Ajker Patrika

জেলেনস্কিকে সরিয়ে ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ বসানোর আহ্বান পুতিনের, ইউক্রেনীয় সেনাদের ‘নিকেশের’ ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৬: ৫৪
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিলেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে একটি ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর সেনাবাহিনী ইউক্রেনীয় সেনাদের ‘নিকেশ’ করে দেবে বলেও কঠোর মন্তব্য করেছেন।

রুশ সংবাদমাধ্যম মস্কো টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যকার সম্পর্ক এবং কিয়েভের প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে তাঁর হুমকির ফলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে পুতিনের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে।

ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কিকে কার্যত ‘উৎখাত’ করার নতুন আহ্বান কিয়েভে আরও বেশি মস্কোপন্থী সরকার বসানোর জন্য ক্রেমলিন নেতার দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার সর্বশেষ প্রমাণ। জেলেনস্কি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি প্রশাসন গঠনের জন্য পুতিনের আহ্বানকে রুশ নেতার শান্তি চুক্তি বিলম্বিত করার সর্বশেষ কৌশল বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

শুক্রবার ভোরে একটি আর্কটিক ফোরামে দেওয়া এক বক্তব্যে পুতিন বলেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং মস্কোর মিত্রদের সঙ্গে ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ইউক্রেনে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা করতে পারে।

পুতিন আরও বলেন, ‘কী জন্য এটা করা উচিত? একটি গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করার জন্য, যার ফলে জনগণের আস্থাভাজন একটি উপযুক্ত সরকার ক্ষমতায় আসবে এবং তারপর এই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করা এবং বৈধ নথিপত্রে স্বাক্ষর করা যাবে।’

এর আগে, ২০২২ সালে আক্রমণ শুরুর সময়, মস্কো কয়েক দিনের মধ্যে কিয়েভ দখল করার লক্ষ্য নিয়েছিল, কিন্তু ইউক্রেনের ছোট সেনাবাহিনী তাদের প্রতিহত করে। পুতিন ইউক্রেনের জেনারেলদের প্রতি জেলেনস্কিকে উৎখাত করার জন্য একটি প্রকাশ্য আহ্বানও জানিয়েছেন। পুতিন বারবার জেলেনস্কিকে ‘নব্য-নাৎসি’ এবং ‘মাদকাসক্ত’ বলে অপবাদ দিয়েছেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের মে মাসে। এর পর মস্কো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ‘বৈধতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। ইউক্রেনের আইন অনুযায়ী, বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের সময় নির্বাচন স্থগিত থাকে এবং জেলেনস্কির অভ্যন্তরীণ বিরোধীরা সবাই বলেছেন যে সংঘাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ভোট হওয়া উচিত নয়।

কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, পুতিন যা কিছু করছেন, ‘তা যুদ্ধ শেষ করার যেকোনো সম্ভাবনা, যেকোনো পদক্ষেপকে বিলম্বিত করে।’

শুক্রবার পরে পুতিনের মন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটি মস্কো ইউক্রেনের নেতৃত্বের সেনাবাহিনীর ওপর ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের অভাব’ হিসেবে যা দেখে তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ‘প্রতিদিন’ রুশ জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলার চেষ্টা করছে।

জেলেনস্কি বলেন, ‘এই মুহূর্তে’ রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা না করার প্রতিশ্রুতিতে স্থির আছে। তবে কিয়েভের পক্ষ থেকে একাধিক দাবি করা হয়েছে, রাশিয়া তাদের স্থাপনার ওপর হামলা করেছে। ইউক্রেন একাধিকবার রাশিয়াকে জ্বালানি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না করার নিজস্ব আদেশ লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেছে।

এদিকে, যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন অগ্রগতির দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, তাদের সৈন্যরা ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলে একটি গ্রাম দখল করেছে এবং তাদের নিজেদের কুরস্ক অঞ্চলের একটি সীমান্ত বসতি পুনরুদ্ধার করেছে।

কিছুদিন আগেই পুতিন বলেছিলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে বলছিলাম—আমরা তাদের ধরব। এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, আমরা তাদেরও নিকেশ করে দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত