Ajker Patrika

ব্রিটেনে সিগারেটসেবীর চেয়ে ভ্যাপ সেবনকারী বেশি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৫
অপ্রাপ্তবয়স্ক ভ্যাপ গ্রহণকারীও বেড়েছে ব্রিটেনে। ছবি: সংগৃহীত
অপ্রাপ্তবয়স্ক ভ্যাপ গ্রহণকারীও বেড়েছে ব্রিটেনে। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটেনে ভ্যাপ বা ই-সিগারেট সেবনের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছে, দেশটিতে প্রথমবারের মতো ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে সিগারেটসেবীর চেয়ে ই-সিগারেট বা ভ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি।

২০২৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দৈনিক বা মাঝেমধ্যে ভ্যাপ ব্যবহার করেন, যেখানে সিগারেট সেবনকারীর সংখ্যা ৪.৯ মিলিয়ন।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে দৈনিক ভ্যাপ ব্যবহার সবচেয়ে বেশি এবং নারীদের মধ্যে এর ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে।

গত এক দশকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায় ধূমপানের হার ক্রমাগত কমছে। অন্যদিকে ভ্যাপিং তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে তরুণদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস জানিয়েছে, সিগারেট বা ধূমপানের তুলনায় ভ্যাপিং বা ই-সিগারেট খুব সামান্য ঝুঁকি বহন করে। কারণ, সিগারেট পুড়লে হাজারো রাসায়নিক নির্গত হয়, যার বেশির ভাগই বিষাক্ত ও ক্যানসার সৃষ্টিকারী।

তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ভ্যাপিং সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। শিশু ও অধূমপায়ীদের এটি কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়। সিগারেট ছেড়ে ভ্যাপিংয়ে গেলে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়; তবে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি।

ধূমপানবিরোধী সংস্থা অ্যাকশন অন স্মোকিং অ্যান্ড হেলথ (এএসএইচ) জানিয়েছে, ধূমপানের হার কমা জনস্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক খবর। তবে যাঁরা এখনো ধূমপান করছেন, তাঁরা একটি আসক্তির চক্রে বন্দী, যা শেষ পর্যন্ত তাঁদের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে।

সংস্থাটি বলছে, যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ধূমপানের কারণে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যেসব অঞ্চলে ধূমপানের হার এখনো বেশি, সেখানে বিনিয়োগ ও সহায়তা বাড়াতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে এএসএইচ।

ওএনএসের অপিনিয়নস অ্যান্ড লাইফস্টাইল সার্ভে অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে ১৬ বছর ও তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন বা মাঝেমধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহার করে, যা ধূমপানকারীর ৯ দশমিক ১ শতাংশ সংখ্যার চেয়ে সামান্য বেশি।

১৯৭০-এর দশকে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ধূমপায়ী ছিল। সে সময় ৩০ শতাংশ মানুষ ধূমপান ত্যাগ করেছিল। কিন্তু সেই সময় থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ২০০৬-২০০৭ সালে বদ্ধ জনসমাগমের স্থান এবং কর্মক্ষেত্রে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ২০১৫ সালে শিশুদের সঙ্গে গাড়িতে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু করা হয়। এরপর ২০১৭ সালে সাধারণ সিগারেট প্যাকেজিং চালু করা হয়। এতে ধূমপায়ীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

ওএনএস বলছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে। ২০২৪ সালে ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ধূমপান ছেড়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৩ শতাংশ।

এ ছাড়া বর্তমানে সংসদে প্রক্রিয়াধীন টোব্যাকো অ্যান্ড ভ্যাপস বিল অনুযায়ী ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বা তারপর জন্ম নেওয়া কেউ যুক্তরাজ্যে তামাক কেনার অনুমতি পাবে না।

দোকানগুলোতে ভ্যাপের প্যাকেজিং এবং প্রদর্শনের নিয়মে কড়াকড়ি আনা হচ্ছে, যাতে এগুলো শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় না দেখায়।

এ ছাড়া পরিবেশ রক্ষা এবং শিশু ও তরুণদের ভ্যাপিং কমাতে ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে যুক্তরাজ্যে একবার ব্যবহার করা যায়, এমন বা ডিসপোজেবল ভ্যাপ বিক্রি বা সরবরাহ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সীদের নিকোটিন পাউচ এবং অন্যান্য নিকোটিন পণ্য বিক্রি করা নিষিদ্ধ হবে।

ওএনএসের জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে ১৬ বছর এবং তার বেশি বয়সীদের মধ্যে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ভ্যাপ বা ই-সিগারেট ব্যবহার করছে, যা ২০২৩ সালের ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও ৩ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ মাঝেমধ্যে ব্যবহার করে।

এর মানে বর্তমানে ৫.৪ মিলিয়ন মানুষ ভ্যাপ ব্যবহার করছে, যা ২০২৩ সালের ৫.১ মিলিয়নের তুলনায় বেশি।

ধূমপানের বিরুদ্ধে লড়াই করা সংস্থা এএসএইচের প্রধান নির্বাহী হ্যাজেল চিসম্যান বলেন, এখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে কখনোই ধূমপান করেননি, এমন ব্যক্তিরা এখন ভ্যাপিং শুরু করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...