Ajker Patrika

হাঙ্গেরির সমর্থন ছাড়াই ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইইউ

আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ৪৫
হাঙ্গেরির সমর্থন ছাড়াই ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইইউ

হাঙ্গেরির সমর্থন ছাড়াই ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও আশা প্রকাশ করেছেন, বুদাপেস্ট সমর্থন না দিলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন জোটের সদস্য দেশগুলোর নেতারা। যে বৈঠকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে দ্বিমত পোষণ করায় বের হয়ে যেতে হয় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অবরানকে। প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে ইউক্রেনকে দিতে যাওয়া ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন তিনি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উল্লিখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিনে বৈঠকে নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়। ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার বিষয়টি প্রস্তাব আকারে উত্থাপিত হলে মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পরে তিনি বৈঠক ছেড়ে চলে গেলে জোটের বাকি ২৬ সদস্য দেশ প্রস্তাবটিতে সম্মতি দেয়। অরবানকে আলোচনার টেবিল ছেড়ে চলে যেতে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ। 

উক্ত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর ব্রাসেলসে ইউক্রেনকে অর্থসহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে অরবান উল্লেখ করেন, আগামী চার বছর ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে এই ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়া যাবে না। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেন অরবান নিজেই। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ‘আজ রাতের বৈঠকের সারমর্ম হলো—ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে সামনের বছর আবারও আলোচনার জন্য ইউরোপীয় কমিশনে যাব পর্যাপ্ত প্রস্তুতিসহ।’ 

তবে অরবানের আপত্তির পরও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে সক্ষম হবে বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকের পর আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৬ সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষে দ্বিপক্ষীয় সম্মতির ভিত্তিতে (ইউক্রেনকে) অর্থসহায়তা প্রদান করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ক্রিসমাসের ছুটি আমাদের জন্য আলোচনার একটি দারুণ সুযোগ দিতে পারে।’ 

এদিকে ইউক্রেন সরকার আশা প্রকাশ করেছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র বলে পরিচিত হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের বাধা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিক্টর অরবানের অবস্থান নিয়ে হতাশা পোষণ করেছে। 

বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা আশা করি, জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইইউ সামিটেই এই অর্থসহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব এই সহায়তা দেওয়া উচিত।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এটি একটি স্পষ্ট সংকেত যে ইইউ থেকে ইউক্রেনের আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে এবং এই অর্থ ইউক্রেন রাষ্ট্রকে আধুনিক করতে এবং ইইউ ব্লকে এর একীকরণ ত্বরান্বিত করতে ব্যবহার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন দিনের বৈঠকেও সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি আফগানিস্তান-পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ১৯ অক্টোবর দোহায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ ও আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব। ছবি: এএফপি
গত ১৯ অক্টোবর দোহায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ ও আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব। ছবি: এএফপি

তিন দিনের বৈঠক শেষেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। জানা গেছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় আলোচনা শেষ হলেও সীমান্তে সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে দুই দেশের। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।

বৈঠকের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, অধিকাংশ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলেও আফগান ভূখণ্ড থেকে সক্রিয় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ গ্রহণের প্রক্রিয়াই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পাকিস্তানের এক কূটনৈতিক বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম শিগগির আফগানিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব। এরপর যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে। কিন্তু সেটি এখনো আমাদের নাগালের বাইরে।’

বৈঠকের প্রথম ভাগে পরিবেশ ছিল বেশ ইতিবাচক। অংশগ্রহণকারীরা তখন আলোচনা সম্পর্কে বেশ অগ্রগতির কথা বলেছিলেন। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আশা কমতে থাকে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী এক কূটনীতিক স্বীকার করেন, ‘এখন পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে বৈঠক স্থবির হয়ে পড়ে এবং রাতেও আলোচনায় নতুন কোনো গতি দেখা যায়নি।’

কূটনৈতিক সূত্রটি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, আফগান তালেবান প্রতিনিধিদল এখনো কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে অনিচ্ছুক। বিশেষত পাকিস্তানবিরোধী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) সমর্থন বন্ধের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রশ্নে তালেবান প্রতিনিধিদল কোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না। একজন পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেন, ‘তুর্কি আয়োজকেরা আমাদের উদ্বেগ বুঝতে পারছেন, কিন্তু কাবুল ও কান্দাহার কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চাইছে না।’

পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমাদের অবস্থান শুরু থেকেই পরিষ্কার—টিটিপির সমর্থন বন্ধ করতে হবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।’

সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকেরা জানান, ‘বহিরাগত প্রভাব’ (ভারতের দিকে ইঙ্গিত) সত্ত্বেও পাকিস্তান ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো ‘সততা ও গুরুত্বের সঙ্গে’ আলোচনাকে ইতিবাচক দিকে নিতে চেষ্টা করছে। তাই রোববারের বৈঠকের পর যে হতাশা তৈরি হয়েছিল, সোমবার পরিবেশ কিছুটা ইতিবাচক ছিল। রোববার পাকিস্তানি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ইসলামাবাদ তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে। আফগান প্রতিনিধিদলও তখন আশাবাদী ছিল। তারা জানিয়েছিল, ইস্তাম্বুলের আলোচনায় অগ্রগতি সম্ভব এবং বাকি মতপার্থক্যগুলো সীমিত কিন্তু সমাধানযোগ্য।

এ সময় তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরাও একই মনোভাব প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, আলোচনার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া জরুরি এবং সেটি যেন ভেঙে না পড়ে। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও সীমান্তে সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে দুই দেশের সমঝোতার বিষয়টি অধরা রয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠক আরও এক দিন বাড়ানো হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবার জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩৫
বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ছবি: এএফপি
বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র এবার জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। জাপান সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির লক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ‘রেয়ার আর্থ বা বিরল মৃত্তিকা খনিজ’ উপাদানের খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, টোকিওতে বৈঠকের শুরুতেই জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের এক ‘সুবর্ণ যুগ’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন।

এশিয়া সফরের দ্বিতীয় ধাপে বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন ট্রাম্প। বৈঠকের শুরুতেই তাকাইচি ও ট্রাম্প চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার লক্ষ্য হলো—গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ‘রেয়ার আর্থ বা বিরল মৃত্তিকা খনিজের’ উপাদানের খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা।

সম্প্রতি চীন বিরল মৃত্তিকা খনিজের রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার পর এই চুক্তির ঘোষণা এল। এই বিরল মৃত্তিকা খনিজ বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও শিল্প উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য উপাদান। ট্রাম্প এ সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন—বাণিজ্যযুদ্ধের টানাপোড়েনের মধ্যেই এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

চুক্তির বিষয়ে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই দেশ অর্থনৈতিক নীতি ও যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং রেয়ার আর্থ উপাদানের জন্য বৈচিত্র্যময়, স্বচ্ছ ও ন্যায্য বাজার গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো ‘গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও রেয়ার আর্থ সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দেশকে সহায়তা করা।’

তাকাইচি বৈঠকের আগে বলেন, ‘আমি এমন এক নতুন সুবর্ণ যুগ দেখতে চাই, যেখানে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র মিত্রতা আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হবে।’ গোপন বৈঠকের বিষয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, তাকাইচি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেবেন। এই পুরস্কারের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ বহুদিনের। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি কয়েকটি সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন, যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ তাঁর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

গত সপ্তাহে জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তাকাইচি। তিনি গাজা ও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাতের অস্ত্রবিরতি প্রচেষ্টায় ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেন। পরে দুই নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে স্মরণ করেন।

তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাণিজ্য ও নিরাপত্তা। কয়েক মাস আগেই তাকাইচির পূর্বসূরি শিগেরু ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল বিনিয়োগের বিনিময়ে হোয়াইট হাউস থেকে শুল্ক ছাড় পেয়েছিলেন। এবারও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও ছাড় পেতে জাপান আমেরিকান সয়াবিন, পিকআপ ট্রাক ও অন্যান্য পণ্য কেনার পরিকল্পনা করছে। আজ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে দুই নেতা বলেন, ‘আমরা এই মহান চুক্তি বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’, যা ‘দুই দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জোরদার করবে, প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে এবং বৈশ্বিক সমৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখবে।’

তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্র-জাপান নিরাপত্তা সম্পর্ককে ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ জোট’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, জাপান ‘বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদান রাখতে প্রস্তুত।’ টোকিও পৌঁছানোর পর সোমবার সন্ধ্যায় সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেন, জাপানের পক্ষ থেকে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনা ‘অত্যন্ত ইতিবাচক সংকেত।’ তিনি যোগ করেন, ‘দুই অর্থনীতি এখন প্রচুর বাণিজ্য করবে।’

ট্রাম্প তাকাইচিকে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এটি সত্যিই বড় অর্জন।’ তিনি বলেন, ‘জাপানের জন্য আমি যা পারি, করব। তুমি অসাধারণ কাজ করবে, আর আমাদের সম্পর্কও হবে অসাধারণ।’

উল্লেখ্য, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া, ইউক্রেন ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে, কিংবা চুক্তি করার পথে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় ‘মাদুরোর দিন ফুরিয়ে আসছে’, ‘ভেতরে বা বাইরে’ থেকে কিছু একটা ঘটবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৩৩
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর রিক স্কট। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর রিক স্কট। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সিনেটর রিক স্কট বলেছেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর এখনই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। কারণ, ভেনেজুয়েলায় তাঁর ক্ষমতার দিন শেষের পথে। তিনি বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় ‘মাদুরোর দিন ফুরিয়ে আসছে।’ তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লোরিডার রিপাবলিকান সিনেটর রিক স্কট বলেন, ‘আমি যদি মাদুরোর জায়গায় হতাম, এখনই রাশিয়া বা চীনে চলে যেতাম।’ স্কট সতর্ক করে বলেন, মাদুরোর ‘দিন গোনা শুরু হয়ে গেছে।’ তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘ভেতর থেকে হোক বা বাইরে থেকে কিছু একটা ঘটবেই।’

তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালাতে যাচ্ছে? জবাবে স্কট বলেন, ‘আমি তা মনে করি না। যদি এমন হয়ও, তাহলে আমি বিস্মিত হব।’ তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন ওই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে পৌঁছেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএর অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছেন। স্কট আরও বলেন, মাদুরোকে সরিয়ে দেওয়া মানে ওই অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাব দীর্ঘদিন প্রতিরোধকারী দেশ ‘কিউবার পতনের সূচনা’। তাঁর ভাষায়, ‘আমেরিকা এখন দক্ষিণ গোলার্ধের দেখভাল করবে।’

স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে স্কট স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-ক্লান্ত জনগণকে নতুন করে সামরিক অভিযানে রাজি করানো ‘খুব কঠিন’। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, প্রয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে’। স্কটের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি।

এর আগে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন ‘এক নতুন, অনন্ত যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চাইছে’। সম্প্রতি ভেনেজুয়েলা সারা দেশে ৫ হাজার রুশ নির্মিত ইগলা-এস অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারের অংশ হিসেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইলন মাস্ক। ছবি: টেকইনসাইড
ইলন মাস্ক। ছবি: টেকইনসাইড

বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ও উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক তাঁর প্রতিষ্ঠান টেসলা ছেড়ে যেতে পারেন, যদি না তাঁকে তাঁর কাঙ্ক্ষিত প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেতন–ভাতা না দেওয়া হয়। এমনটাই জানিয়েছেন টেসলার পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান রবিন ডেনহম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস এই খবর জানিয়েছে।

ডেনহম টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের আহ্বান জানিয়েছেন, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো অনুমোদন করতে, নইলে তিনি কোম্পানি ছেড়ে যেতে পারেন। গত সপ্তাহে কোম্পানির ত্রৈমাসিক আয় সংক্রান্ত বৈঠকে মাস্ক ইঙ্গিত দেন, কোম্পানির ওপর তার পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা না হলে তিনি ‘বৃহৎ এক রোবট বাহিনী’ গড়ে তোলার কাজে সময় দিতে চান না।

গতকাল সোমবার এক্সে প্রকাশিত এক চিঠিতে টেসলার চেয়ারম্যান রবিন ডেনহম আসন্ন শেয়ারহোল্ডার ভোটকে বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ‘মৌলিক প্রশ্ন’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি লিখেন, ‘আপনারা কি ইলনকে টেসলার সিইও হিসেবে ধরে রাখতে চান এবং তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে চান টেসলাকে বিশ্বের শীর্ষ স্বচালিত সমাধান প্রদানকারী ও সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত করার জন্য?’

সাধারণত প্রচারবিমুখ ডেনহম বলেন, ইলনের মাস্কের জন্য প্রেরণাদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হলে, তিনি কোম্পানি ছেড়ে যেতে পারেন। তাঁর ভাষায়, ‘তাহলে টেসলা হারাতে পারে ইলনের সময়, মেধা ও দূরদর্শিতা—যা কোম্পানির অসাধারণ শেয়ারমূল্য বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি ছিল।’

তবে শর্ত হলো, আগামী সাড়ে ৭ বছর টেলসা যে একাধিক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ করতে পারেন মাস্ক তবেই তাঁকে এই সুবিধা দেওয়া হবে। গত বুধবার বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনায় মাস্ক আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, টেসলার মানবাকৃতি রোবট প্রকল্পে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিপুল পরিশ্রম করার পরও ‘কোনো একসময় তাঁকে কোম্পানি থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।’

তিনি বলেন, এটাই আমার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা। এই তথাকথিত ‘বেতন কাঠামো’ আসলে সেটাই সমাধান করার চেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোম্পানিতে আমার যথেষ্ট প্রভাব না থাকে, আমি সেই রোবট বাহিনী গড়তে স্বস্তি বোধ করব না।’

বর্তমানে মাস্কের হাতে টেসলার প্রায় ১৫ শতাংশ শেয়ার আছে। এরই মধ্যে শেয়ারহোল্ডার পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান আইএসএস ও গ্লাস লুইস শেয়ারহোল্ডারদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পরামর্শ দিয়েছে, কারণ তাদের মতে প্যাকেজটির অঙ্ক অতি বিশাল এবং তা বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের অংশীদারত্বকে ক্ষীণ করবে।

কয়েকটি মার্কিন অঙ্গরাজ্যের কোষাধ্যক্ষসহ আরও কয়েকজন বিনিয়োগকারী, যেমন এসওসি ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, বোর্ডের ওপর তাদের আস্থা নেই যে, তারা ইলনের কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে তদারকি করতে পারবে কিংবা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই মুনাফা নিশ্চিত করতে পারবে।

উল্লেখ্য, শেয়ারহোল্ডারদের ভোট গ্রহণ শেষ হবে আগামী ৫ নভেম্বর, আর কোম্পানি ৬ নভেম্বর বার্ষিক সভায় প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত