Ajker Patrika

‘নি হাও’ বলায় রুশ পর্যটকের সঙ্গে তর্কাতর্কি, থাইল্যান্ডে কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত

অনলাইন ডেস্ক
রুশ দম্পতির সঙ্গে থাই র‍েঞ্জারের তর্কাতর্কির সেই মুহূর্ত। ছবি: সংগৃহীত
রুশ দম্পতির সঙ্গে থাই র‍েঞ্জারের তর্কাতর্কির সেই মুহূর্ত। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ান এক দম্পতির সঙ্গে তর্কাতর্কির জেরে থাইল্যান্ডে এক বন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত ২৬ বছর বয়সী সিরানুথ থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল পার্ক, বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি দেশটির ক্রাবি সৈকতে ওই দম্পতির সঙ্গে মুখোমুখি হয়েছিলেন।

বুধবার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, তর্কাতর্কির আগে রাশিয়ান ওই দম্পতি সিরানুথকে ‘নি হাও’ বলে সম্ভাষণ জানিয়েছিলেন। চীনের মান্দারিন ভাষায় এর অর্থ হলো—হ্যালো বা হাই। আরও বিস্তৃত অর্থে এর মাধ্যমে আসলে কাউকে বলা হয়—আপনার মঙ্গল হোক।

মজার বিষয় হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ঘটনাটির ভিডিও সিরানুথ নিজেই শেয়ার করেছিলেন। ভিডিওটি শেয়ার করে তিনি পর্যটকদের ‘অসম্মানজনক আচরণ’ এবং ‘বর্ণবৈষম্যপূর্ণ মনোভাব’ নিয়ে অভিযোগ তোলেন। কিন্তু এই কাজটি শেষ পর্যন্ত তাঁর চাকরিচ্যুতির কারণ হলো!

ভিডিওতে দেখা যায়—সিরানুথ ওই দম্পতিকে বলছেন, ‘আজকের মতো দিন শেষ। আজ আর কোনো ঘোরাঘুরি নেই। ওই নৌকায় গিয়ে উঠুন।’

তিনি আরও বলেন, “আপনারা আমাদের ‘নি হাও’ বললেন। এভাবে থাই মানুষকে সম্ভাষণ জানানো হয় না। আমি থাই, চাইনিজ নই। এই আচরণের কারণে আপনাদের দিন এখানেই শেষ। ”

সিরানুথ আরও সতর্ক করে বলেন, ‘যদি আবার এমন করেন, তাহলে আপনাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’

শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরবর্তী আরেকটি পোস্টে সিরানুথ লিখেছেন, “থাইল্যান্ডে এসে, আমাদের এবং চীনের পার্থক্য না বোঝা অত্যন্ত বর্ণবাদী আচরণ। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ভোগ করতে এসে থাই মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়াটা একরকম অবজ্ঞা। ‘নি হাও’ বলে যেন একত্রে সব এশিয়ানকে একজাতি হিসেবে দেখা হয়। এটি এশীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক। ”

সিরানুথের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এটির ভিউ ১ কোটি ছাড়িয়ে যায় এবং ‘নি হাও’ বলার মাধ্যমে থাই সংস্কৃতির অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অনেকেই সিরানুথের বিরুদ্ধে পর্যটকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ তোলেন, আবার কেউ কেউ তাঁর পক্ষে অবস্থান নেন।

এ অবস্থায় থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল পার্কস বিভাগের মহাপরিচালক আথাফন চরোয়েঞ্চানসা নিশ্চিত করেন, সিরানুথকে এই সপ্তাহেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। তবে সিরানুথ একটি টিভি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এবং বিভাগের প্রধানকে বিতর্কে অংশ নিতে চ্যালেঞ্জ জানান।

এমন ঘটনা আগে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গেও ঘটেছিল। ২০১৯ সালে এক কোরিয়ান ভোটারকে তিনি ‘নি হাও’ বলে সম্ভাষণ জানালে ওই ভোটার তৎক্ষণাৎ অপ্রস্তুত হয়ে বলে উঠেছিলেন, ‘না, না, না, আমি কোরিয়ান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত