Ajker Patrika

মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে এবার ‘কোবরা’ বৈঠক ডাকলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: পিএ মিডিয়া
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: পিএ মিডিয়া

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জরুরি ‘কোবরা’ (COBRA) কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বুধবার (১৮ জুন) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের বর্তমান অবস্থান হলো, ‘আমরা পরিস্থিতি শান্ত করতে চাই।’ এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এটি দ্রুত পরিবর্তনশীল একটি পরিস্থিতি। আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে যুদ্ধ বন্ধ করে কূটনীতিতে ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করা যায়।’

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সতর্কতা হিসেবে তেল আবিবে ব্রিটিশ দূতাবাস এবং জেরুজালেমের ব্রিটিশ কনস্যুলেটের কর্মীদের পরিবারের সদস্যসহ সাময়িকভাবে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলে তাদের সর্বশেষ ভ্রমণ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দূতাবাস এবং কনস্যুলেট এখনো ব্রিটিশ নাগরিকদের পরিষেবাসহ প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের সরকার কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ‘কোবরা কমিটি’ গঠন করে বৈঠকের আহ্বান জানায়। এই ধরনের বৈঠক সাধারণত স্বরাষ্ট্রসচিব বা প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, ছয় দিন আগে ইসরায়েল-ইরান সরাসরি সংঘাত শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি কাঁপিয়ে দিয়েছে এই যুদ্ধ। গত শুক্রবার ইসরায়েল তাদের আক্রমণ শুরু করে। এরপর পাল্টা জবাবে ইরানও চালায় ব্যাপক হামলা।

রয়টার্স প্রকাশিত এক ড্রোন ছবিতে দেখা যায়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের একটি আবাসিক এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। গত শুক্রবার ইসরায়েল একযোগে আঘাত হানে ইরানের রাজধানী তেহরানের একাধিক স্থাপনায়। হামলার লক্ষ্য ছিল একটি পারমাণবিক স্থাপনা, আবাসিক এলাকা ও ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (IRGC) ঘাঁটি। নিহত হন বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার, পরমাণুবিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক।

এরপর ইরান পাল্টা জবাবে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।

গত শনি ও রোববার দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় যুদ্ধ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ইরান ও ইসরায়েল—উভয়ের তেল পরিকাঠামো লক্ষ্যবস্তু হয়। ইসরায়েল জানায়, তাদের বিভিন্ন স্থানে হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৭৭ জন আহত হয়েছে।

গত সোমবার ইসরায়েল উত্তর তেহরান থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘সবাই যেন তৎক্ষণাৎ তেহরান ছেড়ে যায়।’

এরপর গতকাল মঙ্গলবার ১ কোটিরও বেশি লোক তেহরান ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় বিশাল যানজট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেকটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ‘সহজ লক্ষ্য’, তবে আপাতত তাঁকে হত্যা করা হবে না।

এই সংঘাত দিন দিন আরও জটিল ও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত