Ajker Patrika

কাতারে বেগার খাটছেন নিরাপত্তাকর্মীরা: অ্যামনেস্টি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৫৭
কাতারে বেগার খাটছেন নিরাপত্তাকর্মীরা: অ্যামনেস্টি

কয়েক মাস কিংবা বছরের পর বছর ধরে কোনো রকম ছুটি ছাড়াই কাতারে বেগার খাটানো হচ্ছে নিরাপত্তারক্ষীদের। আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। চলতি বছরই কাতারে অনুষ্ঠিত হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। বৈশ্বিক ওই ইভেন্টের আগে নিরাপত্তাকর্মীদের বেগার খাটানো নিয়ে তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকা ও এশিয়ার হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিক উপসাগরীয় দেশটির অফিস, কারখানা ও নির্মাণ সাইটে কম বেতনের প্রহরী হিসেবে কাজ করেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২১ নভেম্বর আরব অঞ্চলে প্রথম বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে আরও হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মী নেওয়া হবে। 

অ্যামনেস্টিতে ৩৪ জন বর্তমান ও সাবেক নিরাপত্তাকর্মী জানিয়েছেন, মাস, এমনকি বছরের পর বছর ছুটি ছাড়াই নিয়মিতভাবে দিনে ১২ ঘণ্টা, সপ্তাহের সাত দিন কাজ করতে হয়েছে।

একজন বাংলাদেশি নিরাপত্তাকর্মী অ্যামনেস্টিকে জানিয়েছেন, তিন বছরে কোনো ছুটি পাননি তিনি। যাঁরা ছুটি নেন, তাঁদের মজুরি কাটা হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশি নিরাপত্তাকর্মী বলেন, নিরাপত্তাকর্মীরা কাউকে না রেখে টয়লেটে গিয়ে, অসুস্থতার দিন ছুটি নিয়ে বা ইউনিফর্ম সঠিকভাবে না পরার জন্য মজুরি খুইয়েছেন।

নিরাপত্তাকর্মীরা অভিযোগ করেন, কাতারে গরমের মধ্যে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাঁদের কাজ করতে হয়। 

উগান্ডা ও কেনিয়া থেকে আসা নিরাপত্তাকর্মীরা অ্যামনেস্টিকে জানান, তাঁদের গরমে বেশি কাজ দেওয়া হয়। আরবিভাষী শ্রমিকদের তুলনায় তাঁদের কম মজুরিও দেওয়া হয়।

সমালোচনার মুখে পড়ে ২০১৭ সালে কাতারে একটি ন্যূনতম মজুরি আইন প্রবর্তন করা হয়। এর পাশাপাশি কাতার সরকার আলোচিত-সমালোচিত কাফালা পদ্ধতি বাতিল করে। কোনো এক ব্যক্তির অধীন বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়াই হলো কাফালা পদ্ধতি। যেখানে একজন কফিল কোনো বিদেশি কর্মীকে স্পনসর করলে সেই কর্মী কাতারে যেতে পারেন এবং সেখানে যাওয়ার পর ওই নিয়োগকর্তার অধীন কাজ করতে হয় তাঁকে। এ ক্ষেত্রে ওই কর্মীর কাজ পরিবর্তনসহ সার্বিক সব বিষয় নির্ভর করে নিয়োগকর্তার ওপর। শ্রম আইনের এই বিশেষ বিধান বাতিলের পর দেশটিতে এখন বিদেশি শ্রমিকদের চাকরি বদলাতে কফিলের অনুমতির দরকার হয় না। 

তবে অ্যামনেস্টি বলছে, এখনো নিয়োগকর্তা ও অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে একটি ব্যাপক ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। কাতারে শ্রমিক ইউনিয়ন করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

এ নিয়ে অ্যামনেস্টির সামাজিক ন্যায়বিচার বিশেষজ্ঞ স্টিফেন ককবার্ন বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত কর্মীরা আর্থিক জরিমানার হুমকির মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি দ্বারা সাক্ষাৎকার নেওয়া আটটি কোম্পানির মধ্যে অন্তত তিনটি ফিফা টুর্নামেন্টের নিরাপত্তা প্রদান করেছে। 

কাতারের আয়োজক কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, শ্রমবিধি লঙ্ঘনের জন্য তিনটি কোম্পানিকে কালো তালিকায় রাখাসহ শাস্তির সম্মুখীন করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো শ্রম মন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে। 

আয়োজক কমিটির দাবি, তাদের সুরক্ষাব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে অনন্য। 

এদিকে কাতার শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অসাধু নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে তারা নিয়মিত ব্যবস্থা নেয় ৷

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত