Ajker Patrika

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা এবার শুরু হতে পারে: ট্রাম্প

পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে পৃথক ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে পৃথক ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানালেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা শুরু করতে তাঁরা সম্মত হয়েছেন। তাঁদের ফোনালাপ ‘দীর্ঘ ও অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ ছিল।

এই ফোনালাপ প্রসঙ্গে গতকাল বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘অবিলম্বে আমাদের নিজ নিজ দলকে আলোচনার জন্য নিয়োগ করতে সম্মত হয়েছি। তাঁরা একে অপরকে তাঁদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, পুতিন ট্রাম্পের ধারণাকে সমর্থন করেছেন। এখন একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে। দুই নেতা প্রায় দেড় ঘণ্টা ফোনালাপ করেছিলেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মস্কো সফরের আমন্ত্রণ জানান।

জেলেনস্কি বারবার বলেছেন, ‘ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেন নিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না।’ তবে ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপটি তাঁর অনুপস্থিতিতেই হয়েছে।

পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ সারেন ট্রাম্প। জেলেনস্কি জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ‘দীর্ঘস্থায়ী ও নির্ভরযোগ্য শান্তি’ নিয়ে কথা বলেছেন।

জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কিয়েভ সফররত মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানান তিনি।

জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের চেয়ে বেশি শান্তির প্রত্যাশা আর কারও নেই। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে রাশিয়ার আগ্রাসন থামানো এবং একটি স্থায়ী, নির্ভরযোগ্য শান্তিপূর্ণ পরিস্থিত নিশ্চিত করার পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করছি।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে আরও যোগাযোগ বজায় রাখার এবং আসন্ন বৈঠকের পরিকল্পনা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।’

জেলেনস্কি আরও জানান, তিনি শুক্রবার মিউনিখে ইউক্রেন সম্পর্কিত এক প্রতিরক্ষা সম্মেলনে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

যুদ্ধরত দুই পক্ষের সঙ্গে ফোনালাপের মাঝেই ট্রাম্প ও তাঁর প্রতিরক্ষা সচিব বলেন, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের সম্ভাবনা কম, যা কিয়েভের জন্য এক গভীর হতাশার বিষয় হতে পারে।

ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘এখন এই হাস্যকর যুদ্ধ বন্ধ করার সময় এসেছে। ব্যাপক অপ্রয়োজনীয় মৃত্যু ও ধ্বংস সাধিত হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের জনগণের জন্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ থাকুক!’

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের ২০১৪-পূর্ববর্তী সীমান্তে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।

ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, এ বিষয়ে তিনি তাঁর প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথের সঙ্গে একমত। তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি সম্ভবত সত্য।’ এর আগে গতকাল এক ন্যাটো সম্মেলনে হেগসেথ বলেছিলেন, ইউক্রেনের সামরিক জোটে যোগদানের সম্ভাবনা নেই।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব হেগসেথের বক্তব্য কিয়েভের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। নতুন মার্কিন প্রশাসন পূর্ববর্তী প্রশাসনের তুলনায় ইউক্রেনের প্রতি কম সহানুভূতিশীল, তবে হেগসেথের প্রতিটি মন্তব্য সম্ভবত মস্কোকে সন্তুষ্ট করেছে। ন্যাটোর সদস্যপদের অস্বীকৃতি, ইউক্রেনের বিজয়ের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় এবং ভবিষ্যতে জমে থাকা ফ্রন্ট লাইনের নিরাপত্তা নিয়ে অস্পষ্টতা—এসব রাশিয়ার ১১ বছরের আগ্রাসনের সাফল্য এনে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত