Ajker Patrika

আফ্রিকার কুখ্যাত শিশুবাহিনীর নেতা জোসেফ কোনিকে ধাওয়া করেছে ভাগনার গ্রুপ

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

আত্মগোপনে থাকা আফ্রিকার কুখ্যাত যুদ্ধবাজ নেতা জোসেফ কোনিকে প্রায় ধরে ফেলেছিল রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী হিসেবে পরিচিত ভাগনার গ্রুপ। আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বিদ্রোহী লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মির (এলআরএ) নেতা এই জোসেফ কোনি। তাঁর বিরুদ্ধে শিশু অপহরণ, শিশুদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকৃতি এবং নিজ বাহিনীতে শিশুদের ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, যুদ্ধের মাঠে প্রতিপক্ষের সৈন্যদের মগজ চিবিয়ে খেতে নিজ বাহিনীর শিশুদের বাধ্য করতেন তিনি। ২০০৫ সালে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাঁকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছিল। 

রোলিং স্টোনের বরাত দিয়ে সোমবার ব্রিটিশ ডেইলি স্টার জানিয়েছে, গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আত্মগোপনে ছিলেন জোসেফ কোনি। অবশেষে ভাগনার গ্রুপ তাঁর হদিস পেয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকেই সেন্ট্রাল আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় তাঁর খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ভাগনার সেনারা। 

একসময় নিজেকে খ্রিষ্টান নবী হিসেবে দাবি করেছিলেন কোনি। শুধু তাই নয়, উগান্ডার ক্ষমতা দখলের জন্য নিজেকে পবিত্র আত্মার অধিকারী দাবি করে অনুগত সেনাদের বোকা বানিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। 

জানা গেছে, একটি ঘটনার সূত্র ধরে জোসেফ কোনির হদিস পেয়ে যায় ভাগনার গ্রুপ। গত মার্চের শেষ দিকে কোনির বাহিনী থেকে পালিয়ে আসা ১৪ জন শিশু সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের সেনাবাহিনীর পরিচয় দেওয়া একটি দলের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। তবে সেনাবাহিনীর পরিচয় দেওয়া ওই দলটি ছিল আসলে পার্শ্ববর্তী চাদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ। আর এই গ্রুপের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল ভাগনার গ্রুপের। স্থানীয় মিলিশিয়াদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আফ্রিকার ওই অঞ্চলগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করে ভাগনার সেনারা। 

কোনির দল ত্যাগ করে আসা ১৪ জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল ভাগনার গ্রুপ। পরে তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে একটি গ্রামে হামলা চালায় তারা। ওই এলাকাটিতে মূলত গাঁজার চাষ হয়। স্থানীয়রা জানায়, কোনির ক্যাম্পটি তাদের গ্রাম থেকে ১০ মাইলের মধ্যেই অবস্থিত। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুল্ম আচ্ছাদিত অঞ্চলে কোনির কথিত সেই ক্যাম্পে স্থল বাহিনীর পাশাপাশি দুটি হেলিকপ্টার নিয়ে হামলা চালানো হয়। তবে সেখান থেকেও পালিয়ে যান কোনি। ধারণা করা হচ্ছে, সুদানের দিকে পালিয়েছেন তিনি। 

আফ্রিকা মিডিয়া টিভি নামে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি চ্যানেল প্রায় সময়ই আফ্রিকায় ভাগনার গ্রুপের কার্যকলাপ নিয়ে খবর প্রকাশ করে। তবে জোসেফ কোনিকে নিয়ে ভাগনার গ্রুপের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ নিয়ে কোনো খবর প্রকাশ করেনি এই মাধ্যমটি। কিন্তু গত রোববার (২১ এপ্রিল) ভাগনার গ্রুপের ব্যবহৃত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিবৃতি পোস্ট করে বলা হয়েছে, তারা এলআরএ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দাসত্ব করা ১৪ শিশুকে মুক্ত করার জন্য একটি অপারেশন পরিচালনা করেছে। অপারেশনের সময় দুই জেনারেল, এক কর্নেল এবং ছয় এলআরএ জঙ্গি নিহত হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ। রাশিয়ান বিশেষজ্ঞরা উদ্ধার করা শিশুদের নিরাপদে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাজধানী বাঙ্গুইতে নিয়ে গেছেন। 

এদিকে জোসেফ কোনিকে ধরার জন্য ভাগনার গ্রুপের প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছেন মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত সাবেক এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘কোনির গল্পটি এখানেই শেষ হয়নি, এটি একটি ধারাবাহিকতা মাত্র। তবে ভাগনার সম্ভবত এই গল্পের শেষ টানবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত