Ajker Patrika

মিয়ানমারে বেসামরিকদের ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৯ সদস্যের 

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৫৪
Thumbnail image

মিয়ানমারের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধ করতে জান্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তিন স্থায়ী সদস্যসহ নয়টি সদস্য দেশ। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে সব রাজবন্দীকে মুক্তি দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

মিয়ানমার বিষয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইকুয়েডর ও মাল্টা গতকাল সোমবার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। 

গত ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের তিন বছর পূর্ণ করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে দেশটির পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হয়। 

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের দিনই জান্তা বাহিনী মিয়ানমারের কায়া প্রদেশের দেমোসো শহরের একটি স্কুলে বোমা হামলা চালায়। এতে ১২ থেকে ১৪ বছরের চার শিশু নিহত হয় এবং অন্তত ১৫ শিশু আহত হয়। তবে হামলার কথা অস্বীকার করেছে জান্তা। 

যৌথ বিবৃতিতে সদস্য দেশগুলো বলছে, ‘সেনাবাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলাসহ মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সহিংসতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়া এ বিবৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেই।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিবৃতিতে ‘অবিলম্বে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধের দাবির পাশাপাশি সংযম ও উত্তেজনা প্রশমনে জান্তার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ নির্বিচারে আটক সব বন্দীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে আমরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

গতকাল সোমবার যৌথ বিবৃতি প্রকাশের জন্য সদস্য দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধি ইউ কিয়াও মোয়ে তুন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাব বাস্তবায়নে জোরালো পদক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।

গণমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওই প্রস্তাব গ্রহণের পরও মিয়ানমারের জনগণের ওপর সামরিক জান্তা নৃশংসতা অব্যাহত রেখেছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে সামরিক জান্তাকে বাধ্য করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এখনও কিছুই করতে পারেনি। 

‘স্পষ্টতই ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে প্রয়োগযোগ্য আরেকটি প্রস্তাব তৈরি করা দরকার।’ যোগ করেন তুন।

সামরিক জান্তার কাছে অস্ত্র, জেট জ্বালানি ও অর্থ সরবরাহ বন্ধে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে কিয়াও মোয়ে তুন বলেন, ‘ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জান্তা বাহিনী।’

জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূত বলেন, ‘আমার শুধু একটিই প্রশ্ন, মিয়ানমারের জনগণের জীবন বাঁচাতে তাঁরা কিসের অপেক্ষা করছেন?’ 

মিয়ানমারে অনলাইন প্রতারণা এবং মাদক ও মানব পাচারসহ ক্রমবর্ধমান অপরাধ মোকাবিলার ব্যবস্থা নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সামরিক জান্তা ও সহযোগী সীমান্তরক্ষী বাহিনী এসব অপরাধীদের সহায়তা করছে। এ ধরনের অপরাধ অঞ্চলটিতে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে, তাই এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে জান্তা সরকারের মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের তিন বছরে ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন; ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং দেশজুড়ে ৭৮ হাজারের বেশি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

মিয়ানমারের ১ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছেন, যাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। পাশাপাশি ২৬ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ রাখার পক্ষে যে যুক্তি দিলেন আলী রীয়াজ

রাজধানীতে নিখোঁজ কিশোরী নওগাঁয়, যা বললেন সঙ্গে থাকা তরুণের বাবা

নবাবি প্রশাসনে হিন্দু আমলারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ

আটক ৩ জনকে ছাড়িয়ে নিতে উত্তরায় থানায় হামলা শিক্ষার্থীদের

উপদেষ্টা রিজওয়ানার কাছে মাত্র ১৫ মিনিট সময় চেয়ে পাইনি: বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত