Ajker Patrika

গাজার ২ হাজার মানুষকে চিকিৎসা দিতে চেয়ে কেন বিতর্কের মুখে ইন্দোনেশিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ৩৭
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

গাজায় আহত প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে ইন্দোনেশিয়া। প্রস্তাব অনুযায়ী তাঁদের অস্থায়ীভাবে নিয়ে যাওয়া হতে পারে জনশূন্য গালাং দ্বীপে। সিঙ্গাপুরের দক্ষিণে অবস্থিত এ দ্বীপ অতীতে শরণার্থীশিবির এবং সাম্প্রতিক সময়ে মহামারি হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

সরকারি সূত্রের বরাতে আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে লজিস্টিকস, আইনি কাঠামো ও বৈদেশিক নীতির প্রভাব নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক চলছে। তবে প্রস্তাবটি নিয়ে দেশটির ভেতর ও বাইরে সমালোচনা উঠেছে।

সমালোচকেরা দাবি করছেন, আহত ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে তা তাদের স্বাধীনতার অধিকারের পরিপন্থী হতে পারে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এই উদ্যোগকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত করার কৌশল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, এটি শুধু অস্থায়ী মানবিক সহায়তা। পরিকল্পনাটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে পরিচালিত হবে এবং ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার অধিকারকে সম্মান জানানো হবে।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া প্যাসিফিক ও আফ্রিকাবিষয়ক মহাপরিচালক আবদুল কাদির জিলানি বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যেন এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয় এবং ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার অক্ষুণ্ন থাকে।’

গালাং দ্বীপ ছাড়াও পশ্চিম জাভা ও মধ্য জাভার কিছু স্থানে বিকল্প সুবিধা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। কারণ, সেসব এলাকায় বড় হাসপাতাল ও পরিবহন সুবিধা কাছাকাছি। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এত দূর থেকে আহত রোগীদের নিয়ে আসা ঝুঁকিপূর্ণ ও অকার্যকর হতে পারে। তাঁদের মতে, নিকটবর্তী আরব দেশগুলোতে চিকিৎসা দেওয়াই বেশি বাস্তবসম্মত।

সমালোচকদের মধ্যে কেউ কেউ এ পরিকল্পনাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের রাজনৈতিক প্রভাব হিসেবে দেখছেন। তাঁদের মতে, এতে ইন্দোনেশিয়া অনিচ্ছাকৃতভাবে ‘জাতিগত নির্মূলের’ সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে। আবার অনেক মানবাধিকারকর্মী মনে করছেন, ইন্দোনেশিয়ার উচিত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও দৃঢ় অবস্থান নেওয়া, শুধু চিকিৎসা সহায়তায় সীমাবদ্ধ না থেকে।

এদিকে ইন্দোনেশিয়া ৮০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গাজায় বিমানযোগে ১৮ টন খাদ্য, ওষুধ ও কম্বল পাঠিয়েছে এবং মোট ৮০০ টন সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।

সার্বিকভাবে মানবিক সহায়তার উদ্দেশ্য থাকার পরও পরিকল্পনাটি রাজনৈতিকভাবে জটিল ও সংবেদনশীল। ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা ও আঞ্চলিক কূটনৈতিক প্রভাবের কারণে ইন্দোনেশিয়ার সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ মিলল মেঘনায়, শোকাহত আজকের পত্রিকা

‘সামনে চমকপ্রদ বেশ কিছু ঘটনা ঘটবে, অনেক বিষয় আমি জানি’

কিশোরগঞ্জে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ-গুলি, নিহত ১

‘মব’ সৃষ্টি করে ৩ কিশোরকে সেতুর সঙ্গে বেঁধে রাতভর পিটুনি, নিহত ১

সনদ জালিয়াতি: ব্যাংকের চাকরি যাওয়া জাহাঙ্গীরের স্কুল সভাপতির পদও গেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত