Ajker Patrika

রহস্যময় এক নিউমোনিয়া ছড়াচ্ছে চীনে, শিশুরাই বেশি আক্রান্ত

রহস্যময় এক নিউমোনিয়া ছড়াচ্ছে চীনে, শিশুরাই বেশি আক্রান্ত

রাজধানী বেইজিং সহ চীনের উত্তরাঞ্চলজুড়ে রহস্যময় একটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতিপূর্বে কোভিড-১৯ ভাইরাসটির সংক্রমণও চীন থেকেই প্রথম শুরু হয়েছিল। এ অবস্থায় অজানা নতুন রোগটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসক ও নার্সদের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নতুন রোগটির উপসর্গ নিয়ে অসংখ্য শিশুকে হাসপাতালগুলোতে নিয়ে আসা হচ্ছে। চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে হাসপাতালগুলোর ওয়েটিং রুমে উদ্বিগ্ন বাবা-মায়েদের দেখা যাচ্ছে।

ইতিপূর্বে ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় উহান শহরে একটি রহস্যময় নিউমোনিয়া সংক্রমণ আবিষ্কৃত হয়েছিল—যা পরে কোভিড ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত হয় এবং এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে পাওয়া একটি অসমর্থিত অ্যাকাউন্টের বরাতে নিউজউইক জানিয়েছে, তিয়ানজিন শিশু হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার নতুন শিশুকে ভর্তি করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার তাইওয়ান-ভিত্তিক এফটিভি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিয়াওনিং প্রদেশের দালিয়ানে হাসপাতালগুলোর বারান্দায়ও শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছিল। সরকারি হাসপাতাল সহ বেসরকারি ক্লিনিকগুলো বর্তমানে নতুন রোগীদের ঠাঁই দিতে পারছে না।

এফটিভি নিউজকে বেইজিংয়ের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে সরাসরি শিক্ষকদের কাছে ছুটির দরখাস্ত করতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সহপাঠীদের সঙ্গে তাদের অসুস্থতা নিয়ে আলোচনা করতেও না করা হয়েছে।

বেইজিং এবং লিয়াওনিং-এর মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৪০০ মাইল। দুই জায়গায়ই রহস্যময় রোগটি শনাক্ত হওয়ায়, এর বিস্তার ভাবিয়ে তুলছে চীনা কর্তৃপক্ষকে। আর কম বয়সীরা বেশি হারে আক্রান্ত হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে—এটি স্কুলের পাঠ্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে গত ২৪ অক্টোবর রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত চায়না ডেইলি পত্রিকায় নতুন উপসর্গকে মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া হিসেবে বর্ণনা করেছে। দাবি করা হয়েছে, ব্যাকটেরিয়াজনিত এই অসুখটি অন্যান্য নিউমোনিয়ার তুলনায় কম গুরুতর এবং কাশি, জ্বর, ক্লান্তি ও গলা ব্যথার মতো উপসর্গ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

বেইজিংয়ের চীনা পিএলএ জেনারেল হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হুয়া শানডং চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘এখানে খুব কমসংখ্যক গুরুতর মামলা রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এই রোগে কারও মৃত্যু হয়নি।’

হুয়া জানান, নতুন উপসর্গ নিয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল—তাদের হাসপাতালে ভর্তি থাকার গড় সময় ছিল ৭ থেকে ১৪ দিন।

একই হাসপাতালের শিশুদের চিকিৎসা কেন্দ্রের পরিচালক ঝো হুইক্সিয়া জানান, গত অক্টোবরের শুরুতে চীনের জাতীয় দিবসের ছুটির সময় সংক্রমণটি তীব্র হতে শুরু করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত