গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য এখন এক নতুন আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী ফেলা অবিস্ফোরিত বোমা। গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর অনেকেই নিজ নিজ এলাকায়, বাড়িতে ফিরছেন। সেখানে অবশ্য কোনো স্থাপনা অবশিষ্ট নেই। তাই বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু গেড়ে থাকতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। তবে সেখানেও বিপত্তি। কারণ, আবাসিক এলাকার বেশির ভাগ অংশেই ইসরায়েলে ফেলা বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক অবিস্ফোরিত অবস্থায় রয়ে গেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া গাজার খান ইউনিসে নিজের বাড়িতে ফিরে এসে এক ফিলিস্তিনি একটি বিস্ফোরক বোঝাই অবিস্ফোরিত কিন্তু বিধ্বস্ত সাঁজোয়া যান দেখতে পান। ধ্বংসস্তূপে আশ্রয়হীন ওই ব্যক্তি বাধ্য হয়ে সেই সাঁজোয়া যানটির ওপরই পরিবার নিয়ে তাঁবু ফেলেছেন।

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজার দক্ষিণের এই শহরে ফিরতে শুরু করেছেন বাস্তুচ্যুত বহু পরিবার। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দক্ষিণের ত্রাণ শিবিরগুলো থেকে ৪ লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ উত্তরাঞ্চলের ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকায় ফিরে গেছেন।

ফিরে এসে অনেকে দেখছেন, বসতবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কোথাও মাটির নিচে লুকানো বিস্ফোরক, কোথাও পড়ে আছে দাহ্য কোনো অস্ত্র–বোমা। খান ইউনিসের বাসিন্দা আয়মান কাদুরা জানান, নিজের বাড়ির ধ্বংসাবশেষের ভেতর তিনি খুঁজে পান একটি দূরনিয়ন্ত্রিত সাঁজোয়া বিস্ফোরক রোবট, যা ইসরায়েলি সেনারা গাজা জুড়ে ব্যবহার করেছিল পুরো ভবন উড়িয়ে দিতে।

কাদুরা বলেন, তাঁর প্রতিবেশীর বাড়িতেও এমন আরেকটি যন্ত্র ছিল। দু’টি বাড়ির মাঝখানে এফ-১৬ বিমানের ক্ষেপণাস্ত্রে তিন মিটার গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করছেন, যদি এসব অবিস্ফোরিত যন্ত্র সক্রিয় হয়, পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই তিনি নিয়মিত যন্ত্রগুলো বালি দিয়ে ঢেকে রাখেন।

জাতিসংঘের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণ কেন্দ্র ইউনোস্যাট জানিয়েছে, শুধু খান ইউনিস গভর্নরেটেই ৪২ হাজারের বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শহর এলাকায় অন্তত ১৯ হাজার ভবন ধ্বংস বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। পুরো গাজা উপত্যকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ২ লাখ ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে।

জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিস জানিয়েছে, গাজাজুড়ে অবিস্ফোরিত অস্ত্রের ঝুঁকি ‘অবিশ্বাস্যভাবে বেশি’। সংস্থাটি এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬০টি বিস্ফোরক বস্তু শনাক্ত করেছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত এসব অবিস্ফোরিত অস্ত্রের কারণে ৩২৮ জন নিহত বা আহত হয়েছেন।

কাদুরা জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে পাওয়া পুরোনো কাপড় পরে তাঁর সন্তানদের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। কিন্তু থাকার মতো জায়গা না থাকায় তিনি বাধ্য হয়েই ওই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছেন। মানবিক সংস্থাগুলো যুদ্ধবিরতির পর খাদ্য, তাঁবু, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ বাড়ালেও ইসরায়েল এখনো সহায়তা প্রবাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক সহায়তা গাজায় প্রবেশের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা এখনো অর্জন সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত