Ajker Patrika

উত্তর প্রদেশে সহিংসতা: ভিডিও দেখে পুলিশের প্রশংসা নারীর, সঙ্গে সঙ্গেই তালাক

তিন তালাককে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে ২০১৭ সালে নিষিদ্ধ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত
তিন তালাককে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে ২০১৭ সালে নিষিদ্ধ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তর প্রদেশের সাম্ভালে মসজিদ সমীক্ষা চলাকালে সৃষ্ট সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার একটি ভিডিও দেখছিলেন এক নারী। তাঁর স্বামী ভিডিও দেখতে বারবার নিষেধ করছিলেন। তিনি তা না মেনে ওই ঘটনায় পুলিশের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তখনই তাঁর স্বামী তাঁকে ‘তিন তালাক’ দিয়ে সম্পর্ক শেষ করার ঘোষণা দেন।

তিন বছরের এই দাম্পত্যের এমন পরিণতিতে হতভম্ব হয়ে পড়েছেন মোরাদাবাদের বাসিন্দা নিদা নামের ওই নারী। স্বামী ইজাজুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। নিদা বলেন, ‘তালাক দেওয়ার কোনো কারণই ছিল না। বিনা কারণে আমাকে তালাক দেওয়া হয়েছে।’

মুসলমান সম্প্রদায়ের ‘তিন তালাক’ পদ্ধতির মাধ্যমে স্ত্রীকে তাৎক্ষণিকভাবে তালাক দেওয়ার সুযোগ নিয়ে বিতর্কের জন্ম হওয়ায় ২০১৭ সালে এটিকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তীতে, ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার এই প্রাচীন পদ্ধতিটি নিষিদ্ধ করে একটি আইন পাস করে।

নিদা আরও বলেন, ‘আমি সাম্ভালে একটি বিয়েতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম। কিছু ব্যক্তিগত কাজও ছিল। তাই দেখছিলাম, ওখানে যাওয়া নিরাপদ হবে কি না। আমার স্বামী জানতে চাইলেন, আমি ভিডিওটা কেন দেখছি। আমি বলেছিলাম, যা ভুল, তা সব সময়ই ভুল। প্রত্যেকেরই আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’

এ কথা শোনার পর তাঁর স্বামী বলেন, ‘তুমি মুসলিম নও; তুমি কাফের। তুমি পুলিশকে সমর্থন করো।’

তাঁর স্বামী খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করেন বলে দাবি করেন নিদা। এরপর তাঁর স্বামী বলেন, ‘তোমার যা মন চায় করো, আমি তোমাকে আর রাখব না। তারপর তিন তালাক দিয়ে বলেন, ‘তোমার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

মোরাদাবাদের সিটি পুলিশ সুপার রণবিজয় সিং বলেন, ‘ওই নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, সাম্ভালের মসজিদের ওপর একটি ইউটিউব ভিডিও দেখা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। তাঁকে ভিডিও দেখতে বারণ করেন তাঁর স্বামী। কিন্তু তিনি তা না মানায় তাঁর স্বামী তিনবার তালাক উচ্চারণ করে সম্পর্ক শেষ করেন।’

উত্তর প্রদেশের সাম্ভালে শাহি জামা মসজিদের স্থানে আগে মন্দির ছিল—এমন দাবিতে বিতর্ক শুরু হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে সেখানে সমীক্ষা শুরু হয়। এ সময় সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ২৯ জন পুলিশ সদস্যসহ বহু মানুষ আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত