Ajker Patrika

নর্ড স্ট্রিমে সরবরাহ আরও কমেছে, আসন্ন শীত নিয়ে চিন্তিত ইউরোপ

নর্ড স্ট্রিমে সরবরাহ আরও কমেছে, আসন্ন শীত নিয়ে চিন্তিত ইউরোপ

ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপটে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-১ এ গ্যাস সরবরাহ আগেই কমিয়েছিল রাশিয়া। আজ বুধবার এই সরবরাহ মূল সক্ষমতার এক-পঞ্চমাংশে নেমে আসে। এ অবস্থায় গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জার্মান কর্তৃপক্ষ। শুধু জার্মানি নয়, সতর্ক অবস্থায় রয়েছে গোটা ইউরোপ। তারা মূলত আসন্ন শীত নিয়েই বেশি চিন্তিত। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার নর্ড স্ট্রিম-১ এর মধ্য দিয়ে গ্যাস সরবরাহ আরও কমিয়ে দেয় রাশিয়া। এ অবস্থায় দেশটির জনগণের প্রতি গৃহস্থালি ও শিল্প খাতে গ্যাসের ব্যবহার কমাতে এবং গ্যাস মজুতের অনুরোধ করেছে জার্মানির গ্যাস নিয়ন্ত্রক নেটওয়ার্ক। 

দুদিন ধরে গ্যাসের প্রবাহ কম জানিয়ে নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় গ্যাজপ্রম। এতে জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করা ইউরোপে বড় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোপে রুশ গ্যাস রপ্তানির এক-তৃতীয়াংশই হয় এই নর্ড স্ট্রিম দিয়ে। 

বুধবার নর্ড স্ট্রিম ১ দিয়ে ঘণ্টায় ১৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ হয়েছে, যা আগের দিনই ছিল ২৮ মিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা। গ্যাস সরবরাহের এই হার এই পাইপলাইনের স্বাভাবিক সক্ষমতার ৪০ শতাংশ। 

এ অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো কম সরবরাহে টিকে থাকার লক্ষ্যে একটি জরুরি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। মূল লক্ষ্য, মস্কো কখনো গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিলে যেন টিকে থাকা যায়। ইউরোপের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আসন্ন শীতকাল। শীতে নিজের নাগরিকদের চাহিদা মেটাতে গ্যাস সরবরাহ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছে তারা। এ ক্ষেত্রে এমনকি রেশনিংয়ের কথাও ভাবা হচ্ছে। 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপের মূল ভয় এখন শীত নিয়ে। তাদের আশঙ্কা, আসন্ন শীতে রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে। এমনটি হলে জার্মান অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়বে, যা দ্রব্যমূল্যকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যাবে। গ্যাস সংকটের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে নেদারল্যান্ডসে। দেশটিতে গ্যাসের দাম বর্তমানে ২০৫ ইউরোতে গিয়ে ঠেকেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১২ শতাংশ বেশি। 

জার্মানি বিশেষ সতর্কতা হিসেবে শীতের আগেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ফেরার চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার। এদিকে জার্মানির বৃহত্তম গ্যাস আমদানিকারক কোম্পানি ইউনিপার বলেছে, তারা গ্যাজপ্রম থেকে প্রতিশ্রুত গ্যাসের এক-পঞ্চমাংশ পাচ্ছে। এ জন্য তারা রাশিয়ার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে। 

এ বিষয়ে রয়্যাল ব্যাংক অব কানাডার বিশ্লেষক রয়টার্সকে বলেন, রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ মূল সক্ষমতার ২০ থেকে ৫০ শতাংশে নেমে এলেও শীতকাল কাটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনা সহায়ক হতে পারে। একই সঙ্গে রুশ গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে রাজনীতিকদের যে আত্মতুষ্টি, সে বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি। 

রাশিয়া সরবরাহ কমার পেছনে প্রযুক্তিগত কারণের কথা বললেও ইউরোপ একে দেখছে অন্যভাবে। তারা মনে করছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাশিয়া জ্বালানিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ইউক্রেন ইস্যুতে তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে এটি তাদের সুচিন্তিত পদক্ষেপ বলেও মনে করছে তারা। 

এ বিষয়ে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রয়টার্সকে বলেন, সংকটের মধ্যেও ইউরোপে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ করে আসছিল গ্যাজপ্রম। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে সরঞ্জাম-সংশ্লিষ্ট কিছু জটিলতা তৈরি হওয়ায় এখন এর চেয়ে বেশি আর রপ্তানি করতে পারছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ১৭ শিশুকে জিম্মি করা যুবক নিহত, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রোহিত আর্য (বাঁয়ে), মুম্বাইয়ের পাওয়াই এলাকার এই আবাসিক ভবনে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
রোহিত আর্য (বাঁয়ে), মুম্বাইয়ের পাওয়াই এলাকার এই আবাসিক ভবনে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের মুম্বাইয়ে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা এক যুবক পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের পাওয়াই এলাকার একটি আবাসিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিত আর্য নামের ওই যুবক একটি ‘অডিশনের’ কথা বলে ১৭ শিশুকে সেখানে নিয়ে আসেন। মুম্বাই পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী এই শিশুদের প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। তবে তাদের সবাইকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, একটি সরকারি প্রকল্পের বকেয়া দুই কোটি টাকা না পেয়ে এমন ভয়ানক ঘটনা ঘটিয়েছেন রোহিত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, জিম্মি শিশুদের উদ্ধারে পুলিশের অভিযানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের উদ্ধার অভিযানের সময় রোহিত এয়ারগান ব্যবহার করে পুলিশের দিকে গুলি চালান। এর প্রতিক্রিয়ায় পুলিশও একটি গুলি চালায়। গুলির আঘাতে আহত অবস্থায় রোহিতকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, পাওয়াই থানা বেলা ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ একটি জরুরি ফোন কল পায় এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর রোহিতের সঙ্গে জিম্মি উদ্ধারে আলোচনা শুরু হলে তিনি শিশুদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করতে থাকেন। একসময় রোহিত শিশুদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়, তখন পুলিশ ওই স্টুডিওর বাথরুম দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং নিরাপদে ১৭ শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এদিকে, এ ঘটনার আগে রোহিত একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, তিনি ‘আত্মহত্যা করার বদলে’ এই পথ বেছে নিয়েছেন। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি রোহিত আর্য। আত্মহত্যা না করে আমি একটি পরিকল্পনা করেছি এবং এখানে কিছু শিশুকে জিম্মি করে রেখেছি।’ এরপর তিনি তাঁর দাবিগুলোকে ‘সাধারণ দাবি, নৈতিক দাবি, নীতিগত দাবি এবং কয়েকটি প্রশ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের সামান্যতম ভুল পদক্ষেপ আমাকে ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে।’ এ সময় তিনি ওই স্টুডিওতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তিনি আরও বলেন, তিনি টাকাপয়সা চান না এবং তিনি ‘সন্ত্রাসী নন’।

ভিডিওতে রোহিত বলেন, ‘আমি কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চাই। আর সেই কারণেই আমি এই শিশুদের জিম্মি করেছি। যদি আমি বেঁচে থাকি, আমি এটা করব; যদি মারা যাই, অন্য কেউ এটা করবে, কিন্তু এটা অবশ্যই ঘটবে।’

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এয়ারগান এবং কিছু রাসায়নিকের পাত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ ধারণা, রোহিত এসব দেখিয়েই প্রথমে তাদের ভয় দেখান। জানা গেছে, জিম্মি শিশুরা একটি ওয়েব সিরিজের অডিশনের জন্য পাওয়াইয়ের ওই আবাসিক ভবনের নিচতলায় অবস্থিত আরএ স্টুডিওতে এসেছিল।

এর আগে রোহিত অভিযোগ করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ‘মাই স্কুল, বিউটিফুল স্কুল’ কর্মসূচির অধীনে ‘পিএলসি স্যানিটেশন মনিটর প্রজেক্ট’ নামে একটি পরিচ্ছন্নতা প্রচারণার জন্য শিক্ষা বিভাগ তাঁর বকেয়া অর্থ পরিশোধ করেনি। রোহিত দাবি করেন, তাঁর ‘লেটস চেঞ্জ’ (Lets Change) প্রচারণার অংশ হিসেবে ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল স্কুলছাত্রদের ‘পরিচ্ছন্নতার দূত’ হিসেবে তৈরি করা।

তাঁর এই কাজের জন্য স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ দুই কোটি রুপি অনুমোদন করেছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে তাঁকে কোনো অর্থ দেওয়া হয়নি। ওই বছর রোহিত দুবার অনশনও করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকারের ব্যক্তিগত আশ্বাস সত্ত্বেও কর্মকর্তারা তাঁকে কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়, রোহিত আর্য ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অনেকেই ধারণা করছেন, সরকারি প্রকল্পের বকেয়া দুই কোটি টাকা না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে রোহিত এমন পদক্ষেপ নেন। তবে পুরো ঘটনা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

করুণ পরিণতির মুখোমুখি হচ্ছে যুদ্ধে অস্বীকৃতি জানানো রুশ সেনারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলে দুই রুশ সেনা। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলে দুই রুশ সেনা। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

ইউক্রেন যুদ্ধে লড়তে অস্বীকার করা রুশ সেনাদের নিজ কমান্ডাররা নির্যাতন ও হত্যা করছেন—এমন ভয়াবহ অভিযোগ উঠে এসেছে স্বাধীন রুশ সংবাদমাধ্যম ভার্স্তকা-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনাবাহিনীর ভেতরে এখন এমন এক সহিংস সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে অবাধ্যতা মানে মৃত্যুদণ্ড বা আত্মঘাতী যুদ্ধে পাঠানো।

তদন্তে ১০১ জন রুশ কমান্ডারের নাম উঠে এসেছে, যারা নিজেদের সেনাদের হত্যা, নির্যাতন বা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। ভার্স্তকা অন্তত ১৫০টি মৃত্যুর ঘটনা যাচাই করতে পেরেছে, যদিও তাদের ধারণা প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। প্রমাণ হিসেবে তারা ব্যবহার করেছে ভিডিও ফুটেজ, সেনাদের পরিবার ও সহযোদ্ধাদের সাক্ষ্য এবং সরকারি অভিযোগের নথি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুদ্ধ থেকে ফিরতে চাওয়া বা আদেশ অমান্যকারী সেনাদের বিশেষভাবে নিয়োগ করা ‘এক্সিকিউশন শুটার’ দিয়ে গুলি করে হত্যা করাতেন অনেক কমান্ডার। পরে নিহতদের দেহ নদীতে বা অগভীর গর্তে ফেলে দেওয়া হতো, আর রেকর্ডে দেখানো হতো—যুদ্ধে নিহত।

আরও ভয়ংকর তথ্য হলো—যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটে আসছে এমন সেনাদের ওপর ড্রোন থেকে গ্রেনেড ফেলে হত্যা করা হয়েছে, যেন তা শত্রুপক্ষের হামলা মনে হয়।

ভার্স্তকা আরও জানায়, অনেক সেনাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। লোহার খাঁচায় ফেলে রাখা, পানি ঢেলে মারধর, কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে হত্যা করা—এই সব ঘটনা খুবই সাধারণ চিত্র। কিছু ক্ষেত্রে সেনাদের বাধ্য করা হতো একে অপরের সঙ্গে প্রাণঘাতী লড়াইয়ে, অনেকটা ‘গ্ল্যাডিয়েটর স্টাইলে’।

ইউক্রেনীয় পর্যবেক্ষকেরা গত মে মাসে এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায়—দুই অর্ধনগ্ন রুশ সৈন্য একটি গর্তের মধ্যে একে অপরকে মারছে, আর পাশে এক কর্মকর্তা চিৎকার করছেন, ‘যে মেরে ফেলতে পারবে, সে মুক্তি পাবে।’

প্রতিবেদনটিতে আরেকটি উদ্বেগজনক দিক উন্মোচিত হয়েছে—কমান্ডারদের আর্থিক চাঁদাবাজি। অনেক সেনাকে জানানো হয়, বিপজ্জনক ও আত্মঘাতী মিশনে যাওয়ার হাত বাঁচতে হলে ঘুষ দিতে হবে। যারা ঘুষ দিতে পারেনি, তাদের করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।

ভার্স্তকা-এর তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২৯ হাজার সেনা ও তাদের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছে। এর মধ্যে ১২ হাজার অভিযোগই নিজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

এদিকে রাশিয়ার একটি সামরিক প্রসিকিউটর সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা কমান্ডারদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্তে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে, অভিযোগ যতই গুরুতর হোক, তাদের দায়মুক্তিই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে স্ত্রী খ্রিষ্টান হবে—আশা জে ডি ভ্যান্সের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৩৯
প্রার্থনারত জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স। ছবি: সংগৃহীত
প্রার্থনারত জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, তিনি চান একদিন তাঁর হিন্দু পরিবারে বেড়ে ওঠা স্ত্রী উষা ভ্যান্স খ্রিষ্টধর্মে অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মান্তরিত হবেন। বুধবার (২৯ অক্টোবর) মিসিসিপিতে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

ভ্যান্স বলেন, ‘বেশির ভাগ রোববারেই উষা আমার সঙ্গে গির্জায় যায়। আমি তাকে আগেও বলেছি, আজও বলছি—আমি সত্যিই চাই, একদিন সে গির্জায় আমার মতোই খ্রিষ্টের বাণীতে অনুপ্রাণিত হোক। কারণ আমি খ্রিষ্টীয় সুসমাচারে বিশ্বাস করি এবং চাই, একদিন আমার স্ত্রীও সেই বিশ্বাস উপলব্ধি করুক।’

তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, তাঁর স্ত্রীর ধর্ম তাঁর সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে না। ভ্যান্সের ভাষায়, ‘যদি সে খ্রিষ্টধর্মে না আসে, তাতেও সমস্যা নেই। ঈশ্বর সবাইকে স্বাধীন ইচ্ছা দিয়েছেন। এই বিষয়গুলো আপনি পরিবার ও ভালোবাসার মানুষদের সঙ্গে মেলামেশার মধ্য দিয়েই সমাধান করেন।’

২০১৯ সালে জেডি ভ্যান্স খ্রিষ্টধর্মে (ক্যাথলিক) ধর্মান্তরিত হন। তিনি জানান, স্ত্রী উষার সঙ্গে পরিচয়ের সময় তিনি ছিলেন নাস্তিক বা সংশয়বাদী। বর্তমানে তাঁদের সন্তানেরা খ্রিষ্টীয় শিক্ষায় বেড়ে উঠছে এবং একটি খ্রিষ্টান স্কুলে পড়ছে।

ধর্ম ও রাষ্ট্রের বিচ্ছিন্নতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ভ্যান্স বলেন, ‘আমি মনে করি, খ্রিষ্টীয় মূল্যবোধই আমেরিকার ভিত্তি। কেউ যদি বলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, তবে বুঝতে হবে তারা কিছু বিক্রি করতে এসেছে। আমি অন্তত সৎভাবে বলি—খ্রিষ্টীয় ভিত্তি এই দেশের জন্য কল্যাণকর।’

ভ্যান্সের এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অভিবাসীদের (বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসাধারীদের) বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মনোভাব বেড়েছে। সম্প্রতি দীপাবলি উপলক্ষে মার্কিন রাজনীতিক তুলসি গ্যাবার্ড ও এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল শুভেচ্ছা জানালে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই তাদের উদ্দেশে ‘ইন্ডিয়ায় চলে যাও’ বা ‘যিশুর পথে ফিরে এসো’ ধরনের মন্তব্য করেছেন।

এদিকে ধর্ম, পরিবার ও ব্যক্তিগত বিশ্বাসের সমন্বয়ে ভ্যান্সের দৃষ্টিভঙ্গি রক্ষণশীল শ্রোতাদের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে আসছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইরানের চাবাহার বন্দরে ভারতকে ৬ মাসের জন্য ছাড় দিল যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইরানের চাবাহার বন্দর। ছবি: এএফপি
ইরানের চাবাহার বন্দর। ছবি: এএফপি

ভারত সরকার জানিয়েছে, ইরানের চাবাহার বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ভারতের ক্ষেত্রে আগামী ছয় মাসের জন্য প্রযোজ্য হবে না। এই ছাড় কার্যকর হবে ২৯ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই তথ্য জানিয়েছেন।

চাবাহার বন্দর ইরানের সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত এবং এটি ভারত মহাসাগরে প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত। একই সঙ্গে আফগানিস্তানের জনগণের জন্য ভারতের মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও এই বন্দরটির কৌশলগত গুরুত্ব অনেক।

এনডিটিভি জানিয়েছে, গত বছর ভারত ও ইরানের মধ্যে ১০ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) চাবাহার বন্দরে ৩৭০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চাবাহার বন্দর সহ ইরানের ওপর অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মূলত দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে চাপে রাখার জন্য। তবে এই নিষেধাজ্ঞায় অতীতের মতো এবারও ভারতের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে। এর আগে ২০১৮ সালেও ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের জন্য একই ধরনের ছাড় দিয়েছিল, যাতে ভারতীয় সংস্থাগুলো চাবাহারে উন্নয়নকাজ চালিয়ে যেতে পারে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান।’ এদিকে ভারত সরকার সম্প্রতি রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়েও বিশ্লেষণ করছে। কারণ দেশটি রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল ক্রয় করে। এই তেল কেনার জের ধরেই ভারতীয় পণ্যে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, জ্বালানির ক্ষেত্রে ১৪০ কোটি মানুষের প্রয়োজন মেটাতে হয় তাদের। এই কারণেই বিভিন্ন উৎস থেকে সাশ্রয়ী জ্বালানি সংগ্রহে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।

রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে পশ্চিমাদের সমালোচনার জবাবে ইতিপূর্বে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘ভারত এক মাসে রাশিয়া থেকে যত তেল কেনে, ইউরোপ তা এক বিকেলেই কিনে ফেলে।’

চাবাহার বন্দরের শহিদ বেহেশতি টার্মিনাল বর্তমানে ভারত পরিচালনা করছে। প্রতিবেশী আফগানিস্তানের জন্যও এই বন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি দেশটিকে পাকিস্তান ছাড়াই সরাসরি আরব সাগর এবং বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত করেছে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রায় কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘ভারত কোনো চুক্তি তাড়াহুড়ো বা চাপের মুখে করবে না।’ তবে শিগগিরই উভয় দেশ ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত