
উত্তর প্রদেশ, ভারত। ১৭ আগস্টের রাত। চার বছরের সন্ধ্যা তাদের মাটির ঘরটির বাইরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে গোটা গ্রাম নিমজ্জিত হলো অন্ধকারে।
‘আলো নিভে যাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যে আক্রমণ করে তারা। আমরা কী ঘটেছে তা যখন বুঝলাম ততক্ষণে ওকে নিয়ে গেছে নেকড়েরা।’ বলেন মেয়েটির মা সুনিতা।
পরের দিন একটি আখ খেতের মাঝখানে মেলে সন্ধ্যার মৃতদেহ। জায়গাটা তাদের বাড়ি আধা কিলোমিটারের মতো দূরে।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে আগস্ট মাসেই আরেকটি কাণ্ড হয় পাশের গ্রামে। আট বছরের উৎকর্ষ কুঁড়েতে একটি মশারির ভেতরে শুয়ে ছিল। এ সময়ই তার মা ঘরের বাইরে থেকে দেখেন একটি নেকড়ে গুটিসুটি মেরে ভেতরে ঢুকছে।
‘প্রাণীটি ছায়ার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে দ্রুত সামনে এগুলো। আমি চিৎকার দিলাম, “আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও”। প্রতিবেশীরা ছুটে এল। নেকড়েটিও পালাল।’ স্মৃতিচারণ করেন উৎকর্ষের মা।
মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে নেকড়ে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট যে সে এক বছরের একটি ছেলে শিশু এবং সবচেয়ে বয়স্ক জন ৪৫ বছরের এক নারী। নেকড়ের আক্রমণে আহত হওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়, অন্তত ৩৪।
আতঙ্ক ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের। অনেক গ্রামের বাড়িতেই তালা নেই। শিশুদের ঘরে রেখে পুরুষেরা রাতে অন্ধকার ও আধ-আলোকিত রাস্তায় টহল দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ড্রোন এবং ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি ফাঁদ বসিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। নেকড়েদের ভয় দেখানোর জন্য আতশবাজিও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনটি নেকড়েকে ধরে চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে।
মানুষের ওপর নেকড়েদের এ ধরনের আক্রমণ কিন্তু অত্যন্ত বিরল। আর যেগুলো হয় তার বেশির ভাগের জন্য দায়ী জলাতঙ্ক সংক্রামিত নেকড়ে। এ ধরনের উন্মত্ত নেকড়ে সাধারণত শিকার না খেয়ে একাধিক মানুষকে একবারে আক্রমণ করে বসে।
নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট ফর নেচার রিসার্চ ভারতসহ ২১ দেশে ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নেকড়ে আক্রমণের ওপর একটি গবেষণা করেছে। এতে ৪৮৯টি আক্রমণের তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলে। এর মধ্যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ২৬টি।
গত ৫০ বছরের বেশি সময়ে উত্তর আমেরিকায় নেকড়ের আক্রমণে নিশ্চিত দুটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে বিখ্যাত আমেরিকান জীববিদ ও নেকড়ে বিশেষজ্ঞ ডেভ মেচ। অথচ গোটা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭০ হাজার নেকড়ের বিচরণ আছে।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বুনো নেকড়ের সংখ্যা তিন হাজার ১০০-র আশপাশে। কিন্তু তাহলে বাহরাইচে নেকড়ের এমন অপ্রত্যাশিত আক্রমণের রহস্য কী?
একটি নদী ও জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত বাহরাইচের কিছু কিছু অংশ নেকড়ের স্বাভাবিক বিচরণভূমি। ঘাঘারা নদীর প্লাবনভূমিতে জেলাটির মোট জনসংখ্যা ৩৫ লাখ। প্রতি বছরই বন্যার ঝুঁকিতে থাকে এলাকাটি।
বর্ষায় ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে ভূ-প্রকৃতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এলাকাটিতে। নদী দু-কূল ছাপিয়ে বনকে প্লাবিত করে। এতে স্বাভাবিকভাবেই নেকড়েদের খাবারের সন্ধানে নিজেদের বসতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। এমনিতে নেকড়ের খাবার তালিকায় আছে কৃষ্ণসার মৃগ, চিংকারা (ভারতীয় গেজেলে), বুনো খরগোশসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী।
‘জলবায়ু পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু বন্যা নেকড়েদের আবাসস্থলের ওপর আঘাত হানতে পারে, যা খাদ্যের সন্ধানে তাদের মানব বসতিতে চলে আসতে বাধ্য করে।’ বলেন লখ্নৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ওয়াইল্ড সায়েন্সের অমিতা কানাউজিয়া।
উত্তর প্রদেশের গ্রামগুলিতে ১৯৯৬ সালে নেকড়ের আক্রমণে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কার করেন, এই এলাকাগুলোতে শিশুদের দেখভাল হয় কমই। নেকড়ের শিকার হওয়া বেশির ভাগ শিশু দরিদ্র পরিবারের সন্তান। অনেক ক্ষেত্রেই বাবা নেই বা চলে গেছে, মা-ই দেখাশোনা করতেন একা।
দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত এ সব ভারতীয় গ্রামে প্রায়ই শিশুদের তুলনায় বেশি সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে গবাদিপশুরা। একটি ক্ষুধার্ত নেকড়ের যখন স্বাভাবিক শিকারের ঘাটতি থাকে এবং গবাদিপশুর নাগাল পাওয়াটা কঠিন হয়, তখন এই শিশুরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
‘বিশ্বের আর কোথাও আমরা শিশুদের ওপর এমন নেকড়ের আক্রমণের প্রত্যক্ষ দেখিনি।’ বলেন বিখ্যাত ভারতীয় গবেষক এবং সংরক্ষণবিদ যাদবেন্দ্রদেব ঝালা।
এবারের নেকড়ের এই আক্রমণ খুব সম্ভব গত চার দশকে নেকড়ের চতুর্থ এম বড় আক্রমণ। ১৯৮১-৮২ সালে বিহারে নেকড়ের আক্রমণে অন্তত ১৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ থেকে ৯৫ সালের মধ্যে ৮০টি শিশু আক্রান্ত হয়। হাজারীবাগ জেলার ওই অঞ্চলে বিচরণ করা নেকড়ের পাঁচটি দলকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর আক্রমণটি চলে ১৯৯৬ সালের আট মাসেরও বেশি সময় ধরে। এ সময় উত্তর প্রদেশের ৫০টির বেশি গ্রামের অন্তত ৭৬টি শিশু আক্রান্ত হয়। এতে প্রাণহানির সংখ্যা ৩৮। কর্তৃপক্ষ ১১টি নেকড়েকে মারার পর বন্ধ হয় শিশু হত্যা। সংবাদমাধ্যম ওই প্রাণীগুলোকে, ‘মানুষখেকো নেকড়ে’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মি. ঝালা এবং তাঁর সহকর্মী দিনেশ কুমার ১৯৯৬ সালের ওই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। আর উত্তর প্রদেশের এবারের আক্রমণের সঙ্গে ওই ঘটনার বেশ কিছু মিল পেয়েছেন তাঁরা।
দুটি ক্ষেত্রেই শিশুরা আক্রমণের শিকার হয়েছে এবং তাদের শরীরের আংশিক খায় নেকড়ে। তাদের গলায় কামড়ের চিহ্ন ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রমণই ঘটেছে রাতে। গ্রামের মাঝখানে ঘরের বাইরে ঘুমন্ত শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের প্রায়ই পরে খোলা জায়গায় যেমন ফসলের খেত বা তৃণভূমিতে খুঁজে পাওয়া যায়।
এখনকার বাহরাইচের মতো, ১৯৯৬ সালের নেকড়ের আক্রমণ নদী তীরের কাছাকাছি গ্রামে সেখানে হয়েছিল। এসব গ্রাম আবার ধান ও আখের খেত এবং জলাভূমি দ্বারা বেষ্টিত। উভয় ক্ষেত্রেই বেশি মানুষের বসতি আছে এমন গ্রাম এবং দরিদ্র চাষি পরিবারের অসহায় শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে।
একটি নেকড়ে নাকি গোটা একটি দল এবারের আক্রমণে জড়িত তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ৩০ বছরের নেকড়ে নিয়ে গবেষণা থেকে ঝালা মনে করেন ১৯৯৬ সালের মতো এবারও খলনায়ক একটি মাত্র নেকড়ে। গ্রামবাসীরা দিনে জমিতে পাঁচ থেকে ছয়টি নেকড়ের দল দেখে। তবে উৎকর্ষের মা একটি নেকড়েকে ঘরে ঢুকে আক্রমণের চেষ্টা করতে দেখেন।
বন্যপ্রাণী গবেষকেরা জানান, শত শত বছর ধরে ভারতে নেকড়ে ও মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। এই এলাকার মানুষের ঐতিহ্যগত সহনশীলতা সাহায্য করেছে এ ক্ষেত্রে। এই দীর্ঘস্থায়ী সহাবস্থান নেকড়েদের সঙ্গে বিশেষ করে গবাদিপশু নিয়ে ঘন ঘন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলেও এখনো টিকে আছে প্রাণীটি।
তবে সময় বদলে যাচ্ছে। বিশেষ করে নেকড়ের নতুন এই আক্রমণ নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ঝালার মতো বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আপাতত কিছু সতর্কতার কথা বলেছেন। এর মধ্যে আছে আক্রান্ত গ্রামগুলোর শিশুদের ঘরের ভেতরে রাখা, ঘরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত না হলে রাতে শোয়ার সময় বড়দের মাঝখানে রাখা এবং রাতে টয়লেটে গেলে শিশুদের সঙ্গে একজন বড় কেউ থাকা।
‘যতক্ষণ না আমরা এই আক্রমণগুলির পেছনের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারছি, সে পর্যন্ত এ সতর্কতাগুলি মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে জরুরি।’ বলেন ঝালা। এদিকে বাহরাইচের নেকড়ের আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা গ্রামগুলোর নতুন একটি রাত শুরু হয় অমঙ্গল আশঙ্কা নিয়ে।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন ইশতিয়াক হাসান

উত্তর প্রদেশ, ভারত। ১৭ আগস্টের রাত। চার বছরের সন্ধ্যা তাদের মাটির ঘরটির বাইরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে গোটা গ্রাম নিমজ্জিত হলো অন্ধকারে।
‘আলো নিভে যাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যে আক্রমণ করে তারা। আমরা কী ঘটেছে তা যখন বুঝলাম ততক্ষণে ওকে নিয়ে গেছে নেকড়েরা।’ বলেন মেয়েটির মা সুনিতা।
পরের দিন একটি আখ খেতের মাঝখানে মেলে সন্ধ্যার মৃতদেহ। জায়গাটা তাদের বাড়ি আধা কিলোমিটারের মতো দূরে।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে আগস্ট মাসেই আরেকটি কাণ্ড হয় পাশের গ্রামে। আট বছরের উৎকর্ষ কুঁড়েতে একটি মশারির ভেতরে শুয়ে ছিল। এ সময়ই তার মা ঘরের বাইরে থেকে দেখেন একটি নেকড়ে গুটিসুটি মেরে ভেতরে ঢুকছে।
‘প্রাণীটি ছায়ার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে দ্রুত সামনে এগুলো। আমি চিৎকার দিলাম, “আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও”। প্রতিবেশীরা ছুটে এল। নেকড়েটিও পালাল।’ স্মৃতিচারণ করেন উৎকর্ষের মা।
মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে নেকড়ে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট যে সে এক বছরের একটি ছেলে শিশু এবং সবচেয়ে বয়স্ক জন ৪৫ বছরের এক নারী। নেকড়ের আক্রমণে আহত হওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়, অন্তত ৩৪।
আতঙ্ক ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের। অনেক গ্রামের বাড়িতেই তালা নেই। শিশুদের ঘরে রেখে পুরুষেরা রাতে অন্ধকার ও আধ-আলোকিত রাস্তায় টহল দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ড্রোন এবং ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি ফাঁদ বসিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। নেকড়েদের ভয় দেখানোর জন্য আতশবাজিও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনটি নেকড়েকে ধরে চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে।
মানুষের ওপর নেকড়েদের এ ধরনের আক্রমণ কিন্তু অত্যন্ত বিরল। আর যেগুলো হয় তার বেশির ভাগের জন্য দায়ী জলাতঙ্ক সংক্রামিত নেকড়ে। এ ধরনের উন্মত্ত নেকড়ে সাধারণত শিকার না খেয়ে একাধিক মানুষকে একবারে আক্রমণ করে বসে।
নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট ফর নেচার রিসার্চ ভারতসহ ২১ দেশে ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নেকড়ে আক্রমণের ওপর একটি গবেষণা করেছে। এতে ৪৮৯টি আক্রমণের তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলে। এর মধ্যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ২৬টি।
গত ৫০ বছরের বেশি সময়ে উত্তর আমেরিকায় নেকড়ের আক্রমণে নিশ্চিত দুটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে বিখ্যাত আমেরিকান জীববিদ ও নেকড়ে বিশেষজ্ঞ ডেভ মেচ। অথচ গোটা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭০ হাজার নেকড়ের বিচরণ আছে।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বুনো নেকড়ের সংখ্যা তিন হাজার ১০০-র আশপাশে। কিন্তু তাহলে বাহরাইচে নেকড়ের এমন অপ্রত্যাশিত আক্রমণের রহস্য কী?
একটি নদী ও জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত বাহরাইচের কিছু কিছু অংশ নেকড়ের স্বাভাবিক বিচরণভূমি। ঘাঘারা নদীর প্লাবনভূমিতে জেলাটির মোট জনসংখ্যা ৩৫ লাখ। প্রতি বছরই বন্যার ঝুঁকিতে থাকে এলাকাটি।
বর্ষায় ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে ভূ-প্রকৃতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এলাকাটিতে। নদী দু-কূল ছাপিয়ে বনকে প্লাবিত করে। এতে স্বাভাবিকভাবেই নেকড়েদের খাবারের সন্ধানে নিজেদের বসতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। এমনিতে নেকড়ের খাবার তালিকায় আছে কৃষ্ণসার মৃগ, চিংকারা (ভারতীয় গেজেলে), বুনো খরগোশসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী।
‘জলবায়ু পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু বন্যা নেকড়েদের আবাসস্থলের ওপর আঘাত হানতে পারে, যা খাদ্যের সন্ধানে তাদের মানব বসতিতে চলে আসতে বাধ্য করে।’ বলেন লখ্নৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ওয়াইল্ড সায়েন্সের অমিতা কানাউজিয়া।
উত্তর প্রদেশের গ্রামগুলিতে ১৯৯৬ সালে নেকড়ের আক্রমণে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কার করেন, এই এলাকাগুলোতে শিশুদের দেখভাল হয় কমই। নেকড়ের শিকার হওয়া বেশির ভাগ শিশু দরিদ্র পরিবারের সন্তান। অনেক ক্ষেত্রেই বাবা নেই বা চলে গেছে, মা-ই দেখাশোনা করতেন একা।
দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত এ সব ভারতীয় গ্রামে প্রায়ই শিশুদের তুলনায় বেশি সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে গবাদিপশুরা। একটি ক্ষুধার্ত নেকড়ের যখন স্বাভাবিক শিকারের ঘাটতি থাকে এবং গবাদিপশুর নাগাল পাওয়াটা কঠিন হয়, তখন এই শিশুরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
‘বিশ্বের আর কোথাও আমরা শিশুদের ওপর এমন নেকড়ের আক্রমণের প্রত্যক্ষ দেখিনি।’ বলেন বিখ্যাত ভারতীয় গবেষক এবং সংরক্ষণবিদ যাদবেন্দ্রদেব ঝালা।
এবারের নেকড়ের এই আক্রমণ খুব সম্ভব গত চার দশকে নেকড়ের চতুর্থ এম বড় আক্রমণ। ১৯৮১-৮২ সালে বিহারে নেকড়ের আক্রমণে অন্তত ১৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ থেকে ৯৫ সালের মধ্যে ৮০টি শিশু আক্রান্ত হয়। হাজারীবাগ জেলার ওই অঞ্চলে বিচরণ করা নেকড়ের পাঁচটি দলকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর আক্রমণটি চলে ১৯৯৬ সালের আট মাসেরও বেশি সময় ধরে। এ সময় উত্তর প্রদেশের ৫০টির বেশি গ্রামের অন্তত ৭৬টি শিশু আক্রান্ত হয়। এতে প্রাণহানির সংখ্যা ৩৮। কর্তৃপক্ষ ১১টি নেকড়েকে মারার পর বন্ধ হয় শিশু হত্যা। সংবাদমাধ্যম ওই প্রাণীগুলোকে, ‘মানুষখেকো নেকড়ে’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মি. ঝালা এবং তাঁর সহকর্মী দিনেশ কুমার ১৯৯৬ সালের ওই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। আর উত্তর প্রদেশের এবারের আক্রমণের সঙ্গে ওই ঘটনার বেশ কিছু মিল পেয়েছেন তাঁরা।
দুটি ক্ষেত্রেই শিশুরা আক্রমণের শিকার হয়েছে এবং তাদের শরীরের আংশিক খায় নেকড়ে। তাদের গলায় কামড়ের চিহ্ন ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রমণই ঘটেছে রাতে। গ্রামের মাঝখানে ঘরের বাইরে ঘুমন্ত শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের প্রায়ই পরে খোলা জায়গায় যেমন ফসলের খেত বা তৃণভূমিতে খুঁজে পাওয়া যায়।
এখনকার বাহরাইচের মতো, ১৯৯৬ সালের নেকড়ের আক্রমণ নদী তীরের কাছাকাছি গ্রামে সেখানে হয়েছিল। এসব গ্রাম আবার ধান ও আখের খেত এবং জলাভূমি দ্বারা বেষ্টিত। উভয় ক্ষেত্রেই বেশি মানুষের বসতি আছে এমন গ্রাম এবং দরিদ্র চাষি পরিবারের অসহায় শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে।
একটি নেকড়ে নাকি গোটা একটি দল এবারের আক্রমণে জড়িত তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ৩০ বছরের নেকড়ে নিয়ে গবেষণা থেকে ঝালা মনে করেন ১৯৯৬ সালের মতো এবারও খলনায়ক একটি মাত্র নেকড়ে। গ্রামবাসীরা দিনে জমিতে পাঁচ থেকে ছয়টি নেকড়ের দল দেখে। তবে উৎকর্ষের মা একটি নেকড়েকে ঘরে ঢুকে আক্রমণের চেষ্টা করতে দেখেন।
বন্যপ্রাণী গবেষকেরা জানান, শত শত বছর ধরে ভারতে নেকড়ে ও মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। এই এলাকার মানুষের ঐতিহ্যগত সহনশীলতা সাহায্য করেছে এ ক্ষেত্রে। এই দীর্ঘস্থায়ী সহাবস্থান নেকড়েদের সঙ্গে বিশেষ করে গবাদিপশু নিয়ে ঘন ঘন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলেও এখনো টিকে আছে প্রাণীটি।
তবে সময় বদলে যাচ্ছে। বিশেষ করে নেকড়ের নতুন এই আক্রমণ নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ঝালার মতো বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আপাতত কিছু সতর্কতার কথা বলেছেন। এর মধ্যে আছে আক্রান্ত গ্রামগুলোর শিশুদের ঘরের ভেতরে রাখা, ঘরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত না হলে রাতে শোয়ার সময় বড়দের মাঝখানে রাখা এবং রাতে টয়লেটে গেলে শিশুদের সঙ্গে একজন বড় কেউ থাকা।
‘যতক্ষণ না আমরা এই আক্রমণগুলির পেছনের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারছি, সে পর্যন্ত এ সতর্কতাগুলি মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে জরুরি।’ বলেন ঝালা। এদিকে বাহরাইচের নেকড়ের আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা গ্রামগুলোর নতুন একটি রাত শুরু হয় অমঙ্গল আশঙ্কা নিয়ে।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন ইশতিয়াক হাসান

উত্তর প্রদেশ, ভারত। ১৭ আগস্টের রাত। চার বছরের সন্ধ্যা তাদের মাটির ঘরটির বাইরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে গোটা গ্রাম নিমজ্জিত হলো অন্ধকারে।
‘আলো নিভে যাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যে আক্রমণ করে তারা। আমরা কী ঘটেছে তা যখন বুঝলাম ততক্ষণে ওকে নিয়ে গেছে নেকড়েরা।’ বলেন মেয়েটির মা সুনিতা।
পরের দিন একটি আখ খেতের মাঝখানে মেলে সন্ধ্যার মৃতদেহ। জায়গাটা তাদের বাড়ি আধা কিলোমিটারের মতো দূরে।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে আগস্ট মাসেই আরেকটি কাণ্ড হয় পাশের গ্রামে। আট বছরের উৎকর্ষ কুঁড়েতে একটি মশারির ভেতরে শুয়ে ছিল। এ সময়ই তার মা ঘরের বাইরে থেকে দেখেন একটি নেকড়ে গুটিসুটি মেরে ভেতরে ঢুকছে।
‘প্রাণীটি ছায়ার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে দ্রুত সামনে এগুলো। আমি চিৎকার দিলাম, “আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও”। প্রতিবেশীরা ছুটে এল। নেকড়েটিও পালাল।’ স্মৃতিচারণ করেন উৎকর্ষের মা।
মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে নেকড়ে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট যে সে এক বছরের একটি ছেলে শিশু এবং সবচেয়ে বয়স্ক জন ৪৫ বছরের এক নারী। নেকড়ের আক্রমণে আহত হওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়, অন্তত ৩৪।
আতঙ্ক ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের। অনেক গ্রামের বাড়িতেই তালা নেই। শিশুদের ঘরে রেখে পুরুষেরা রাতে অন্ধকার ও আধ-আলোকিত রাস্তায় টহল দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ড্রোন এবং ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি ফাঁদ বসিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। নেকড়েদের ভয় দেখানোর জন্য আতশবাজিও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনটি নেকড়েকে ধরে চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে।
মানুষের ওপর নেকড়েদের এ ধরনের আক্রমণ কিন্তু অত্যন্ত বিরল। আর যেগুলো হয় তার বেশির ভাগের জন্য দায়ী জলাতঙ্ক সংক্রামিত নেকড়ে। এ ধরনের উন্মত্ত নেকড়ে সাধারণত শিকার না খেয়ে একাধিক মানুষকে একবারে আক্রমণ করে বসে।
নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট ফর নেচার রিসার্চ ভারতসহ ২১ দেশে ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নেকড়ে আক্রমণের ওপর একটি গবেষণা করেছে। এতে ৪৮৯টি আক্রমণের তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলে। এর মধ্যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ২৬টি।
গত ৫০ বছরের বেশি সময়ে উত্তর আমেরিকায় নেকড়ের আক্রমণে নিশ্চিত দুটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে বিখ্যাত আমেরিকান জীববিদ ও নেকড়ে বিশেষজ্ঞ ডেভ মেচ। অথচ গোটা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭০ হাজার নেকড়ের বিচরণ আছে।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বুনো নেকড়ের সংখ্যা তিন হাজার ১০০-র আশপাশে। কিন্তু তাহলে বাহরাইচে নেকড়ের এমন অপ্রত্যাশিত আক্রমণের রহস্য কী?
একটি নদী ও জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত বাহরাইচের কিছু কিছু অংশ নেকড়ের স্বাভাবিক বিচরণভূমি। ঘাঘারা নদীর প্লাবনভূমিতে জেলাটির মোট জনসংখ্যা ৩৫ লাখ। প্রতি বছরই বন্যার ঝুঁকিতে থাকে এলাকাটি।
বর্ষায় ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে ভূ-প্রকৃতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এলাকাটিতে। নদী দু-কূল ছাপিয়ে বনকে প্লাবিত করে। এতে স্বাভাবিকভাবেই নেকড়েদের খাবারের সন্ধানে নিজেদের বসতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। এমনিতে নেকড়ের খাবার তালিকায় আছে কৃষ্ণসার মৃগ, চিংকারা (ভারতীয় গেজেলে), বুনো খরগোশসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী।
‘জলবায়ু পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু বন্যা নেকড়েদের আবাসস্থলের ওপর আঘাত হানতে পারে, যা খাদ্যের সন্ধানে তাদের মানব বসতিতে চলে আসতে বাধ্য করে।’ বলেন লখ্নৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ওয়াইল্ড সায়েন্সের অমিতা কানাউজিয়া।
উত্তর প্রদেশের গ্রামগুলিতে ১৯৯৬ সালে নেকড়ের আক্রমণে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কার করেন, এই এলাকাগুলোতে শিশুদের দেখভাল হয় কমই। নেকড়ের শিকার হওয়া বেশির ভাগ শিশু দরিদ্র পরিবারের সন্তান। অনেক ক্ষেত্রেই বাবা নেই বা চলে গেছে, মা-ই দেখাশোনা করতেন একা।
দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত এ সব ভারতীয় গ্রামে প্রায়ই শিশুদের তুলনায় বেশি সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে গবাদিপশুরা। একটি ক্ষুধার্ত নেকড়ের যখন স্বাভাবিক শিকারের ঘাটতি থাকে এবং গবাদিপশুর নাগাল পাওয়াটা কঠিন হয়, তখন এই শিশুরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
‘বিশ্বের আর কোথাও আমরা শিশুদের ওপর এমন নেকড়ের আক্রমণের প্রত্যক্ষ দেখিনি।’ বলেন বিখ্যাত ভারতীয় গবেষক এবং সংরক্ষণবিদ যাদবেন্দ্রদেব ঝালা।
এবারের নেকড়ের এই আক্রমণ খুব সম্ভব গত চার দশকে নেকড়ের চতুর্থ এম বড় আক্রমণ। ১৯৮১-৮২ সালে বিহারে নেকড়ের আক্রমণে অন্তত ১৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ থেকে ৯৫ সালের মধ্যে ৮০টি শিশু আক্রান্ত হয়। হাজারীবাগ জেলার ওই অঞ্চলে বিচরণ করা নেকড়ের পাঁচটি দলকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর আক্রমণটি চলে ১৯৯৬ সালের আট মাসেরও বেশি সময় ধরে। এ সময় উত্তর প্রদেশের ৫০টির বেশি গ্রামের অন্তত ৭৬টি শিশু আক্রান্ত হয়। এতে প্রাণহানির সংখ্যা ৩৮। কর্তৃপক্ষ ১১টি নেকড়েকে মারার পর বন্ধ হয় শিশু হত্যা। সংবাদমাধ্যম ওই প্রাণীগুলোকে, ‘মানুষখেকো নেকড়ে’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মি. ঝালা এবং তাঁর সহকর্মী দিনেশ কুমার ১৯৯৬ সালের ওই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। আর উত্তর প্রদেশের এবারের আক্রমণের সঙ্গে ওই ঘটনার বেশ কিছু মিল পেয়েছেন তাঁরা।
দুটি ক্ষেত্রেই শিশুরা আক্রমণের শিকার হয়েছে এবং তাদের শরীরের আংশিক খায় নেকড়ে। তাদের গলায় কামড়ের চিহ্ন ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রমণই ঘটেছে রাতে। গ্রামের মাঝখানে ঘরের বাইরে ঘুমন্ত শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের প্রায়ই পরে খোলা জায়গায় যেমন ফসলের খেত বা তৃণভূমিতে খুঁজে পাওয়া যায়।
এখনকার বাহরাইচের মতো, ১৯৯৬ সালের নেকড়ের আক্রমণ নদী তীরের কাছাকাছি গ্রামে সেখানে হয়েছিল। এসব গ্রাম আবার ধান ও আখের খেত এবং জলাভূমি দ্বারা বেষ্টিত। উভয় ক্ষেত্রেই বেশি মানুষের বসতি আছে এমন গ্রাম এবং দরিদ্র চাষি পরিবারের অসহায় শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে।
একটি নেকড়ে নাকি গোটা একটি দল এবারের আক্রমণে জড়িত তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ৩০ বছরের নেকড়ে নিয়ে গবেষণা থেকে ঝালা মনে করেন ১৯৯৬ সালের মতো এবারও খলনায়ক একটি মাত্র নেকড়ে। গ্রামবাসীরা দিনে জমিতে পাঁচ থেকে ছয়টি নেকড়ের দল দেখে। তবে উৎকর্ষের মা একটি নেকড়েকে ঘরে ঢুকে আক্রমণের চেষ্টা করতে দেখেন।
বন্যপ্রাণী গবেষকেরা জানান, শত শত বছর ধরে ভারতে নেকড়ে ও মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। এই এলাকার মানুষের ঐতিহ্যগত সহনশীলতা সাহায্য করেছে এ ক্ষেত্রে। এই দীর্ঘস্থায়ী সহাবস্থান নেকড়েদের সঙ্গে বিশেষ করে গবাদিপশু নিয়ে ঘন ঘন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলেও এখনো টিকে আছে প্রাণীটি।
তবে সময় বদলে যাচ্ছে। বিশেষ করে নেকড়ের নতুন এই আক্রমণ নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ঝালার মতো বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আপাতত কিছু সতর্কতার কথা বলেছেন। এর মধ্যে আছে আক্রান্ত গ্রামগুলোর শিশুদের ঘরের ভেতরে রাখা, ঘরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত না হলে রাতে শোয়ার সময় বড়দের মাঝখানে রাখা এবং রাতে টয়লেটে গেলে শিশুদের সঙ্গে একজন বড় কেউ থাকা।
‘যতক্ষণ না আমরা এই আক্রমণগুলির পেছনের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারছি, সে পর্যন্ত এ সতর্কতাগুলি মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে জরুরি।’ বলেন ঝালা। এদিকে বাহরাইচের নেকড়ের আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা গ্রামগুলোর নতুন একটি রাত শুরু হয় অমঙ্গল আশঙ্কা নিয়ে।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন ইশতিয়াক হাসান

উত্তর প্রদেশ, ভারত। ১৭ আগস্টের রাত। চার বছরের সন্ধ্যা তাদের মাটির ঘরটির বাইরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে গোটা গ্রাম নিমজ্জিত হলো অন্ধকারে।
‘আলো নিভে যাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যে আক্রমণ করে তারা। আমরা কী ঘটেছে তা যখন বুঝলাম ততক্ষণে ওকে নিয়ে গেছে নেকড়েরা।’ বলেন মেয়েটির মা সুনিতা।
পরের দিন একটি আখ খেতের মাঝখানে মেলে সন্ধ্যার মৃতদেহ। জায়গাটা তাদের বাড়ি আধা কিলোমিটারের মতো দূরে।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে আগস্ট মাসেই আরেকটি কাণ্ড হয় পাশের গ্রামে। আট বছরের উৎকর্ষ কুঁড়েতে একটি মশারির ভেতরে শুয়ে ছিল। এ সময়ই তার মা ঘরের বাইরে থেকে দেখেন একটি নেকড়ে গুটিসুটি মেরে ভেতরে ঢুকছে।
‘প্রাণীটি ছায়ার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে দ্রুত সামনে এগুলো। আমি চিৎকার দিলাম, “আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও”। প্রতিবেশীরা ছুটে এল। নেকড়েটিও পালাল।’ স্মৃতিচারণ করেন উৎকর্ষের মা।
মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে নেকড়ে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট যে সে এক বছরের একটি ছেলে শিশু এবং সবচেয়ে বয়স্ক জন ৪৫ বছরের এক নারী। নেকড়ের আক্রমণে আহত হওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়, অন্তত ৩৪।
আতঙ্ক ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের। অনেক গ্রামের বাড়িতেই তালা নেই। শিশুদের ঘরে রেখে পুরুষেরা রাতে অন্ধকার ও আধ-আলোকিত রাস্তায় টহল দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ড্রোন এবং ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি ফাঁদ বসিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। নেকড়েদের ভয় দেখানোর জন্য আতশবাজিও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনটি নেকড়েকে ধরে চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে।
মানুষের ওপর নেকড়েদের এ ধরনের আক্রমণ কিন্তু অত্যন্ত বিরল। আর যেগুলো হয় তার বেশির ভাগের জন্য দায়ী জলাতঙ্ক সংক্রামিত নেকড়ে। এ ধরনের উন্মত্ত নেকড়ে সাধারণত শিকার না খেয়ে একাধিক মানুষকে একবারে আক্রমণ করে বসে।
নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট ফর নেচার রিসার্চ ভারতসহ ২১ দেশে ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নেকড়ে আক্রমণের ওপর একটি গবেষণা করেছে। এতে ৪৮৯টি আক্রমণের তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলে। এর মধ্যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ২৬টি।
গত ৫০ বছরের বেশি সময়ে উত্তর আমেরিকায় নেকড়ের আক্রমণে নিশ্চিত দুটি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে বিখ্যাত আমেরিকান জীববিদ ও নেকড়ে বিশেষজ্ঞ ডেভ মেচ। অথচ গোটা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭০ হাজার নেকড়ের বিচরণ আছে।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বুনো নেকড়ের সংখ্যা তিন হাজার ১০০-র আশপাশে। কিন্তু তাহলে বাহরাইচে নেকড়ের এমন অপ্রত্যাশিত আক্রমণের রহস্য কী?
একটি নদী ও জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত বাহরাইচের কিছু কিছু অংশ নেকড়ের স্বাভাবিক বিচরণভূমি। ঘাঘারা নদীর প্লাবনভূমিতে জেলাটির মোট জনসংখ্যা ৩৫ লাখ। প্রতি বছরই বন্যার ঝুঁকিতে থাকে এলাকাটি।
বর্ষায় ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে ভূ-প্রকৃতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এলাকাটিতে। নদী দু-কূল ছাপিয়ে বনকে প্লাবিত করে। এতে স্বাভাবিকভাবেই নেকড়েদের খাবারের সন্ধানে নিজেদের বসতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। এমনিতে নেকড়ের খাবার তালিকায় আছে কৃষ্ণসার মৃগ, চিংকারা (ভারতীয় গেজেলে), বুনো খরগোশসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী।
‘জলবায়ু পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু বন্যা নেকড়েদের আবাসস্থলের ওপর আঘাত হানতে পারে, যা খাদ্যের সন্ধানে তাদের মানব বসতিতে চলে আসতে বাধ্য করে।’ বলেন লখ্নৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ওয়াইল্ড সায়েন্সের অমিতা কানাউজিয়া।
উত্তর প্রদেশের গ্রামগুলিতে ১৯৯৬ সালে নেকড়ের আক্রমণে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কার করেন, এই এলাকাগুলোতে শিশুদের দেখভাল হয় কমই। নেকড়ের শিকার হওয়া বেশির ভাগ শিশু দরিদ্র পরিবারের সন্তান। অনেক ক্ষেত্রেই বাবা নেই বা চলে গেছে, মা-ই দেখাশোনা করতেন একা।
দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত এ সব ভারতীয় গ্রামে প্রায়ই শিশুদের তুলনায় বেশি সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে গবাদিপশুরা। একটি ক্ষুধার্ত নেকড়ের যখন স্বাভাবিক শিকারের ঘাটতি থাকে এবং গবাদিপশুর নাগাল পাওয়াটা কঠিন হয়, তখন এই শিশুরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
‘বিশ্বের আর কোথাও আমরা শিশুদের ওপর এমন নেকড়ের আক্রমণের প্রত্যক্ষ দেখিনি।’ বলেন বিখ্যাত ভারতীয় গবেষক এবং সংরক্ষণবিদ যাদবেন্দ্রদেব ঝালা।
এবারের নেকড়ের এই আক্রমণ খুব সম্ভব গত চার দশকে নেকড়ের চতুর্থ এম বড় আক্রমণ। ১৯৮১-৮২ সালে বিহারে নেকড়ের আক্রমণে অন্তত ১৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ থেকে ৯৫ সালের মধ্যে ৮০টি শিশু আক্রান্ত হয়। হাজারীবাগ জেলার ওই অঞ্চলে বিচরণ করা নেকড়ের পাঁচটি দলকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর আক্রমণটি চলে ১৯৯৬ সালের আট মাসেরও বেশি সময় ধরে। এ সময় উত্তর প্রদেশের ৫০টির বেশি গ্রামের অন্তত ৭৬টি শিশু আক্রান্ত হয়। এতে প্রাণহানির সংখ্যা ৩৮। কর্তৃপক্ষ ১১টি নেকড়েকে মারার পর বন্ধ হয় শিশু হত্যা। সংবাদমাধ্যম ওই প্রাণীগুলোকে, ‘মানুষখেকো নেকড়ে’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মি. ঝালা এবং তাঁর সহকর্মী দিনেশ কুমার ১৯৯৬ সালের ওই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। আর উত্তর প্রদেশের এবারের আক্রমণের সঙ্গে ওই ঘটনার বেশ কিছু মিল পেয়েছেন তাঁরা।
দুটি ক্ষেত্রেই শিশুরা আক্রমণের শিকার হয়েছে এবং তাদের শরীরের আংশিক খায় নেকড়ে। তাদের গলায় কামড়ের চিহ্ন ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রমণই ঘটেছে রাতে। গ্রামের মাঝখানে ঘরের বাইরে ঘুমন্ত শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের প্রায়ই পরে খোলা জায়গায় যেমন ফসলের খেত বা তৃণভূমিতে খুঁজে পাওয়া যায়।
এখনকার বাহরাইচের মতো, ১৯৯৬ সালের নেকড়ের আক্রমণ নদী তীরের কাছাকাছি গ্রামে সেখানে হয়েছিল। এসব গ্রাম আবার ধান ও আখের খেত এবং জলাভূমি দ্বারা বেষ্টিত। উভয় ক্ষেত্রেই বেশি মানুষের বসতি আছে এমন গ্রাম এবং দরিদ্র চাষি পরিবারের অসহায় শিশুরা আক্রান্ত হয়েছে।
একটি নেকড়ে নাকি গোটা একটি দল এবারের আক্রমণে জড়িত তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ৩০ বছরের নেকড়ে নিয়ে গবেষণা থেকে ঝালা মনে করেন ১৯৯৬ সালের মতো এবারও খলনায়ক একটি মাত্র নেকড়ে। গ্রামবাসীরা দিনে জমিতে পাঁচ থেকে ছয়টি নেকড়ের দল দেখে। তবে উৎকর্ষের মা একটি নেকড়েকে ঘরে ঢুকে আক্রমণের চেষ্টা করতে দেখেন।
বন্যপ্রাণী গবেষকেরা জানান, শত শত বছর ধরে ভারতে নেকড়ে ও মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। এই এলাকার মানুষের ঐতিহ্যগত সহনশীলতা সাহায্য করেছে এ ক্ষেত্রে। এই দীর্ঘস্থায়ী সহাবস্থান নেকড়েদের সঙ্গে বিশেষ করে গবাদিপশু নিয়ে ঘন ঘন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলেও এখনো টিকে আছে প্রাণীটি।
তবে সময় বদলে যাচ্ছে। বিশেষ করে নেকড়ের নতুন এই আক্রমণ নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ঝালার মতো বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা আপাতত কিছু সতর্কতার কথা বলেছেন। এর মধ্যে আছে আক্রান্ত গ্রামগুলোর শিশুদের ঘরের ভেতরে রাখা, ঘরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত না হলে রাতে শোয়ার সময় বড়দের মাঝখানে রাখা এবং রাতে টয়লেটে গেলে শিশুদের সঙ্গে একজন বড় কেউ থাকা।
‘যতক্ষণ না আমরা এই আক্রমণগুলির পেছনের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারছি, সে পর্যন্ত এ সতর্কতাগুলি মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে জরুরি।’ বলেন ঝালা। এদিকে বাহরাইচের নেকড়ের আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা গ্রামগুলোর নতুন একটি রাত শুরু হয় অমঙ্গল আশঙ্কা নিয়ে।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন ইশতিয়াক হাসান

ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।
২ ঘণ্টা আগে
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের...
২ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ধরিয়ে দিতে তাঁর ব্যক্তিগত পাইলটকে প্রলুব্ধ করার এক রুদ্ধশ্বাস গুপ্ত অভিযানের খবর ফাঁস হয়েছে। এই অভিযানকে কোনো শীতল যুদ্ধের একটি থ্রিলার গল্পের সঙ্গে তুলনা করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
৩ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা টিম অ্যান্ড্রুজ। জেনেটিকভাবে পরিবর্তিত শূকরের কিডনি নিয়ে তিনি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ (রেকর্ড) ২৭১ দিন বেঁচে ছিলেন। অবশেষে সেই কিডনি অপসারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সিএনএন জানিয়েছে, ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।
৬৭ বছর বয়সী টিম অ্যান্ড্রুজ যুক্তরাষ্ট্রে এমন চতুর্থ জীবিত ব্যক্তি, যার শরীরে শূকরের জিন-সম্পাদিত কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই বিশেষ ধরনের জেনেটিক পরিবর্তন করা হয় যেন মানবদেহ সেই অঙ্গকে প্রত্যাখ্যান না করে। ১৯৯০-এর দশক থেকে ডায়াবেটিসে ভোগা অ্যান্ড্রুজ তিন বছর আগে জানতে পারেন তাঁর কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। ডায়ালাইসিস তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে তিন দিনের প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা ধরে মেশিনে সংযুক্ত থাকার ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ায় তাঁর জীবন একঘেয়ে হয়ে উঠেছিল।
ঝুঁকি জেনেও তিনি ‘জেনোট্রান্সপ্লান্ট’ অর্থাৎ প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁর কথায়, ‘যদি এতে আমার জীবন বদলায় এবং অন্যদেরও উপকার হয়, তবে ঝুঁকি নেওয়াটা সার্থক।’
সিএনএনের ‘অ্যানিমেল ফার্মা’ ডকুমেন্টারিতে তিনি জানান, শূকরের কিডনি তাঁকে নতুন করে প্রাণশক্তি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আবার বেঁচে উঠেছিলাম। দীর্ঘদিন পর মনে হয়েছিল আমি সত্যিই জীবিত।’
কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তিনি আবার রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, এমনকি কুকুর কাপকেককে নিয়ে হাঁটতে বের হওয়াও শুরু করেছিলেন। গত জুনে তিনি ফেনওয়ে পার্কে প্রিয় বোস্টন রেড সক্স দলের খেলা দেখা শুরু করার আগে প্রথম বল ছোড়ার সম্মান পান।
শরীরে শূকরের কিডনির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অ্যান্ড্রুজ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই যাত্রা ছিল কষ্টে ভরা, অজানা সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে।’ তবে তিনি গর্বের সঙ্গে যোগ করেন, ‘এই ৯ মাসে আমরা অনেক কিছু শিখেছি ও আবিষ্কার করেছি।’ তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সেই শূকরটির প্রতিও, যার নাম ছিল ‘উইলমা’। তিনি লিখেছেন—‘সে (উইলমা) আমার নায়িকা, আমার জীবনের অংশ হয়ে থাকবে চিরকাল।’
বর্তমানে অ্যান্ড্রুজ আবার ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন এবং মানব কিডনির অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় আছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা টিম অ্যান্ড্রুজ। জেনেটিকভাবে পরিবর্তিত শূকরের কিডনি নিয়ে তিনি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ (রেকর্ড) ২৭১ দিন বেঁচে ছিলেন। অবশেষে সেই কিডনি অপসারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সিএনএন জানিয়েছে, ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।
৬৭ বছর বয়সী টিম অ্যান্ড্রুজ যুক্তরাষ্ট্রে এমন চতুর্থ জীবিত ব্যক্তি, যার শরীরে শূকরের জিন-সম্পাদিত কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই বিশেষ ধরনের জেনেটিক পরিবর্তন করা হয় যেন মানবদেহ সেই অঙ্গকে প্রত্যাখ্যান না করে। ১৯৯০-এর দশক থেকে ডায়াবেটিসে ভোগা অ্যান্ড্রুজ তিন বছর আগে জানতে পারেন তাঁর কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। ডায়ালাইসিস তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে তিন দিনের প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা ধরে মেশিনে সংযুক্ত থাকার ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ায় তাঁর জীবন একঘেয়ে হয়ে উঠেছিল।
ঝুঁকি জেনেও তিনি ‘জেনোট্রান্সপ্লান্ট’ অর্থাৎ প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁর কথায়, ‘যদি এতে আমার জীবন বদলায় এবং অন্যদেরও উপকার হয়, তবে ঝুঁকি নেওয়াটা সার্থক।’
সিএনএনের ‘অ্যানিমেল ফার্মা’ ডকুমেন্টারিতে তিনি জানান, শূকরের কিডনি তাঁকে নতুন করে প্রাণশক্তি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আবার বেঁচে উঠেছিলাম। দীর্ঘদিন পর মনে হয়েছিল আমি সত্যিই জীবিত।’
কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তিনি আবার রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, এমনকি কুকুর কাপকেককে নিয়ে হাঁটতে বের হওয়াও শুরু করেছিলেন। গত জুনে তিনি ফেনওয়ে পার্কে প্রিয় বোস্টন রেড সক্স দলের খেলা দেখা শুরু করার আগে প্রথম বল ছোড়ার সম্মান পান।
শরীরে শূকরের কিডনির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অ্যান্ড্রুজ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই যাত্রা ছিল কষ্টে ভরা, অজানা সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে।’ তবে তিনি গর্বের সঙ্গে যোগ করেন, ‘এই ৯ মাসে আমরা অনেক কিছু শিখেছি ও আবিষ্কার করেছি।’ তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সেই শূকরটির প্রতিও, যার নাম ছিল ‘উইলমা’। তিনি লিখেছেন—‘সে (উইলমা) আমার নায়িকা, আমার জীবনের অংশ হয়ে থাকবে চিরকাল।’
বর্তমানে অ্যান্ড্রুজ আবার ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন এবং মানব কিডনির অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় আছেন।

মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে এই প্রাণীরা।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের...
২ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ধরিয়ে দিতে তাঁর ব্যক্তিগত পাইলটকে প্রলুব্ধ করার এক রুদ্ধশ্বাস গুপ্ত অভিযানের খবর ফাঁস হয়েছে। এই অভিযানকে কোনো শীতল যুদ্ধের একটি থ্রিলার গল্পের সঙ্গে তুলনা করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
৩ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের বড় অংশ রোগ ও ক্ষুধা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করার।
গেটস যুক্তি দিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মানব সভ্যতাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে—এ ধারণা অতিরঞ্জিত। বরং অতীতের বহু প্রচেষ্টা কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাস্তব অগ্রগতি এনে দিয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, জলবায়ু ইস্যুতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে কিছু ব্যয়সাপেক্ষ ও সন্দেহজনক প্রকল্পে, যার ফলাফল খুব কমই দেখা গেছে।
তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই চলতে থাকলেও এখন সবচেয়ে জরুরি হলো ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও প্রতিরোধযোগ্য রোগের মোকাবিলা করা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএইড-এর বাজেট কমিয়ে দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য ও রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে বড় ধাক্কা লেগেছে।
গেটস লিখেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, রোগ ও দারিদ্র্য—সবই বড় সমস্যা। কিন্তু এগুলোর মোকাবিলা আমাদের করা উচিত তাদের প্রকৃত কষ্টের অনুপাতে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব গুরুতর হবে, বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের জন্য। তারপরও এটি মানবতার বিলুপ্তি ঘটাবে না। এখন আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের জীবনমান উন্নত করা এবং কষ্ট লাঘব করা।’
গেটসের এই বক্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জলবায়ু বিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলন কপ-৩০।
গেটস অবশ্য দাবি করেছেন, এটি তাঁর আগের অবস্থানের পরিবর্তন নয়। তিনি শূন্য-কার্বন নিঃসরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জলবায়ু খাতে বিনিয়োগ কমানো বিরাট হতাশার হলেও এটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’
তবে অনেক সমালোচক গেটসের এই অবস্থানকে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি বলে আখ্যা দিয়েছেন। মার্কিন বিজ্ঞানী মাইকেল ম্যান মন্তব্য করেছেন, ‘বিল গেটস বিষয়টি উল্টোভাবে দেখছেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু সংকটই এখন সবচেয়ে বড় হুমকি।’

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের বড় অংশ রোগ ও ক্ষুধা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করার।
গেটস যুক্তি দিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মানব সভ্যতাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে—এ ধারণা অতিরঞ্জিত। বরং অতীতের বহু প্রচেষ্টা কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাস্তব অগ্রগতি এনে দিয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, জলবায়ু ইস্যুতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে কিছু ব্যয়সাপেক্ষ ও সন্দেহজনক প্রকল্পে, যার ফলাফল খুব কমই দেখা গেছে।
তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই চলতে থাকলেও এখন সবচেয়ে জরুরি হলো ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও প্রতিরোধযোগ্য রোগের মোকাবিলা করা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএইড-এর বাজেট কমিয়ে দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য ও রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে বড় ধাক্কা লেগেছে।
গেটস লিখেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, রোগ ও দারিদ্র্য—সবই বড় সমস্যা। কিন্তু এগুলোর মোকাবিলা আমাদের করা উচিত তাদের প্রকৃত কষ্টের অনুপাতে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব গুরুতর হবে, বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের জন্য। তারপরও এটি মানবতার বিলুপ্তি ঘটাবে না। এখন আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের জীবনমান উন্নত করা এবং কষ্ট লাঘব করা।’
গেটসের এই বক্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জলবায়ু বিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলন কপ-৩০।
গেটস অবশ্য দাবি করেছেন, এটি তাঁর আগের অবস্থানের পরিবর্তন নয়। তিনি শূন্য-কার্বন নিঃসরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জলবায়ু খাতে বিনিয়োগ কমানো বিরাট হতাশার হলেও এটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’
তবে অনেক সমালোচক গেটসের এই অবস্থানকে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি বলে আখ্যা দিয়েছেন। মার্কিন বিজ্ঞানী মাইকেল ম্যান মন্তব্য করেছেন, ‘বিল গেটস বিষয়টি উল্টোভাবে দেখছেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু সংকটই এখন সবচেয়ে বড় হুমকি।’

মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে এই প্রাণীরা।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।
২ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ধরিয়ে দিতে তাঁর ব্যক্তিগত পাইলটকে প্রলুব্ধ করার এক রুদ্ধশ্বাস গুপ্ত অভিযানের খবর ফাঁস হয়েছে। এই অভিযানকে কোনো শীতল যুদ্ধের একটি থ্রিলার গল্পের সঙ্গে তুলনা করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
৩ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ধরিয়ে দিতে তাঁর ব্যক্তিগত পাইলটকে প্রলুব্ধ করার এক রুদ্ধশ্বাস গুপ্ত অভিযানের খবর ফাঁস হয়েছে। এই অভিযানকে কোনো শীতল যুদ্ধের একটি থ্রিলার গল্পের সঙ্গে তুলনা করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট। অভিযানটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মার্কিন ফেডারেল এজেন্ট এডউইন লোপেজ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস (এইচএসআই) এর কর্মকর্তা ছিলেন।
ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই মাসেই ডোমিনিকান রিপাবলিকের মার্কিন দূতাবাসে এক তথ্যদাতা হাজির হন। তিনি দাবি করেন, মাদুরোর ব্যবহৃত দুটি বিলাসবহুল জেট বিমান মেরামতের কাজ চলছে সান্তো ডোমিংগোর লা ইসাবেলা বিমানবন্দরে।
ওই দূতাবাসেই তখন কর্মরত ছিলেন ৫০ বছর বয়সী লোপেজ—একজন অভিজ্ঞ প্রাক্তন মার্কিন সেনা রেঞ্জার, যিনি বহু বছর ধরে মাদক ও অর্থ পাচার চক্র ধ্বংসে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। আগন্তুকের দেওয়া তথ্য লোপেজের কৌতূহল জাগিয়েছিল। কারণ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ভেনেজুয়েলার এসব বিমানের যন্ত্রাংশ কেনা বা মেরামত করাই বেআইনি।
বিমান দুটি শনাক্ত করতে সময় লাগেনি। এর একটি ‘দাসো ফ্যালকন ২০০০ ইএক্স’ এবং অন্যটি ‘ফ্যালকন ৯০০ ইএক্স’। পরে জানা যায়, মাদুরো পাঁচজন পাইলটকে পাঠিয়েছেন বিমানগুলো ফেরত নিতে। এখানেই লোপেজের মাথায় আসে এক সাহসী চিন্তা। তিনি মাদুরোর প্রধান পাইলটকে রাজি করানোর কথা ভাবলেন, যাতে ওই পাইলট প্রেসিডেন্টকে বহন করার সময় কোনো বিমানকে এমন কোনো জায়গায় অবতরণ করান, যেখানে মার্কিন বাহিনী মাদুরোকে গ্রেপ্তার করতে পারে?
এই ভাবনা থেকেই শুরু হয় এক গুপ্তচর নাটক। ডোমিনিকান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে লোপেজ ও তাঁর দল পাইলটদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তাঁদের মূল টার্গেটে ছিলেন ভেনেজুয়েলার বিমানবাহিনীর কর্নেল ও মাদুরোর ব্যক্তিগত পাইলট—বিটনার ভিলেগাস। ভিলেগাস ছিলেন প্রেসিডেনশিয়াল অনার গার্ডের সদস্য, শান্ত স্বভাবের কিন্তু মাদুরোর আস্থাভাজন।
ভিলেগাসকে লোপেজ ডেকে নেন একান্ত সাক্ষাতে। কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনি সরাসরি প্রস্তাব দেন—‘যদি আপনি গোপনে মাদুরোকে এমন কোথাও নিয়ে যান, যেখানে আমরা তাঁকে আটকাতে পারি, তাহলে আপনি হবেন ধনী ও জাতির নায়ক।’
ভিলেগাস অবশ্য এই প্রস্তাবের বিপরীতে কিছু বলেননি। তবে বিদায়ের আগে নিজের মোবাইল নম্বর দেন, যা লোপেজের মনে আশা জাগিয়েছিল।
এরপর ১৬ মাস ধরে লোপেজ গোপনে ভিলেগাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাঁরা এনক্রিপটেড অ্যাপে কথা বলেন, বার্তা পাঠান, এমনকি অবসরে যাওয়ার পরও লোপেজ তাঁর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু ওই পাইলটের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র একে একে মাদুরোর দুটি বিমান জব্দ করে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমটি এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়টি বাজেয়াপ্ত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ডোমিনিকান রিপাবলিক সফরে গিয়ে প্রকাশ্যে বলেন, ‘এই বিমানে ভেনেজুয়েলার সামরিক গোপন তথ্যের ভান্ডার রয়েছে।’ এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় মাদুরোর সরকার এবং ‘নির্লজ্জ চুরির’ অভিযোগ করে।
লোপেজ তখনো থামেননি। তিনি ভিলেগাসকে রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যান। গত আগস্টে তিনি ওই পাইলটকে বার্তা পাঠান—‘তোমার উত্তর এখনো পাইনি।’ এই বার্তার সঙ্গে তিনি একটি সরকারি বিবৃতিও জুড়ে দেন, যেখানে মাদুরোকে ধরিয়ে দিলে ৫ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়। লোপেজ লেখেন, ‘এখনো সময় আছে নায়ক হওয়ার।’
কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে গত মাসের (সেপ্টেম্বর) মাঝামাঝিতে তিনি তাঁর শেষ চেষ্টা করেন। সে সময় একদিন সংবাদে মাদুরোর বিমানকে আকাশে অদ্ভুত এক ঘুরপথে উড়তে দেখে লোপেজ ওই পাইলটকে বার্তা পাঠান—‘কোথায় যাচ্ছ?’ উত্তরে ভিলেগাস জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কে?’ লোপেজ পরিচয় দিলে পাইলট ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমরা ভেনেজুয়েলীয়রা বিশ্বাসঘাতক নই।’
তখন লোপেজ তাঁকে তাঁদের আগের সাক্ষাতের একটি ছবি পাঠান। ভিলেগাস বিস্মিত হয়ে লেখেন, ‘তুমি পাগল নাকি?’
লোপেজ জবাব দেন—‘হয়তো একটু।’ এরপর তিনি শেষবারের মতো লেখেন—‘তোমার সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নাও। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।’ ভিলেগাস অবশ্য এরপরই লোপেজের নম্বরটি ব্লক করে দেন।
পাইলটকে রাজি করাতে না পেরে মার্কিন এজেন্ট ও মাদুরো-বিরোধী গোষ্ঠী অন্য কৌশল নেয়। প্রেসিডেন্ট মাদুরোকেই বিভ্রান্ত করতে চান তাঁরা। এ ক্ষেত্রে ভিলেগাসের জন্মদিনে সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা মার্শাল বিলিংসলি টুইটারে ব্যঙ্গাত্মক শুভেচ্ছা জানান এবং ভিলেগাসের দুটি ছবি পোস্ট করেন। এর মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায়—লোপেজের সঙ্গে ভিলেগাসের পুরোনো সাক্ষাতের মুহূর্ত।
এই টুইট বার্তাটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভেনেজুয়েলায় গুজব ছড়ায়—পাইলটকে নাকি জেরা করা হচ্ছে কিংবা আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই ভেনেজুয়েলার টেলিভিশনে হাজির হন ভিলেগাস। তাঁর পাশে ছিলেন তখন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেলো। কাবেলো হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমাদের সৈনিকেরা বিক্রি হয় না।’ পাইলট ভিলেগাস চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন, মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচু করে মাদুরোর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।
লোপেজের দুঃসাহসী এই পরিকল্পনা রয়ে গেছে ইতিহাসের আড়ালে এক অসম্পূর্ণ অধ্যায় হিসেবে।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ধরিয়ে দিতে তাঁর ব্যক্তিগত পাইলটকে প্রলুব্ধ করার এক রুদ্ধশ্বাস গুপ্ত অভিযানের খবর ফাঁস হয়েছে। এই অভিযানকে কোনো শীতল যুদ্ধের একটি থ্রিলার গল্পের সঙ্গে তুলনা করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট। অভিযানটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মার্কিন ফেডারেল এজেন্ট এডউইন লোপেজ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস (এইচএসআই) এর কর্মকর্তা ছিলেন।
ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই মাসেই ডোমিনিকান রিপাবলিকের মার্কিন দূতাবাসে এক তথ্যদাতা হাজির হন। তিনি দাবি করেন, মাদুরোর ব্যবহৃত দুটি বিলাসবহুল জেট বিমান মেরামতের কাজ চলছে সান্তো ডোমিংগোর লা ইসাবেলা বিমানবন্দরে।
ওই দূতাবাসেই তখন কর্মরত ছিলেন ৫০ বছর বয়সী লোপেজ—একজন অভিজ্ঞ প্রাক্তন মার্কিন সেনা রেঞ্জার, যিনি বহু বছর ধরে মাদক ও অর্থ পাচার চক্র ধ্বংসে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। আগন্তুকের দেওয়া তথ্য লোপেজের কৌতূহল জাগিয়েছিল। কারণ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ভেনেজুয়েলার এসব বিমানের যন্ত্রাংশ কেনা বা মেরামত করাই বেআইনি।
বিমান দুটি শনাক্ত করতে সময় লাগেনি। এর একটি ‘দাসো ফ্যালকন ২০০০ ইএক্স’ এবং অন্যটি ‘ফ্যালকন ৯০০ ইএক্স’। পরে জানা যায়, মাদুরো পাঁচজন পাইলটকে পাঠিয়েছেন বিমানগুলো ফেরত নিতে। এখানেই লোপেজের মাথায় আসে এক সাহসী চিন্তা। তিনি মাদুরোর প্রধান পাইলটকে রাজি করানোর কথা ভাবলেন, যাতে ওই পাইলট প্রেসিডেন্টকে বহন করার সময় কোনো বিমানকে এমন কোনো জায়গায় অবতরণ করান, যেখানে মার্কিন বাহিনী মাদুরোকে গ্রেপ্তার করতে পারে?
এই ভাবনা থেকেই শুরু হয় এক গুপ্তচর নাটক। ডোমিনিকান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে লোপেজ ও তাঁর দল পাইলটদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তাঁদের মূল টার্গেটে ছিলেন ভেনেজুয়েলার বিমানবাহিনীর কর্নেল ও মাদুরোর ব্যক্তিগত পাইলট—বিটনার ভিলেগাস। ভিলেগাস ছিলেন প্রেসিডেনশিয়াল অনার গার্ডের সদস্য, শান্ত স্বভাবের কিন্তু মাদুরোর আস্থাভাজন।
ভিলেগাসকে লোপেজ ডেকে নেন একান্ত সাক্ষাতে। কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনি সরাসরি প্রস্তাব দেন—‘যদি আপনি গোপনে মাদুরোকে এমন কোথাও নিয়ে যান, যেখানে আমরা তাঁকে আটকাতে পারি, তাহলে আপনি হবেন ধনী ও জাতির নায়ক।’
ভিলেগাস অবশ্য এই প্রস্তাবের বিপরীতে কিছু বলেননি। তবে বিদায়ের আগে নিজের মোবাইল নম্বর দেন, যা লোপেজের মনে আশা জাগিয়েছিল।
এরপর ১৬ মাস ধরে লোপেজ গোপনে ভিলেগাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাঁরা এনক্রিপটেড অ্যাপে কথা বলেন, বার্তা পাঠান, এমনকি অবসরে যাওয়ার পরও লোপেজ তাঁর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু ওই পাইলটের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র একে একে মাদুরোর দুটি বিমান জব্দ করে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমটি এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়টি বাজেয়াপ্ত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ডোমিনিকান রিপাবলিক সফরে গিয়ে প্রকাশ্যে বলেন, ‘এই বিমানে ভেনেজুয়েলার সামরিক গোপন তথ্যের ভান্ডার রয়েছে।’ এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় মাদুরোর সরকার এবং ‘নির্লজ্জ চুরির’ অভিযোগ করে।
লোপেজ তখনো থামেননি। তিনি ভিলেগাসকে রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যান। গত আগস্টে তিনি ওই পাইলটকে বার্তা পাঠান—‘তোমার উত্তর এখনো পাইনি।’ এই বার্তার সঙ্গে তিনি একটি সরকারি বিবৃতিও জুড়ে দেন, যেখানে মাদুরোকে ধরিয়ে দিলে ৫ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়। লোপেজ লেখেন, ‘এখনো সময় আছে নায়ক হওয়ার।’
কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে গত মাসের (সেপ্টেম্বর) মাঝামাঝিতে তিনি তাঁর শেষ চেষ্টা করেন। সে সময় একদিন সংবাদে মাদুরোর বিমানকে আকাশে অদ্ভুত এক ঘুরপথে উড়তে দেখে লোপেজ ওই পাইলটকে বার্তা পাঠান—‘কোথায় যাচ্ছ?’ উত্তরে ভিলেগাস জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কে?’ লোপেজ পরিচয় দিলে পাইলট ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমরা ভেনেজুয়েলীয়রা বিশ্বাসঘাতক নই।’
তখন লোপেজ তাঁকে তাঁদের আগের সাক্ষাতের একটি ছবি পাঠান। ভিলেগাস বিস্মিত হয়ে লেখেন, ‘তুমি পাগল নাকি?’
লোপেজ জবাব দেন—‘হয়তো একটু।’ এরপর তিনি শেষবারের মতো লেখেন—‘তোমার সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নাও। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।’ ভিলেগাস অবশ্য এরপরই লোপেজের নম্বরটি ব্লক করে দেন।
পাইলটকে রাজি করাতে না পেরে মার্কিন এজেন্ট ও মাদুরো-বিরোধী গোষ্ঠী অন্য কৌশল নেয়। প্রেসিডেন্ট মাদুরোকেই বিভ্রান্ত করতে চান তাঁরা। এ ক্ষেত্রে ভিলেগাসের জন্মদিনে সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা মার্শাল বিলিংসলি টুইটারে ব্যঙ্গাত্মক শুভেচ্ছা জানান এবং ভিলেগাসের দুটি ছবি পোস্ট করেন। এর মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায়—লোপেজের সঙ্গে ভিলেগাসের পুরোনো সাক্ষাতের মুহূর্ত।
এই টুইট বার্তাটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভেনেজুয়েলায় গুজব ছড়ায়—পাইলটকে নাকি জেরা করা হচ্ছে কিংবা আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই ভেনেজুয়েলার টেলিভিশনে হাজির হন ভিলেগাস। তাঁর পাশে ছিলেন তখন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেলো। কাবেলো হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমাদের সৈনিকেরা বিক্রি হয় না।’ পাইলট ভিলেগাস চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন, মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচু করে মাদুরোর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।
লোপেজের দুঃসাহসী এই পরিকল্পনা রয়ে গেছে ইতিহাসের আড়ালে এক অসম্পূর্ণ অধ্যায় হিসেবে।

মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে এই প্রাণীরা।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।
২ ঘণ্টা আগে
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের...
২ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’। সম্প্রতি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক মানুষ ও তাদের অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জাতিসংঘের সংস্থাটি খেরসন, মাইকোলাইভ ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে হামলার ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করেছে। এই এলাকাগুলো সম্মুখ সমরের কাছাকাছি হওয়ায় গত এক বছরে সেখানে ড্রোন হামলার তীব্রতা বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—রুশ ড্রোনগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘরবাড়ি, মানবিক সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। একই স্থানে একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
রাশিয়া বিভিন্ন ধরনের কম দামি ও ছোট আকারের, ক্যামেরা ও গাইডেন্স সিস্টেমযুক্ত ড্রোন ব্যবহার করেছে। এগুলোর কিছু আঘাতের সময় বিস্ফোরিত হয়, আবার কিছু ওপর থেকে বিস্ফোরক ফেলতে পারে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এই ধরনের হামলায় গত এক বছরে অন্তত ২০০ বেসামরিক মানুষ নিহত এবং প্রায় ২ হাজার জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ কমিশন দাবি করেছে, এসব হামলা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিকদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার নীতির অংশ হিসেবেও এগুলো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
প্রতিবেদনটিতে খেরসনের একাধিক বাসিন্দার বর্ণনা উদ্ধৃত করা হয়েছে। একজন বলেছেন, ‘আমি ড্রোনের শব্দ শুনেছিলাম। ভেবেছিলাম, এটি একটি বাসকে অনুসরণ করবে। কিন্তু যখন বাস চলে গেল, তখনো সেটা আকাশে ঘুরছিল। বুঝলাম, পালানোর কোনো পথ নেই।’ পরে ড্রোন থেকে ওই ব্যক্তির মুখে শার্পনেলের আঘাত লেগেছিল।
আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এটা এক ধরনের লটারির মতো, আজ রাতটা বেঁচে থাকব কি না, কেউ জানে না।’
এদিকে রাশিয়া বরাবরই বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তবে গত চার বছরে ইউক্রেনজুড়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় অসংখ্য বেসামরিক এলাকা ধ্বংস হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘ কমিশনের তদন্তেও কোনো সহযোগিতা করেনি, এমনকি ৩৫টি লিখিত অনুরোধেরও জবাব দেয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলাগুলোকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি অন ইউক্রেন’। সম্প্রতি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক মানুষ ও তাদের অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জাতিসংঘের সংস্থাটি খেরসন, মাইকোলাইভ ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে হামলার ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করেছে। এই এলাকাগুলো সম্মুখ সমরের কাছাকাছি হওয়ায় গত এক বছরে সেখানে ড্রোন হামলার তীব্রতা বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—রুশ ড্রোনগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘরবাড়ি, মানবিক সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। একই স্থানে একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
রাশিয়া বিভিন্ন ধরনের কম দামি ও ছোট আকারের, ক্যামেরা ও গাইডেন্স সিস্টেমযুক্ত ড্রোন ব্যবহার করেছে। এগুলোর কিছু আঘাতের সময় বিস্ফোরিত হয়, আবার কিছু ওপর থেকে বিস্ফোরক ফেলতে পারে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এই ধরনের হামলায় গত এক বছরে অন্তত ২০০ বেসামরিক মানুষ নিহত এবং প্রায় ২ হাজার জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ কমিশন দাবি করেছে, এসব হামলা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিকদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার নীতির অংশ হিসেবেও এগুলো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
প্রতিবেদনটিতে খেরসনের একাধিক বাসিন্দার বর্ণনা উদ্ধৃত করা হয়েছে। একজন বলেছেন, ‘আমি ড্রোনের শব্দ শুনেছিলাম। ভেবেছিলাম, এটি একটি বাসকে অনুসরণ করবে। কিন্তু যখন বাস চলে গেল, তখনো সেটা আকাশে ঘুরছিল। বুঝলাম, পালানোর কোনো পথ নেই।’ পরে ড্রোন থেকে ওই ব্যক্তির মুখে শার্পনেলের আঘাত লেগেছিল।
আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এটা এক ধরনের লটারির মতো, আজ রাতটা বেঁচে থাকব কি না, কেউ জানে না।’
এদিকে রাশিয়া বরাবরই বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তবে গত চার বছরে ইউক্রেনজুড়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় অসংখ্য বেসামরিক এলাকা ধ্বংস হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘ কমিশনের তদন্তেও কোনো সহযোগিতা করেনি, এমনকি ৩৫টি লিখিত অনুরোধেরও জবাব দেয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মধ্য এপ্রিল থেকে বাহরাইচ জেলার ৩০টির মতো গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে নেকড়ের একের পর এক আক্রমণ। নেপাল সীমান্তবর্তী এই এলাকাটিতে তারপর থেকে নয়টি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ককে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে এই প্রাণীরা।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।
২ ঘণ্টা আগে
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের...
২ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ধরিয়ে দিতে তাঁর ব্যক্তিগত পাইলটকে প্রলুব্ধ করার এক রুদ্ধশ্বাস গুপ্ত অভিযানের খবর ফাঁস হয়েছে। এই অভিযানকে কোনো শীতল যুদ্ধের একটি থ্রিলার গল্পের সঙ্গে তুলনা করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
৩ ঘণ্টা আগে