Ajker Patrika

মিয়ানমারে সোশ্যাল মিডিয়ায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে গণজোয়ার

আপডেট : ১৪ জুন ২০২১, ২১: ১৮
মিয়ানমারে সোশ্যাল মিডিয়ায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে গণজোয়ার

ঢাকা: গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের জান্তা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জান্তা সরকারকে হটাতে মিয়ানমারে সেই থেকেই চলছে আন্দোলন, বিক্ষোভ। রক্তক্ষয়ী সংঘাতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে সাড়ে আট শতাধিক বেসামরিক নাগরিক। ছায়া সরকার গঠন করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এই জান্তাবিরোধীরা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মানুষদের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা বাড়ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জান্তাবিরোধীরা কালো জামা পরা ছবি শেয়ার করে রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষ। গতকাল রোববার জান্তাবিরোধী নেতা কর্মী, সাধারণ জনগণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ‘ব্ল্যাক ফর রোহিঙ্গা’ ক্যাপশন লিখে কালো জামা পরে তিন আঙুলে স্যালুট দেওয়ার ছবি পোস্ট করেন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত হ্যাশট্যাগ ‘ব্ল্যাক ফর রোহিঙ্গা’ ৩ লাখ ৩২ হাজারবার মেনশন করা হয়েছে। বেশির ভাগ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীই এই হ্যাশট্যাগে সংহতি জানান।

মানবাধিকার কর্মী থিনজার শুনলেই ইয়ি টুইটারে বলেন, আমি আপনিসহ মিয়ানমারের সবারই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

বিশেষ করে মুসলিম রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে বসতি গড়েছে বলে মনে করেন মিয়ানমারের বহু নাগরিক। কয়েক দশক ধরেই তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার সরকার। সেই সঙ্গে তাদের মৌলিক মানবিক অধিকার, সরকারি সেবা এবং স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে রাখাইন রাজ্যে রক্তাক্ত সামরিক অভিযানে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। ওই সময় তাঁদের ওপর নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।

সারা বিশ্ব থেকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে সামরিক বাহিনী বারবার দাবি করে আসছে, ওই এলাকায় সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মূলোৎপাটন করতেই ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। এ নিয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসির) সহায়তায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। গাম্বিয়ার অভিযোগে বলা হয়, সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার ওপর নৃশংস সামরিক অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পুড়িয়ে দিয়ে, হাজারো রোহিঙ্গাকে হত্যা, আহত ও নারীদের ধর্ষণ করেছে মিয়ানমার।

হেগে অবস্থিত সেই মামলার শুনানিতে অংশ নিয়ে তৎকালীন সরকারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি হেগে হাজির হয়েছিলেন। শুনানিতে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে যুক্ত উপস্থাপন করেন তিনি।

মামলার বিপক্ষে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই মিয়ানমারে সমর্থন আর অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসেন শান্তিতে নোবেল জয়ী রাজনীতিক সু চি। হাজার হাজার মানুষ কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন শহরে সু চির পক্ষে সমাবেশ করে।

ওই সময় স্থানীয় ইরাবতী এবং বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বলা হয়, আইন নিয়ে কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সু চি নিজে আদালতে দাঁড়ানোর এই সিদ্ধান্ত সুপরিকল্পিত। কারণ মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা তাঁর পাশে রয়েছে। আন্তর্জাতিক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাট বলা হয়, সু চির এই সিদ্ধান্তের পেছনে ক্ষমতাসীন দল এনএলডির জনসমর্থন বাড়ানোর উদ্দেশ্য থাকা অসম্ভব কিছু নয়। কারণ পরের বছরই মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন।

মিয়ানমারের নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গির এমন পরিবর্তনের বিষয়ে স্বাধীন রোহিঙ্গা জোটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নন সান লুইন কাতার ভিত্তিক সম্প্রচার মাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, হ্যাশট্যাগ ‘ব্ল্যাক ফর রোহিঙ্গা’ ক্যাম্পেইনে বিপুল সমর্থন পেয়েছি। অনেকেই সংহতি জানিয়েছেন। বিশেষ করে বার্মিজদের কাছ থেকে সংহতি পাওয়া খুবই বড় বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জুলাই সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতেও প্রশ্ন তোলা যাবে না

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত