Ajker Patrika

ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ বললেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী 

ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ বললেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছোট দেশগুলোর প্রতি সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব প্রদর্শন করে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাভিয়েস্কি। স্থানীয় সময় আজ বুধবার জার্মান সংবাদমাধ্যম ওয়েল্ট নিউজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি এই দাবি করেন। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিবন্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নে গৃহীত সব সিদ্ধান্ত আরও বেশি ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা যে রাজনৈতিক অবস্থান দেখছি তাতে স্পষ্ট যে, এখানে ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো দেশকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।’ 

মাতেউস মোরাভিয়েস্কি আরও লিখেন, ‘তার মানে হলো—আমরা এখানে এক ধরনের আনুষ্ঠানিক গণতন্ত্র যা প্রকৃতপক্ষে একধরনের অভিজাততন্ত্র চর্চা করছি। যেখানে শক্তিশালীরাই ক্ষমতা দখল করে রাখে।’ তিনি আরও বলেন, তাই আমাদের রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে। 

পোল্যান্ডে ক্ষমতাসীন ন্যাশনালিস্ট ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (পিআইএস) সরকার আইনের শাসনের ইস্যুতে ব্রাসেলসের সঙ্গে একাধিকবার বাদানুবাদে লিপ্ত হয়েছে। দলটি বারবার অভিযোগ করে বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যর্থতার দিকগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিশালী সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে সকলের মঙ্গল এবং ভারসাম্য বজায় রাখাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূলনীতি হবে।

এদিকে, পোল্যান্ডের ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদেরা বলেছেন, তাঁরা কোভিড মহামারি পুনরুদ্ধারের তহবিলে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত অংশ না পেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পাল্টা জবাব দেবেন। তবে, ব্রাসেলস ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তাঁরা পোল্যান্ডের সর্বশেষ বিচার বিভাগীয় সংস্কারে সন্তুষ্ট নয়। ফলে, শিগগিরই ওয়ারশ এই তহবিল পাবে বলে মনে হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ২৮
দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে ক্লাউড সিডিংয়ের উদ্যোগ নিলেও ব্যর্থ হয়েছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে ক্লাউড সিডিংয়ের উদ্যোগ নিলেও ব্যর্থ হয়েছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কেন্দ্রীয় রাজধানী দিল্লিতে বায়ুদূষণ কমাতে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এই উদ্যোগে কাজ করছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) কানপুর। তবে উদ্যোগটি ভেস্তে গেছে। কোনো বৃষ্টি হয়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

খবরে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার দিল্লির আকাশে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঘটানোর উদ্দেশ্যে ক্লাউড সিডিংয়ের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা ‘পুরোপুরি সফল হয়নি’। কারণ, সেদিন মেঘে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল খুবই কম। ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে আইআইটি কানপুরের পরিচালক মণীন্দ্র আগরওয়াল বলেন, এই প্রক্রিয়া কোনো জাদুকরি সমাধান নয়, বরং দূষণ মোকাবিলায় এক ধরনের জরুরি বা অস্থায়ী উদ্যোগ।

এনডিটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আগরওয়াল বলেন, দিল্লি সরকারের সহযোগিতায় তাঁদের প্রতিষ্ঠান এই পরীক্ষা চালাচ্ছে। বুধবার আবারও চেষ্টা করা হবে এবং তখন ফলাফল আরও ভালো হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তিনি জানান, মেঘে বৃষ্টি ঘটাতে যে মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়েছে, তার ২০ শতাংশ সিলভার আয়োডাইড, বাকি অংশে রয়েছে রক সল্ট ও সাধারণ লবণের সংমিশ্রণ। মঙ্গলবার মোট ১৪টি ফ্লেয়ার ছোড়া হয়েছে; কিন্তু বৃষ্টি হয়নি।

আগরওয়াল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি হয়নি। সে অর্থে এটি সম্পূর্ণ সফল বলা যাবে না। আজকের মেঘে আর্দ্রতা মাত্র ১৫-২০ শতাংশের মধ্যে ছিল। এত কম আর্দ্রতায় বৃষ্টি ঘটানোর সম্ভাবনা স্বাভাবিকভাবেই খুব কম। তবে এই পরীক্ষা আমাদের দলকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে যে আমরা এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারি।’

আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আজকের বৃষ্টি নিয়ে পূর্বাভাসগুলো পরস্পরবিরোধী ছিল। কেউ বলেছেন বৃষ্টি হবে, কেউ বলেছেন হবে না। আমাদের দল যে এলাকায় ক্লাউড সিডিংয়ের কাজ করেছে, সেখানে মেঘের আর্দ্রতা ছিল খুব কম। তাই আজ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললে চলে।’ তিনি জানিয়েছেন, বুধবার আরও দুটি ফ্লাইট থেকে একইভাবে পরীক্ষা চালানো হবে এবং মেঘের উপস্থিতি থাকলে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

দিল্লির স্থায়ী দূষণ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান কি এই ক্লাউড সিডিং হতে পারে—এ প্রশ্নের জবাবে আইআইটি পরিচালক স্পষ্টভাবে বলেন, ‘না।’ তিনি বলেন, ‘এটি এক ধরনের জরুরি সমাধান। অর্থাৎ যখন দূষণের মাত্রা ভয়াবহ রকম বেড়ে যায়, তখন সাময়িকভাবে দূষণ কমানোর জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে স্থায়ী সমাধান হলো দূষণের উৎস নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন এক সময়ের দিকে যাওয়া, যখন ক্লাউড সিডিংয়ের প্রয়োজনই থাকবে না, কারণ বাতাস তখন পরিষ্কার থাকবে। কিন্তু তত দিন পর্যন্ত এটি একটি সম্ভাব্য হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগতে পারে।’

তিনি আরও জানান, এই প্রক্রিয়ার খরচ বেশি হচ্ছে, কারণ ফ্লাইটগুলো চালানো হচ্ছে উত্তর প্রদেশ থেকে। তবে ভবিষ্যতে এই খরচ কমানো সম্ভব। তাঁর ভাষায়, ‘যে কোনো প্রচেষ্টা যা দূষণ কমাতে সাহায্য করে, তা সবারই উপকারে আসে। এটি স্থায়ী সমাধান না হলেও কয়েক দিন পর যদি বৃষ্টি হয়, অন্তত কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে।’

অন্যদিকে দিল্লি সরকার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্লাউড সিডিংয়ের পরীক্ষার ফলে যেখানে প্রক্রিয়াটি চালানো হয়েছে, সেখানে বায়ুর দূষণমাত্রায় কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নয়ডায় বিকেল ৪টার দিকে ০.১ মিলিমিটার এবং গ্রেটার নয়ডায় একই সময়ে তার দ্বিগুণ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ‘শক্তিশালী’ হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করল ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ২২
গাজায় ফের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় ফের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক চুক্তি, মানবিক আহ্বান কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না ইসরায়েল। দেশটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেও একের পর এক যুদ্ধাপরাধ করে যাচ্ছে। সর্বশেষ স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজায় শক্তিশালী হামলা চালিয়ে ২০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

খবরে বলা হয়েছে, দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। দক্ষিণ রাফাহ সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অঞ্চলটিতে ‘শক্তিশালী হামলার’ নির্দেশ দেন। এরপরই মঙ্গলবারের এসব হামলা শুরু হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় সহিংসতা ছিল এটি। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-ক্বাসাম ব্রিগেড ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জানিয়েছে, তারা এক নিখোঁজ বন্দীর মরদেহ হস্তান্তরের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করেছে।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের এমন হামলা উদ্ধারকাজ ব্যাহত করবে। এতে গাজায় থাকা অবশিষ্ট ১৩ ইসরায়েলি বন্দীর মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব ঘটবে।

ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স অবশ্য বলেছেন, হামলা ও পারস্পরিক অভিযোগ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল আছে। তিনি বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে ছোটখাটো সংঘর্ষ হবে না।’ ক্যাপিটল হিলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, গাজার ভেতর থেকে কোনো পক্ষ এক ইসরায়েলি সেনার ওপর হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল প্রতিক্রিয়া জানাবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রেসিডেন্টের শান্তি উদ্যোগ অটুট থাকবে।’

হামাস রাফাহর ওই হামলায় নিজেদের কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। গাজার চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, মঙ্গলবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে উত্তর গাজা সিটির সাবরা এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে চারজন এবং দক্ষিণের খান ইউনিসে আরও পাঁচজন রয়েছেন। সূত্রগুলো জানায়, অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ গাজা সিটি থেকে জানিয়েছেন, একটি ক্ষেপণাস্ত্র আল-শিফা হাসপাতালের পেছনে পড়েছে এবং আকাশে ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিস্ফোরণটি ছিল ভয়াবহ। আমরা ঘটনাস্থল থেকে ২০ মিনিট দূরে, তবু শব্দ স্পষ্ট শোনা গেছে। হাসপাতালের ভেতরে রোগী ও চিকিৎসক-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’

গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্মী ইব্রাহিম আবু রিশ বলেন, ‘এটা যুদ্ধবিরতির সরাসরি লঙ্ঘন। আমাদের কাছে হতাহত আছে, আমাদের দল ধসে পড়া ভবনে মানুষ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।’ হামলার পর নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে গাজায় ‘শক্তিশালী হামলা চালানোর’ নির্দেশ দিয়েছেন।

বিবৃতিতে নির্দিষ্ট কারণ জানানো না হলেও, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ পরে এক বিবৃতিতে হামাসকে রাফাহর ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেন, ‘হামাসকে এই হামলার জন্য বড় মূল্য দিতে হবে।’ এপির খবরে দুই মার্কিন সরকারি সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, গাজায় সর্বশেষ হামলা চালানোর আগে ইসরায়েল ওয়াশিংটনকে অবহিত করেছিল।

গাজার সরকারি জনসংযোগ কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ইসরায়েল এখনো গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর বাধা দিচ্ছে। হামাস ইসরায়েলের এসব হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

সংগঠনটি টেলিগ্রামে বলেছে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তত্ত্বাবধানে শারম আল শেখে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রকাশ্য লঙ্ঘন।’ তারা বলেছে, চুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি অটুট। আল জাজিরাকে গাজার হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল-হিন্দি বলেছেন, ‘ইসরায়েল বুঝতে হবে, আমরা চুক্তিতে অটল। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ বন্ধ করতে হবে।’ তিনি জানান, ইসরায়েলি বন্দীদের মরদেহ উদ্ধারে তাদের ‘বড় ধরনের বাধার’ মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মরদেহ উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। কোনো বিলম্বের দায় সম্পূর্ণ ইসরায়েলি দখলদারদেরই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেকর্ড ২৭১ দিন পর অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনি অপসারণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
টিম অ্যান্ড্রুজ (গাড়ির ভেতরে)। ছবি: সিএনএন
টিম অ্যান্ড্রুজ (গাড়ির ভেতরে)। ছবি: সিএনএন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা টিম অ্যান্ড্রুজ। জেনেটিকভাবে পরিবর্তিত শূকরের কিডনি নিয়ে তিনি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ (রেকর্ড) ২৭১ দিন বেঁচে ছিলেন। অবশেষে সেই কিডনি অপসারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সিএনএন জানিয়েছে, ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে অ্যান্ড্রুজের শরীর থেকে শূকরের কিডনিটি সরিয়ে দেন। কারণ ওই কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছিল। কিডনি অপসারণের পর এখন আবার ডায়ালাইসিসে ফিরছেন অ্যান্ড্রুজ।

৬৭ বছর বয়সী টিম অ্যান্ড্রুজ যুক্তরাষ্ট্রে এমন চতুর্থ জীবিত ব্যক্তি, যার শরীরে শূকরের জিন-সম্পাদিত কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই বিশেষ ধরনের জেনেটিক পরিবর্তন করা হয় যেন মানবদেহ সেই অঙ্গকে প্রত্যাখ্যান না করে। ১৯৯০-এর দশক থেকে ডায়াবেটিসে ভোগা অ্যান্ড্রুজ তিন বছর আগে জানতে পারেন তাঁর কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। ডায়ালাইসিস তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে তিন দিনের প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা ধরে মেশিনে সংযুক্ত থাকার ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ায় তাঁর জীবন একঘেয়ে হয়ে উঠেছিল।

ঝুঁকি জেনেও তিনি ‘জেনোট্রান্সপ্লান্ট’ অর্থাৎ প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁর কথায়, ‘যদি এতে আমার জীবন বদলায় এবং অন্যদেরও উপকার হয়, তবে ঝুঁকি নেওয়াটা সার্থক।’

সিএনএনের ‘অ্যানিমেল ফার্মা’ ডকুমেন্টারিতে তিনি জানান, শূকরের কিডনি তাঁকে নতুন করে প্রাণশক্তি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আবার বেঁচে উঠেছিলাম। দীর্ঘদিন পর মনে হয়েছিল আমি সত্যিই জীবিত।’

কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তিনি আবার রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, এমনকি কুকুর কাপকেককে নিয়ে হাঁটতে বের হওয়াও শুরু করেছিলেন। গত জুনে তিনি ফেনওয়ে পার্কে প্রিয় বোস্টন রেড সক্স দলের খেলা দেখা শুরু করার আগে প্রথম বল ছোড়ার সম্মান পান।

শরীরে শূকরের কিডনির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অ্যান্ড্রুজ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই যাত্রা ছিল কষ্টে ভরা, অজানা সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে।’ তবে তিনি গর্বের সঙ্গে যোগ করেন, ‘এই ৯ মাসে আমরা অনেক কিছু শিখেছি ও আবিষ্কার করেছি।’ তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সেই শূকরটির প্রতিও, যার নাম ছিল ‘উইলমা’। তিনি লিখেছেন—‘সে (উইলমা) আমার নায়িকা, আমার জীবনের অংশ হয়ে থাকবে চিরকাল।’

বর্তমানে অ্যান্ড্রুজ আবার ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন এবং মানব কিডনির অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জলবায়ু নিয়ে হঠাৎ উল্টো সুর বিল গেটসের, টাকা ঢালবেন অন্য ইস্যুতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিল গেটস: সিএনএন
বিল গেটস: সিএনএন

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই প্রচারণার বিপরীতে এবার এক ভিন্নমুখী অবস্থান নিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও দাতব্যকর্মী বিল গেটস। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন—মানবতার ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন সময় এসেছে সম্পদের বড় অংশ রোগ ও ক্ষুধা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করার।

গেটস যুক্তি দিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মানব সভ্যতাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে—এ ধারণা অতিরঞ্জিত। বরং অতীতের বহু প্রচেষ্টা কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাস্তব অগ্রগতি এনে দিয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, জলবায়ু ইস্যুতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে কিছু ব্যয়সাপেক্ষ ও সন্দেহজনক প্রকল্পে, যার ফলাফল খুব কমই দেখা গেছে।

তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই চলতে থাকলেও এখন সবচেয়ে জরুরি হলো ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও প্রতিরোধযোগ্য রোগের মোকাবিলা করা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএইড-এর বাজেট কমিয়ে দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য ও রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে বড় ধাক্কা লেগেছে।

গেটস লিখেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, রোগ ও দারিদ্র্য—সবই বড় সমস্যা। কিন্তু এগুলোর মোকাবিলা আমাদের করা উচিত তাদের প্রকৃত কষ্টের অনুপাতে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব গুরুতর হবে, বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের জন্য। তারপরও এটি মানবতার বিলুপ্তি ঘটাবে না। এখন আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের জীবনমান উন্নত করা এবং কষ্ট লাঘব করা।’

গেটসের এই বক্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জলবায়ু বিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলন কপ-৩০।

গেটস অবশ্য দাবি করেছেন, এটি তাঁর আগের অবস্থানের পরিবর্তন নয়। তিনি শূন্য-কার্বন নিঃসরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জলবায়ু খাতে বিনিয়োগ কমানো বিরাট হতাশার হলেও এটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’

তবে অনেক সমালোচক গেটসের এই অবস্থানকে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি বলে আখ্যা দিয়েছেন। মার্কিন বিজ্ঞানী মাইকেল ম্যান মন্তব্য করেছেন, ‘বিল গেটস বিষয়টি উল্টোভাবে দেখছেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু সংকটই এখন সবচেয়ে বড় হুমকি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত