Ajker Patrika

ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক হবে স্নায়ুযুদ্ধে ব্যবহৃত মার্কিন ঘাঁটিতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৪১
হিমশীতল আলাস্কার এই সামরিক ঘাঁটিতেই বৈঠক করবেন ট্রাম্প-পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
হিমশীতল আলাস্কার এই সামরিক ঘাঁটিতেই বৈঠক করবেন ট্রাম্প-পুতিন। ছবি: সংগৃহীত

আগামীকাল শুক্রবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জানা গেছে, এ বৈঠকের মূল বিষয় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ‘জিওলজিক্যাল আলফা মেল’ হিসেবে পরিচিত এ দুই নেতা ভবিষ্যতের বিশ্বব্যবস্থা নিয়েও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবেন।

তবে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে আলোচনায় এসেছে তাঁদের ‘বৈঠকের স্থান’। বার্তা সংস্থা এপি বলছে, স্নায়ুযুদ্ধের সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের হুমকি মোকাবিলায় ব্যবহৃত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এপিকে জানিয়েছেন, বৈঠকটি আগামীকাল আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে অবস্থিত জয়েন্ট বেস এলমেন্ডর্ফ-রিচার্ডসন নামে একটি সামরিক ঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত হবে।

এ সামরিক ঘাঁটি স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত সামরিক কার্যকলাপ ও সম্ভাব্য পারমাণবিক হামলার বিরুদ্ধে নজরদারি ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সে সময় এ ঘাঁটিকে বলা হতো ‘টপ কভার ফর নর্থ আমেরিকা’। যদিও এখন অনেক সামরিক সরঞ্জাম নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে, তবে ঘাঁটিটি এখনো এফ-২২ র‍্যাপ্টরের মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখান থেকে এখনো মার্কিন আকাশসীমায় উড়ে আসা রুশ বিমান প্রতিহত করা হয়।

তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ১৫৮ বছর আগে এই আলাস্কা মাত্র ৭২ লাখ মার্কিন ডলারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া। আর ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানসূত্র খুঁজতে সেখানেই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প-পুতিন। মার্কিন মুলুকের এত সব জৌলুস এলাকা বাদ দিয়ে কেন এই হিমশীতল অঙ্গরাজ্য আলাস্কাকে বেছে নেওয়া হলো? এর পেছনে রহস্য কী?

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, তিনি ক্ষমতায় এলে দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুতিনের সঙ্গে তাঁর এ বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতারা বৈঠকটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, এই একাকী বৈঠকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে, যা রাশিয়ার উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক হবে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরাও আশঙ্কা করছেন, এই আলাস্কাতেই এবার পুতিন ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভূমিবিনিময় চুক্তির’ প্রস্তাব নিয়ে হাজির হবেন। আর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে সার্বভৌম ভূখণ্ডের একটি অংশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে ইউক্রেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ট্রাম্প সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি এই বৈঠক থেকে যুদ্ধবিরতি চান। তবে যে ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপ মহাদেশকে সরাসরি প্রভাবিত করছে, সেই আলোচনা অবশ্যই ইউরোপেরও শোনা উচিত।

ট্রাম্পের মতে, প্রথম বৈঠকের মাধ্যমে পরিস্থিতি যাচাই করা হবে এবং একটি দ্বিতীয় বৈঠকের মাধ্যমে বড় কোনো চুক্তি হতে পারে, যেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও যোগ দিতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত