Ajker Patrika

৮.৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতির হার ৬৪ 

৮.৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতির হার ৬৪ 

বিদেশি ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক নাগাদ দেশটির অর্থনীতি এই পরিমাণ সংকুচিত হয়েছে বলে জানা গেছে দেশটির সরকার প্রকাশিত তথ্য থেকে। একই সঙ্গে দেশটির মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ ৬৪ শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। 

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—শ্রীলঙ্কার পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার শিল্প উৎপাদন জুন প্রান্তিকে অন্তত ১০ শতাংশ কমে গেছে। একই সময়ে দেশটির কৃষিজ উৎপাদন কমে গেছে। ওই পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে ২০২১ সাল থেকেই সংকুচিত হতে শুরু করা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অন্তত ১ দশমিক ৬ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। 
 
দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক সংকোচন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভবিষ্যদ্বাণীকে ছাড়িয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল চলতি বছর নাগাদ দেশটির অর্থনীতি অন্তত ৮ শতাংশ সংকুচিত হবে। তবে বর্তমানে সংকোচন তার চেয়েও অনেক বেশি ছাড়িয়ে গেছে। 

এদিকে, দেশটিতে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ৬৪ শতাংশ পেরিয়ে গেছে। কেবল তাই নয় শ্রীলঙ্কার মুদ্রার মান ডলার বিপরীতে অন্তত অর্ধেক কমে গেছে। ফলে অর্থ সংকটে থাকা দেশটির জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, জ্বালানি তেল, সারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। 

অপরদিকে, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২৯৯ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল–আইএমএফ। তবে কবে নাগাদ শ্রীলঙ্কা এই অর্থ পাবে তা নিশ্চিত করা হয়নি। 

সব মিলিয়ে প্রায় ৫১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ রয়েছে দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কার। বৈদেশিক ঋণ, অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ–আন্দোলন হয়। তীব্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তাঁর ভাই ও দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। অনেক আগে থেকেই দেশটি আইএমএফের ঋণ খুঁজছিল। 

এক বিবৃতিতে আইএমএফ বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কা একটি তীব্র সংকটের সম্মুখীন হয়েছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সংকটের মূল শিকার দরিদ্র এবং দুর্বলেরাই।’ বৈশ্বিক এই প্রতিষ্ঠানটি নয় দিন ধরে শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে অবশেষে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। 

তবে এখনো চুক্তিটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি। আইএমএফ বোর্ড এই চুক্তিটির অনুমোদন দিলেই কেবল শ্রীলঙ্কা সরকার এই ঋণের অর্থ পাবে। তবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আলোচনার জন্য আসা মিশন প্রধান পিটার ব্রুয়ার বলেছেন, ‘অন্যান্য ঋণদাতাদেরও শ্রীলঙ্কাকে এই গভীর সংকট থেকে বের করে আনতে এবং দেশটির ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা ফিরে পেতে সহায়তা করতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত