Ajker Patrika

মিথ্যাকে ঢাকতে জলি জোসেফের ৬ খুন আবার আলোচনায়

আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১: ২১
মিথ্যাকে ঢাকতে জলি জোসেফের ৬ খুন আবার আলোচনায়

গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ‘কারি অ্যান্ড সায়ানাইড: দ্য জোলি জোসেফ কেস’ নামে নতুন একটি তথ্যচিত্র মুক্তি দিয়েছে নেটফ্লিক্স। মূলত মিথ্যাকে ধামাচাপা, সম্পদের লোভ এবং বিবাহিত এক ব্যক্তিকে নিজের করে পেতে ঠান্ডা মাথায় একে একে ৬ জনকে খুন করা ভারতীয় নারী জলি জোসেফের জীবনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়েই এই তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। 

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, একটি খুন করে অন্য খুনটি করার আগে বেশ সময় নিতেন জলি জোসেফ; যেন কেউ সন্দেহ করতে না পারে। ২০০২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে মোট ১৪ বছরে শ্বশুরবাড়িতে ওই ৬টি খুন করেছিলেন তিনি। 

এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—জলিকে সবাই খুব হাসিখুশি আর বন্ধুসুলভ হিসেবেই জানত। কেরালার ইদুক্কি জেলার এক ধনি কৃষকের ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। নিজের পরিবার থেকে তিনিই প্রথম কলেজে গিয়েছিলেন পড়াশোনা করার জন্য। উচ্চাভিলাষী জোলি খেত-খামারের বাইরে কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন শৈশব থেকেই। 

 ১৯৯৭ সালে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল জোলি জোসেফ এবং রয় থমাসের মধ্যে। রয়ের বাবা টম ছিলেন শিক্ষাবোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তা আর মা আন্নাম্মা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। রয়ের ছোট একজন ভাই ও বোনও ছিল। কেরালার কোঝিকোদ জেলার কোদাথাই গ্রামে সম্ভ্রান্ত এই পরিবারটি বসবাস করত। 

অল্প সময়ের মধ্যেই জোলি এবং রয়ের মধ্যে ভাব হয়ে গিয়েছিল। সেই বছরের শেষদিকেই তাঁদের রোমান্স বিয়েতে গড়ায়। তবে বিয়ের আগের এবং পরের পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। জলি বুঝতে পারেন, হায়দ্রাবাদে চাকরির কথা বললেও রয় ছিলেন আসলে বেকার। সারা দিন বাড়িতে শুয়ে-বসে আলসেমি করে কাটাতেন। মিথ্যা বলেছিলেন জলি নিজেও। কলেজের পড়াশোনা শেষ না করেও এম-কম ডিগ্রি থাকার দাবি করেছিলেন তিনি।

জলির প্রথম শিকার
মিথ্যা ঢাকার জন্যই নিজের শাশুড়ি আন্নাম্মা থমাসকে প্রথম খুন করেছিলেন জলি। এম-কম ডিগ্রির কথা জেনে জলিকে চাকরি কিংবা পড়াশোনা আরও চালিয়ে যাওয়ার তাগাদা দিয়েছিলেন ৫৭ বছর বয়সী আন্নাম্মা। অবসর গ্রহণের পর জলিকে তাগাদা আরও বড়িয়ে দেন তিনি। 

এ অবস্থায় আরেকটি মিথ্যার আশ্রয় নেন জলি। দাবি করেন, কোট্টায়াম কলেজে অতিথি লেকচারারের চাকরি পেয়েছেন তিনি। এমনকি কলেজে পড়ানোর কথা বলে তিনি বাড়িও ছেড়ে যান এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ফিরতেন। কিন্তু এই মিথ্যা শাশুড়ির কাছে ধরা পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করতেন তিনি। তাই ২০০২ সালে শাশুড়িকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা মাথায় আসে তাঁর। সেই মোতাবেক স্থানীয় পশু হাসপাতাল থেকে কুকুর মারার বিষ সংগ্রহ করেন। তারপর ওই বছরেরই ২২ আগস্ট শাশুড়ির স্যুপে এটি মিশিয়ে দেন তিনি। মারা যান আন্নাম্মা। 

এবার সম্পদের লোভে
জোলির দ্বিতীয় শিকার ছিলেন তাঁর শ্বশুর ৬৬ বছর বয়সী টম থমাস। বিপুল ভূ-সম্পদ, প্রায় ১৬০০ বর্গমিটার জমির মালিক ছিলেন তিনি।

জলি আশঙ্কা করেছিলেন, আমেরিকা প্রবাসী ছোট সন্তানকে সব উইল করে দিয়ে নিজেও প্রবাসী হয়ে যাবেন টম। তাই বিপুল সম্পদ দখল করতে ২০০৮ সালে আরও একটি হত্যা পরিকল্পনা করেন জলি। 

সেই বছর একমাত্র মেয়েকে দেখতে কলম্বো গিয়েছিলেন টম থমাস। কথা ছিল, সেখান থেকে আমেরিকায়ও যাবেন তিনি। কিন্তু নিজের সন্তান গর্ভধারণ এবং স্বামীর মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানের খবর দিয়ে টমকে কৌশলে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন জলি। কৌশলে টমের সম্পদের সব চুক্তিনামাও হস্তগত করেন জলি এবং জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে সব সম্পদ তাঁর স্বামী রয়ের নামে উইল করে দেন। তারপর কাকতালীয়ভাবে সেদিনও ছিল ২২ আগস্ট। শাশুড়িকে হত্যার ঠিক ৬ বছর পরের সেই দিনটিতে শ্বশুরকেও সায়ানাইড বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলেন জলি। 

ওই সায়ানাইড ম্যাথিউ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন জলি। ম্যাথিউয়ের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তাঁর। ম্যাথিউকে বলেছিলেন—তাঁদের সম্পর্কের কথা জেনে গেছেন শ্বশুর টম থমাস। তাই টমকে হত্যার কথা বলে ম্যাথিউয়ের কাছ থেকে সায়ানাইড নিতে সমর্থ হয়েছিলেন। 

স্বামীকেও হত্যা
 ২০১১ সালে জলির পরবর্তী শিকার ছিলেন তাঁর স্বামী রয় থমাস। রয়ের মৃত্যুকেই প্রথমবারের মতো হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করা হয়েছিল। টম থমাসের মৃত্যুর পর সব সম্পদ নিজের দখলে নিয়েছিলেন রয়। তাই রয়কে মেরে ফেলে সব সম্পদ নিজের করে নিতে চাইছিলেন জলি। 

২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর বাথরুমের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় রয় থমাসকে। তাঁর মুখ দিয়ে বমি এবং লালা ঝরছিল। হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে হত্যাকাণ্ড সন্দেহে মামা এবং ভাই-বোনদের চেষ্টায় রয়ের মরদেহের একটি ময়নাতদন্ত হয় এবং তার শরীরে সায়ানাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। 

ছবি: সংগৃহীতযদিও পরবর্তীতে জলি পুলিশকে বোঝাতে সক্ষম হন যে—তাঁর স্বামী রয় ছিলেন একজন বিষাদগ্রস্ত মাতাল। তিনি নিজেই নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ এই যুক্তির পর আর জল ঘোলা করেনি। স্বামীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শ্বশুরবাড়ির বিপুল সম্পদে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন জলি। 

ধামাচাপার জন্য
তবে বিষয়টির এমন উপসংহারে সন্তুষ্ট ছিলেন না রয়ের মামা ও ভাই-বোন। বিশেষ করে রয়ের মামা রয় ছাড়াও তাঁর বাবা-মায়ের মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। যা হওয়ার তাই হলো—জলির এবারের টার্গেটে পরিণত হন রয়ের মামা। ২০১৪ সালের একদিন মামা শ্বশুরের সান্ধ্যকালীন পানীয়তে সায়ানাইড মিশিয়ে দেওয়া হয়। অচেতন অবস্থায় পরে তাঁকে জলি এবং প্রতিবেশীরা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। 

বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে আরও দুটি হত্যা
এর মধ্যেই জলি আরেকটি বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি আর কেউ নন জলির স্বামী রয়ের চাচাতো ভাই সাজু। রয়ের মতো অকর্মণ্য ছিলেন না সাজু। শিক্ষকতার পাশাপাশি আয়ের নানা উৎস ছিল তাঁর। জলি আর সাজু একসঙ্গে বসবাসের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও কয়েকটি বাধা দূর করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই বাধাগুলো দূর করতেই ২০১৪ সালের ১ মে সাজুর মেয়ে আলফির শরীরে সায়ানাইড প্রয়োগ করেন জলি। কয়েক দিন পর আলফির মৃত্যু হয়। দেড় বছর পর ২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি সাজুর স্ত্রী সিলিকে দাঁতের ওষুধের সঙ্গে সায়ানাইড মিশিয়ে হত্যা করেন। সিলির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগাগোড়া ছিলেন জলি। সব দায়িত্ব নিজ হাতে সামলেছেন। সাজুর বাড়িতে এ জন্য সকাল-সন্ধ্যা যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। ২০১৭ সালেই তাঁরা বিয়ে করে সুখে শান্তিতে বসবাস শুরু করেন। 

তবে এই বেশি দিন টিকতে দেননি জলির প্রয়াত স্বামীর আমেরিকা প্রবাসী ভাই রোজো থমাস। তিনি তাঁর বাবা-মা, ভাই ও মামাসহ প্রত্যেকটি মরদেহের ফরেনসিক তদন্তের জন্য পুলিশকে রাজি করান। ফরেনসিক পরীক্ষায় দেখা যায়, মৃত্যুর আগে প্রত্যেকেই কিছু না কিছু খেয়েছিলেন এবং প্রত্যেকের শরীরেই সায়ানাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। আর প্রতিটা মৃত্যুর সময়ই ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন জলি। 

 ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর জলিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় সায়ানাইড সরবরাহ করা তাঁর গোপন প্রেমিক ম্যাথিউকেও। দুজনই এখন জেলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার ভারতের ওপর মেক্সিকোর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি

ভারতসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেক্সিকো। নতুন এই শুল্কে ভারতের প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের গাড়ি রপ্তানি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। চার মাস আগেই যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এবার মেক্সিকোর এমন পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতির দেশটির ওপর নতুন চাপ তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর এই শুল্ক ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

কোন কোন পণ্যে শুল্ক

ম্যাক্সিকান দৈনিক এল ইউনিভার্সালের তথ্য অনুযায়ী, শুল্ক আরোপ করা হয়েছে অনেকগুলো পণ্যের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে—অটো পার্টস, ছোট গাড়ি, পোশাক, প্লাস্টিক, স্টিল, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি, খেলনা, টেক্সটাইল, আসবাব, জুতা, চামড়াজাত পণ্য, কাগজ ও কার্ডবোর্ড, মোটরসাইকেল, অ্যালুমিনিয়াম, কাচ, সাবান, সুগন্ধি ও কসমেটিকস।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার মতো যেসব দেশের সঙ্গে মেক্সিকোর কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, তারা এই শুল্কে প্রভাবিত হবে।

মেক্সিকো কেন শুল্ক বাড়াচ্ছে

মেক্সিকো সরকারের দাবি, দেশের স্থানীয় শিল্পকে রক্ষা এবং এশিয়া বিশেষ করে চীন থেকে অতিরিক্ত আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতেই এই পদক্ষেপ। চীনের সঙ্গে মেক্সিকোর বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে—শুধু ২০২৪ সালেই দেশটি চীন থেকে ১৩০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। সেই রপ্তানির পরিমাণ অনেক কম।

মেক্সিকো বলছে, নতুন শুল্ক আরোপে সরকারের অতিরিক্ত ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব পাওয়া যাবে। প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের প্রশাসন স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং দেশের শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়াকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

মেক্সিকোর ক্ষমতাসীন মোরেনা দলের ডেপুটি রিকার্ডো মনরিয়াল বলেন, ‘ম্যাক্সিকান শিল্পকে সমর্থন দেওয়া মানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি।’ তবে বিশ্লেষকদের অনেকের মত, আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা (ইউএসএমসিএ) চুক্তি মাথায় রেখে ওয়াশিংটনকে খুশি করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ভারতের ওপর প্রভাব কতটা

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর সিদ্ধান্তে ভারতের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি ধাক্কা খাবে। শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের প্রধান গাড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে রয়েছে—মারুতি সুজুকি, হুন্দাই, নিসান ও ভক্সওয়াগন।

গাড়ির আমদানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায় ভারতীয় অটোমোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের অন্যতম বড় বাজারে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা ও সৌদি আরবের পর মেক্সিকো বর্তমানে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি রপ্তানি বাজার।

ভারতীয় গাড়ি নির্মাতাদের সংগঠনগুলো বলেছে, শুল্ক বৃদ্ধি সরাসরি রপ্তানি হ্রাস করবে। তারা শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে চীন বলেছে, তারা সব ধরনের একতরফা শুল্ক বৃদ্ধির বিরোধী। তারা মেক্সিকোকে ‘ভুল সিদ্ধান্ত সংশোধন’ করার আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমরাই রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য—বার্লিনে ন্যাটো মহাসচিবের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

ইউরোপের দেশগুলোর সামরিক জোট ‘ন্যাটো’ এর মহাসচিব মার্ক রুটে জার্মানির বার্লিনে দেওয়া এক ভাষণে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি এখানে এসেছি এটা বলার জন্য যে, ন্যাটো আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে এবং যুদ্ধ শুরুর আগেই সেটি কীভাবে থামানো যায়। আমরাই রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য এবং আমরা ইতিমধ্যেই ঝুঁকির মধ্যে আছি—আর সেই জন্যই হুমকিটা স্পষ্ট করে জানা জরুরি।’

রুটে দাবি করেন, এই বছরের শুরুর দিকে নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তিনি বলেন, ‘এটি আত্মতুষ্টির সময় নয়।’ তাঁর মতে, অনেক দেশ এখনো এই হুমকিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘অনেকেই মনে করছেন সময় আমাদের পক্ষে। তা কিন্তু নয়। এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। মিত্র দেশগুলোর প্রতিরক্ষা ব্যয় ও সামরিক উৎপাদন দ্রুত বাড়াতে হবে। নিরাপদ থাকতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা দিতে হবে।’

রাশিয়া সম্পর্কে রুটে বলেন, দেশটি ন্যাটো ও ইউক্রেনের প্রতি আরও ধৃষ্ট, বেপরোয়া ও নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে। তিনি স্নায়ু যুদ্ধের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের ‘এভিল এম্পায়ার’ বা ‘শয়তান সাম্রাজ্য’-এর মন্তব্য স্মরণ করে বলেন, ‘আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন আবার সাম্রাজ্য গঠনের কাজে নেমেছেন।’

রুটের ভাষ্যমতে—পুতিন ইতিহাসকে বিকৃত দৃষ্টিতে দেখেন এবং মনে করেন পশ্চিমাদের স্বাধীনতা তার ক্ষমতার ওপর হুমকি সৃষ্টি করে। রাশিয়ার আক্রমণাত্মক নীতির জন্য চীনকেও দায়ী করেন তিনি।

রুটে বলেন, চীন এখন রাশিয়ার ‘জীবনরেখা’, যা তাকে আক্রমণাত্মক নীতি চালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া ও ইরানও মস্কোকে সমর্থন দিচ্ছে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন রুটে। তাঁর মতে, পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে সক্ষম একমাত্র ব্যক্তি হলেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘চলুন পুতিনকে পরীক্ষা করি—তিনি সত্যিই শান্তি চান, নাকি হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যেতে চান।’ এ সময় তিনি রাশিয়ার ওপর অব্যাহত চাপ বজায় রাখারও তাগিদ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুলগেরিয়ায় গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়ল জেলিয়াজকভের সরকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ২৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সপ্তাহজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী রোসেন জেলিয়াজকভ তাঁর সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পার্লামেন্টে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ঠিক কয়েক মিনিট আগে টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে জেলিয়াজকভ তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থবিরোধী অর্থনৈতিক নীতি ও দুর্নীতি দমনে ব্যর্থতার অভিযোগে সপ্তাহ ধরে এ বিক্ষোভ চলছিল।

টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে ঝেলিয়াজকভ বলেন, ‘আমরা জোটের বৈঠকে বর্তমান পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ এবং আমাদের করণীয় সিদ্ধান্তগুলো আলোচনা করেছি। জনগণ আমাদের কাছ থেকে যে দায়িত্বশীলতার প্রত্যাশা করে, আমরা সে উচ্চতায় থাকতে চাই। ক্ষমতা আসে জনগণের কণ্ঠ থেকে।’

কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানী সোফিয়া ছাড়াও দেশজুড়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকারের অর্থনৈতিক নীতি জনস্বার্থবিরোধী, উচ্চকর ও সামাজিক নিরাপত্তা অবদানের প্রস্তাব জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে এবং বছরের পর বছর চলা দুর্নীতি দমনে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

গত সপ্তাহে সরকার তাদের ২০২৬ সালের বাজেট প্রস্তাব করে, যেখানে প্রথমবারের মতো ইউরো মুদ্রায় খসড়া করা হয়েছিল। তবে বিক্ষোভের কারণে সরকার তা প্রত্যাহার করে নেয়। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তায় নাগরিক ব্যয় বাড়ানো এবং লভ্যাংশের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের পরিকল্পনা ছিল।

তবে বাজেট প্রত্যাহারের পরও বিক্ষোভ থামেনি। গত চার বছরে দেশটিতে সাতটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সর্বশেষ ২০২৪ সালের অক্টোবরে। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন বুলগেরিয়ার সংকট আরও গভীর করেছে।

এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট রুমেন রাদেভ সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। আজ বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘জনগণের কণ্ঠ আর মাফিয়ার ভয়ের মাঝে—জনগণের কণ্ঠই শুনুন। রাস্তায় যে স্লোগান উঠছে, তার প্রতিধ্বনি শুনুন।’

বুলগেরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত। এখন তিনি সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা করবেন। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে নতুন সরকার গঠন কঠিন হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর যদি দলগুলো নতুন সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করবেন এবং দেশে আবারও নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ১৪ বছর কারাদণ্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফায়েজ হামিদ। ছবি: বিবিসি
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফায়েজ হামিদ। ছবি: বিবিসি

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফায়েজ হামিদকে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপসহ একাধিক অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রচার শাখা আইএসপিআর-এর এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, ফায়েজ হামিদ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগাম অবসরে যান হামিদ। পাকিস্তানের ইতিহাসে হামিদই প্রথম কোনো আইএসআই প্রধান, যাকে সামরিক আইনের মুখোমুখি হতে হলো।

আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১৫ মাসব্যাপী চলেছে এই বিচারপ্রক্রিয়া। হামিদের বিরুদ্ধে মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়—রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, অফিশিয়াল গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা, ক্ষমতা ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং নাগরিকদের ক্ষতি সাধন।

সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামিদ নিজের পছন্দমতো আইনজীবী দল নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তাঁর কাছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অধিকারও উন্মুক্ত রয়েছে।

মামলার শুনানি সামরিক আদালতে হওয়ায় এর সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করা হয়নি।

আইএসপিআর জানিয়েছে, হামিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ আলাদাভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। এই অভিযোগটি ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংস বিক্ষোভে হামিদের ভূমিকার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের ক্ষমতাকাঠামোতে আইএসআই প্রধানকে সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রভাবশালী পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এই রায় দেশটির রাজনৈতিক–সামরিক সম্পর্কে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত