Ajker Patrika

সি-পুতিন ছাড়া কেমন হবে রিও ডি জেনিরোর ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২: ৪৫
২০২৪ সালে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
২০২৪ সালে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে আজ রোববার (৬ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে ১৭ তম ব্রিকস সম্মেলন। বিশ্বের প্রধান উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর নেতারা এই সম্মেলনে একত্রিত হয়েছেন। তবে, জোটের সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং এবারের সম্মেলনে অনুপস্থিত। এই বিষয়টি কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

চীন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সি’র পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। তবে সি চিনপিংয়ের অনুপস্থিতির প্রকৃত কারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। ৭২ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর এবারই প্রথম ব্রিকস সম্মেলনে অনুপস্থিত। জোট সম্প্রসারণ এবং জিওলজিক্যাল ভারসাম্য পুনর্গঠনে চীনের নেতৃত্বে ব্রিকস এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করলেও, এ সম্মেলনে সির অনুপস্থিতি চীনের ভূমিকায় এক নতুন প্রশ্ন জুড়ে দিচ্ছে।

বলা হয়ে থাকে, প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং-ই ব্রিকসকে বিশ্ব ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনে ব্যবহার করেছেন। তবে এবারের সম্মেলনে তাঁর অনুপস্থিতি বৈশ্বিক ক্ষমতা কাঠামোতে ব্রিকসকে হয়তো কিছুটা দুর্বল করে ফেলবে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ঘরোয়া অর্থনীতিকে চাঙা করা এবং আসন্ন রাজনৈতিক সম্মেলনের প্রস্তুতির জন্য সি নিজ দেশে ব্যস্ত থাকতে পারেন, তাই হয়তো এবারের সম্মেলনে তিনি অনুপস্থিত।

এ ছাড়া, ব্রিকস সম্প্রসারণের ফলে এর আদর্শিক ধারা দুর্বল হয়েছে, এমন মতও রয়েছে। এর মধ্যে নতুন সদস্যদের অনেকেই স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অনুসারী হওয়ায়, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারতের মতো গণতান্ত্রিক সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলেও ধারণা করা হয়।

গত বছর থেকে ব্রিকস জোটে যুক্ত হয়েছে মিশর, ইরান, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই সম্প্রসারণে ভৌগোলিক বৈচিত্র্য বাড়লেও আদর্শিকভাবে জোটের ঐক্য কিছুটা দুর্বল হয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।

সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চং জা ইয়ান মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘ব্রিকস হয়তো এখন সি চিনপিংয়ের অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে নেই। তিনি এখন দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেবেন, যেমনটি তিনি ২০২৩ সালের দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস সম্মেলনে করেছিলেন। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। ব্রাজিল আইসিসির সদস্য দেশ হওয়ায় পুতিনের সফর নিয়ে কূটনৈতিক জটিলতা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।

এদিকে, আগামী ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক আলোচনার সময়সীমা শেষ হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রিকস সম্মেলনে নেতারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে কথা বলবেন। তবে সম্মেলনে সি চিনপিংয়ের অনুপস্থিতি ব্রিকস নেতাদের হয়তো ট্রাম্পের সমালোচনার সাহস দেবে না। কারণ ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতিকে টেক্কা দিতে পারে এমন দেশ একমাত্র চীন। এ ছাড়া এবারের সম্মেলনে সি চিনপিংয়ের অনুপস্থিতিতে চীন গ্লোবাল সাউথে নিজেদের ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প শক্তি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সুযোগও হারাল বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খানসামায় ১১ বছর আগের ঘটনায় সাবেক জামায়াত নেতার মামলা

‘স্ত্রী পরিচয়ে’ নারীর সঙ্গে রেস্ট হাউসে থানার ওসি, খবর পেয়ে ছাত্রদল নেতার হাঙ্গামা

হুসাইন (রা.)-এর হত্যার পেছনে দায়ীদের মৃত্যু হয়েছিল যেভাবে

বিশেষ ফ্লাইটে ২৫০ জনকে সীমান্তে এনেছে ভারত, পাঠাবে বাংলাদেশে

হানিমুন থেকে ফিরেই মার্কিন আটককেন্দ্রে ১৪০ দিন, রাষ্ট্রহীন এক তরুণীর মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত