Ajker Patrika

দক্ষিণ কোরিয়ায় আন্দোলনে অগ্রভাবে ছিলেন নারীরা, তাঁরাই এখন রাজনীতিতে অদৃশ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫, ১৯: ১১
ইউনবিরোধী আন্দোলনে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। ছবি: আন্দোলনকারী লি জিনহা
ইউনবিরোধী আন্দোলনে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। ছবি: আন্দোলনকারী লি জিনহা

৩ ডিসেম্বর রাত। ভিডিও গেম খেলছিলেন আন বিয়ংহুই। হঠাৎ খবর পেলেন দেশে সামরিক আইন জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট। প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। কিন্তু ইন্টারনেটে ঢুকতেই দেখেন হাজার হাজার পোস্ট। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের হঠাৎ ঘোষণা, সংসদ ভবনের জানালায় সৈন্যদের লাথি ও সংসদ সদস্যদের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করার সেই বিখ্যাত দৃশ্য—সবই ততক্ষণে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল।

প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তায় নেমে আসেন লাখ লাখ মানুষ, যার একটি বড় অংশ দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণীরা। আন বিয়ংহুইও যোগ দেন ওই বিক্ষোভে। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু শহরের বাসিন্দা। কয়েক মাইল হেঁটে পাড়ি দিয়ে রাজধানী সিউলে গিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। কেবল ইউনের সামরিক আইন জারির ঘোষণাকে কেন্দ্র করেই ক্ষুব্ধ নন এই নারীরা, বরং এমন এক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তাঁরা এককাট্টা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, যিনি বারবার বলার চেষ্টা করেছেন যে দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো লিঙ্গবৈষম্য নেই। তবে বাস্তবতা কি আসলেই ইউনের বক্তব্যকে সমর্থন করে?

দেশটির নারীদের ভাষ্যমতে ও সাম্প্রতিক জরিপ অনুসারে, প্রকৃত চিত্র বরং উল্টো। নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও সহিংসতার ঘটনা বেশ নিয়মিতই। নাটকীয় চার মাস পর যখন ইউন অভিশংসিত হন, তখন আনন্দে ফেটে পড়েন আন্দোলনে অংশ নেওয়া এই নারীরা। কিন্তু ৩ জুন, আসন্ন নির্বাচন ঘিরে যখন দেশে প্রস্তুতি চলছে, তখন পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যেন আবার অদৃশ্য হয়ে পড়েন নারীরা।

নারীদের অভিযোগ, প্রধান দুই প্রার্থীই নারীর সমতার প্রশ্নে নীরব। নারীদের অধিকারের বিষয়ে ২০২২ সালের নির্বাচনে অভিশংসিত ইউনের অবস্থানও একই রকম ছিল। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘অতিরিক্ত নারীবাদী’ এই সমাজে তিনি পুরুষের পক্ষ নেবেন।

এবারের নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থীর বাইরে তৃতীয় আরেক প্রার্থীও মনোযোগ কাড়ছেন। নারীবিরোধী স্পষ্ট অবস্থানের কারণে তিনি তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

নতুন এই প্রার্থীর এমন জনপ্রিয়তা দক্ষিণ কোরীয় তরুণীদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে নতুন এক লড়াই হিসেবে। ২৪ বছর বয়সী বিয়ংহুই বলেন, ‘আমরা তো ভেবেছিলাম, ইউন-বিরোধী সমাবেশে গিয়ে আমরা পৃথিবীকে একটু হলেও বদলাতে পেরেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, কিছুই বদলায়নি, নারীর কণ্ঠরোধের চেষ্টাই অব্যাহত।’

ইউনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন যে নারীরা

বিয়ংহুই যখন সিউলের জনস্রোতে পৌঁছান, চারপাশের দৃশ্য তাঁকে স্তব্ধ করে দেয়। হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে হাজারো নারী রাস্তায় নামেন—হুডি জ্যাকেট গায়ে চেপে হাতে লাইটস্টিক আর ব্যানার নিয়ে জোর গলায় স্লোগান দেন তাঁরা। তাঁদের কণ্ঠে ছিল একটাই দাবি—প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের পদত্যাগ।

বিয়ংহুই বলেন, ‘আমার চারপাশে নানা বয়সের নারীরা ছিলেন। কিন্তু বয়স যা-ই হোক, সবার মধ্যে যেন তারুণ্য ভর করেছিল। আমরা গার্লস জেনারেশনের “ইনটু দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড” গাইছিলাম।’ ২০০৭ সালের এই গান একসময়কার আরেক প্রেসিডেন্ট-বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক ছিল, সেই ঐতিহ্য টেনেই এবার তা হয়ে উঠেছিল ইউন-বিরোধী ক্ষোভের কণ্ঠস্বর।

নারীদের অংশগ্রহণের নির্ভরযোগ্য সরকারি পরিসংখ্যান না থাকলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম চোসুন ডেইলির এক অনুসন্ধানে জানা যায়, আন্দোলনকারীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই ছিলেন ২০-৩০ বছর বয়সী নারী। বিবিসি কোরিয়ানের আরেক বিশ্লেষণ বলছে, ডিসেম্বরে একটি বিক্ষোভে সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী ছিলেন ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারী—প্রায় ২ লাখ, যা মোট জমায়েতের ১৮ শতাংশ। অন্যদিকে ওই আন্দোলনে একই বয়সের পুরুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ শতাংশ।

এই বিক্ষোভ ছিল এক দীর্ঘদিনের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ—একটি সমাজে যেখানে নারীরা বছরের পর বছর ধরে বৈষম্য, হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছে, তারই ফল ছিল ওই বিক্ষোভ। ধনী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়াতেই লিঙ্গভিত্তিক মজুরিবৈষম্য সর্বোচ্চ—৩১ শতাংশ। এর পাশাপাশি দেশটিতে ক্রমশ জন্মহার কমে যাওয়ার জন্যও দায়ী করা হচ্ছে নারীদের। রাষ্ট্র ও সমাজ একযোগে তাঁদের ঘাড়ে চাপিয়েছে বিয়ের বাধ্যবাধকতা এবং সন্তান ধারণের দায়িত্ব। পিতৃতান্ত্রিক কাঠামোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য রাজনীতিকদের পক্ষ থেকেও অব্যাহত চাপ রয়েছে।

২৩ বছর বয়সী কিম সায়েয়ন বলেন, ‘আমার জমে থাকা সব হতাশা যেন সেদিন ফেটে বেরিয়ে এসেছিল। অনেকে এসেছিলেন শুধু তাঁদের ক্ষোভ জানাতেই।’ ২৬ বছর বয়সী লি জিনহা নিয়ম করে প্রতিবাদে যেতেন। তিনি বলেন, ‘ভীষণ ঠান্ডা, বিশাল ভিড়, পায়ে ব্যথা, কাজের চাপ—সব সত্ত্বেও আমি যেতাম। কারণ মনে হতো, এটা আমার দায়িত্ব।’

ইওহা উইমেন্স ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গো মিন-হির মতে, ইউন সুক-ইওলের ‘নারীবিরোধী’ ভাবমূর্তি নতুন কিছু নয়। সুক-ইওল স্পষ্ট করে বলেছিলেন—তরুণীদের জন্য তাঁর কোনো বিশেষ নীতি নেই। অন্যদিকে ইউনের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছিলেন বহু তরুণ। তাঁদের কাছে ইউন ছিলেন এক ‘রক্ষাকর্তা’, যিনি ২০২২ সালের নির্বাচনে তাঁদের হতাশা আর ক্ষোভের রাজনৈতিক রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

এই তরুণদের ভাষ্য—তাঁরা ‘বিপরীত বৈষম্যের শিকার’। তাঁরা নারীবাদীদের ‘পুরুষবিদ্বেষী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে নারীবিদ্বেষ ছড়াচ্ছিল। আর প্রেসিডেন্ট ইউনের আমলে অনলাইনে নারীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের বিদ্বেষ একধরনের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছিল। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘নারীর অধিকারে অতিরিক্ত মনোযোগী’ জেন্ডার ইকুইটি মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত করা হবে। তাঁর দাবি ছিল, দক্ষিণ কোরিয়ায় কাঠামোগত লিঙ্গবৈষম্য বলে কিছু নেই—যদিও বাস্তবতা বলছে, লিঙ্গসমতা সূচকে দেশটির অবস্থান উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিচে।

২০২১ সালের এক জরিপে দেখা যায়, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী দক্ষিণ কোরীয় পুরুষদের ৭৯ শতাংশই মনে করে, তারা তাদের লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে ‘গভীর বৈষম্যের শিকার’। কোরিয়ান উইমেনস অ্যান্ড পলিটিকস সেন্টারের পরিচালক কিম ইউন-জু বলেন, ইউনের দল সচেতনভাবেই লিঙ্গভিত্তিক বিভাজনকে রাজনৈতিক কৌশল বানিয়েছিল। ইউনের শাসনকালে ‘নারী’ শব্দটি ছাঁটাই করা হয়েছে বহু সরকারি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে। তরুণীদের চোখে এটি ছিল অর্জিত অধিকার কেড়ে নেওয়ার শামিল। আর এ কারণেই ইউনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল নারীদের।

বিয়ংহুই বলেন, দেগুতে তাঁর দেখা বিক্ষোভগুলোতে নারীর উপস্থিতিই ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি অভিযোগ করেন, আন্দোলনের সময় পুরুষেরা নারীদের গালি দিয়ে যেতেন। তিনি বলেন, তরুণদের আচরণ কেমন ছিল? তাঁরা গাড়ি চালিয়ে এসে গালি দিতেন, গা ঘেঁষে হুমকি দিয়ে যেতেন। বিক্ষোভটা যদি তরুণদের দ্বারা পরিচালিত হতো, তবে কি এমন হতো?’—প্রশ্ন করেন বিয়ংহুই।

ভোটের মাঠে নারীদের কণ্ঠ অনুপস্থিত

ইউনের পতনের পর তাঁর দল পিপল পাওয়ার পার্টি চরম বিশৃঙ্খলায় পড়ে। এবারের নির্বাচনে ১৮ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নেই। গত নির্বাচনে অন্তত ১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে দুজন ছিলেন নারী।

প্রধান বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির (ডিপি) লি জে-মিয়ং এগিয়ে থাকলেও নারীদের প্রতি তাঁর অবস্থান খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। সায়েন নামের এক তরুণী বলেন, ‘তাঁদের নীতিতে শুরুতে নারী ইস্যু খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। পরে এসে কিছু কিছু পরিবর্তন এনেছেন তাঁরা। কাঠামোগত বৈষম্য দূর করতে বাস্তবসম্মত কোনো পরিকল্পনা দেওয়া হোক, সেটাই আমাদের চাওয়া।’

নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে লি বলেছিলেন, নারী-পুরুষ কেন ভাগ করছেন? সবাই তো কোরীয়। পরে সমালোচনার মুখে দল স্বীকার করে—নারীরা কাঠামোগত বৈষম্যের শিকার। এরপর তারা প্রতিশ্রুতি দেয়—সমতার জন্য বাজেট বাড়াবে।

২০২২ সালে লি ছিলেন নারীদের পক্ষে সরব; দলের অভ্যন্তরে যৌন হয়রানির ঘটনায় কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নারী নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এবারে অনেকটাই চুপ তিনি। অধ্যাপক ইওহা উইমেন্স ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গো মিন-হি বলেন, লি এবার ভোট হারাতে চান না, তাই তিনি সবাইকে খুশি রাখতে চাচ্ছেন। নারীবাদ এখন ভোটে জেতার কৌশল নয়।

এই অবস্থায় তরুণীরা বঞ্চিতবোধ করছেন। সায়েন বলেন, ‘আমরা এত বড় আন্দোলন করলাম, অথচ আমাদের কণ্ঠ প্রতিফলিত হচ্ছে না।’

ভবিষ্যতের শঙ্কা ও প্রতিরোধ

ইউনের সাবেক শ্রমমন্ত্রী কিম মুন-সু জন্মহার বাড়াতে আর্থিক প্রণোদনার ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু তরুণ নারীদের বক্তব্য—সমস্যা শুধু অর্থ নয়, বরং কর্মজীবন ও পরিবার সামলানোর কাঠামোগত অসাম্যই মূল বাধা, এখনো পুরো সমাজ নারীর বিরুদ্ধে।

এই কারণেই বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে নারী ও পরিবারবিষয়ক মন্ত্রণালয়—যেটি ইউন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। এখন বিরোধী প্রার্থী লি জে-মিয়ং বলছেন, তিনি এই মন্ত্রণালয় আরও শক্তিশালী করবেন। আর কিম বলছেন, এটা বাদ দিয়ে ‘ভবিষ্যৎ যুব ও পরিবার মন্ত্রণালয়’ গঠন করবেন। এই মন্ত্রণালয়ের বাজেটও খুবই ছোট—সরকারের পুরো বাজেটের মাত্র ০ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে লিঙ্গ সমতার পেছনে খরচ হয় মাত্র ৭ শতাংশ।

অধ্যাপক গো মিন-হি বলেন, মন্ত্রণালয়টি ছোট হলেও এটা একটা বড় বার্তা দেয়। কিন্তু এটি একেবারে তুলে দেওয়ার অর্থ—লিঙ্গসমতা রাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বহীন।

আরেক প্রার্থী লি জুন-সক—ইউনের সাবেক দলের নেতা—এই মন্ত্রণালয়ের বিরোধিতা করছেন। এখন তিনি নিজের রিফর্ম পার্টি খুলেছেন। যদিও নির্বাচনে এগিয়ে নেই তাঁর দল, তবে তরুণদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র যিনি খোলাখুলি লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে কথা বলছেন, তিনি ৬১ বছর বয়সী কওন ইয়ং-গুক। তবে তাঁর জনপ্রিয়তা কম।

বিবিসির প্রতিবেদন অবলম্বনে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পারমাণবিক শক্তিচালিত অপ্রতিরোধ্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল রাশিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৫৩
রাশিয়ার দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
রাশিয়ার দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

পারমাণবিক শক্তিচালিত অনির্দিষ্ট পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, এটি বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, খুব শিগগির ক্ষেপণাস্ত্রটি মোতায়েন করা হবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এক মহড়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। এর মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। আর তা হলো, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়া কোনোভাবেই নতি স্বীকার করবে না। বিশেষত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, ঠিক সে সময় মস্কোর এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

রাশিয়ার সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ পুতিনকে জানান, গত মঙ্গলবার পরীক্ষার সময় ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার (৮ হাজার ৭০০ মাইল) উড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা আকাশে ছিল। তিনি বলেন, এটি পারমাণবিক শক্তি দ্বারা চালিত এবং এর উড্ডয়নের দূরত্ব কার্যত সীমাহীন।

রাশিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ৯ এম-৭৩০ বুরেভেস্তনিক (ন্যাটো নাম এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল) হলো এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাই আটকাতে পারবে না।

আজ রোববার সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনাকারী সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন পুতিন। এ সময় পুতিন বলেন, এটি এক অনন্য অস্ত্র, যা আর কোনো দেশের কাছে নেই।

পুতিন ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ঘোষণা দেন। তিনি একে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রতিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেন। কারণ, ওয়াশিংটন ২০০১ সালে একতরফাভাবে ১৯৭২ সালের অ্যান্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং পরে ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ শুরু করে।

পুতিন বলেন, রুশ বিশেষজ্ঞরা একসময় বলেছিলেন, এই অস্ত্র তৈরি সম্ভব নয়। কিন্তু এখন এটার পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তিনি গেরাসিমভকে দ্রুত অস্ত্রটির শ্রেণিবিন্যাস ও মোতায়েনের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।

পুতিনের এ ঘোষণার সময় ও প্রেক্ষাপটও তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনাকারী জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠকে সামরিক পোশাক পরে এ ঘোষণা দিয়ে তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি সরাসরি বার্তা দিয়েছেন—বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে। তবে হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সম্প্রতি ট্রাম্প রাশিয়াকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, মস্কো ইউক্রেনকে হারাতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু পুতিনের আজকের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রকে মনে করিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া এখনো বৈশ্বিক পারমাণবিক শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী। একই সঙ্গে আরও ইঙ্গিত দিয়েছে, মস্কোর সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন করে আলোচনায় বসা উচিত।

রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ গেরাসিমভ জানান, বুরেভেস্তনিকের এ পরীক্ষা বিশেষ ছিল। কারণ, এটি পারমাণবিক শক্তির মাধ্যমেই এত দীর্ঘ সময় আকাশে ছিল। তিনি দাবি করেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র যেকোনো অ্যান্টি মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে পরাস্ত করতে সক্ষম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘরে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনা নারীদের ‘এআই প্র্যাঙ্ক’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ০৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চীনের নারীরা তাঁদের পুরুষ সঙ্গীদের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে এক নতুন ট্রেন্ড ‘এআই গৃহহীন ব্যক্তি প্র্যাঙ্ক’ ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোতে এই প্র্যাঙ্ক ভাইরাল হওয়ার পর তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ট্রেন্ডে অংশ নিতে ব্যবহারকারীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ছবি বা ভিডিও তৈরি করেন। এসব ছবি বা ভিডিওতে অপরিচ্ছন্ন বেশভূষার এক গৃহহীন ব্যক্তিকে ব্যবহারকারীর বাড়ি বা কর্মস্থলে অবস্থান করতে দেখা যায়।

এরপর সেই ছবি বা ভিডিও ওই নারীরা তাঁদের স্বামী বা প্রেমিককে পাঠান। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা সঙ্গীদের অনুভূতি ও দায়বদ্ধতা পরখ করে দেখেন।

এ ধরনের ছবি তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে গুগলের জেমিনি বা মাইএডিটের ‘এআই রিপ্লেস’-এর মতো টুল।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক আইনজীবীর পরিবার এমন এক ভাইরাল প্র্যাঙ্কের ঘটনায় পুলিশ ডাকার মতো পরিস্থিতিতে পড়েছিল।

আরও এক ঘটনায় চীনের পূর্বাঞ্চলীয় আনহুই প্রদেশে এক নারী তাঁর স্বামীকে ঘরে একজন ‘গৃহহীন ব্যক্তি ঢুকে পড়েছে’—এআই দিয়ে বানানো এমন ছবি পাঠান। সে সময় তাঁর স্বামী বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খাচ্ছিলেন।

ছবি দেখে তিনি সেটিকে সত্যি ভেবে পুলিশে ফোন দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে তারা বুঝতে পারে, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে ‘জনসাধারণের সম্পদের অপচয়’ বলে মন্তব্য করেন এবং ওই নারীকে ‘ভয় ছড়ানোর অপরাধে’ অভিযুক্ত করেন।

চীনের জননিরাপত্তা প্রশাসন শাস্তি আইন অনুযায়ী, এমন কাজের জন্য সর্বোচ্চ ১০ দিনের আটকাদেশ ও প্রায় ৭০ ডলার জরিমানার বিধান রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক চীনা পুরুষ এ ধরনের প্র্যাঙ্ক বা দুষ্টুমির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

একজন লিখেছেন, ‘আপনারা কি সেই রাখাল ছেলের গল্প শোনেননি, যে নেকড়ে এসেছে বলে মিথ্যা চিৎকার দিত? যদি আপনারা বারবার মিথ্যা সতর্কবার্তা দেন, তাহলে সত্যি সত্যি বিপদ হলেও কেউ আপনাদের বিশ্বাস করবে না।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও একজন লিখেছেন, ‘এআই আমাদের জীবনে সুবিধা এনেছে, কিন্তু একই সঙ্গে এটি আস্থার সংকটও তৈরি করেছে। প্ল্যাটফর্মের উচিত, এআই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেওয়া।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সর্বোচ্চ গতির ট্রেনের পরীক্ষা চালাচ্ছে চীন, ঘণ্টায় পাড়ি দিতে সক্ষম ৪৫০ কিমি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চীন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেনের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে। ছবি: সিনহুয়া
চীন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেনের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে। ছবি: সিনহুয়া

বিশ্বের দ্রুততম উচ্চগতির ট্রেন সিআর-৪৫০ এর প্রোটোটাইপের পরীক্ষামূলক পরিচালনা শুরু করেছে চীন। বেইজিংয়ের রিং রেলওয়েতে এখনো এই ট্রেনটির পরীক্ষামূলক পরিচালনা চলছে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। তবে ট্রেনের বাণিজ্যিক চলাচলের সময় এর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারিত হবে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার।

চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ট্রেনটিকে ট্র্যাকে নামানো হয়। এটি বর্তমানে চীনের সর্বোচ্চ গতির চলমান সিআর–৪০০ ফুজিং ট্রেনের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত। ফুজিং ট্রেনগুলো প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৫০ কিলোমিটার গতিতে চলে।

china-2
china-2

ট্রেনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিআরআরসি করপোরেশন লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং ফেং জানিয়েছেন, সিআর–৪৫০ উচ্চগতির ট্রেন প্রযুক্তিতে এক বিশাল অগ্রগতি এনেছে। তত্ত্ব, প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, মানদণ্ড ও পরিচালন ব্যবস্থাপনা—সব ক্ষেত্রেই নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে এই ট্রেন।

৪০০ কিলোমিটার গতির নজিরবিহীন গতি অর্জনের জন্য প্রকৌশলীরা ট্রেনটির ট্র্যাকশন পাওয়ার (ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা), ডাইনামিক পারফরম্যান্স বা গতিশীল অবস্থায় ট্রেনটিতে যাবতীয় পরিবর্তন পরিমাপ এবং প্যান্টোগ্রাফ সিস্টেম বা বৈদ্যুতিক লাইন থেকে যে ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি ট্রেনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তা উন্নত করেছেন।

ওয়াংয়ের ভাষায়, ট্রেনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ওয়াটার-কুলড পারমানেন্ট ম্যাগনেট ট্র্যাকশন সিস্টেম, নতুন প্রজন্মের উচ্চ-স্থিতিশীলতা বগি এবং একাধিক উদ্ভাবনী সিস্টেম। যার ফলে দীর্ঘ সময় উচ্চ গতিতে চলাচলেও এটি স্থিতিশীল থাকে। তিনি জানিয়েছেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সিআর–৪৫০ এক ধাপ এগিয়ে। এতে রয়েছে মাল্টিলেয়ার ইমারজেন্সি ব্রেক নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি এবং ৪ হাজারেরও বেশি অনবোর্ড মনিটরিং সেন্সর, যা চলমান অবস্থায় ট্রেনের গিয়ার, পুরো ট্রেন, হাই–ভোল্টেজ প্যান্টোগ্রাফ, ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা—সবকিছুই তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এ ছাড়া, ওভার-দ্য-হরাইজন শনাক্তকরণ ব্যবস্থাও যুক্ত হয়েছে এতে। এই ব্যবস্থা ট্রেনের সামনে ট্র্যাকের জরুরি পরিস্থিতি আগেভাগে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

china-3
china-3

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রেও এসেছে বিপ্লব। বগির ‘স্ট্রিমলাইনড কাওলিং’ ধাঁচের নকশা বাতাসের ঘর্ষণ ও প্রতিরোধ কমিয়েছে, আর নতুন হালকা উপকরণ ও প্রযুক্তি ট্রেনের মোট ওজন ১০ শতাংশ কমিয়েছে এবং চলাচলের ক্ষেত্রে ট্র্যাকের সঙ্গে চাকার এবং সামগ্রিক ঘর্ষণ প্রতিরোধ ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে।

ট্রেনের শব্দ নিয়ন্ত্রণেও এসেছে অগ্রগতি। সাতটি নতুন প্রযুক্তি—যেমন সাউন্ড-অ্যাবসর্বিং উপকরণ ও উন্নত অ্যারোডাইনামিক নকশা ট্রেনের অভ্যন্তরীণ শব্দ ২ ডেসিবল কমিয়েছে। ফলে যাত্রীরা পাচ্ছেন আরও নিঃশব্দ ও আরামদায়ক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।

তা ছাড়া, সিআর–৪৫০ এ যুক্ত হয়েছে একাধিক বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ফিচার, যা ট্রেনের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চালকের সঙ্গে যোগাযোগ, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ এবং যাত্রীসেবা—সব দিক থেকেই একে আগের সব মডেলের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে বলে জানান ওয়াং।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের এক ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু, সক্ষমতা কত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১০
সুবিনসিরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ছবি: সংগৃহীত
সুবিনসিরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সুবনসিরির আটটি ইউনিটের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি)।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনএইচপিসি লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম সীমান্তে অবস্থিত সুবনসিরি লোয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ২৫০ মেগাওয়াট ইউনিটের ‘ওয়েট কমিশনিং’ গত শুক্রবার শুরু হয়েছে। সংস্থাটির এক মুখপাত্র দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘ওয়েট কমিশনিং মূলত টারবাইনের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিষয় পরীক্ষা করার একটি প্রক্রিয়া, এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় না। পানির প্রবাহের ভিত্তি করে এই পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া চার থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।’

২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সুবনসিরি লোয়ার প্রকল্পে রয়েছে আটটি ইউনিট, প্রতিটির ক্ষমতা ২৫০ মেগাওয়াট।

মুখপাত্র জানান, এই আটটির মধ্যে চারটি ইউনিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। পরবর্তী ধাপে অন্তত দুটি ইউনিট সমন্বয় করা হবে, যাতে প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা যায়।

অরুণাচল প্রদেশ ও আসামের সীমানার গেরুকামুখে অবস্থিত সুবনসিরি লোয়ার প্রকল্পটির নির্মাণকাজ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে আসামে বাঁধবিরোধী আন্দোলন ও ভাটিতে পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কায় প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়।

এরপর, ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে পুনরায় কাজ শুরু হয়। সেই সময় এনএইচপিসি প্রকল্পটিতে বাড়তি নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণমূলক পরিবেশ–সংরক্ষণ ব্যবস্থা যুক্ত করে। এনএইচপিসি চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূপেন্দর গুপ্তা পরীক্ষামূলক এই কাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই অর্জন এনএইচপিসির প্রকৌশল দক্ষতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি কেবল একটি প্রকল্প–মাইলফলক নয়, বরং ভারতের পরিবেশবান্ধব ও স্বনির্ভর জ্বালানি ভবিষ্যতের দিকে অগ্রযাত্রার প্রতীক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত