Ajker Patrika

বিক্ষোভকারীদের হামলায় রক্তাক্ত নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, উদ্ধার করল সেনাবাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৩
রক্তাক্ত নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। ছবি: সংগৃহীত
রক্তাক্ত নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। ছবি: সংগৃহীত

নেপালে দ্বিতীয় দিনের মতো চলা সহিংস দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা এবং তাঁর স্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবার ওপর বিক্ষোভকারীরা হামলা চালিয়েছেন।

বিক্ষোভকারীরা কাঠমান্ডুর বুধানীলকণ্ঠায় দেউবার বাসভবনে প্রবেশ করেন। হামলার পর প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সাবেক মন্ত্রীর মুখ থেকে রক্ত ঝরছে। কর্তৃপক্ষ দেউবা ও আরজুকে উদ্ধার করার আগেই তাঁদের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

‘জেন-জি’ বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে এই আন্দোলন তীব্র হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা জারির পর। তবে এ বিক্ষোভ মূলত দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এতে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। চলমান তীব্র বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে পদত্যাগ করেছেন।

আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীরা ‘কে পি চোর, দেশ ছাড়ো’ ও ‘দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’ স্লোগান দেন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাঠমান্ডুসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর শুরু করেন।

রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সরকারি ভবনগুলো ছাড়াও দলীয় কার্যালয় ও পুলিশ স্টেশনও বিক্ষোভের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু প্রসাদ পাউডেলকেও কাঠমান্ডুর রাস্তায় ধাওয়া করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণ বিক্ষোভকারী মন্ত্রীর দিকে ছুটে গিয়ে তাঁকে লাথি মারছেন, এতে তিনি ভারসাম্য হারিয়ে একটি লাল দেয়ালে আছড়ে পড়েন।

গত শুক্রবার সরকার ২৬টি অনিবন্ধিত প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়। ৩ কোটি জনসংখ্যার এই হিমালয় অঞ্চলের দেশটিতে ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সের মতো বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করা হয়। এতে প্রবাসে থাকা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন ব্যবসা ও পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তরুণদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘নেপো কিডস’ ও ‘নেপো বেবি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পরই এ নিষেধাজ্ঞা আসে।

প্রধানমন্ত্রী অলি তাঁর পদত্যাগপত্রে বর্তমান সংকট সমাধানে রাজনৈতিকভাবে পথ প্রশস্ত করার কথা উল্লেখ করেছেন। পদত্যাগের আগে দেশটির সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল তাঁর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগের অনুরোধ করেন এবং পরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত