Ajker Patrika

রাশিয়ায় ‘দাসের মতো’ খাটানো হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০০: ৩৪
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শ্রমিকসংকট মোকাবিলায় হাজার হাজার উত্তর কোরিয়ানকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। তবে বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর দাসের মতো শর্তে কাজ করানো হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদের।

রাশিয়া থেকে পালিয়ে আসা উত্তর কোরিয়ার কিছু শ্রমিক বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রতিদিন তাঁদের ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বরত ম্যানেজাররা প্রায় সময় তাঁদের সঙ্গে সহিংস আচরণ করেছেন এবং শ্রমিকদের সারাক্ষণ নজরদারির মধ্যে থাকতে হয় সেখানে।

রাশিয়ায় শ্রমিকসংকট তৈরি হয়েছে মূলত ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপক প্রাণহানি, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদান এবং বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের বিদেশে পাড়ি জমানোর কারণে। অস্ত্র ও গোলাবারুদের পাশাপাশি মস্কো তাই উত্তর কোরিয়ার শ্রমশক্তির ওপরও নির্ভর করছে; বিশেষ করে নির্মাণ, উৎপাদন ও প্রযুক্তি খাতে এসব শ্রমিক কাজ করছেন।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের শুরু থেকে রাশিয়ার দৃঢ় মিত্র হিসেবে পাশে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি গত বছর কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ ঠেকাতে সৈন্যও পাঠিয়েছিল পিয়ংইয়ং। তবে সামরিক সহায়তার বাইরেও রাশিয়ার যুদ্ধকালীন দুর্বল অর্থনীতিকে সহায়তা করার প্রস্তাব দেয় দেশটি। চলতি বছরের জুনে পিয়ংইয়ং সফরে রুশ নিরাপত্তা উপদেষ্টা সের্গেই শোইগু ঘোষণা দেন, কুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে উত্তর কোরিয়া ৫ হাজার নির্মাণশ্রমিক পাঠাবে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে এই সংখ্যার দ্বিগুণ শ্রমিক পাঠানো হয়েছে এবং মোট সংখ্যা ৫০ হাজারে পৌঁছাতে পারে।

বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে পালিয়ে আসা উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ২টা পর্যন্তও তাঁদের কাজ করতে হয়েছে, আর বছরে মাত্র দুই দিন ছুটি পাওয়া যেত। কেউ কেউ হাতের ব্যথায় সকালে নড়াচড়া করতে পারতেন না, কেউ কেউ বিশ্রাম নিলে মারধরের শিকার হতেন। এক শ্রমিকের ভাষায়, এটা সত্যিই মৃত্যুর সমতুল্য।

পালিয়ে আসা শ্রমিকেরা বাস করতেন পোকামাকড়ে ভরা কনটেইনারে বা ঠান্ডায় জমে যাওয়া কোনো ফ্ল্যাটে। আহত হলেও তাঁরা ঠিকমতো চিকিৎসা পেতেন না এবং কর্মস্থলের বাইরে তাঁদের যাতায়াত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ছিল।

এদিকে শ্রমিকদের উপার্জনের বেশির ভাগ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ‘আনুগত্য ফি’ হিসেবে জমা দিতে হয়। এ ছাড়া রাশিয়ায় তাঁদের পালিয়ে যাওয়া রোধ করতে প্রতি মাসের আয় থেকে ১০০ কিংবা ২০০ ডলার নিজেদের কাছে রেখে দেন ম্যানেজাররা এবং প্রতিশ্রুতি দেন, দেশে ফেরার সময় এই অর্থ শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকেরা আরও দাবি করেছেন, একই কাজের জন্য তাঁরা অন্যান্য বিদেশি শ্রমিকের তুলনায় পাঁচ গুণ কম মজুরি পান।

২০১৯ সালে উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল জাতিসংঘ। এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, দেশটির শ্রমিক বিদেশে পাঠানো অবৈধ। এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ হলো দেশটি শ্রমিকদের উপার্জনের বড় অংশ ব্যয় করে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের চার পাটপণ্যে ভারতের বন্দর নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত