Ajker Patrika

আইসল্যান্ডের শহরে ঢুকে পড়েছে আগ্নেয়গিরির লাভা, পুড়ছে ঘরবাড়ি

আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১১: ৩৬
আইসল্যান্ডের শহরে ঢুকে পড়েছে আগ্নেয়গিরির লাভা, পুড়ছে ঘরবাড়ি

আইসল্যান্ডের রেইকজেনেস অঞ্চলে গত রোববার ভোররাতে শুরু হয়েছে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। কাছাকাছি অবস্থিত দুটি আগ্নেয়গিরিতে সৃষ্টি হয়েছে ফাটল। এই ফাটল থেকে বেরিয়ে আসা লাভা ঢুকে পড়েছে মাছ ধরার শহর গ্রিনদাভিকে। শহরের চার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে খবরটি বলা হয়েছে।

গ্রিনদাভিকের বিভিন্ন অলিগলিতে লাভা ছড়িয়ে পড়ার পর কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে গেছে। বিবিসির প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লাভার আগুনে একটি বাড়ি পুড়ছে। তবে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

রোববার সকালে শহরের এক কিলোমিটার দূরে সৃষ্টি হয়েছে প্রথম ফাটল। সেই ফাটলের লাভা অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এরপর সন্ধ্যার দিকে দ্বিতীয় ফাটলটির সৃষ্টি হয়। শহর থেকে মাত্র ৩২০ ফুট দূরের এই ফাটল থেকেই শহরে লাভা ঢুকেছে।

গত ডিসেম্বরে রেইকজেনেসে অগ্ন্যুৎপাতের পর সুরক্ষা বাঁধ নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু এই বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে বলে জানায় আইসল্যান্ডের আবহাওয়া অফিস (আইএমও)। আর এতেই লাভার স্রোত ঢুকেছে শহরে আর দুই ভাগ হয়ে গেছে গ্রিনদাভিকের প্রধান সড়ক।

রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই পরিস্থিতিতে সবাইকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আইসল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট গুডনি জোহানেসন। যাঁরা তাঁদের বাড়িতে থাকতে পারছেন না তাঁদের প্রতি সমবেদনা পোষণ করার আহ্বান জানান তিনি। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে।

এই অগ্নুৎপাতকে সম্ভাব্য সবচেয়ে বাজে অবস্থা বলে বর্ণনা করেছেন সংশ্লিষ্ট এক বিশেষজ্ঞ। বিজ্ঞানবিষয়ক সাংবাদিক এবং আগ্নেয়গিরিবিদ রবিন অ্যান্ড্রুজ বলেছেন যে চলমান অগ্ন্যুৎপাতে শহরে লাভার প্রবেশ অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি ঘটনা। বিবিসিকে তিনি বলেন, দুটি ফাটল থেকে লাভা বর্ষণের গতি মন্থর হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ক্ষতির সময়কাল এবং তীব্রতার পরিপ্রেক্ষিতে এই মুহূর্তে লাভার বিশদ বর্ণনা সম্ভব নয়।

যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য এই লাভা উদ্‌গিরণকে বড় সমস্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন রবিন অ্যানড্রুজ। কারণ, অগ্ন্যুৎপাতের সময় সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো গ্যাস নির্গত হয়, যা ত্বক, চোখ, নাক এবং গলার জন্য ক্ষতিকর।

সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক স্তর ও জরুরি ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে আইসল্যান্ডে। মানুষ, সম্প্রদায়, সম্পত্তি বা পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে এই সতর্কতা জারি করা হয়।

২০২১ সাল থেকে রেইকজেনেসে এটি পঞ্চম অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা। পৃথিবীর বৃহত্তম দুটি টেকটোনিক প্লেট ইউরেশিয়ান ও নর্থ আমেরিকার মাঝখানে মিড-আটলান্টিক রিজে অবস্থিত দেশ আইসল্যান্ড। এখানেই ৩৩টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অবস্থান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত