Ajker Patrika

ইউক্রেনে ইউরোপীয় বাহিনীর উপস্থিতি: ট্রাম্পের হ্যাঁ, পুতিনের না

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ১৮
২০১৭ সালে ভিয়েতনামে এপেক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
২০১৭ সালে ভিয়েতনামে এপেক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনে সম্ভাব্য ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়ে আপত্তি পুনর্ব্যক্ত করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে এই শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়টি বিবেচিত হতে পারে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, মস্কো এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুতিন ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের ধারণা মেনে নিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, তিনি (পুতিন) এটি মেনে নেবেন। আমি বিশেষভাবে তাঁকে এই প্রশ্ন করেছি। এ বিষয়ে তাঁর কোনো আপত্তি নেই।’

কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্পের মন্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সরাসরি তাঁর বিরোধিতা না করলেও কার্যত রাশিয়ার পূর্বের অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেন। পেসকভ বলেন, ‘এ বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ যে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, সেটিই বহাল আছে। এ বিষয়ে আমার কিছু যোগ করার নেই, কিছু বলারও নেই। আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’

রাশিয়া বারবার বলেছে, তারা ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা উপস্থিতির বিরোধী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ গত সপ্তাহে বলেন, এমনকি অন্য কোনো পতাকার অধীনে হলেও, ইউক্রেনে বিদেশি সেনা মোতায়েনকে মস্কো রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ‘সরাসরি হুমকি’ হিসেবে দেখবে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজেস ক্রেমলিনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের সরাসরি জবাব না দিলেও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মস্কো ও কিয়েভের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘এই নির্মম ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য একটি কাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গণমাধ্যমের মাধ্যমে আলোচনা করবেন না।

ব্রায়ান হিউজেস আরও বলেন, ‘টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইউরোপকে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে এবং আমরা দেখেছি ফরাসি প্রেসিডেন্ট (ইমানুয়েল) মাখোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী (কিয়ার) স্টারমারসহ অন্য নেতারা এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তির জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, কারণ যুদ্ধ শেষ করতে চাইলে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনাই একমাত্র পথ।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ সদস্য দেশের নেতারা আজ বুধবার এক ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করবেন। এই বৈঠকে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প ও মাখোঁর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক সম্পর্কে আলোচনা হবে এবং ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।

হোয়াইট হাউসে আলোচনার সময় মাখোঁ জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়াকে ভবিষ্যতে নতুন করে হামলা চালানো থেকে বিরত রাখতে ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দেওয়া জরুরি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুত চুক্তি চাই, তবে এমন কোনো চুক্তি নয়, যা নাজুক হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শান্তি মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ নয়।’

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ঘোষণা করেন, ভিডিও কনফারেন্সে ৬ মার্চ ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিতব্য ‘অসাধারণ’ ইউরোপীয় শীর্ষ সম্মেলন সম্পর্কেও আলোচনা হবে। তাঁর মতে, এই সম্মেলন ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য ‘এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ হিসেবে বিবেচিত হবে।

ইউক্রেনীয় বা ইউরোপীয় নেতাদের অংশগ্রহণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনার জন্য ট্রাম্পের উদ্যোগ ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। এতে ওয়াশিংটনের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

সোমবার ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই’ শেষ হতে পারে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে’ ওয়াশিংটনে যেতে পারেন। একই ইস্যুতে মাখোঁ বলেন, ‘আমাদের প্রথমে একটি যুদ্ধবিরতি দরকার। আমি মনে করি এটি আসন্ন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত