Ajker Patrika

আফগান নারীদের জাতীয় পার্কে যেতে তালেবানের নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৩, ২২: ১০
Thumbnail image

আফগানিস্তানের জাতীয় উদ্যান বন্দ-ই-আমিরে নারীদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান। ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে নারীদের শিক্ষাসহ নানা অধিকার হরণ করেছে তালেবান। 

সর্বশেষ নারীদের জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে যাওয়ার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ধর্মীয় দিক থেকে গোঁড়া এ শাসক গোষ্ঠী। আজ রোববার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

দেশটির পাপ ও পুণ্যবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ হানাফি নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ হিসেবে বলেছেন, নারীরা উদ্যানের ভেতরে হিজাব পরছেন না। এই বিষয়ে একটি সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত নারীদের জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ নিষিদ্ধে ধর্মীয় আলেম ও নিরাপত্তা সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের জাতীয় উদ্যান বন্দ-ই-আমির পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে দেশটিতে পরিবারের সময় কাটানোর জন্য জনপ্রিয় এক গন্তব্য এই উদ্যান। নারীদের উদ্যানে ঘুরতে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় অনেকে এখন পরিবারসহ সেখানে যেতে পারবেন না। ২০০৯ সালে দেশটির প্রথম জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয় এ উদ্যানকে। 

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বন্দ-ই-আমির উদ্যানকে ‘বিশেষ ভূতাত্ত্বিক গঠন কাঠামোর পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট অনন্য সৌন্দর্যমণ্ডিত হ্রদের সমষ্টি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। 

আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ বলছে, পাপ ও পুণ্যবিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ হানাফি বলেছেন, উদ্যানের দর্শনীয় স্থান দেখতে যাওয়া কারও জন্য ‘বাধ্যতামূলক’ নয়। 

নারীদের জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে যাওয়ার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ধর্মীয় দিক থেকে গোঁড়া শাসক গোষ্ঠী তালেবান। ছবি: সংগৃহীতআফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে এই উদ্যানের অবস্থান। তালেবানের ধর্মবেত্তারা বলেছেন, নারীরা উদ্যানে অবাধে ঘুরছেন। তারা দর্শনার্থীদের জন্য যেসব নিয়মকানুন আছে, সেসব মানছেন না। 

বামিয়ান শিয়া ওলামা কাউন্সিলের প্রধান সৈয়দ নাসরুল্লাহ ওয়ায়েজি তোলো নিউজকে বলেছেন, উদ্যানে আসা নারীদের অনেকের বিরুদ্ধে হিজাব না পরা অথবা কেবল লোক দেখানো হিজাব পরার অভিযোগ রয়েছে। তবে ওইসব নারীরা বামিয়ানের বাসিন্দা নন। 

দেশটির সংসদ সদস্য মরিয়ম সোলাইমানখিল তালেবানের এই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে টুইটারে নিজের লেখা একটি কবিতা শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা ফিরে আসব, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।’ 

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ফেরেশতা আব্বাসি বলেছেন, নারী সমতা দিবসে (২৬ আগস্ট) নারীদের উদ্যানে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটা আফগানিস্তানের নারীদের জন্য একেবারে অসম্মানজনক। 

এদিকে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত রিচার্ড বেনেট প্রশ্ন তুলেছেন, নারীদের বন্দ-ই-আমিরে যাওয়ার সঙ্গে শরিয়া আইন ও আফগান সংস্কৃতির সম্পর্ক কিসের? 

নারীর অধিকার হরণে তালেবানের ঘৃণ্য ইতিহাস রয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে। গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে নারী শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়া হয়। অতি সম্প্রতি, চুল ও বিউটি সেলুন বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সর্বশেষ জাতীয় পার্কে নারীদের ঘুরতে যেতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত