Ajker Patrika

ফেসবুক পোস্টের কারণে ভিয়েতনামে সাংবাদিকের ৩০ মাসের কারাদণ্ড

৬৩ বছর বয়সী হুই ডুক ভিয়েতনামের অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার। ছবি: এএফপি
৬৩ বছর বয়সী হুই ডুক ভিয়েতনামের অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার। ছবি: এএফপি

ফেসবুকে ‘সরকার-বিরোধী’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ভিয়েতনামের শীর্ষস্থানীয় এক সাংবাদিক ও বইয়ের লেখককে ৩০ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। দেশটির রাজধানী হ্যানয়ের একটি আদালতে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বিচার কার্যক্রমের পর ‘গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন’ করার অভিযোগে হুই ডুককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

সাজাপ্রাপ্ত ৬৩ বছর বয়সী হুই ডুক ভিয়েতনামের অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার। ডুয়ং ভ্যান থাইয়ের ইউটিউবে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ফলোয়ার ছিল, যেখানে তিনি নিয়মিত সরকারবিরোধী লাইভস্ট্রিম করতেন।

গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন আগে, গত জুন মাসে হুই ডুক অনলাইনে ভিয়েতনামের নতুন ক্ষমতাধর নেতা তো লাম এবং তাঁর পূর্বসূরি নগুয়েন ফু ট্রং-এর বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সঙ্গে এসব পোস্টের সরাসরি সম্পর্ক আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

ভিয়েতনাম নিউজ এজেন্সির উদ্ধৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, হুই ডুক ফেসবুকে ১৩টি নিবন্ধ পোস্ট করেছিলেন। নিবন্ধগুলোতে বিপুলসংখ্যক লাইক, মন্তব্য এসেছে। অনেক মানুষ শেয়ার করেছে লেখাগুলো। যা সামাজিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তবে গণমাধ্যম স্বাধীনতা বিষয়ক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘হুই ডুকের নিবন্ধগুলো অমূল্য তথ্যের উৎস, যা ভিয়েতনামের জনগণকে হ্যানয় সরকারের সেন্সরকৃত তথ্যের নাগাল পাওয়ার সুযোগ করে দেয়।’

সাবেক সিনিয়র সেনা লেফটেন্যান্ট হুই ডুকের আসল নাম ট্রুয়ং হুই সান। তিনি আগে রাষ্ট্র-চালিত সংবাদপত্রে কাজ করতেন। ২০০৯ সালে ভিয়েতনামের সাবেক কমিউনিস্ট মিত্র সোভিয়েত ইউনিয়নের অতীত কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করার কারণে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা থেকে বরখাস্ত হন তিনি।

এরপর ভিয়েতনামের দুর্নীতি, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে এবং কমিউনিস্ট নেতাদের সমালোচনা করে লিখতে শুরু করেন হুই ডুক। দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার হয়ে ওঠেন তিনি। ফেসবুকেও তাঁর লেখা বেশ জনপ্রিয়তা পেতে থাকে।

২০১২ সালে নিমান ফেলোশিপের আওতায় এক বছর হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সুযোগ পান হুই ডুক। সেখানে থাকার সময় তিনি ‘দ্য উইনিং সাইড’ নামে একটি বই লেখেন। বইটিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধের পর ভিয়েতনামে জীবনযাত্রা তুলে ধরেন।

হুই ডুকের কারাদণ্ডের ঘটনাটিই ভিয়েতনামে প্রথম কোনো ব্লগারের কারাদণ্ড পাওয়া নয়। কয়েক মাস আগে রাষ্ট্রবিরোধী তথ্য প্রকাশের অভিযোগে ব্লগার ডুয়ং ভ্যান থাইকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়াও জানুয়ারিতে একজন বিশিষ্ট সাবেক আইনজীবীও ‘ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে’ তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।

ভিয়েতনামে কোনো মুক্ত গণমাধ্যম নেই এবং যে কোনো ভিন্নমত কঠোরভাবে দমন করা হয়। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভিয়েতনাম সরকার নাগরিক সমাজের ওপর দমন-পীড়ন আরও তীব্র করেছে। আরএসএফের মতে, ভিয়েতনাম সাংবাদিকদের কারাবন্দী করার ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি।

গত ডিসেম্বর মাসে, ভিয়েতনাম নতুন ডিজিটাল আইন প্রণয়ন করে, যার অধীনে ফেসবুক ও টিকটককে ব্যবহারকারীদের পরিচয় যাচাই করতে হবে এবং তাদের তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এমনকি ডিক্রি ১৪৭-এর আওতায়, ভিয়েতনামে কার্যক্রম চালানো সব প্রযুক্তি সংস্থাকে ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট ফোন নম্বর বা পরিচয় নম্বরের মাধ্যমে যাচাই করতে হবে এবং সেই তথ্য পূর্ণ নাম ও জন্মতারিখসহ সংরক্ষণ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসে রাহুলের পোস্টেও বাংলাদেশ নেই, একাত্তরে সীমান্ত রক্ষায় ‘ভারতীয় বীর’দের শ্রদ্ধা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫০
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সীমান্ত রক্ষায় ভারতের সীমান্ত রক্ষায় বীরত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে অবদান রাখায় দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো তাঁর বক্তব্যেও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ অনুপস্থিত। এমনকি যুদ্ধ কার সঙ্গে কোথায় হয়েছে সেই বিষয়েও কোনো উল্লেখ নেই।

আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বিজয় দিবসে আমি আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, যারা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের সীমান্ত রক্ষা করার সময় তাদের বীরত্ব, নিষ্ঠা এবং অটল সংকল্প দিয়ে বিশ্বজুড়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।’

কংগ্রেসের এই নেতা আরও বলেন, ‘তাদের অদম্য সাহস, সংগ্রাম এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ সর্বদা প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’

এর আগে, বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসকে আবারও ভারতের ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে দাবি করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা পোস্টে তিনি এই দাবি করেন। এমনকি টুইটে বাংলাদেশের নামও নেননি মোদি।

নরেন্দ্র মোদি ইংরেজিতে দেওয়া টুইটের বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘বিজয় দিবসে আমরা সেই সাহসী সৈন্যদের স্মরণ করি, যাঁদের সাহস ও আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতের এক ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁদের দৃঢ় সংকল্প এবং নিঃস্বার্থ সেবা আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছিল এবং আমাদের ইতিহাসে গর্বের একটি মুহূর্ত খোদাই করে রেখেছে। এই দিন তাঁদের বীরত্বকে স্যালুট জানায় এবং তাঁদের অতুলনীয় চেতনার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাঁদের বীরত্ব ভারতের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’

অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও মোদি একই ধরনের কাজ করেছেন। ২০২৪ সালেও বিজয় দিবসে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয় বলে দাবি করেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আজ, বিজয় দিবসে আমরা সেই সাহসী সৈনিকদের সাহস ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই, যাঁরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রেখেছিলেন। তাঁদের নিঃস্বার্থ নিষ্ঠা এবং অটল সংকল্প আমাদের দেশকে সুরক্ষিত করেছে এবং আমাদের গৌরব বৃদ্ধি করেছে। দিনটি তাঁদের অসামান্য বীরত্ব এবং অবিচল আত্মার প্রতি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে অমর হয়ে থাকবে।’

ঐতিহাসিক দলিল বলে, ভারত ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যৌথ বাহিনী হিসেবে যোগ দেয়। ইন্সট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার বা আত্মসমর্পণের দলিলেও পাকিস্তানি বাহিনী ‘ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর’ কাছেই আত্মসমর্পণ করেছে। অথচ এর আগের প্রায় ৯ মাস পুরো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা।

বাংলাদেশের জনগণের ওপর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর অতর্কিত বর্বরোচিত হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গঠিত ১১টি সেক্টরের কমান্ডারও ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস বা ইপিআর এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা, যাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। এ ছাড়া পুরো মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে লাখ লাখ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। যেখানে কয়েক দিনের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের প্রাণহানির সংখ্যা খুবই নগণ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইমরানকে বন্দী করে সাংবিধানিক ক্যুর মাধ্যমে আজীবন দায়মুক্তি নিয়েছেন সেনাপ্রধান: ভারতীয় রাষ্ট্রদূত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৪
ইমরান খান ও আসিম মুনির।
ইমরান খান ও আসিম মুনির।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘শান্তির জন্য নেতৃত্ব’ শীর্ষক উন্মুক্ত বিতর্কে জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানের বক্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে ভারতের ‘অবিচ্ছেদ্য এবং অনস্বীকার্য অংশ’ বলে পুনর্ব্যক্ত করেছে নয়াদিল্লি।

জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত হরিশ পর্বতানেনি বলেন, ‘এগুলো অতীতে ভারতের ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’ বিতর্কে পাকিস্তানের প্রতিনিধি যে বক্তব্য দেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে পর্বতানেনি ভারতের এবং ভারতের জনগণের ক্ষতি করার বিষয়ে ইসলামাবাদের ‘মোহাবিষ্ট মানসিকতা’র কঠোর সমালোচনা করেন।

সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক কেন্দ্রবিন্দু’ হিসেবে অভিহিত করেন। পর্বতানেনির ভাষায়, ‘ভারত ৬৫ বছর আগে সদিচ্ছা এবং বন্ধুত্বের মনোভাব নিয়ে সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। গত সাড়ে ৬ দশকে পাকিস্তান ভারতের ওপর তিনটি যুদ্ধ এবং হাজার হাজার সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে এই চুক্তির মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, গত চার দশকে পাকিস্তানে মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী হামলায় হাজার হাজার ভারতীয় প্রাণ হারিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি চলতি বছরের এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হামলার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে এক বিদেশি নাগরিকসহ ২৬ বেসামরিক মানুষ নিহত হন।

ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এই প্রেক্ষাপটেই ভারত ঘোষণা করেছে, যতক্ষণ না পাকিস্তান—যা সন্ত্রাসবাদের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্রবিন্দু—বিশ্বাসযোগ্য এবং স্থায়ীভাবে আন্তসীমান্ত ও সব ধরনের সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া বন্ধ করছে, ততক্ষণ এই চুক্তি স্থগিত থাকবে।’

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্যে পর্বতানেনি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারাবাস, তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নিষিদ্ধ করা এবং ২৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আসিম মুনিরকে আজীবন দায়মুক্তি দেওয়ার বিষয়গুলোকে ‘সাংবিধানিক ক্যু’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান জানানোর জন্য পাকিস্তানের এক অনন্য উপায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে জেল খাটানো, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে ২৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে সাংবিধানিক ক্যু ঘটাতে দেওয়া ও সেনাপ্রধানকে আজীবন দায়মুক্তি প্রদান করা।’

এর পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই—ভারত তার সমস্ত শক্তি দিয়ে পাকিস্তান-স্পনসরকৃত সন্ত্রাসবাদের প্রতিটি রূপ ও প্রকাশকে মোকাবিলা করবে।’

পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমেদ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার সমালোচনা করে জম্মু-কাশ্মীরকে ‘অমীমাংসিত বিরোধ’ হিসেবে উল্লেখ করলে তার জবাবেই ভারতের এই বক্তব্য আসে।

আসিম আহমেদ বলেন, ‘পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়, কিন্তু শান্তি কোনো একতরফা প্রচেষ্টা হতে পারে না।’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর নিরাপত্তা পরিষদের অ্যাজেন্ডায় থাকা অন্যতম প্রাচীন অমীমাংসিত বিরোধ। এর জন্য জাতিসংঘের সনদ, নিরাপত্তা পরিষদের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব এবং কাশ্মীরি জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী একটি ন্যায়সংগত নিষ্পত্তি প্রয়োজন—যা ভারত ক্রমাগত লঙ্ঘন ও অস্বীকার করে চলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্ডাই বিচ ট্র্যাজেডি: ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্টে ফিলিপাইনে গিয়েছিল হামলাকারী বাবা-ছেলে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৭
বাবা সাজিদ আকরাম ও ছেলে নাভিদ আকরাম। ছবি: সংগৃহীত
বাবা সাজিদ আকরাম ও ছেলে নাভিদ আকরাম। ছবি: সংগৃহীত

বন্ডির ঘটনার অভিযুক্ত দুই বন্দুকধারী—সাজিদ আকরাম (৫০) এবং তাঁর ছেলে নাভিদ আকরাম (২৪) —গত নভেম্বরের শুরুতে ফিলিপাইন ভ্রমণ করেছেন। নভেম্বরের ২৮ তারিখ ফিলিপাইন ত্যাগ করেন তাঁরা। ফিলিপাইনের ইমিগ্রেশন ব্যুরোর বরাত দিয়ে এ তথ্য দিয়েছে বিবিসি।

ইমিগ্রেশন ব্যুরোর মুখপাত্র ডানা স্যান্ডোভাল জানান, সাজিদ আকরাম ভারতে ইস্যু করা একটি পাসপোর্ট ব্যবহার করে ফিলিপাইনে যান, অন্যদিকে তাঁর ছেলে নাভিদ আকরাম একটি অস্ট্রেলীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন।

স্যান্ডোভাল আরও বলেন, তাঁরা ফিলিপাইনে তাঁদের চূড়ান্ত গন্তব্য হিসেবে দক্ষিণের শহর ডাভাওকে ঘোষণা করেছিলেন এবং তাঁদের অস্ট্রেলিয়া ফেরার ফ্লাইটটি সিডনির জন্য নির্ধারিত ছিল।

ডাভাও হলো ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ মিন্দানাও-এর পূর্বে অবস্থিত একটি বিস্তৃত মহানগরী। উল্লেখ্য, মিন্দানাও-এর কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ-পশ্চিমের দরিদ্র এলাকাগুলোতে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদীদের তৎপরতার খবর পাওয়া যায়।

এদিকে, ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ওই দুই ব্যক্তি সে দেশে থাকাকালীন ‘সামরিক ধাঁচের প্রশিক্ষণ’ নিয়েছিলেন বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, তাঁরা এখনো তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিবিসির বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি ডলারের মানহানি মামলা করলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১০
ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা করার কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা করার কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন। অভিযোগ, বিবিসির একটি প্যানোরমা তথ্যচিত্রে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে তাঁর ভাষণের একটি অংশ ভুলভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে। এতে তাঁর বক্তব্যের অর্থ বদলে গেছে বলে দাবি ট্রাম্পের।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার একটি আদালতে দায়ের করা মামলায় ট্রাম্প বলেছেন, বিবিসি তাঁর মানহানি করেছে এবং বাণিজ্যিক আইন ভেঙেছে। তাঁর আইনজীবীদের দাবি, বিবিসি ইচ্ছাকৃতভাবে ও বিদ্বেষপূর্ণভাবে ট্রাম্পের ভাষণ বিকৃত করেছে।

গত মাসে এই বিষয়ে বিবিসি ট্রাম্পের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিল। তারা স্বীকার করে যে ভিডিও সম্পাদনার কারণে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে, যেন ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার ডাক দিয়েছিলেন। তবে বিবিসি মানহানির অভিযোগ মানতে রাজি হয়নি এবং ক্ষতিপূরণও দিতে অস্বীকার করেছে।

ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের আগে যুক্তরাজ্যে প্রচারিত এই তথ্যচিত্রের জন্য তিনি বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করবেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিবিসি তাঁর মুখের কথাই পাল্টে দিয়েছে।

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার আগে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেছিলেন, তাঁরা ক্যাপিটলে যাবেন এবং সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের সমর্থন জানাবেন। প্রায় ৫০ মিনিট পর তিনি বলেন, ‘আমরা লড়াই করি। আমরা চরমভাবে লড়াই করি।’

কিন্তু প্যানোরমা অনুষ্ঠানে এই দুই বক্তব্য একসঙ্গে জুড়ে দেখানো হয়। এতে মনে হয়েছে, ট্রাম্প একই সঙ্গে ক্যাপিটলে যাওয়া এবং লড়াইয়ের কথা বলছেন। নভেম্বরে বিবিসির এক অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁস হয়। সেখানে এই সম্পাদনার কড়া সমালোচনা করা হয়। এরপর বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং সংবাদ বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেন।

মামলা হওয়ার আগে বিবিসির আইনজীবীরা ট্রাম্পের অভিযোগের জবাব দেন। তাঁরা বলেন, এই সম্পাদনার পেছনে কোনো বিদ্বেষ ছিল না। তাঁরা আরও দাবি করেন, তথ্যচিত্র প্রচারের পরই ট্রাম্প আবার নির্বাচিত হওয়ায় তাঁর কোনো ক্ষতি হয়নি।

বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্যানোরমা অনুষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রচার করার অধিকার তাদের ছিল না এবং তারা সেটি করেনি। তথ্যচিত্রটি বিবিসি আইপ্লেয়ারে থাকলেও তা শুধু যুক্তরাজ্যের দর্শকদের জন্য সীমিত ছিল। তবে ট্রাম্পের মামলায় বলা হয়েছে, বিবিসি তৃতীয় পক্ষের কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল, যাদের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বাইরে তথ্যচিত্রটি দেখানো হতে পারে। এ নিয়ে বিবিসি বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কেউই মন্তব্য করেনি।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার মানুষ ভিপিএন ব্যবহার করে বা ব্রিটবক্স নামের স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তথ্যচিত্রটি দেখতে পেরেছেন। ট্রাম্পের দাবি, তথ্যচিত্রটি প্রচারের পর ফ্লোরিডায় ভিপিএন ব্যবহারের হার বেড়ে যায়। এতে বোঝা যায়, অনেক মানুষ তথ্যচিত্রটি দেখার সুযোগ পেয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত